ঢাকা ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন Logo তারেক রহমানের কাছে সন্ত্রাসবাদ-চাঁদাবাজের ঠাই নেই: বিএনপি নেতা মধু Logo কমলগঞ্জে নিজ ঘর থেকে সাবেক ছাত্রদল নেতার গলা কাটা লাশ উদ্ধার Logo হাসিনা বারোটা বাজিয়েছে, এ সরকার চব্বিশটা বাজায়ে দিসে: মির্জা আব্বাস Logo প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে টাইফয়েডের টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু Logo কুষ্টিয়ায় জামায়াতের রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ডাকাতির চেষ্টায় গণপিটুনির শিকার সেই বিএনপি নেতা বহিষ্কার Logo জবির আইইআর-এ র‌্যাগিং, ১০ দিনেও উদ্যোগহীন পরিচালক; আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগীরা Logo ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন : সিইসি Logo নাটোরে মিনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

শেখদের ছবি সরানোয় আক্ষেপ গণঅভ্যুত্থানের চেতনাবিরোধী: মাহফুজ আলম

কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের (শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা) ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এ গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:-

পতিত শেখরা!

শেখ মুজিব ও তার কন্যা (আরেক শেখ) তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্য জনগণের তীব্র রাগ-ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তাদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য, শেখ মুজিব একসময় পূর্ব বাংলার গণমানুষের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, যে জনপ্রিয়তা হাসিনার ছিল না। জনগণ পাকিস্তানি নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার (শেখ মুজিব) নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন, কিন্তু একাত্তরের পর তিনি নিজেই একজন জালিম হয়ে ওঠেন। মুজিববাদের প্রতি তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পর পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। নিজের ফ্যাসিবাদী ভূমিকার কারণে ১৯৭৫-এ তার মৃত্যুতে মানুষ শোক-অনুতাপ প্রকাশ করেনি।

তবে, শেখ তার একাত্তর-পূর্ব ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন, যদি শেখের একাত্তর-পরবর্তী গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, দুর্নীতি, দুর্ভিক্ষ ও নিশ্চিতভাবেই বাহাত্তরের সংবিধান, যা বাকশাল প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল—এসবের জন্য তার দল ও পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চান। শেখ-কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কথাও তাদের স্বীকার করা, ক্ষমা চাওয়া এবং এ জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত (শেখ মুজিবকে একজন ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসের পাত্র বানিয়েছিলেন তিনি)। তাদের আরও উচিত, মুজিববাদী রাজনীতি ও শেখ পরিবারের বন্দনা পরিহার করা।

কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে শেখের ছবি সরানো হয়েছে (কর্মকর্তারা সরিয়েছেন, যদিও তা হয়েছে); যে শাসন মেয়ে করেছেন ফ্যাসিবাদী বাবার নামে ও তার একাত্তর-পরবর্তী চেতনার কথা বলে। তার বাবাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল, কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে তাদের দুজনের ছবি, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলেছেন।

কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এ গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না। আমরা এখানে এসেছি, ঐতিহাসিক অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো দূর করতে। মনে রাখতে হবে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের। আবার, কোনো মুক্তিযোদ্ধাও যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন, তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত।

স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন বলেই তাদের (একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করা মুক্তিযোদ্ধাদের) এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের উচিত, শাসক পরিবারগুলোকে দেবতুল্য করা ও সেই ক্ষমতাসীন পরিবারগুলোর সবকিছু নিজেদের বলে মনে করা—এ থেকে বেরিয়ে আসা। ’৪৭ ও ’৭১-এর পাশাপাশি জুলাইয়ের চেতনা আমাদের সবার স্মৃতিতে থাকুক অম্লান!

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন

শেখদের ছবি সরানোয় আক্ষেপ গণঅভ্যুত্থানের চেতনাবিরোধী: মাহফুজ আলম

আপডেট সময় ০১:৫৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের (শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা) ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এ গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:-

পতিত শেখরা!

শেখ মুজিব ও তার কন্যা (আরেক শেখ) তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্য জনগণের তীব্র রাগ-ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তাদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য, শেখ মুজিব একসময় পূর্ব বাংলার গণমানুষের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, যে জনপ্রিয়তা হাসিনার ছিল না। জনগণ পাকিস্তানি নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার (শেখ মুজিব) নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন, কিন্তু একাত্তরের পর তিনি নিজেই একজন জালিম হয়ে ওঠেন। মুজিববাদের প্রতি তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পর পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। নিজের ফ্যাসিবাদী ভূমিকার কারণে ১৯৭৫-এ তার মৃত্যুতে মানুষ শোক-অনুতাপ প্রকাশ করেনি।

তবে, শেখ তার একাত্তর-পূর্ব ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন, যদি শেখের একাত্তর-পরবর্তী গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, দুর্নীতি, দুর্ভিক্ষ ও নিশ্চিতভাবেই বাহাত্তরের সংবিধান, যা বাকশাল প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল—এসবের জন্য তার দল ও পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চান। শেখ-কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কথাও তাদের স্বীকার করা, ক্ষমা চাওয়া এবং এ জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত (শেখ মুজিবকে একজন ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসের পাত্র বানিয়েছিলেন তিনি)। তাদের আরও উচিত, মুজিববাদী রাজনীতি ও শেখ পরিবারের বন্দনা পরিহার করা।

কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে শেখের ছবি সরানো হয়েছে (কর্মকর্তারা সরিয়েছেন, যদিও তা হয়েছে); যে শাসন মেয়ে করেছেন ফ্যাসিবাদী বাবার নামে ও তার একাত্তর-পরবর্তী চেতনার কথা বলে। তার বাবাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল, কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে তাদের দুজনের ছবি, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলেছেন।

কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এ গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না। আমরা এখানে এসেছি, ঐতিহাসিক অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো দূর করতে। মনে রাখতে হবে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের। আবার, কোনো মুক্তিযোদ্ধাও যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন, তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত।

স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন বলেই তাদের (একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করা মুক্তিযোদ্ধাদের) এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের উচিত, শাসক পরিবারগুলোকে দেবতুল্য করা ও সেই ক্ষমতাসীন পরিবারগুলোর সবকিছু নিজেদের বলে মনে করা—এ থেকে বেরিয়ে আসা। ’৪৭ ও ’৭১-এর পাশাপাশি জুলাইয়ের চেতনা আমাদের সবার স্মৃতিতে থাকুক অম্লান!