ঢাকা ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হেফাজতকে ‘পেতে চায়’ বিএনপি-জামায়াত

একাত্তরে বয়স ৪-৫ বছর তারাও মুক্তিযোদ্ধা

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৪৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • 41

আজকের প্রত্রিকাগুলো

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

কালবেলা:

একাত্তরে বয়স ৪-৫ বছর তারাও মুক্তিযোদ্ধা
ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুরের সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। তার জন্ম ১৯৬৬ সালের ১৬ জুন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর ৯ মাস। নোয়াখালীর খেপুপাড়ার সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২ এপ্রিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় চার বছর এক মাস বয়স ছিল তার। এত অল্প বয়সেও তারা মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। এই দুজনের মতো মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ২৭ জন সাব-রেজিস্ট্রার এখনো কর্মরত। মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে কর্মস্থলে তাদের রয়েছে ব্যাপক আধিপত্য। প্রভাবশালী এসব কর্মকর্তা পদায়ন বাগিয়েছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে।

২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে ১৯০ জন মুজিবনগর সরকারের কর্মচারীকে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগের লক্ষ্যে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৯০ কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৩০ জনকে প্রকৃত মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে চিহ্নিত করে। তবে তৎকালীন আইন সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে এই যাচাই-বাছাই কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রায় সবাইকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সবাই সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের উদ্যোগে। নিয়োগের তালিকা অনুযায়ী ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্মতারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল অনেক। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের বয়স ছিল ৪ থেকে ৬ বছর। জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন অধিদপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।

দৈনিক সংগ্রাম:

উপদেষ্টা পরিষদে নেই উত্তরবঙ্গের কেউ, ফুঁসে উঠেছে রংপুরের ছাত্র-জনতা

অন্তর্বর্তী সরকারে রংপুর বিভাগ থেকে উপদেষ্টা না রাখাকে ‘চরম বৈষম্য’ দাবি করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে রংপুরের ছাত্র-জনতা। অবিলম্বে রংপুর থেকে উপদেষ্টা নিয়োগসহ সকল বৈষম্য দূর করতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। অন্যথায় রংপুরকে অচল করতে ‘উত্তরবঙ্গ ব্লকেড’ কর্মসূচিসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড আখতার হোসেন ও সারজিস আলমসহ উত্তরবঙ্গ থেকে অন্তত ১০ জনকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ দেওয়ার দাবিও জানান তারা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত উত্তরবঙ্গের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। আমাদের অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষেরা আন্দোলন সংগ্রাম করে, জীবন দেওয়ার পরও কেন বৈষম্যের শিকার? শুধু কি চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-ঢাকাসহ দক্ষিণ অঞ্চল থেকে উপদেষ্টা খুঁজে পাওয়া যায়, রংপুর-রাজশাহী বিভাগ থেকে কেন উপদেষ্টা রাখা হচ্ছে না? কাদের ইশারায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত ও বিতর্কিতরা উপদেষ্টা হচ্ছেন। আর কারাই বা রংপুরকে পেছনে ফেলে রাখার ষড়যন্ত্র করছেন, তা উত্তরবঙ্গের মানুষ জানতে চায়।

ছাত্র-নেতারা আরও বলেন, আবু সাঈদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টা রংপুর সফরে এসে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে রংপুর বিভাগকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতায় এখন আজ ভিন্ন। দফায় দফায় উপদেষ্টা নিয়োগ হলেও আবু সাঈদের অঞ্চল থেকে এখন পর্যন্ত একজনও নেই। অথচ জুলাই বিপ্লবের টার্নিং পয়েন্টে ছিল রংপুর থেকে গড়ে উঠা আন্দোলন-সংগ্রাম।

সমকাল:

হেফাজতকে ‘পেতে চায়’ বিএনপি-জামায়াত
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা আর নিপীড়নের গ্যাঁড়াকলে পড়ে এক পর্যায়ে চুপসে গিয়েছিল আলোচিত ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আবারও মাঠে সক্রিয় সংগঠনটি। নানা ইস্যুতে তারা পালন করছে বিভিন্ন কর্মসূচি। সারাদেশে সংগঠনটির বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক থাকায় মাঠ পর্যায়ে দাপট দেখানোর পাশাপাশি বড় ভোট ব্যাংকও আছে তাদের। ফলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হেফাজতের মন জয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সূত্র বলছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা চলছে।

