আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর
যুগান্তর:
যেভাবে নির্বাচিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হন না, ইলেকটোরাল কলেজ নামে একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচিত হন। কিন্তু কী এই ইলেকটোরাল কলেজ? এটি কীভাবে কাজ করে? অনেকের কাছে ইলেকটোল কলেজ একটি জটিল বিষয় মনে হতে পারে। এমনকি অনেক মার্কিন নাগরিকও এ বিষয়টিকে সহজে বুঝে উঠতে পারেন না। চলুন একটু ভালো করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করে দেখা যাক।
কেন এ ব্যবস্থা
১৭৮৭ সালে মার্কিন সংবিধানপ্রণেতারা এ পদ্ধতি চালু করেন। ব্রিটেন থেকে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা পাওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল একেবারেই নতুন একটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডিং ফাদার্স হিসাবে পরিচিত ব্যক্তিরা এমন একটি নির্বাচনিব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, যা ক্ষমতাকে একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত করবে না। রাজতন্ত্রের মতো কাঠামো তৈরি করতে পারে এমন ব্যবস্থা থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু সম্পূর্ণরূপে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার ধারণাটি এই ইলেকটোরাল ব্যবস্থার ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ ব্যবস্থার প্রণয়নকারীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন, ভোটাররা যথেষ্ট জানাশোনার মাধ্যমে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শিক্ষিত কিনা। তখন জাতীয় সাক্ষরতার হার কম ছিল এবং সেই সময়ে অন্য কোনো দেশই জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নেতাদের বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।
জনগণের সরাসরি ভোটের এবং একক কারও হাতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মধ্যবর্তী একটি পন্থা হিসাবে বেছে নেওয়া হয় এই ইলেকটোরাল কলেজকে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, প্রতিটি রাজ্যে নিযুক্ত ইলেকটররাই রাষ্ট্রপতিকে ভোট দেবেন।
ইলেকটোরাল কলেজ কীভাবে কাজ করে
তাত্ত্বিকভাবে মার্কিন সরকার সমন্বিত নির্বাহী বিভাগ (রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রিসভা), বিচার বিভাগীয় বিভাগ (সুপ্রিমকোর্ট) এবং আইনপ্রণয়ন বিভাগ (কংগ্রেস) নিয়ে গঠিত। কংগ্রেস আবার গঠিত দুটি সত্তা নিয়ে-হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেট। সিনেটে প্রতিটি রাজ্যের দুজন করে সদস্য থাকেন। তারা ফেডারেল স্তরে পুরো রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। হাউজের প্রতিনিধিরা একটি রাজ্যের মধ্যে পৃথক জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। একটি রাজ্যে কংগ্রেসের কতজন প্রতিনিধি থাকবেন, সেটি আদমশুমারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। দেশটিতে ১০ বছর পরপর আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম আলো:
৮ গোপন বন্দিশালা, এখনো নিখোঁজ ২০০
গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন
জমা পড়েছে ১৬ শর বেশি অভিযোগ। গুমে জড়িত ডিজিএফআই, র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্য।শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে গুমের ঘটনার ১ হাজার ৬০০–এর বেশি অভিযোগ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের দিনের পর দিন আটকে রাখা হতো, এমন আটটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে কমিশন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনো প্রায় ২০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানতে পেরেছে তারা।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে। কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য গুলশানে তাদের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীসহ অন্য চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হয়েছে গত ৩১ অক্টোবর। ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০–এর বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত এসব গুমের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগে এসেছে। তিনি জানান, কমিশন এখন পর্যন্ত ৪০০ অভিযোগ বিশ্লেষণ করেছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছে ১৪০ জন অভিযোগকারীর। তাতে র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত যে ৪০০ অভিযোগ বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তাতে ১৭২টি ঘটনায় র্যাবের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে ৩৭টিতে। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সম্পৃক্ততা ছিল ৫৫টির ক্ষেত্রে। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) ২৬টি ও ২৫টি ঘটনায় পুলিশের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এর বাইরে সুনির্দিষ্ট কোনো বাহিনীর পরিচয় না দিয়ে প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়েছে এমন ৬৮টি ঘটনা পেয়েছে কমিশন।
কমিশনের সদস্য মো. নূর খান বলেন, এখনো প্রায় ২০০ মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বলে অধিকাংশের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কমিশন জমা পড়া অভিযোগের বাইরেও পত্রপত্রিকায় এসেছে, এমন ঘটনা নিয়েও কমিশন কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে নিখোঁজ কক্সবাজারের একজন নারীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর (নারী) বিষয়ে পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক সংগ্রাম:
হাসিনার মতো ৭১ সালে শেখ মুজিবও পালিয়েছিল : মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মতো ১৯৭১ সালে তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে মহিলা দল।
