আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধানন প্রধান খবর
মানবজমিন:
হাসিনাকে থামান
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনার বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্য-বিবৃতিকে ভালো চোখে দেখছে না সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো. তৌফিক হাসান। গতকাল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় সরকারকে বিষয়টি জানিয়েছে। তাদের স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে যে রাজনৈতিক বিবৃতি ও বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটি বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবে দেখছে না। এ ব্যাপারে সরকারের তীব্র অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এ ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তৌফিক বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সেটির জন্য এ ধরনের বক্তব্য থেকে তাকে বিরত রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের জবাব কি? জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, আমরা যখন ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছি, তখন তিনি বলেছেন, বিষয়টি তার সরকারের কাছে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে জানাবেন। আমরা আসলে সত্যিকার অর্থে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব পাইনি। তারা বিষয়টি দেখবেন এরকম জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং তাকে ভারত থেকে প্রত্যাবর্তন করানো হবে কিনা? এ প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমাদেরকে যদি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, তখন আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেবো। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এমন বিষয় নিয়ে কোনো অনুরোধ পায়নি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ভারতে অবস্থান করছেন-সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে কিনা? মুখপাত্র বলেন, না এ নিয়ে কোনো তথ্য নেই। ভারতের ভিসা পাওয়া সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে পররাষ্ট্রের মুখপাত্র বলেন, বিষয়টি আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বারবার বলে আসছি এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে তাদের লোকবল সংকটের কথা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য ভিসা এবং তৃতীয় দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা প্রত্যাশীদের বিষয়টি যেন তারা দ্রুততার সঙ্গে বিবেচনা করেন সেটি আমরা তাদের বলেছি। সেই সঙ্গে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং ফিনল্যান্ডে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভিসা পাওয়া সহজ করার অনুরোধ করেছি।
অপর প্রশ্নে তৃতীয় দেশের ভিসাপ্রার্থীরা দিল্লির পরিবর্তে ভিয়েতনাম এবং পাকিস্তান থেকে ভিসা গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানান মুখপাত্র মিস্টার হাসান।
প্রথম আলো:
মন্ত্রীর একক ক্ষমতা ও দায়মুক্তির বিধান অবৈধ
আওয়ামী লীগ সরকার কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দিতে ২০১০ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন করেছিল। এই আইনের অধীনে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেত না। চুক্তি করার বিষয়ে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। যে কারণে এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিতি পায়। আইনের এ–সংক্রান্ত বিধান দুটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। একই সঙ্গে জাতীয় ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে এবং জনগণের বৃহত্তর সুবিধা নিশ্চিতে সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি চালানোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতে দরপত্র ছাড়া কাজ দিতে প্রায় ১৪ বছর আগে এই দায়মুক্তি আইনটি করার সময় বলা হয়েছিল, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাময়িক সময়ের জন্য এটা করা হচ্ছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় এটির মেয়াদ বাড়িয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। এ আইনের অধীনে নেওয়া হয় শতাধিক প্রকল্প। কয়েক লাখ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে আইনটির আওতায়। দীর্ঘদিন ধরে এটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৮ আগস্ট বিশেষ বিধান আইনটি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। এতে বলা হয়, এ আইনের অধীনে ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর করা হয়। এই আইনের দুটি ধারা বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত আগস্টে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক ও মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম। ওই দুটি ধারায় এই আইনের অধীনে করা কাজ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না এবং চুক্তি করার বিষয়ে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। ধারা দুটি হচ্ছে ‘পরিকল্পনা বা প্রস্তাবের প্রচার’-সংক্রান্ত ৬(২) ধারা ও ‘আদালত ইত্যাদির এখতিয়ার রহিত করা’-সংক্রান্ত ৯ ধারা।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
দুুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার যেন রিপিট (পুনরায়) না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে বিএনপি সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে চায়, যাতে কেউ পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন। গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা : ৩১ দফার আলোকে সংস্কার’ শীর্ষক এক সেমিনারে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত সম্পর্কে বলেন, ‘সংস্কার বলতে সেটিই বুঝি, যে সংস্কারের মাধ্যমে সংবিধানের শুধু কয়েকটি বাক্য নয়; বরং মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। যে সংস্কার সব মানুষের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। যে সংস্কার দেশের সন্তানদের আধুনিক শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ গঠন করে দেবে। যে সংস্কার মানুষকে কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা দেবে। যে সংস্কার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখবে। আমি সংস্কার বলতে সেটিই বুঝি।’ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় ঐতিহ্য ও অতীতের ভালো অর্জনগুলো ধারণ করে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা তৈরি হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০, বিএনপির জনসম্পৃক্ততা ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার আলোকে প্রথমে প্রদত্ত ২৭ দফার ওপর ভিত্তি করে, যা পরবর্তীকালে যুগপৎ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শরিক সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে ৩১ দফায় পরিণত হয়।’ তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যারা এখানে উপস্থিত রয়েছি, আমাদের রাজনৈতিক দর্শনে ভিন্নতা আছে; সেটিই স্বাভাবিক। তবে আমি বিশ্বাস করি, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ধারার মধ্যেও বৃহত্তর পরিসরে আমাদের সবার মধ্যে একটি বিষয়ে আদর্শিক ঐকমত্য রয়েছে। আর সেই বিষয়টি হলো, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।’
কালের কন্ঠ:
দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ শামীম ওসমানের
আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী এমপি এ কে এম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকার সময় দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর তিনি দেশ ছেড়ে পালালেও এসব সম্পদের খবর আগেই জানিয়েছিলেন সদ্য বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। বিদেশ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জে সওজের জমি দখল করে প্রয়াত বড় ভাইয়ের নামে পার্ক তৈরি, অনুসারীদের দিয়ে দখলের অভিযোগও আছে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন টেন্ডার থেকে কমিশন, ব্যাবসায়িক জোন থেকে টাকার ভাগ নেওয়ার বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট।
বিদেশে সম্পদ
ঘনিষ্ঠজনরা জানান, শামীম ওসমানের অনেক আগে থেকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসা ছিল। সেখানে আজমান প্রদেশে বাংলাদেশিদের একটি বড় স্টক লটের ব্যবসা ছিল শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান ও শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর। আজমানে টিটুর ডুপ্লেক্স বাড়ির বিষয়টি আগেই প্রকাশ পেয়েছিল। আজমান ছাড়াও শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মজনু আহমেদের ছিল দ্বৈত নাগরিকত্ব।
নয়াদিগন্ত:
৪ মাসে পামতেল ও চিনি আমদানি অস্বাভাবিক হ্রাস
ভোজ্যতেলের বাজারে যেন আগুন জ্বলছে। একদিকে আন্তর্জাতিক বাজার ও অভ্যন্তরীণ বাজারে অব্যাহতভাবে দাম বাড়ছে, অন্যদিকে ভোজ্যতেলের মজুদ সঙ্কটেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রায় ১৫ কোটি কেজি পামতেলের আমদানি কমেছে। একই সময়ে চিনির আমদানিও কমেছে অস্বাভাবিকভাবে ২০ কোটি কেজির বেশি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ডেড ট্যাংক টার্মিনালগুলোসহ দেশে ভোজ্যতেলের প্রকৃত মজুদের ওপর নজরদারির তাগিদ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে দেশে চিনি আমদানি হয় ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৯ কেজি। ২০২৪ সালে একই সময়ে চিনি আমদানি হয়েছে ৪৩ কোটি ৭৮ লাখ তিন হাজার ৪৪৭ কেজি। এই চার মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কম হয়েছে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৮৩ হাজার ৭১২ কেজি।
সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে দেশে পামতেল (পরিশোধিত ও অপরিশোধিত) আমদানি হয় ৯১ কোটি ৯০ লাখ ৭৯ হাজার ৯১২ কেজি। ২০২৪ সালে একই সময়ে পামতেল আমদানি হয়েছে ৭৭ কোটি দুই লাখ ৩০ হাজার ৪৫১ কেজি। এই চার মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কম হয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬১ কেজি।
যুগান্তর:
দিল্লি থেকে শেখ হাসিনার বিবৃতিতে অসন্তুষ্ট সরকার
ভারতে অবস্থান করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বিবৃতি ও বক্তব্যকে ভালো চোখে দেখছে না সরকার। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো. তৌফিক হাসান সাংবাদিকদের একথা জানান। দুই দেশের মধ্যে যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সেটির জন্য এ ধরনের বক্তব্য থেকে তাকে বিরত রাখাটা অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি জানান।
তৌফিক হাসান বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় সরকারকে বিষয়টি জানিয়েছে। তাদের স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় ভারতে চলে যাওয়ার পর সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে যে রাজনৈতিক বিবৃতি ও বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটি বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবে দেখছে না। এ ব্যাপারে সরকারের তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি তাকে এ ধরনের বক্তব্য ও বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত রাখার জন্য ভারত সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
