ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদকে নজরদারি কম, বাড়ছে ব্যাপ্তি

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
  • 41

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

সমকাল:

মাদকে নজরদারি কম, বাড়ছে ব্যাপ্তি
রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় গত ৩০ অক্টোবর দুর্বৃত্তদের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় তাদের গুলিতে বাসার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা গৃহবধূ আয়েশা আক্তার প্রাণ হারান। ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে– মাদক কারবারি ফতেহ ও তার ভাই মামুনের সঙ্গে আল ইসলাম ও মোমিন গ্রুপের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বাউনিয়াবাঁধের মাদক বিক্রেতা মামুনের কাছে চাঁদা দাবি করে তাকে জিম্মি করে মোমিনের লোকজন। পরে মোমিন গ্রুপের সদস্যের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার নিরপরাধ গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বস্তি ও ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায়ই প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছে তারা। পল্লবীর মিল্লাত ক্যাম্প, বেগুনটিলা ক্যাম্প ও জুট পট্টিতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর সবচেয়ে বড় মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাদক কারবারিদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হচ্ছে। এতে এ পর্যন্ত অন্তত আটজনের মৃত্যু এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের ঢিলেঢালা নজরদারি ও দুর্বল গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের সুযোগ নিয়ে রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে মাদক কারবারিরা। চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাদক নির্মূলে মনোযোগ পুরোপুরি দেওয়া কঠিন। এই সুযোগে মাদকের ব্যাপ্তি বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা করতে দেখা যাচ্ছে। আবার নতুন নতুন কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকছে মাদক। সীমান্ত এলাকায় প্রায়ই ধরা পড়ছে চালান। সীমান্তের ওপার থেকে আসা নানা ধরনের মাদক ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

প্রথম আলো:

ব্যয়ের বহুগুণ আয়, তবু টোল
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু দুটির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। তিন দশক আগে চালু হওয়া এই সেতু দুটি থেকে সরকার গত আগস্ট পর্যন্ত টোল বাবদ আয় করেছে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এত আয়ের পরও টোল থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের গত আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতীর মতো দেশের ২৬টি সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের বহুগুণ উঠে গেলেও সেগুলোর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর টোল আদায় চলছেই। দু–একটি সেতু বড়, বেশির ভাগই মাঝারি।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেতু ব্যবহারকারীরা টোল আদায় বন্ধের জন্য বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার টোল আদায়ে কোনো ছাড় দেয়নি; বরং এর আগে ২০১৪ সালে ২০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের সব সেতুতে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়।

টোলের কারণে যানবাহনের ভাড়া বেশি পড়ে এবং পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। টোল অনেকটা পরোক্ষ করের মতো, যা গরিবের কাছ থেকে ধনীদের সমান হারে আদায় করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ধনী ও সচ্ছলদের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে আয়করের মতো প্রত্যক্ষ কর আদায় করতে পারেনি। অন্যদিকে বিপুল ব্যয় ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ নানা প্রকল্প নিয়ে সরকারের খরচ অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ব্যয় মেটাতে চাপ তৈরি করা হয়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি ও সারের দাম এবং সেতুর টোল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে সম্ভাব্য সব সড়ক থেকে টোল আদায়ের জন্যও নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

টোলের ক্ষেত্রে আরেকটি দিক হলো, সেতুর ইজারা পান ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। অভিযোগ রয়েছে, টোল আদায় করে ঠিকাদারেরা নিজেরা বেশি লাভবান হয়েছেন। এ কারণে বহু বছর আগে নির্মিত ও তুলনামূলক ছোট সেতু থেকেও টোল আদায় চলছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় অত্যন্ত বেশি। এ জন্য সেসব অবকাঠামোর টোল ধরা হয় উচ্চ হারে, যা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে আর্থসামাজিক সুফল বিবেচনায় অবকাঠামো থেকে টোল নেওয়া হয় না। কারণ, টোল একধরনের পরোক্ষ কর। দেশে পুরোনো সেতুগুলো থেকে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়
জনস্রোতপূর্ণ র‌্যালিতে বিএনপির ঘোষণা – ♦ ষড়যন্ত্র থেমে নেই ♦ স্বৈরাচারের দোসররা দেশে-বিদেশে প্রশাসনে এখনো সক্রিয় ♦ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে

রাজধানী ঢাকায় গতকাল জনস্রোতে উত্তাল এক র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে বিএনপি দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করে বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু করা চলবে না। চলতে দেওয়া হবে না। এ দেশে গণতন্ত্রই হচ্ছে মানুষের শেষ কথা। আর এই গণতন্ত্র ফেরাতে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে র‌্যালিতে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় অস্থায়ী সমাবেশমঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, জহিরউদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মির্জা ফখরুলসহ মঞ্চে থাকা নেতারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সালাম বিনিময় করেন। এরপর র‌্যালি শুরু হয়। র‌্যালিটি নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ গেটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

কালের কন্ঠ:

মানুষ বেচে ওরা কোটিপতি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পারে ছোট্ট এক গ্রাম মানিকপুর। এই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান কখনো নদীতে মাছ ধরে, কখনো বা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে অভাবের ঘর। সন্তানদের মৌলিক চাহিদা মেটাতেই হিমশিম অবস্থা।

তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি রেখে সিদ্দিকুর বেরিয়ে পড়েন একটু সচ্ছল জীবনের খোঁজে। ২০১৩ সালের জুনে পা বাড়িয়েছিলেন মালয়েশিয়ার পথে। বিশ্বাস করে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ধরেছিলেন ইব্রাহিম নকিব নামের স্থানীয় এক দালালের হাত। কিন্তু নকিব তাঁকে নিয়ে যান এক অনিশ্চিত বিপত্সংকুল পথে।

ছয় মাস পর স্ত্রী বিলকিসকে ফোনে জানিয়েছিলেন, বিমানবন্দরের বদলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল টেকনাফে, বিমানের বদলে তুলে দেওয়া হয় গরুর ট্রলারে। বিলকিসের সঙ্গে সেটাই ছিল স্বামীর শেষ কথা। তিনি আর স্বামীর সন্ধান পাননি। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে ১১টি বছর।আজও স্বামীর পথ চেয়ে আছেন।

সম্প্রতি বিলকিস বেগমের জীবনের এই কঠিন ট্র্যাজেডি শুনতে গেলে আশপাশে আরো কিছু মানুষ জড়ো হয়। মানিকপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলছিল, কৃষক সিদ্দিকুর একা নন, তাঁর মতো পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে আরো বহু মানুষকে। আর এই গল্প মানিকপুর ছাড়িয়ে পুরো উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামের। ভাগ্যক্রমে কেউ মালয়েশিয়ায় পৌঁছে যান, অনেকেরই সলিলসমাধি ঘটে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরে।
আবার অনেকের ঠিকানা মাঝপথে মায়ানমার কিংবা থাইল্যান্ডে দালালদের নিষ্ঠুর টর্চার সেলে।

কালবেলা:

কথা দিচ্ছি, আমরা কোনো অপরাধ করব না
জামায়াতে ইসলামী ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ চায় উল্লেখ করে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের প্রধান কাজ হবে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা কোনো অপরাধ করব না। আমরা দুর্নীতি-লুণ্ঠন করব না এবং কাউকে দুর্নীতি-লুণ্ঠন করতে দেব না। আমরা নিজেরা ঘুষ খাই না এবং কাউকে ঘুষ খেতেও দেব না। গতকাল শুক্রবার সকালে নীলফামারী পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা সরকারের দুঃশাসনের কথা উল্লেখ করে জাতায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, একজন শাসক সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। তিনি যখন কথা বলতেন মানুষ বলত, ও হাসিনা আমরা আর হাসি না। তিনি মানুষকে উত্তেজিত করতেন, হাসানোর চেষ্টা করতেন। যেমন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তেমন ছিলেন তার উজির-নাজির। কে কার চেয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলবেন—এই ছিল প্রতিযোগিতা। তারা জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে, তারা জাতির ওপর জুলুম করেছে, মানুষ খুন করেছে, গণহত্যা সংঘটিত করেছে, গুম করে আয়নাঘর তৈরি করেছে, হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে আর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা বাংলাদেশের অফিসগুলো সিলগালা করে দিয়েছে। ঘরের মাঝে বসেও আমরা শান্তি পাইনি। ঘর থেকে ধরে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব ছিল বাংলাদেশের বাস্তবতা। সেই কষ্ট নিয়ে আমরা এ পর্যন্ত এসে দাঁড়িয়েছি।

ভারত সরকারের প্রতি শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবেশীর প্রতি অনুরোধ করব, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। দেড়শর অধিক মামলা। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে, গুমের মামলা আছে। অনেক মামলা তার বিরুদ্ধে আছে। আমাদের বিচারালয় যখন চাইবেন, মেহেরবানি করে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আপনারা তাকে তুলে দেবেন

মানবজমনি:

সার্ভিস চার্জ নিলেও ভ্যাট ফাঁকি সাড়ে ৮ কোটি টাকার

বিনামূল্যের পাঠ্য বই নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। বইয়ের মান, ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছাপার সঙ্গে লুটপাট হয়েছে সরকারি অর্থ। অর্থ লুটের ঘটনা ঘটলেও সময়মতো পৌঁছায়নি পাঠ্যপুস্তক। অনেক স্থানে বই গেছে তিন থেকে চার মাস পর।

২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি পাঠ্য বই ছাপানো হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৪৫ কোটি ৬৪ লাখ ২৮ হাজার ৭৭৩ টাকা। পাঠ্যপুস্তক প্রকাশের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্তারা (এনসিটিবি) সার্ভিস চার্জের বিল নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু এ থেকে কেটে রাখা হয়নি ভ্যাটের অংশ। যার কারণে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৩ টাকা। আওয়ামী লীগের শাসনামলেই এই দুর্নীতির বিষয়টি উঠে আসে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। সংস্থাটি ১১ খাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। এতে দেখা যায় সার্ভিস চার্জের টাকা পকেটে পুরেছেন এনসিটিবি’র সাবেক কর্মকর্তারা। এসবের নেতৃত্ব দিতেন এনসিটিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউর রহমান।

নয়াদিগন্ত:

বিলুপ্ত বা সংস্কার আলোচনায় র‌্যাব

শীর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী ও দুর্ধর্ষ জঙ্গি দমনে এলিট ফোর্স হিসেবে গঠন করা হয়েছিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ২০০৪ সালে গঠিত পুলিশের বিশেষায়িত এই বাহিনীর ভালো কাজের পাশাপাশি রয়েছে নানা সমালোচনাও। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের গুমের পর আয়নাঘরে অথবা র‌্যাবের গুমঘরে বছরের পর বছর আটকে রাখা এবং বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডে এই সংস্থা জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আলোচনা আছে এসব ঘটনার পর র‌্যাব বিলুপ্ত করে নতুন করে বাহিনী তৈরি করা হবে না কি সংস্কার করে নতুনভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের নিযুক্ত করা হবে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গুমের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার গুম নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হয়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত দেড় দশকে মানুষকে তুলে নিয়ে গুমের ঘটনায় এক হাজার ৬০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কমিশন। এ কাজ করতে গিয়ে জোরপূর্বক মানুষকে তুলে নিয়ে দীর্ঘদিন আটকে রাখা হতো, এমন আটটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে তারা। কমিশনের ভাষ্যমতে, র‌্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা এসব গুমের ঘটনায় জড়িত। কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যে ৪০০টি ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে, সেখানে ১৭২টি ঘটনায় র‌্যাবের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কার অভিযোগগুলো তাদের কাছে এসেছে। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬০০-এর বেশি অভিযোগ পেয়েছেন তারা। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগগুলো দেয়া হয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত ১৪০ জন অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করা এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যারা শীর্ষে অবস্থান করেছে, অতীতে তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা এবং মাদকসহ দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার প্রশ্নে র‌্যাবের বেশ কিছু ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। আমাদের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা মানুষের আদর্শিক চর্চায় ভিন্নতা, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা তৈরি করা প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও র‌্যাবের ভূমিকা রয়েছে।

তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা, গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করা, বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে র‌্যাবের ইতিবাচক বহু উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু একটি বাহিনী বিতর্কিত, সমালোচিত হওয়ার যে দায়, সেটি শুধু বাহিনীর একক দায় নয়। বরং যে বা যারা সরকারে থাকেন, দায়িত্বে থাকেন তারা কিভাবে বাহিনীটিকে পরিচালিত করেছেন তার ওপর নির্ভর করে একটি বাহিনীর মানুষের কাছে তার প্রশংসা বা সুনামের অবস্থানে অবস্থান করবে, নাকি সেটি সমালচনা আলোচনার জন্ম দিবে।

তিনি আরো বলেন, র‌্যাবের প্রসঙ্গে গুমের প্রসঙ্গ বা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ, এসব কাজ করতে গিয়ে আর্থিক যে লেনদেনের অভিযোগ, রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী ব্যক্তির দখল বাণিজ্যের শক্তি হিসেবে কাজ করার অভিযোগগুলো আছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই অভিযোগগুলো বিভিন্ন সময়ে এটাও লক্ষ্য করা যায় যে, ওই অভিযোগগুলো বিভিন্নভাবে কেউ কেউ প্রভাবিত হয়েও এসব অভিযোগ দিয়ে থাকেন। এই অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যে তদন্ত কোনোভাবে প্রভাবিত হবে না। সত্যিকার অর্থে র‌্যাবের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা যে অভিযোগগুলো করছেন বাস্তব অর্থে এর নিরীক্ষা প্রয়োজন। তার ভিত্তিতে র‌্যাবকে একটি বিধির মধ্যে রেখে বাস্তবিক অর্থে আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার প্রশ্নে যে বিশেষ পদক্ষেপগুলো র‌্যাবের মাধ্যমে পরিচালনা করা সম্ভব বা উচিত সেই প্রেক্ষাপটগুলোকে কিভাবে পরিকল্পনামাফিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সেইগুলো কিন্তু থাকা প্রয়োজন। আমাদের এখানে যে অভিযোগগুলো আছে, অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়াটা সমাধান নয়। বরং অভিযোগগুলো যাতে না আসে, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে র‌্যাবের ভূমিকাকে আরো বেশি জোরালো করা এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেই অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সংস্কারের মধ্য দিয়ে র‌্যাবের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত এবং চর্চা করার সুযোগ এবং সেই প্রেক্ষাপট বা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অথবা মানুষের মত প্রকাশের যে অধিকার কিংবা স্বাভাবিক জীবন যাপনের নিশ্চয়তার যে অধিকার কিংবা অপরাধীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যে ভূমিকা এই প্রসঙ্গগুলোতে কিন্তু র‌্যাব ভালো কাজ করার উদাহরণ রেখেছে। তো সংস্কার করে কাজের গতিকে আরো বেশি ত্বরান্বিত করা সম্ভব। আর অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে র‌্যাব এই সমালোচনা কিংবা বিতর্কিত অবস্থান থেকে সে বেরিয়ে এসে ইতিবাচকভাবে ভূমিকা পালন করার সুযোগ তৈরি হবে।

য়ুগান্তর:

খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকা
ব্যাংক খাতে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা, ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা বেড়েছে * সরকার পতনের পর জালিয়াতির তথ্য প্রকাশিত হলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বেআওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় খেলাপি ঋণ বেপরোয়া গতিতে বেড়েছে। আর্থিক খাতে সুশাসন না থাকায় ব্যাপকভাবে বড় বড় জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের প্রায় সবই খেলাপি হয়ে গেছে। যে কারণে মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। ২০০৯ সালের শুরু থেকে গত জুন পর্যন্ত ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাতে বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় বেড়েছে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে খেলাপি ঋণের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ব্যাংকাররা মনে করেন, খেলাপি বৃদ্ধির প্রকৃত অবস্থা এই চিত্রের চেয়েও বেশি ভয়াবহ। কারণ খেলাপির প্রকৃত চিত্র এতে ফুটে ওঠেনি। অনেকে ঋণখেলাপি হওয়ার যোগ্য হলেও তা খেলাপি করা হয়নি। নিয়মের বেড়াজালে প্রলেপ দিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এখন সেগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে ২০০৯ সালের শুরুতে। তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় ছিল। ওই সময়ে আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণে আওয়ামী লীগ সরকারের দায় রয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০০৯ সালের শুরুতে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাড়ে ৮ গুণ বেড়েছে।

ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বা ২০০৯ সালের শুরুতে খেলাপি ঋণ ছিল ৭১০ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৫ গুণ।

দৈনকি সংগ্রাম:

গাজায় নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু————জাতিসংঘ
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলী হামলায় নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর। শুক্রবার এ বিষয়ে একটি ৩২ পৃষ্ঠার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাটি। যাতে উঠে এসেছে এই মর্মান্তিক চিত্র। যুদ্ধে এভাবে অকাতরে নারী এবং শিশু হত্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মৌলিক নীতির পরিপন্থি বলে অভিহিত করা হয়েছে। রয়টার্স, আল জাজিরা।

এতে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইল হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা করেছে তা গণনা করেছে জাতিসংঘ। যা তিনটি সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে তারা। এখনও গণনা অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের ইতিমধ্যেই ১৩ মাস সময় পার হয়েছে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী ৮ হাজার ১১৯ জনের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৩ হাজার। তুলনামূলকভাবে জাতিসংঘের উল্লিখিত সংখ্যা কম হলেও সংস্থাটি উল্লেখ করেছে যে, গাজায় নিহতদের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় যে পরিমাণ নারী এবং শিশু হত্যা করা হয়েছে তাতে স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো হিসাব-নিকাশের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ও নিরপেক্ষ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে জাতিসংঘ। সংস্থাটির এই পরিসংখ্যানের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে কম বয়সী থেকে একদম সর্বোচ্চ ৯৭ বছর বয়সী এক নারীও রয়েছে। রয়েছে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকও। ১৮ বছরের নিচে যেসকল শিশু নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৪ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছর। ইসরাইলের হামলায় গোটা গাজার বাসিন্দারা কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যার মাধ্যমে যুদ্ধ ক্ষেত্রে বেসামরিকদের ক্ষেত্রে সতর্কতার তীব্র অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইসরাইলের প্রতি হামলায় পাঁচের অধিক নারী বা শিশু নিহত হওয়ার ঘটনা প্রায় ৮৮ শতাংশ। এতে ধারণা করা যায় যে ইসরাইল তাদের প্রতিটি হামলায় ভয়াবহ মরণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। যদিও ইসরাইল এসব হত্যাকা-কে ‘অসাবধানতাবশত মৃত্যু’ বলে বর্ণনা করেছে।

দেশরুপান্তর:

৯০ শতাংশ নতুনে ঢাকায় দিশাহীন পুলিশ
পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) ক্ষিতিশ সরকার। সদ্যই যোগ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরের ডেভেলপমেন্ট শাখায়। সম্প্রতি ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে বের হয়ে রওনা হন গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ের দিকে। সেখান থেকে হাঁটা পথে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব হলেও মিন্টো রোডে ঢুকতেই এক পথচারীকে থামিয়ে বলছিলেন, ‘ডিবি কার্যালয় কোন দিকে? আমি ডিবি কার্যালয়ে যাব।’ টানা দীর্ঘ সময় ঘুরেফিরে ঢাকার বাইরে কর্মস্থল হওয়ায় পরিদর্শক ক্ষিতিশ তেমন পরিচিত নন রাজধানীর সড়ক ও অলিগলির সঙ্গে।

শুধু এ পুলিশ কর্মকর্তাই নন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিএমপিতে যোগ দেওয়া ৯০ শতাংশ সদস্যরই কর্মস্থল দীর্ঘদিন ছিল ঢাকার বাইরে। তারা চেনেন না রাজধানীর অলিগলি। আর রাস্তাঘাট তেমনটা না চেনায় আসমি ধরা বা মামলার তদন্তের কাজে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে থানা পুলিশের সদস্যদের। প্রায় একই চিত্র ট্রাফিক পুলিশেও। বেশিরভাগ সদস্যেরই রাজধানীতে এর আগে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় যান চালচল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে রাজধানীর সড়কে এখনো ফেরেনি শৃঙ্খলা। সব মিলিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাস পার হতে চললেও এখনো রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।

ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর একযোগে সিংহভাগ পুলিশ সদস্যের বদলির পর এখনো পূর্ণ জনবল বুঝে পায়নি ঢাকার থানাগুলো। সর্বস্তরে যাদের বদলি করে আনা হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ঢাকায় একেবারে নতুন। একদিকে কম জনবল, অন্যদিকে ঢাকার বাস্তবতায় অনভিজ্ঞ পুলিশ সদস্যদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। এতে করে মহানগরীতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে দ্রুতই এ সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী পুলিশ কর্মকর্তারা।

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদকে নজরদারি কম, বাড়ছে ব্যাপ্তি

আপডেট সময় ০৭:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

সমকাল:

মাদকে নজরদারি কম, বাড়ছে ব্যাপ্তি
রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় গত ৩০ অক্টোবর দুর্বৃত্তদের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় তাদের গুলিতে বাসার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা গৃহবধূ আয়েশা আক্তার প্রাণ হারান। ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে– মাদক কারবারি ফতেহ ও তার ভাই মামুনের সঙ্গে আল ইসলাম ও মোমিন গ্রুপের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বাউনিয়াবাঁধের মাদক বিক্রেতা মামুনের কাছে চাঁদা দাবি করে তাকে জিম্মি করে মোমিনের লোকজন। পরে মোমিন গ্রুপের সদস্যের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার নিরপরাধ গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বস্তি ও ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায়ই প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছে তারা। পল্লবীর মিল্লাত ক্যাম্প, বেগুনটিলা ক্যাম্প ও জুট পট্টিতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর সবচেয়ে বড় মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাদক কারবারিদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হচ্ছে। এতে এ পর্যন্ত অন্তত আটজনের মৃত্যু এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের ঢিলেঢালা নজরদারি ও দুর্বল গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের সুযোগ নিয়ে রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে মাদক কারবারিরা। চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাদক নির্মূলে মনোযোগ পুরোপুরি দেওয়া কঠিন। এই সুযোগে মাদকের ব্যাপ্তি বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা করতে দেখা যাচ্ছে। আবার নতুন নতুন কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকছে মাদক। সীমান্ত এলাকায় প্রায়ই ধরা পড়ছে চালান। সীমান্তের ওপার থেকে আসা নানা ধরনের মাদক ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

প্রথম আলো:

ব্যয়ের বহুগুণ আয়, তবু টোল
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু দুটির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। তিন দশক আগে চালু হওয়া এই সেতু দুটি থেকে সরকার গত আগস্ট পর্যন্ত টোল বাবদ আয় করেছে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এত আয়ের পরও টোল থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের গত আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতীর মতো দেশের ২৬টি সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের বহুগুণ উঠে গেলেও সেগুলোর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর টোল আদায় চলছেই। দু–একটি সেতু বড়, বেশির ভাগই মাঝারি।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেতু ব্যবহারকারীরা টোল আদায় বন্ধের জন্য বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার টোল আদায়ে কোনো ছাড় দেয়নি; বরং এর আগে ২০১৪ সালে ২০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের সব সেতুতে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়।

টোলের কারণে যানবাহনের ভাড়া বেশি পড়ে এবং পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। টোল অনেকটা পরোক্ষ করের মতো, যা গরিবের কাছ থেকে ধনীদের সমান হারে আদায় করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ধনী ও সচ্ছলদের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে আয়করের মতো প্রত্যক্ষ কর আদায় করতে পারেনি। অন্যদিকে বিপুল ব্যয় ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ নানা প্রকল্প নিয়ে সরকারের খরচ অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ব্যয় মেটাতে চাপ তৈরি করা হয়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি ও সারের দাম এবং সেতুর টোল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে সম্ভাব্য সব সড়ক থেকে টোল আদায়ের জন্যও নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

টোলের ক্ষেত্রে আরেকটি দিক হলো, সেতুর ইজারা পান ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। অভিযোগ রয়েছে, টোল আদায় করে ঠিকাদারেরা নিজেরা বেশি লাভবান হয়েছেন। এ কারণে বহু বছর আগে নির্মিত ও তুলনামূলক ছোট সেতু থেকেও টোল আদায় চলছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় অত্যন্ত বেশি। এ জন্য সেসব অবকাঠামোর টোল ধরা হয় উচ্চ হারে, যা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে আর্থসামাজিক সুফল বিবেচনায় অবকাঠামো থেকে টোল নেওয়া হয় না। কারণ, টোল একধরনের পরোক্ষ কর। দেশে পুরোনো সেতুগুলো থেকে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়
জনস্রোতপূর্ণ র‌্যালিতে বিএনপির ঘোষণা – ♦ ষড়যন্ত্র থেমে নেই ♦ স্বৈরাচারের দোসররা দেশে-বিদেশে প্রশাসনে এখনো সক্রিয় ♦ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে

রাজধানী ঢাকায় গতকাল জনস্রোতে উত্তাল এক র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে বিএনপি দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করে বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু করা চলবে না। চলতে দেওয়া হবে না। এ দেশে গণতন্ত্রই হচ্ছে মানুষের শেষ কথা। আর এই গণতন্ত্র ফেরাতে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে র‌্যালিতে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় অস্থায়ী সমাবেশমঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, জহিরউদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মির্জা ফখরুলসহ মঞ্চে থাকা নেতারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সালাম বিনিময় করেন। এরপর র‌্যালি শুরু হয়। র‌্যালিটি নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ গেটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

কালের কন্ঠ:

মানুষ বেচে ওরা কোটিপতি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পারে ছোট্ট এক গ্রাম মানিকপুর। এই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান কখনো নদীতে মাছ ধরে, কখনো বা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে অভাবের ঘর। সন্তানদের মৌলিক চাহিদা মেটাতেই হিমশিম অবস্থা।

তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি রেখে সিদ্দিকুর বেরিয়ে পড়েন একটু সচ্ছল জীবনের খোঁজে। ২০১৩ সালের জুনে পা বাড়িয়েছিলেন মালয়েশিয়ার পথে। বিশ্বাস করে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ধরেছিলেন ইব্রাহিম নকিব নামের স্থানীয় এক দালালের হাত। কিন্তু নকিব তাঁকে নিয়ে যান এক অনিশ্চিত বিপত্সংকুল পথে।

ছয় মাস পর স্ত্রী বিলকিসকে ফোনে জানিয়েছিলেন, বিমানবন্দরের বদলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল টেকনাফে, বিমানের বদলে তুলে দেওয়া হয় গরুর ট্রলারে। বিলকিসের সঙ্গে সেটাই ছিল স্বামীর শেষ কথা। তিনি আর স্বামীর সন্ধান পাননি। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে ১১টি বছর।আজও স্বামীর পথ চেয়ে আছেন।

সম্প্রতি বিলকিস বেগমের জীবনের এই কঠিন ট্র্যাজেডি শুনতে গেলে আশপাশে আরো কিছু মানুষ জড়ো হয়। মানিকপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলছিল, কৃষক সিদ্দিকুর একা নন, তাঁর মতো পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে আরো বহু মানুষকে। আর এই গল্প মানিকপুর ছাড়িয়ে পুরো উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামের। ভাগ্যক্রমে কেউ মালয়েশিয়ায় পৌঁছে যান, অনেকেরই সলিলসমাধি ঘটে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরে।
আবার অনেকের ঠিকানা মাঝপথে মায়ানমার কিংবা থাইল্যান্ডে দালালদের নিষ্ঠুর টর্চার সেলে।

কালবেলা:

কথা দিচ্ছি, আমরা কোনো অপরাধ করব না
জামায়াতে ইসলামী ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ চায় উল্লেখ করে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের প্রধান কাজ হবে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা কোনো অপরাধ করব না। আমরা দুর্নীতি-লুণ্ঠন করব না এবং কাউকে দুর্নীতি-লুণ্ঠন করতে দেব না। আমরা নিজেরা ঘুষ খাই না এবং কাউকে ঘুষ খেতেও দেব না। গতকাল শুক্রবার সকালে নীলফামারী পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা সরকারের দুঃশাসনের কথা উল্লেখ করে জাতায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, একজন শাসক সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। তিনি যখন কথা বলতেন মানুষ বলত, ও হাসিনা আমরা আর হাসি না। তিনি মানুষকে উত্তেজিত করতেন, হাসানোর চেষ্টা করতেন। যেমন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তেমন ছিলেন তার উজির-নাজির। কে কার চেয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলবেন—এই ছিল প্রতিযোগিতা। তারা জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে, তারা জাতির ওপর জুলুম করেছে, মানুষ খুন করেছে, গণহত্যা সংঘটিত করেছে, গুম করে আয়নাঘর তৈরি করেছে, হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে আর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা বাংলাদেশের অফিসগুলো সিলগালা করে দিয়েছে। ঘরের মাঝে বসেও আমরা শান্তি পাইনি। ঘর থেকে ধরে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব ছিল বাংলাদেশের বাস্তবতা। সেই কষ্ট নিয়ে আমরা এ পর্যন্ত এসে দাঁড়িয়েছি।

ভারত সরকারের প্রতি শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবেশীর প্রতি অনুরোধ করব, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। দেড়শর অধিক মামলা। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে, গুমের মামলা আছে। অনেক মামলা তার বিরুদ্ধে আছে। আমাদের বিচারালয় যখন চাইবেন, মেহেরবানি করে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আপনারা তাকে তুলে দেবেন

মানবজমনি:

সার্ভিস চার্জ নিলেও ভ্যাট ফাঁকি সাড়ে ৮ কোটি টাকার

বিনামূল্যের পাঠ্য বই নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। বইয়ের মান, ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছাপার সঙ্গে লুটপাট হয়েছে সরকারি অর্থ। অর্থ লুটের ঘটনা ঘটলেও সময়মতো পৌঁছায়নি পাঠ্যপুস্তক। অনেক স্থানে বই গেছে তিন থেকে চার মাস পর।

২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি পাঠ্য বই ছাপানো হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৪৫ কোটি ৬৪ লাখ ২৮ হাজার ৭৭৩ টাকা। পাঠ্যপুস্তক প্রকাশের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্তারা (এনসিটিবি) সার্ভিস চার্জের বিল নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু এ থেকে কেটে রাখা হয়নি ভ্যাটের অংশ। যার কারণে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৩ টাকা। আওয়ামী লীগের শাসনামলেই এই দুর্নীতির বিষয়টি উঠে আসে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। সংস্থাটি ১১ খাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। এতে দেখা যায় সার্ভিস চার্জের টাকা পকেটে পুরেছেন এনসিটিবি’র সাবেক কর্মকর্তারা। এসবের নেতৃত্ব দিতেন এনসিটিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউর রহমান।

নয়াদিগন্ত:

বিলুপ্ত বা সংস্কার আলোচনায় র‌্যাব

শীর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী ও দুর্ধর্ষ জঙ্গি দমনে এলিট ফোর্স হিসেবে গঠন করা হয়েছিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ২০০৪ সালে গঠিত পুলিশের বিশেষায়িত এই বাহিনীর ভালো কাজের পাশাপাশি রয়েছে নানা সমালোচনাও। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের গুমের পর আয়নাঘরে অথবা র‌্যাবের গুমঘরে বছরের পর বছর আটকে রাখা এবং বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডে এই সংস্থা জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আলোচনা আছে এসব ঘটনার পর র‌্যাব বিলুপ্ত করে নতুন করে বাহিনী তৈরি করা হবে না কি সংস্কার করে নতুনভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের নিযুক্ত করা হবে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গুমের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার গুম নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হয়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত দেড় দশকে মানুষকে তুলে নিয়ে গুমের ঘটনায় এক হাজার ৬০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কমিশন। এ কাজ করতে গিয়ে জোরপূর্বক মানুষকে তুলে নিয়ে দীর্ঘদিন আটকে রাখা হতো, এমন আটটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে তারা। কমিশনের ভাষ্যমতে, র‌্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা এসব গুমের ঘটনায় জড়িত। কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যে ৪০০টি ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে, সেখানে ১৭২টি ঘটনায় র‌্যাবের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কার অভিযোগগুলো তাদের কাছে এসেছে। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬০০-এর বেশি অভিযোগ পেয়েছেন তারা। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগগুলো দেয়া হয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত ১৪০ জন অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করা এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যারা শীর্ষে অবস্থান করেছে, অতীতে তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা এবং মাদকসহ দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার প্রশ্নে র‌্যাবের বেশ কিছু ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। আমাদের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা মানুষের আদর্শিক চর্চায় ভিন্নতা, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা তৈরি করা প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও র‌্যাবের ভূমিকা রয়েছে।

তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা, গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি করা, বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে র‌্যাবের ইতিবাচক বহু উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু একটি বাহিনী বিতর্কিত, সমালোচিত হওয়ার যে দায়, সেটি শুধু বাহিনীর একক দায় নয়। বরং যে বা যারা সরকারে থাকেন, দায়িত্বে থাকেন তারা কিভাবে বাহিনীটিকে পরিচালিত করেছেন তার ওপর নির্ভর করে একটি বাহিনীর মানুষের কাছে তার প্রশংসা বা সুনামের অবস্থানে অবস্থান করবে, নাকি সেটি সমালচনা আলোচনার জন্ম দিবে।

তিনি আরো বলেন, র‌্যাবের প্রসঙ্গে গুমের প্রসঙ্গ বা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ, এসব কাজ করতে গিয়ে আর্থিক যে লেনদেনের অভিযোগ, রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী ব্যক্তির দখল বাণিজ্যের শক্তি হিসেবে কাজ করার অভিযোগগুলো আছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই অভিযোগগুলো বিভিন্ন সময়ে এটাও লক্ষ্য করা যায় যে, ওই অভিযোগগুলো বিভিন্নভাবে কেউ কেউ প্রভাবিত হয়েও এসব অভিযোগ দিয়ে থাকেন। এই অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যে তদন্ত কোনোভাবে প্রভাবিত হবে না। সত্যিকার অর্থে র‌্যাবের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা যে অভিযোগগুলো করছেন বাস্তব অর্থে এর নিরীক্ষা প্রয়োজন। তার ভিত্তিতে র‌্যাবকে একটি বিধির মধ্যে রেখে বাস্তবিক অর্থে আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার প্রশ্নে যে বিশেষ পদক্ষেপগুলো র‌্যাবের মাধ্যমে পরিচালনা করা সম্ভব বা উচিত সেই প্রেক্ষাপটগুলোকে কিভাবে পরিকল্পনামাফিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সেইগুলো কিন্তু থাকা প্রয়োজন। আমাদের এখানে যে অভিযোগগুলো আছে, অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়াটা সমাধান নয়। বরং অভিযোগগুলো যাতে না আসে, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে র‌্যাবের ভূমিকাকে আরো বেশি জোরালো করা এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেই অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সংস্কারের মধ্য দিয়ে র‌্যাবের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত এবং চর্চা করার সুযোগ এবং সেই প্রেক্ষাপট বা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অথবা মানুষের মত প্রকাশের যে অধিকার কিংবা স্বাভাবিক জীবন যাপনের নিশ্চয়তার যে অধিকার কিংবা অপরাধীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যে ভূমিকা এই প্রসঙ্গগুলোতে কিন্তু র‌্যাব ভালো কাজ করার উদাহরণ রেখেছে। তো সংস্কার করে কাজের গতিকে আরো বেশি ত্বরান্বিত করা সম্ভব। আর অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে র‌্যাব এই সমালোচনা কিংবা বিতর্কিত অবস্থান থেকে সে বেরিয়ে এসে ইতিবাচকভাবে ভূমিকা পালন করার সুযোগ তৈরি হবে।

য়ুগান্তর:

খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকা
ব্যাংক খাতে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা, ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা বেড়েছে * সরকার পতনের পর জালিয়াতির তথ্য প্রকাশিত হলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বেআওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় খেলাপি ঋণ বেপরোয়া গতিতে বেড়েছে। আর্থিক খাতে সুশাসন না থাকায় ব্যাপকভাবে বড় বড় জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের প্রায় সবই খেলাপি হয়ে গেছে। যে কারণে মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। ২০০৯ সালের শুরু থেকে গত জুন পর্যন্ত ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাতে বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় বেড়েছে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে খেলাপি ঋণের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ব্যাংকাররা মনে করেন, খেলাপি বৃদ্ধির প্রকৃত অবস্থা এই চিত্রের চেয়েও বেশি ভয়াবহ। কারণ খেলাপির প্রকৃত চিত্র এতে ফুটে ওঠেনি। অনেকে ঋণখেলাপি হওয়ার যোগ্য হলেও তা খেলাপি করা হয়নি। নিয়মের বেড়াজালে প্রলেপ দিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এখন সেগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে ২০০৯ সালের শুরুতে। তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় ছিল। ওই সময়ে আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণে আওয়ামী লীগ সরকারের দায় রয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০০৯ সালের শুরুতে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাড়ে ৮ গুণ বেড়েছে।

ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোয় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বা ২০০৯ সালের শুরুতে খেলাপি ঋণ ছিল ৭১০ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৫ গুণ।

দৈনকি সংগ্রাম:

গাজায় নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু————জাতিসংঘ
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলী হামলায় নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর। শুক্রবার এ বিষয়ে একটি ৩২ পৃষ্ঠার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাটি। যাতে উঠে এসেছে এই মর্মান্তিক চিত্র। যুদ্ধে এভাবে অকাতরে নারী এবং শিশু হত্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মৌলিক নীতির পরিপন্থি বলে অভিহিত করা হয়েছে। রয়টার্স, আল জাজিরা।

এতে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইল হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে যে পরিমাণ মানুষ হত্যা করেছে তা গণনা করেছে জাতিসংঘ। যা তিনটি সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে তারা। এখনও গণনা অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের ইতিমধ্যেই ১৩ মাস সময় পার হয়েছে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী ৮ হাজার ১১৯ জনের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৩ হাজার। তুলনামূলকভাবে জাতিসংঘের উল্লিখিত সংখ্যা কম হলেও সংস্থাটি উল্লেখ করেছে যে, গাজায় নিহতদের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় যে পরিমাণ নারী এবং শিশু হত্যা করা হয়েছে তাতে স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো হিসাব-নিকাশের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ও নিরপেক্ষ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে জাতিসংঘ। সংস্থাটির এই পরিসংখ্যানের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে কম বয়সী থেকে একদম সর্বোচ্চ ৯৭ বছর বয়সী এক নারীও রয়েছে। রয়েছে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকও। ১৮ বছরের নিচে যেসকল শিশু নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৪ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছর। ইসরাইলের হামলায় গোটা গাজার বাসিন্দারা কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যার মাধ্যমে যুদ্ধ ক্ষেত্রে বেসামরিকদের ক্ষেত্রে সতর্কতার তীব্র অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইসরাইলের প্রতি হামলায় পাঁচের অধিক নারী বা শিশু নিহত হওয়ার ঘটনা প্রায় ৮৮ শতাংশ। এতে ধারণা করা যায় যে ইসরাইল তাদের প্রতিটি হামলায় ভয়াবহ মরণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। যদিও ইসরাইল এসব হত্যাকা-কে ‘অসাবধানতাবশত মৃত্যু’ বলে বর্ণনা করেছে।

দেশরুপান্তর:

৯০ শতাংশ নতুনে ঢাকায় দিশাহীন পুলিশ
পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) ক্ষিতিশ সরকার। সদ্যই যোগ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরের ডেভেলপমেন্ট শাখায়। সম্প্রতি ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে বের হয়ে রওনা হন গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ের দিকে। সেখান থেকে হাঁটা পথে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব হলেও মিন্টো রোডে ঢুকতেই এক পথচারীকে থামিয়ে বলছিলেন, ‘ডিবি কার্যালয় কোন দিকে? আমি ডিবি কার্যালয়ে যাব।’ টানা দীর্ঘ সময় ঘুরেফিরে ঢাকার বাইরে কর্মস্থল হওয়ায় পরিদর্শক ক্ষিতিশ তেমন পরিচিত নন রাজধানীর সড়ক ও অলিগলির সঙ্গে।

শুধু এ পুলিশ কর্মকর্তাই নন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিএমপিতে যোগ দেওয়া ৯০ শতাংশ সদস্যরই কর্মস্থল দীর্ঘদিন ছিল ঢাকার বাইরে। তারা চেনেন না রাজধানীর অলিগলি। আর রাস্তাঘাট তেমনটা না চেনায় আসমি ধরা বা মামলার তদন্তের কাজে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে থানা পুলিশের সদস্যদের। প্রায় একই চিত্র ট্রাফিক পুলিশেও। বেশিরভাগ সদস্যেরই রাজধানীতে এর আগে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় যান চালচল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে রাজধানীর সড়কে এখনো ফেরেনি শৃঙ্খলা। সব মিলিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাস পার হতে চললেও এখনো রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।

ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর একযোগে সিংহভাগ পুলিশ সদস্যের বদলির পর এখনো পূর্ণ জনবল বুঝে পায়নি ঢাকার থানাগুলো। সর্বস্তরে যাদের বদলি করে আনা হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ঢাকায় একেবারে নতুন। একদিকে কম জনবল, অন্যদিকে ঢাকার বাস্তবতায় অনভিজ্ঞ পুলিশ সদস্যদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। এতে করে মহানগরীতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে দ্রুতই এ সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী পুলিশ কর্মকর্তারা।