রাজধানীর শাপলা চত্বরের সেই ঘটনা এখনও তাড়া করে ফেরে হেফাজতে ইসলামকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীর নামে মামলা, ধরপাকড়সহ নির্যাতনের বিষয়টি ভুলতে পারছে না সংগঠনটি। হেফাজত নেতারা বলছেন, যেসব রাজনৈতিক দল তাদের ১৩ দফা দাবিকে গুরুত্ব দেবে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেবে এবং ইসলামবিরোধী অবস্থান নেবে না বলে অঙ্গীকার করবে– শুধু তাদের পক্ষেই সমর্থন থাকবে।

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে রাজধানীতে ৫৪টিসহ সারাদেশে ৮৩ মামলা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নাম ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয়সহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে নাশকতা, ভাঙচুর, অবরোধ ও দাঙ্গার অভিযোগে হেফাজত কর্মীদের নামে ২০৩ মামলা হয়।
হেফাজতের একটি সূত্র জানায়, আপাতত বিভিন্ন ইস্যুতে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংগঠনের নেতাকর্মীকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি শক্তি দেখানোর কৌশল নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। রাজনৈতিক দল না হলেও দেশে একটি ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চায় সংগঠনটি।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
তবে হেফাজত নেতাকর্মীর নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারে কোনো উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে হেফাজতে রয়েছে অসন্তোষ। পরিস্থিতি বুঝে এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। এক সময় হেফাজতের আমির আহমদ শফীর হাটহাজারী মাদ্রাসা (জমিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম) থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হতো সংগঠনটির মূল কার্যক্রম। তাঁর মৃত্যুর পর হয়েছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। হেফাজতের বর্তমান আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসার রেক্টর। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এই মাদ্রাসা থেকেই আসে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। সংগঠনের কার্যক্রমকে করা হয়েছে ঢাকামুখীও। মীর নাছিরসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা হাটহাজারীতে আহমদ শফীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রামের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের একজন মীর নাছিরের ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। হেফাজতের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে মীর হেলালের নানা-নাতির সম্পর্ক। তাঁর চাচার শ্বশুর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। এই সম্পর্ককেও কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু বিএনপি নয়, বিরোধী মতের অন্যান্য রাজনৈতিক দল ছাড়াও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীকে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এ রকম সব রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিএনপি সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করছে। একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চাইছে। হেফাজতের সঙ্গেও আমাদের কথা হচ্ছে। হেফাজতের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। শিগগির আমরা ফটিকছড়িতে গিয়ে আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা বলব।’
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক নেতা জানিয়েছেন, জামায়াত রাজনৈতিক দল। হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্ল্যাটফর্ম। তবে তাদের বিভিন্ন দাবির সঙ্গে জামায়াতের দাবিরও অনেক সামঞ্জস্য আছে। আবার তারা যেমন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়েছিল। আমরাও নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এসব মিল বা বিষয় স্বাভাবিকভাবে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের পথকে সুগম করেছে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা হচ্ছে। ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।

কালের কন্ঠ:

দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে

বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি এবং সরকারের ভূমিকা ও কিছু সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলো অবস্থান নেওয়ায় এই মতভেদ তৈরি হয়েছে।

মাসখানেকের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংসদ নির্বাচন, সংবিধান বাতিল, রাষ্ট্র সংস্কার, রাষ্ট্রপতির অপসারণ, আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ—মোটা দাগে এই কয়টি বিষয় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বেশ মতবিরোধ কাজ করছে।

কয়েকটি বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতের বেশ অমিল দেখা যাচ্ছে।

ফলে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের প্রতি আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ গত রবিবার যে তিনজন নতুন উপদেষ্টা শপথ নিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়টিতে সরকারের সঙ্গে দলগুলোর বড় ধরনের মতবিরোধ তৈরি করেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

প্রথম আলো:

মিটার বাণিজ্যে সাবেক মন্ত্রীর ‘ভাই–বন্ধু’ চক্র
বিদ্যুৎ খাতে সাড়ে চার কোটির বেশি গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল গত আওয়ামী লীগ সরকার। একে একে ছয়টি বিতরণ সংস্থা মিটার আমদানি করতে থাকে। এ নিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়। আর এ বাণিজ্যের পুরোটার নিয়ন্ত্রণ নেয় সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ‘ভাই-বন্ধু’ চক্র।

ছয়টির মধ্যে চারটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার প্রিপেইড মিটার কেনার তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও মিটার আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু মিটার কেনা হয়েছে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করে। আর কিছু কেনা হয়েছে উন্মুক্ত দরপত্র ডেকে। তবে অভিযোগ আছে, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তাঁর বারিধারার বাসায় বসে ঠিকাদার চূড়ান্ত করে দিতেন। এরপর দরপত্র ডেকে কাজ দেওয়া হতো ওই ঠিকাদারের কোম্পানিকে।

প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১০ সালে। মিটার সরবরাহ বাড়তে থাকে ২০২০ সালের পর। চীনের তিনটি কোম্পানি সেনজেন স্টার, হেক্সিং ও ওয়াসিয়ন গ্রুপ একটি চক্রে যুক্ত হয়ে সব মিটার সরবরাহ করে। মিটার–বাণিজ্যের নামে টাকা পাচারেরও অভিযোগ আছে এ চক্রের বিরুদ্ধে। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধন পরিদপ্তর থেকে মিটার সরবরাহে যুক্ত একাধিক স্থানীয় কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। এসব কোম্পানিতে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।

আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০১৯ সালে নেসকোতে মিটার সরবরাহের কাজ পায় ‘অকুলিন টেক’ নামের একটি কোম্পানি। চীনের সেনজেন স্টারের সঙ্গে যৌথভাবে ১০৭ কোটি টাকার এই কাজ পায় তারা। এরপর ২০২১ সালে তারা আবার নেসকোতে পায় প্রায় ৯২ কোটি টাকার কাজ। আর নেসকোতে কাজের অভিজ্ঞতা সনদ নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) মিটার সরবরাহের কাজ নেয় অকুলিন। এখানে আরও বড় বাণিজ্য করে তারা।

নেসকোর একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তাদের কাজ দিতে তৎকালীন বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস চাপ প্রয়োগ করেন নেসকোর বোর্ডকে। কায়কাউস পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, দায়িত্ব পান মুখ্য সচিবের। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

উপদেষ্টাদের নিয়ে ক্ষোভ ছাত্রদের

অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-জনতার মতামত না নিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করে- এমন কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে মেনে নেওয়া হবে না বলেও এসব বিক্ষোভ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সবচেয়ে বড় মশকরা হচ্ছে ছাত্রদের সঙ্গে। ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে যে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে তাদের চাওয়া বা আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি ব্যক্তিদের আমরা উপদেষ্টা পরিষদে দেখতে চাই না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা একযোগে এই কর্মসূচি পালন করেন।

নয়াদিগন্ত:

রিয়াদে আরব-ইসলামী শীর্ষ সম্মেলন শুরু
গাজা-লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ দাবি সৌদির
গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। রিয়াদে আরব ও মুসলিম নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। আলজাজিরা জানায়, গতকাল সোমবার আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সঙ্ঘটিত গণহত্যার নিন্দা করেছেন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি ক্রাউন প্রিন্স। তিনি ইসরাইলকে ‘আর কোনো আগ্রাসন থেকে বিরত থাকার’ আহ্বান জানান এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

একইভাবে লীগ অব আরব স্টেটস বা আরব লীগের সেক্রেটারি জেনারেল আহমদ আবুল গায়ছ গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়; ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের গৃহীত পদক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টা ক্ষুণ করছে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই আমরা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইলি সহিংসতার প্রতি ‘বিশ্ব চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।’
সৌদি প্রেস এজেন্সি বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ আরব ও ইসলামিক নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতে অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে আগ্রাসন বন্ধ করা, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সহায়তা প্রদান, চলমান হামলা বন্ধ করতে এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।
এ সম্মেলন গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত অক্টোবরের শেষ দিকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগে একটি ‘আন্তর্জাতিক জোটের’ প্রথম বৈঠকের সময় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকালের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল।

মানবজমিন:

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্য নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। ২৪ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের অন্তত ১৩ জনের জন্মস্থান চট্টগ্রাম বিভাগে। এই ১৩ উপদেষ্টার দপ্তর-উপ দপ্তরেও তাদের নিজস্ব এলাকার ব্যক্তিদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগের রয়েছেন ৭ জন। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কেউ উপদেষ্টা পরিষদে নেই। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের একজন করে আছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা জেলা থেকে উপদেষ্টা হয়েছেন বেশি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেই এই বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমন বৈষম্য দূর করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে।

রাজনৈতিক সরকারের সময়েও মন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগ ও অঞ্চল বিবেচনা করে নিয়োগ দেয়া হয় যাতে সব অঞ্চল ও এলাকার প্রতিনিধিত্ব থাকে। কিন্তু অন্তর্বর্র্র্র্র্র্র্র্তীকালীন সরকারে এক্ষেত্রে বড় বৈষম্য তৈরি হয়েছে অঞ্চল বিবেচনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপদেষ্টা পরিষদে এই অঞ্চল বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা; অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই! তার উপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে!’

যুগান্তর:

বাজার থেকে উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল
খোলা তেলের দাম বাড়ায় বোতলজাত তেল ঢালা হচ্ছে খোলা ড্রামে
রোজা যত ঘনিয়ে আসছে, ভোজ্যতেলের বাজারে অসাধু চক্রের কারসাজি তত বাড়ছে। কোমর বেঁধে সক্রিয় হচ্ছে সেই পুরোনো সিন্ডিকেট। পরিস্থিতি এমন-রোজা শুরুর চার মাস আগেই কোম্পানিগুলো মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে। এতে ডিলার থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে বাড়ানো হচ্ছে দাম।

তবে বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। এতে বাজার থেকে এক প্রকার উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে খোলাবাজারে। সোমবার রাজধানীর বেশকয়েকটি বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে তেলের দাম সহনীয় রাখতে ১৭ অক্টোবর পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা কার্যকর থাকবে। তবে মাসের ব্যবধানে লিটারে ২০ টাকা বেড়ে খোলা সয়াবিন খুচরা বাজারে ১৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর লিটারে ৩ টাকা বেড়ে বোতলজাত বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা। সঙ্গে ১৫ দিনের ব্যবধানে পাম তেল ও রাইসব্রান তেলের দামও লিটারে ৬ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে আসন্ন রোজায় বাজার আরও অস্থির হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানে বাড়তি দরেই ভোজ্যতেল কিনতে হবে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

যুদ্ধবিরতিতে গেল ইসরায়েল-লেবাননি গোষ্ঠী

হেফাজতকে ‘পেতে চায়’ বিএনপি-জামায়াত

একাত্তরে বয়স ৪-৫ বছর তারাও মুক্তিযোদ্ধা

আপডেট সময় ০৭:৪৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

কালবেলা:

একাত্তরে বয়স ৪-৫ বছর তারাও মুক্তিযোদ্ধা
ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুরের সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। তার জন্ম ১৯৬৬ সালের ১৬ জুন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর ৯ মাস। নোয়াখালীর খেপুপাড়ার সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২ এপ্রিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় চার বছর এক মাস বয়স ছিল তার। এত অল্প বয়সেও তারা মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। এই দুজনের মতো মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ২৭ জন সাব-রেজিস্ট্রার এখনো কর্মরত। মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে কর্মস্থলে তাদের রয়েছে ব্যাপক আধিপত্য। প্রভাবশালী এসব কর্মকর্তা পদায়ন বাগিয়েছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে।

২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে ১৯০ জন মুজিবনগর সরকারের কর্মচারীকে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগের লক্ষ্যে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৯০ কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৩০ জনকে প্রকৃত মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে চিহ্নিত করে। তবে তৎকালীন আইন সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে এই যাচাই-বাছাই কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রায় সবাইকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সবাই সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের উদ্যোগে। নিয়োগের তালিকা অনুযায়ী ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্মতারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল অনেক। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের বয়স ছিল ৪ থেকে ৬ বছর। জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন অধিদপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।

দৈনিক সংগ্রাম:

উপদেষ্টা পরিষদে নেই উত্তরবঙ্গের কেউ, ফুঁসে উঠেছে রংপুরের ছাত্র-জনতা

অন্তর্বর্তী সরকারে রংপুর বিভাগ থেকে উপদেষ্টা না রাখাকে ‘চরম বৈষম্য’ দাবি করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে রংপুরের ছাত্র-জনতা। অবিলম্বে রংপুর থেকে উপদেষ্টা নিয়োগসহ সকল বৈষম্য দূর করতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। অন্যথায় রংপুরকে অচল করতে ‘উত্তরবঙ্গ ব্লকেড’ কর্মসূচিসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড আখতার হোসেন ও সারজিস আলমসহ উত্তরবঙ্গ থেকে অন্তত ১০ জনকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ দেওয়ার দাবিও জানান তারা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত উত্তরবঙ্গের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। আমাদের অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষেরা আন্দোলন সংগ্রাম করে, জীবন দেওয়ার পরও কেন বৈষম্যের শিকার? শুধু কি চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-ঢাকাসহ দক্ষিণ অঞ্চল থেকে উপদেষ্টা খুঁজে পাওয়া যায়, রংপুর-রাজশাহী বিভাগ থেকে কেন উপদেষ্টা রাখা হচ্ছে না? কাদের ইশারায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত ও বিতর্কিতরা উপদেষ্টা হচ্ছেন। আর কারাই বা রংপুরকে পেছনে ফেলে রাখার ষড়যন্ত্র করছেন, তা উত্তরবঙ্গের মানুষ জানতে চায়।

ছাত্র-নেতারা আরও বলেন, আবু সাঈদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টা রংপুর সফরে এসে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে রংপুর বিভাগকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতায় এখন আজ ভিন্ন। দফায় দফায় উপদেষ্টা নিয়োগ হলেও আবু সাঈদের অঞ্চল থেকে এখন পর্যন্ত একজনও নেই। অথচ জুলাই বিপ্লবের টার্নিং পয়েন্টে ছিল রংপুর থেকে গড়ে উঠা আন্দোলন-সংগ্রাম।

সমকাল:

হেফাজতকে ‘পেতে চায়’ বিএনপি-জামায়াত
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা আর নিপীড়নের গ্যাঁড়াকলে পড়ে এক পর্যায়ে চুপসে গিয়েছিল আলোচিত ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আবারও মাঠে সক্রিয় সংগঠনটি। নানা ইস্যুতে তারা পালন করছে বিভিন্ন কর্মসূচি। সারাদেশে সংগঠনটির বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক থাকায় মাঠ পর্যায়ে দাপট দেখানোর পাশাপাশি বড় ভোট ব্যাংকও আছে তাদের। ফলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হেফাজতের মন জয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সূত্র বলছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা চলছে।

রাজধানীর শাপলা চত্বরের সেই ঘটনা এখনও তাড়া করে ফেরে হেফাজতে ইসলামকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীর নামে মামলা, ধরপাকড়সহ নির্যাতনের বিষয়টি ভুলতে পারছে না সংগঠনটি। হেফাজত নেতারা বলছেন, যেসব রাজনৈতিক দল তাদের ১৩ দফা দাবিকে গুরুত্ব দেবে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেবে এবং ইসলামবিরোধী অবস্থান নেবে না বলে অঙ্গীকার করবে– শুধু তাদের পক্ষেই সমর্থন থাকবে।

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে রাজধানীতে ৫৪টিসহ সারাদেশে ৮৩ মামলা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নাম ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয়সহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে নাশকতা, ভাঙচুর, অবরোধ ও দাঙ্গার অভিযোগে হেফাজত কর্মীদের নামে ২০৩ মামলা হয়।
হেফাজতের একটি সূত্র জানায়, আপাতত বিভিন্ন ইস্যুতে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংগঠনের নেতাকর্মীকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি শক্তি দেখানোর কৌশল নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। রাজনৈতিক দল না হলেও দেশে একটি ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চায় সংগঠনটি।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
তবে হেফাজত নেতাকর্মীর নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারে কোনো উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে হেফাজতে রয়েছে অসন্তোষ। পরিস্থিতি বুঝে এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। এক সময় হেফাজতের আমির আহমদ শফীর হাটহাজারী মাদ্রাসা (জমিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম) থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হতো সংগঠনটির মূল কার্যক্রম। তাঁর মৃত্যুর পর হয়েছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। হেফাজতের বর্তমান আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসার রেক্টর। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এই মাদ্রাসা থেকেই আসে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। সংগঠনের কার্যক্রমকে করা হয়েছে ঢাকামুখীও। মীর নাছিরসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা হাটহাজারীতে আহমদ শফীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রামের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের একজন মীর নাছিরের ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। হেফাজতের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে মীর হেলালের নানা-নাতির সম্পর্ক। তাঁর চাচার শ্বশুর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। এই সম্পর্ককেও কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু বিএনপি নয়, বিরোধী মতের অন্যান্য রাজনৈতিক দল ছাড়াও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীকে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এ রকম সব রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিএনপি সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করছে। একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চাইছে। হেফাজতের সঙ্গেও আমাদের কথা হচ্ছে। হেফাজতের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। শিগগির আমরা ফটিকছড়িতে গিয়ে আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা বলব।’
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক নেতা জানিয়েছেন, জামায়াত রাজনৈতিক দল। হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্ল্যাটফর্ম। তবে তাদের বিভিন্ন দাবির সঙ্গে জামায়াতের দাবিরও অনেক সামঞ্জস্য আছে। আবার তারা যেমন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়েছিল। আমরাও নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এসব মিল বা বিষয় স্বাভাবিকভাবে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের পথকে সুগম করেছে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা হচ্ছে। ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।

কালের কন্ঠ:

দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে

বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি এবং সরকারের ভূমিকা ও কিছু সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলো অবস্থান নেওয়ায় এই মতভেদ তৈরি হয়েছে।

মাসখানেকের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংসদ নির্বাচন, সংবিধান বাতিল, রাষ্ট্র সংস্কার, রাষ্ট্রপতির অপসারণ, আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ—মোটা দাগে এই কয়টি বিষয় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বেশ মতবিরোধ কাজ করছে।

কয়েকটি বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতের বেশ অমিল দেখা যাচ্ছে।

ফলে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের প্রতি আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ গত রবিবার যে তিনজন নতুন উপদেষ্টা শপথ নিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়টিতে সরকারের সঙ্গে দলগুলোর বড় ধরনের মতবিরোধ তৈরি করেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

প্রথম আলো:

মিটার বাণিজ্যে সাবেক মন্ত্রীর ‘ভাই–বন্ধু’ চক্র
বিদ্যুৎ খাতে সাড়ে চার কোটির বেশি গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল গত আওয়ামী লীগ সরকার। একে একে ছয়টি বিতরণ সংস্থা মিটার আমদানি করতে থাকে। এ নিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়। আর এ বাণিজ্যের পুরোটার নিয়ন্ত্রণ নেয় সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ‘ভাই-বন্ধু’ চক্র।

ছয়টির মধ্যে চারটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার প্রিপেইড মিটার কেনার তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও মিটার আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু মিটার কেনা হয়েছে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করে। আর কিছু কেনা হয়েছে উন্মুক্ত দরপত্র ডেকে। তবে অভিযোগ আছে, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তাঁর বারিধারার বাসায় বসে ঠিকাদার চূড়ান্ত করে দিতেন। এরপর দরপত্র ডেকে কাজ দেওয়া হতো ওই ঠিকাদারের কোম্পানিকে।

প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১০ সালে। মিটার সরবরাহ বাড়তে থাকে ২০২০ সালের পর। চীনের তিনটি কোম্পানি সেনজেন স্টার, হেক্সিং ও ওয়াসিয়ন গ্রুপ একটি চক্রে যুক্ত হয়ে সব মিটার সরবরাহ করে। মিটার–বাণিজ্যের নামে টাকা পাচারেরও অভিযোগ আছে এ চক্রের বিরুদ্ধে। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধন পরিদপ্তর থেকে মিটার সরবরাহে যুক্ত একাধিক স্থানীয় কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। এসব কোম্পানিতে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।

আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০১৯ সালে নেসকোতে মিটার সরবরাহের কাজ পায় ‘অকুলিন টেক’ নামের একটি কোম্পানি। চীনের সেনজেন স্টারের সঙ্গে যৌথভাবে ১০৭ কোটি টাকার এই কাজ পায় তারা। এরপর ২০২১ সালে তারা আবার নেসকোতে পায় প্রায় ৯২ কোটি টাকার কাজ। আর নেসকোতে কাজের অভিজ্ঞতা সনদ নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) মিটার সরবরাহের কাজ নেয় অকুলিন। এখানে আরও বড় বাণিজ্য করে তারা।

নেসকোর একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তাদের কাজ দিতে তৎকালীন বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস চাপ প্রয়োগ করেন নেসকোর বোর্ডকে। কায়কাউস পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, দায়িত্ব পান মুখ্য সচিবের। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