দৈনকি সংগ্রাম:
সংস্কার শেষে আমরা দ্রুতই নির্বাচন দিতে চাই
সম্মেলনের ফাঁকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরালদো আলকমিনের স্ত্রী লু আলকমিনের সঙ্গে বৈঠক
স্টাফ রিপোর্টার : সংস্কার শেষে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নির্ভর করছে সংস্কারের গতির ওপর। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করতে হবে। আমরা দ্রুত নির্বাচন দিতে চাই। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারে দায়িত্ব নেয়ার পর আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম দেশকে ভোটের জন্য প্রস্তুত করতে। প্রস্তুতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন দেয়া হবে। সরকার দ্রুত নির্বাচন দিতে চায় জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, সংস্কার কাজে দেশের সবাইকে এক হতে হবে। সরকার, সংসদ, নির্বাচনী বিধি কেমন হবে, এসব খুব দ্রুত শেষ করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতই কম হয় ততই ভালো এমন মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারে আছি। তাই আমাদের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত। আমরা দ্রুত নির্বাচন দিতে চাই। দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, যেকোনো সরকারই এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন থাকবে। তার সরকারও আছে। আমরা আশা করছি যে, এটির সমাধান করতে পারব এবং একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারব।
এদিকে বুধবার দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে এলডিসি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবং পৃথিবী ও মানুষের জন্য কল্যাণকর সভ্যতার জন্য নতুন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কালবেলা:
২৫০০ বর্গফুট শেডে খরচ ১৮ কোটি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র তখন শেখ ফজলে নূর তাপস। ডিএসসিসিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। খাল উদ্ধারসহ বেশ কিছু কাজে নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এই মেয়র। ২০২২ সালে তিনি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রায় নয়শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেন। রাজধানীর চারটি খাল উদ্ধার, সংস্কার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির প্রকল্প। কিন্তু দুই বছরে প্রকল্পে অগ্রগতি ৫ থেকে ৬ শতাংশ। এর জন্য মেয়রকেই দুষছেন নগর কর্মকর্তারা।
বাস্তবায়ন যতটুকুই হোক, প্রকল্প পরিকল্পনায় ব্যাপক সন্দেহ জেগেছে। প্রকল্পের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, পথচারীদের বিশ্রাম ও শরীরচর্চার জন্য তিনটি খালের পাড়ে শেড নির্মাণ করা হবে। মোট আড়াই হাজার বর্গফুট শেড নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকার বেশি। খোদ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরাই বলছেন, ২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার শেড নির্মাণে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। সেখানে ১৮ কোটি টাকা খরচ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। প্রকল্প পরিচালক খায়রুল বাকের এর ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘এই শেড নির্মাণে হেভি মেটাল, ফাইবার অথবা গ্লাস ব্যবহার করার চিন্তা ছিল।’
তা ছাড়া প্রতি ১০০ বর্গমিটার জায়গায় ফুলবাগান করার জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা। আর একেকটি চারার পেছনে খরচ ধরা হয়েছে ৩৫৪ টাকা। ৬০০ গাছে পানি দিতে লাগবে ৬৩টি বালতি। বিজ্ঞাপন ও প্রচারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ কোটি টাকা। চারটি ডাবল কেবিন পিকআপ কিনতে খরচ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। একটি ফুডকোর্ট ও কফিশপ তৈরিতে ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এভাবে পুরো প্রকল্পেই ব্যয়ের নামে তুঘলকি কাণ্ডের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন কেনাকাটা ও সংস্কার বাবদ কয়েকগুণ বেশি বিল ধরা হয়েছে।
দেশরুপান্তর:
বিশেষ আইন নিয়ে যত প্রশ্ন
বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র (রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও আইপিপি) থেকে গত ১৫ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে। যার মধ্যে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ (কেন্দ্র ভাড়া) দিতেই ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব কেন্দ্রের বেশিরভাগই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া বিদ্যুৎ-জ¦ালানি খাতের ‘দায়মুক্তি’ আইনে করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি জ¦ালানি খাতেও অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বিশেষ বিধানের আওতায়।
দেশীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে বিশেষ আইনের আওতায় করা চুক্তিতে বহুল আলোচিত-সমালোচিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মাত্র ১ বছর ৩ মাসে আমদানি করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার বিদ্যুৎ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-জ¦ালানি সরবরাহের দোহাই দিয়ে মূলত বিশেষ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে অনৈতিক ব্যবসায়িক সুবিধা দিতেই আওয়ামী লীগ সরকার এ আইনটি করেছিল দেড় দশক আগে। এতে মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরুপ হয়েছে। ভোক্তার কাঁধে বিদ্যুৎ-জ¦ালানির ব্যয় চেপেছে বহুগুণ। আর এ খাতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে।