আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর
মানবজমিন:
নির্বাচনের রাত যেভাবে কাটালেন বাইডেন
লাখ লাখ আমেরিকান নির্বাচনের দিনটিতে যখন উত্তেজনায় তখন জনসাধারণের দৃষ্টি থেকে অনেক দূরে একটি অম্ল-মধুর সন্ধ্যা কাটালেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, মঙ্গলের সন্ধ্যা থেকে বাইডেন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন। হোয়াইট হাউসের বাসভবনে আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে নির্জন সন্ধ্যা কাটাচ্ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই নজর রাখছিলেন ভোটের ফলাফলের দিকে। সিনেটর হোক কিংবা প্রেসিডেন্ট এককালে নির্বাচনী উত্তেজনার কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। এখন সেই দাপুটে নেতা দেশীয় রাজনীতিতে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। ডেলাওয়ারের সিনেটর ক্রিস কুন্স বলছেন- ‘হ্যারিসের ওপর এখনো আস্থা রাখছেন আশাবাদী বাইডেন।’ তবে ফলাফল হ্যারিসের পক্ষে না যাওয়ায় একটু বিষণ্ন ছিলেন তিনি। ওয়াপো বলেছে, বাইডেন বন্ধ দরজার আড়ালেই ছিলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কল করছিলেন কিন্তু জনসাধারণের উপস্থিতি এড়িয়ে চলেছিলেন। এমনকি হ্যারিসের সমর্থকরা কাছাকাছি সমাবেশ করলেও সেখানে তাকে দেখা যায়নি। এমনকি, তার নাগাল পায়নি সংবাদমাধ্যমও। চলতি বছরের মাঝামাঝি শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান বাইডেন। পরিবর্তে ডেমোক্রেট দলের তরফে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচিত হন কমালা হ্যারিস। স্পটলাইট থেকে বেরিয়ে আসা সত্ত্বেও, বাইডেনের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী ছিল। তিনি যখন সারা দেশে গণতান্ত্রিক মিত্রদের ডেকেছিলেন, সেখানে কৃতজ্ঞতার স্পষ্ট অনুভূতি ছিল কিন্তু তার রাজনৈতিক যাত্রার সমাপ্তির সূচনাও ছিল সেখানে। বয়সের উদ্বেগের কারণে মাঝপথে রেস থেকে বেরিয়ে আসা, নির্বাচনের চূড়ান্ত মুহূর্তগুলোতে প্রচারে বাইডেনের অনুপস্থিতি ছিল দলের মধ্যে ফাটলের ইঙ্গিত।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
ভূমিধস বিজয়ে ট্রাম্পের ইতিহাস
রেকর্ড গড়ে ফের ক্ষমতায়, জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব, বললেন আমেরিকার স্বর্ণযুগ হবেজ্যোতিষী, জরিপ, জল্পনাকল্পনা ও সব পূর্বাভাস তছনছ করে রেকর্ড গড়ে ফের হোয়াইট হাউসে ফিরতে যাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (৭৮)। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শুধু ইলেকটোরাল নয়, পপুলার ভোটেও বড় ব্যবধানে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়েছেন তিনি। সিএনএন, বিবিসি, আলজাজিরাসহ বিশ্বের সব প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যানুসারে, ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭৬টি পেয়ে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ঝুড়িতে গেছে ২২৩টি ইলেকটোরাল ভোট। পপুলার ভোটের সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসাবে, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প পেয়েছেন ৭ কোটি ১৩ লাখের বেশি ভোট। আর কমলা পেয়েছেন ৬ কোটি ৬২ লাখের অধিক ভোট। এ হিসাবে ৫০ লাখের বেশি ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। লক্ষণীয় হলো, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণী সাতটি সুইং স্টেটের সব কটিতেই জয় পেতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, সুইং স্টেটের মধ্যে পেনসিলভানিয়ায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট, জর্জিয়ায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। অপরদিকে আমেরিকার ২৪৮ বছরের ইতিহাসে এক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পর বিরতি দিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরা দ্বিতীয় ব্যক্তি হচ্ছেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে যৌননিপীড়ন, সম্পদের হিসাব গোপন রাখাসহ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত (কনভিকটেড ফেলন) একমাত্র মার্কিনি হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় প্রথম ব্যক্তিও তিনি।
সমৃদ্ধ আমেরিকা না গড়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেব না : সমৃদ্ধ আমেরিকা না গড়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেবেন না বলে উল্লেখ করেছেন বিজয়ী ট্রাম্প। নিজের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই গতকাল (স্থানীয় সময় মঙ্গলবার গভীর রাত) ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে রিপাবলিকান পার্টির প্রধান কার্যালয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি। ভাষণে নির্বাচনি জয়কে ‘রাজনৈতিক বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বিজয় ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ এবং ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অসাধারণ সম্মান প্রদর্শনের জন্য আমি আমেরিকান জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ সেই সঙ্গে ভাষণে স্ত্রী সাবেক ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের ব্যাপক প্রশংসা করেন ট্রাম্প।
যুগান্তর:
ড. ইউনূসসহ বিশ্বনেতাদের শুভেচ্ছা বার্তা
র বছর পরে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিশ্বনেতারা অভিনন্দন জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ঐতিহাসিক এ জয়ে হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করেছেন তিনি। রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার সন্ধ্যায় একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। অভিনন্দন বার্তায় তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে শুভেচ্ছা বার্তাটি প্রকাশ করা হয়। ৪ বছর আগে নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নেন।
পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, আপনার আগের মেয়াদে এ সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। আমি আমাদের অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করতে ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
প্রধান উপদেষ্টা শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার রয়েছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সরকার ও শান্তিপ্রিয় জনগণ শান্তি, সম্প্রীতি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনার অংশীদারত্ব ও সহযোগিতার জন্য মুখিয়ে আছে।
ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান। শুভেচ্ছা জানানো বিশ্বনেতাদের মধ্যে আছেন-ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রমুখ। এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপীয় কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে।
প্রথম আলো:
ভোটাধিকার নিশ্চিত হলে দল নিষিদ্ধের দায়ভার থাকে না
৭ নভেম্বর উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে।
জনগণের আদালত এবং রাষ্ট্রীয় আদালত—দুটিকে কার্যকর করা গেলেই রাষ্ট্র ও রাজনীতির উল্লেখযোগ্য গুণগত সংস্কার নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ কিংবা প্রসিদ্ধ করার মতো অপ্রিয় কাজের দায়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে না। বরং জনগণ নিজের ভোটের অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে খুনি, লুটেরা, টাকা পাচারকারী কিংবা রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে থাকা মাফিয়া চক্রকে প্রত্যাখ্যান করবে।
৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় তারেক রহমান এ কথা বলেন। তিনি আলোচনায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এমন হওয়া প্রয়োজন, যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোট ছাড়া কোনোভাবেই একজন ব্যক্তি বা রাজনৈতিক কর্মী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে সক্ষম হবেন না। এমন রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে নিশিরাতে ভোটের আয়োজন কিংবা ডামি প্রার্থীর জনপ্রতিনিধি হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। তাতে রাজনীতি জনগণের আদালতের দ্বারস্থ হবে। বিজয়ের জন্য জনগণের রায় নিতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রে জনগণের আদালত এবং রাষ্ট্রীয় আদালতকে কার্যকর ও শক্তিশালী করা গেলেই রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য গুণগত সংস্কার নিশ্চিত করা যাবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেকোনো ফৌজদারি অপরাধের বিচার হতে হবে রাষ্ট্রীয় আদালতে। কোনো ব্যক্তি বা দলের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণ রাজনীতির মাঠে; অর্থাৎ জনগণের আদালতে হওয়ার সংস্কৃতি চালু করা গেলে এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কার হিসেবে বিবেচিত হবে।
জনপ্রত্যাশার বিচারে ১৯৭১ সাল, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ কিংবা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের প্রতিটি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলনেরই চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
কালের কন্ঠ:
সামরিক বাহিনী দেশকে বারবার রক্ষা করেছে
যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনের আহবান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এ আহবান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবেলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সব মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিল।
শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তখন আমাদের দেশপ্রেমিক সিপাহি ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে খালেদ মোশাররফের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করেছিল।
তিনি বলেন, ‘দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। ৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
নয়াদিগন্ত:
লজ্জার ব্যাটিংয়ে হারল বাংলাদেশ
ওয়ানডেতে ২৩৫ রানের টার্গেট দিয়ে ৯২ রানের জয়। অবিশ্বাস্য হলেও এটিই সত্যি করে দেখাল আফগানিস্তান। গাজানফারের ৬.৩ ওভারে ২৬ রান খরচায় বাংলাদেশের ছয় ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলে আর বাকি থাকে কী। যা রান করার করলেন সৌম্য সরকার (৩৩), নাজমুল হোসেন শান্ত (৪৭) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (২৮)। বাকিরা ওই আগের মতোই আসা-যাওয়ার মিছিলে নাম লিখিয়ে ৩৪.৩ ওভারে করতে পারলেন ১৪৩ রান। টাইগার বোলাররা অতীতের মতো প্রতিভার স্বাক্ষর রাখলেন। তাসকিন ও মোস্তাফিজ সমান চারটি করে উইকেট নিলেন। নিলে কী হবে, ব্যাটারদের কারণে মলিন হয়ে যায় তাদের কর্মগুলো। একটা বৃত্তেই যেন আটকে আছে বাংলাদেশ। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-২০ হোক তারা যেন ১২০ থেকে ১৭০-এর মাঝে আটকে যাচ্ছে, যা দেশের ক্রিকেটের জন্য বিশাল অশনিসঙ্কেত।
মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছিল জয় পেতে খুব সমস্যা হবে না বাংলাদেশের। দুই উইকেট হারিয়ে ১২০ রান তুলেছিল দলটি। এরপর স্কোরবোর্ডে আর ২৩ রান যোগ হতেই অলআউট বাংলাদেশ। যেন উইকেট বিলিয়ে কে কার আগে সাজঘরে যাবেন, সেই প্রতিযোগিতায় নামেন টাইগার ব্যাটাররা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে তানজিদ হাসান তামিমকে হারালেও সৌম্য সরকারের সাথে জুটি গড়ে ভালো সূচনায় আনেন অধিনায়ক। এরপর মিরাজের সাথে আরো একটি জুটি। দারুণ সেট হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ঠিক তার মতো করেই আউট হয়ে যান মিরাজও। তারই খেসারত দেয় টাইগাররা। দুই সেট ব্যাটারের বিদায়ের পর যেন মড়ক ধরে ব্যাটিং লাইনআপে। একের পর এক ব্যাটার আউট হন কিছুদিন আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে পা রাখা আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফারের বলে। ক্যারিয়ারের আগের পাঁচ ম্যাচ মিলিয়ে ৪ উইকেট পাওয়া গাজনফার এবার মাত্র ২৬ রানে নিলেন ৬ উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথম আফগানিস্তানের কোনো বোলার পেলেন ৫ বা তার বেশি উইকেট। তাতেই ধস বাংলাদেশের।
এর আগে শারজায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল আফগানিস্তান। মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের পেস তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল তাদের ব্যাটিং লাইন-আপ। তবে দুই অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি ও হাশমতউল্লাহ শহিদি গড়েন ১০৪ রান। তাতে ভর করে ২৩৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে আফগানরা। ৪৯.৪ ওভারেই তাদের অলআউট করেছে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচে আফগানিস্তানের ১০ উইকেটের ৯টি শিকার করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। একটি হয়েছে রান আউট। আর এই দিনে রেকর্ড গড়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। হাশমতউল্লাহকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেট নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। গাজনফারকে বোল্ড করে তাসকিন আহমেদও নিয়েছেন নিজের চতুর্থ উইকেট। ওয়ানডেতে এই প্রথম একই ম্যাচে ৪ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের দুই পেসার।
কালবেলা:
নির্বাচনী রূপরেখার চাপ বাড়ছে
গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যারা দীর্ঘ সময় আন্দোলনে ছিল, বিএনপিসহ সমমনা সেই রাজনৈতিক দলগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচনী রূপরেখা আশা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাসেও এটি ঘোষিত না হওয়ায় দিন যত যাচ্ছে, এই দাবি ততই জোরালো হচ্ছে। ‘যৌক্তিক’ সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসা বিএনপি এ বিষয়ে আর বেশিদিন ধৈর্য না ধরার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। দলটির তরফ থেকে এরই মধ্যে স্পষ্ট করেই নির্বাচনী রোডম্যাপ চাওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে রোডম্যাপ দেওয়া না হলে আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে সোচ্চার হবে দলটি। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একসঙ্গে চলতে পারে। বিএনপির সঙ্গে সমমনা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের স্পষ্ট ঘোষণা চায়। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তাই নির্বাচন নিয়ে সরকার কী ভাবছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তা স্পষ্ট নয়। সরকারের কেউ কেউ ইঙ্গিত দিচ্ছেন, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। আবার কেউ বলছেন, প্রয়োজনীয় সব সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন ইস্যুতে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটি বলছে, সংস্কার একটি দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া। রাষ্ট্র সংস্কারে সরকার যে দশ কমিশন করেছে, সেগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে কবে নাগাদ সংস্কার কার্যক্রম শেষ হবে, সেটাও স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া কোন সংস্কারগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে, সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি, সেটিও। অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সরকারকে নির্বাচন কমিশন (ইসি), প্রশাসন এবং বিচার বিভাগকে প্রাধান্য দিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালানোর জন্য বলা হয়েছে। দলটির নেতারা বলছেন, সব সংস্কার কার্যক্রম সমাপ্ত করতে গেলে এই সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে হবে, যেটা সম্ভব নয়।
দেশরুপান্তর:
দুর্নীতিবাজ’দের অনিয়ম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই গত ১৫ বছর ব্যাংক খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে। চর দখলের মতো ব্যাংকও দখল হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি হস্তক্ষেপে। কিন্তু পটপরিবর্তনের পরও কোনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা খুঁজে পাচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। দুই ডেপুটি গভর্নরের (ডিজি) বিরুদ্ধে এস আলমের মতো গ্রুপকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) নুরুন নাহার এবং ড. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) পর্যন্ত সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ঋণ জালিয়াতি, অবৈধ সুবিধা গ্রহণ এবং অন্যান্য অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নামে-বেনামে অনেক অভিযোগ আসে। আমাদের এইচআর সেটা খতিয়ে দেখেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গভর্নর বরাবর না এলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।’