উপদেষ্টাদের নিয়ে ক্ষোভ ছাত্রদের

অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-জনতার মতামত না নিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করে- এমন কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে মেনে নেওয়া হবে না বলেও এসব বিক্ষোভ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সবচেয়ে বড় মশকরা হচ্ছে ছাত্রদের সঙ্গে। ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে যে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে তাদের চাওয়া বা আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি ব্যক্তিদের আমরা উপদেষ্টা পরিষদে দেখতে চাই না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা একযোগে এই কর্মসূচি পালন করেন।

নয়াদিগন্ত:

রিয়াদে আরব-ইসলামী শীর্ষ সম্মেলন শুরু
গাজা-লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ দাবি সৌদির
গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। রিয়াদে আরব ও মুসলিম নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। আলজাজিরা জানায়, গতকাল সোমবার আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সঙ্ঘটিত গণহত্যার নিন্দা করেছেন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি ক্রাউন প্রিন্স। তিনি ইসরাইলকে ‘আর কোনো আগ্রাসন থেকে বিরত থাকার’ আহ্বান জানান এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

একইভাবে লীগ অব আরব স্টেটস বা আরব লীগের সেক্রেটারি জেনারেল আহমদ আবুল গায়ছ গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়; ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের গৃহীত পদক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টা ক্ষুণ করছে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই আমরা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইলি সহিংসতার প্রতি ‘বিশ্ব চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।’
সৌদি প্রেস এজেন্সি বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ আরব ও ইসলামিক নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতে অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে আগ্রাসন বন্ধ করা, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সহায়তা প্রদান, চলমান হামলা বন্ধ করতে এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।
এ সম্মেলন গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত অক্টোবরের শেষ দিকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগে একটি ‘আন্তর্জাতিক জোটের’ প্রথম বৈঠকের সময় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকালের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল।

মানবজমিন:

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্য নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। ২৪ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের অন্তত ১৩ জনের জন্মস্থান চট্টগ্রাম বিভাগে। এই ১৩ উপদেষ্টার দপ্তর-উপ দপ্তরেও তাদের নিজস্ব এলাকার ব্যক্তিদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগের রয়েছেন ৭ জন। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কেউ উপদেষ্টা পরিষদে নেই। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের একজন করে আছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা জেলা থেকে উপদেষ্টা হয়েছেন বেশি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেই এই বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমন বৈষম্য দূর করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে।

রাজনৈতিক সরকারের সময়েও মন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগ ও অঞ্চল বিবেচনা করে নিয়োগ দেয়া হয় যাতে সব অঞ্চল ও এলাকার প্রতিনিধিত্ব থাকে। কিন্তু অন্তর্বর্র্র্র্র্র্র্র্তীকালীন সরকারে এক্ষেত্রে বড় বৈষম্য তৈরি হয়েছে অঞ্চল বিবেচনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপদেষ্টা পরিষদে এই অঞ্চল বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা; অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই! তার উপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে!’

যুগান্তর:

বাজার থেকে উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল
খোলা তেলের দাম বাড়ায় বোতলজাত তেল ঢালা হচ্ছে খোলা ড্রামে
রোজা যত ঘনিয়ে আসছে, ভোজ্যতেলের বাজারে অসাধু চক্রের কারসাজি তত বাড়ছে। কোমর বেঁধে সক্রিয় হচ্ছে সেই পুরোনো সিন্ডিকেট। পরিস্থিতি এমন-রোজা শুরুর চার মাস আগেই কোম্পানিগুলো মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে। এতে ডিলার থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে বাড়ানো হচ্ছে দাম।

তবে বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। এতে বাজার থেকে এক প্রকার উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে খোলাবাজারে। সোমবার রাজধানীর বেশকয়েকটি বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে তেলের দাম সহনীয় রাখতে ১৭ অক্টোবর পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা কার্যকর থাকবে। তবে মাসের ব্যবধানে লিটারে ২০ টাকা বেড়ে খোলা সয়াবিন খুচরা বাজারে ১৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর লিটারে ৩ টাকা বেড়ে বোতলজাত বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা। সঙ্গে ১৫ দিনের ব্যবধানে পাম তেল ও রাইসব্রান তেলের দামও লিটারে ৬ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে আসন্ন রোজায় বাজার আরও অস্থির হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানে বাড়তি দরেই ভোজ্যতেল কিনতে হবে।