৭ নভেম্বর বিপ্লবের নায়ক সাধারণ সিপাহী ও জনতা মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লব নতুন করে বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। সেদিন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামনে না এলে বাংলাদেশ কী হতো? এ কথা বলা যায় না। হয়ত এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। জিয়াউর রহমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। গণমাধ্যমকে মুক্ত করে দেন। গার্মেন্টস শিল্প ও বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে রেমিট্যান্স আনার যে প্রবণতা— এর সূচনা করেছিলেন তিনি। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব এনেছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছর ধরে জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছিল। এরা দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ ৬০০-এর বেশি নেতাকর্মী গুম করেছে। জুলাই-আগস্টে আমাদের ছাত্রজনতা, শিশুদের গুলি করে হত্যা করেছে। অবশেষে ছাত্রজনতার দৃঢ়তার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে সরাতে পেরেছি, তার জন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেছে এটা একটি সত্য কথা। শেখ মুজিবও পালিয়ে গিয়েছিলেন ১৯৭১ সালে। তিনি দেশে থাকেন নাই। পাকিস্তান চলে গিয়েছিলেন। গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি ঘরে বসেছিলেন গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য। এটা আমার কথা না। তাজউদ্দীন আহমেদের মেয়ের বইয়ের মধ্যে লেখা আছে।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বুকে চেপে থাকা দানব সরে গেছে। কিন্তু আমাদের সজাগ ও সচেতন হতে হবে। বহু চেষ্টা করে কেউ বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি। বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে নারীরা।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহাম্মেদ।
মানবজমিন:
আলেমদের ৯ দফা দাবি
তাবলীগ জামাতের মারকাজ কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমার ময়দান নিয়ন্ত্রণসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ওলামা-মাশায়েখরা। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা। ‘ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও তাবলীগ জামাতের বিপুলসংখ্যক কর্মী অংশ নেন। সম্মেলনে অংশ নিতে ভোর থেকেই তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন। সমাবেশ শুরুর আগেই উদ্যান ও আশপাশের সড়কে জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সমাবেশে সারা দেশ থেকে আসা ৬৫ জন আলেম বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলন থেকে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে করাসহ ৯ দফা দাবি জানান ওলামা-মাশায়েখরা। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা। সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মাওলানা মাহফুজুল হক।
৯ দফা দাবির মধ্যে বলা হয়, দেশে কওমি মাদ্রাসাগুলো দারুল উলুম দেওবন্দের অনুকরণে শতাব্দীকাল ধরে দ্বীনি শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশাসন এবং সরকারদলীয় লোকজন নানাভাবে হয়রানি ও হস্তক্ষেপ করেছিল। আমরা লক্ষ্য করেছি ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরও কওমি মাদ্রাসাগুলোর ওপর ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা একটি বিশেষ মহল সুকৌশলে হস্তক্ষেপের পাঁয়তারা করে চলছে। আজকের মহাসম্মেলন থেকে আমরা এ জাতীয় সকল হয়রানি ও হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমকাল:
পদ্মায় আটকা ৮৭৪ কোটি টাকা উদ্ধারে জোর চেষ্টা
দ্মা ব্যাংকের কাছে আটকে থাকা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের ৮৭৪ কোটি টাকা উদ্ধারে পথনকশা চেয়েছে সরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পদ্মা ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামীকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সভায় পদ্মা ব্যাংকে আটকে থাকা অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিল উদ্ধারের বিষয়েও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। ২০১৫ সালে তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) গুলশান, মতিঝিল ও গুলশান সাউথ অ্যাভিনিউ শাখায় এক বছর মেয়াদে ৫০৮ কোটি টাকা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা হয়।
মেয়াদ শেষে সুদাসল পরিশোধ না করায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত এটি নবায়ন করা হয়। ওই সময় পর্যন্ত কয়েক দফায় পদ্মা ব্যাংক মাত্র ৮০ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত সুদ-আসলে আটকে থাকা অর্থ দাঁড়ায় ৫৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ আমানতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিভিন্ন সময় ট্রাস্ট অর্থ উঠাতে চাইলে দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদ-আসলসহ ব্যাংকটির কাছে সংস্থাটির পাওনা দাঁড়িয়েছে ৮৭৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
স্মরণকালের কঠিন ভোটযুদ্ধ
বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে যিনিই নির্বাচিত হোন তা হবে ঐতিহাসিক। সে দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হলে তিনিই হবেন প্রথম কোনো নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট।
বিশ্ব মোড়লের দেশে এ দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে অবশ্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসই দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো। ফলে ট্রাম্প ও কমলা দুজনেরই জয়ের সম্ভাবনা সামনে নিয়ে হিসাবনিকাশে ব্যস্ত পুরো বিশ্ব। বৈশ্বিক রাজনীতি ও কূটনীতির আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল।
নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রধান দুই দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প লড়ছেন। গতকাল বাংলাদেশ সময় বিকালে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ আজ ভোরে শেষ হবে। লড়াইয়ে থাকা ৬০ বছর বয়সি কমলা হ্যারিস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ৭৮ বছর বয়সি ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে কমলা নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো নারী প্রেসিডেন্ট। অভিবাসী পরিবার থেকে উঠে আসা কমলার সামনে তাই রয়েছে ইতিহাস গড়ার হাতছানি। অবশ্য ভাগ্যও রয়েছে কমলা হ্যারিসের পক্ষে। কারণ তিনি এবার বেশ নাটকীয়ভাবেই হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে বেশ দীর্ঘ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ধাপ পাড়ি দিয়ে এবং বেশ কয়েকটি নির্বাচনের মধ?্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে হয়। সেখানে ভাগ?্য কতটা সহায় হলে কোনো প্রকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়া যায় তার প্রমাণ কমলা হ্যারিস। ডেমোক্র্যাট দলের পূর্বঘোষিত প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বয়স ও শারীরিক যোগ্যতা বিবেচনায় নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে তাঁরই রানিং মেট কমলার নাম প্রস্তাব করেন। তখনই হোয়াইট হাউসকে একদম কাছ থেকে চেনা কমলা হ্যারিসের হোয়াইট হাউসের মূল চেয়ারে বসার সুযোগ তৈরি হয়। নির্বাচনি প্রচারের শেষ ভাষণে আত্মবিশ্বাসী কমলা বলেছেন, ‘আমি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে প্রস্তুত।’
কালের কন্ঠ:
বিএনপি ৩ মাসের মধ্যে রোডম্যাপ চায়
রোডম্যাপ ঘোষণা না এলে মার্চ-এপ্রিলে নির্বাচন চেয়ে সোচ্চার হতে পারে ► আলী ইমাম মজুমদারের পদত্যাগ দাবি, জামায়াতের সমালোচনাআগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি। নইলে আগামী মার্চ-এপ্রিলে সংসদ নির্বাচন দাবি করে রাজপথে সোচ্চার হতে পারে দলটি। দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা মনে করেন, সরকার আন্তরিক হলে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন সম্ভব।
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা এমন অভিমত দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
গত সোমবার রাতে রাজধানীতে দলীয় চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত ছিলেন।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের পদত্যাগ চেয়েছে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম। একই সঙ্গে ৫ আগস্ট-পরবর্তী জামায়াতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কমিটির কয়েকজন সদস্য।
নয়াদিগন্ত:
পাচারের অর্থ উদ্ধারে যুক্ত হচ্ছে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে দেশী-বিদেশী সংস্থার তৎপরতা শুরু হয়েছে। আমদানি-রফতানির আন্ডার ইনভয়েস বা ওভার ইনভয়েস ছাড়াও শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জনগণের আমানতের অর্থ নজিরবিহীনভাবে পাচার করা হয়েছে লাখ লাখ কোটি টাকা। বিশ্বে বিরল এসব ঘটনা সরেজমিনে উদঘাটন করার অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশে কাজে লাগাতে চাচ্ছে বিশ্বের অনেক সংস্থা। আর এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকে আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা তথ্য উদঘাটন থেকে শুরু করে অর্থ উদ্ধারের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচিতিপত্র পাঠাচ্ছে। এ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আসছেন শিগগিরই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিনিধিরাও আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানেরই যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন শতাধিক বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দখলে নেয়া ৮টি ব্যাংক থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই সরিয়ে নিয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার উপরে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীরা দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সরিয়েছে। এর মধ্যে এস আলম একাই সরিয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার। সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েকটি দেশে বিপুল অংকের অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত নাসা গ্রুপের যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তেমনিভাবে বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধেও অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বিদেশী কয়েকটি বেনামী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধে। এসব তথ্য ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী সংস্থার মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে। আরো অধিক তথ্য উদঘাটনের কাজ চলছে।
দেশরুপান্তর:
আয়নাঘর ছাড়া আরও ৭ বন্দিশালা
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত কমিশনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৮৩টি অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে কমিশন, যার মধ্যে ১৭২টি অভিযোগই র্যাবের বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি সংস্থার কথিত ‘আয়নাঘর’ নামের বন্দিশালা থেকে কয়েকজনের মুক্ত হওয়ার খবর আসে। এটিসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অন্তত আটটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে কমিশন, যেখানে বছরের পর বছর গুম হওয়া ব্যক্তিদের রেখে নির্যাতন করা হতো। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউতে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। তবে বন্দিশালাগুলো কাদের দ্বারা পরিচালিত হতো, তদন্তের স্বার্থে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যান হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে ১৭২টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মহানগর গোয়েন্দা শাখা ডিবির বিরুদ্ধে ৫৫টি, সিটিটিসির (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট) বিরুদ্ধে ৩৭টি, ডিজিএফআইর (ডিরেক্টর জেনারেল ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স) বিরুদ্ধে ২৬টি, পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫টি এবং অন্যান্যভাবে ৬৮টি গুমের অভিযোগ পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ১৪০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২০০-এর বেশি গুম হওয়া ব্যক্তিকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। গুমসংক্রান্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল গত ৩১ অক্টোবর। এ সময়ের মধ্যে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে সমন দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিন সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত অন্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।