ঢাকা ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজড়া সেজেও রক্ষা পাননি ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি

সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি ট্যাপা জাকিরকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত জাকিরকে সাভার মডেল থানা থেকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাতে ডিবি পুলিশের সহায়তায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ ব্লকের একটি বাসায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ট্যাপা জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা।

গ্রেপ্তারকৃত ট্যাপা জাকির আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো ফুলতলা মহল্লার আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত ভাগিনা পরিচয়ে তার সকল অপকর্মের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।

পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্বজনেরা সাভার মডেল থানায় বেশ কিছু মামলা দায়ের করেছেন। এর মধ্যে ৭ টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাকির হোসেন ওরফে ট্যাপা জাকির। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গ্রেপ্তার এড়াতে মঞ্জুরুল আলম রাজিবের স্ত্রী ও ছেলেকে সাথে নিয়ে ছদ্মবেশে হিজড়া সেজে পলাতক ছিলেন জাকির। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে শনিবার রাতে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ট্যাপা জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া গণহত্যার মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের অবৈধ অর্থ ও সম্পত্তি দেখভাল করতেন ট্যাপা জাকির। সাবেক উপজেলা রাজিবের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তিনিও হয়ে ওঠেন কয়েকটি ফ্যাক্টরিসহ বিপুল সম্পত্তির মালিক। চলাফেরা করতেন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল গাড়িতে। সাভারে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাজিব ও জাকিরের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে দিতে হতো মোটা অংকের মাসোহারা। চাঁদাবাজি আর দখলদারির মাধ্যমে জাকির হয়ে ওঠেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক।

এছাড়া সাভারের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ছিল জাকিরের সন্ত্রাসী বাহিনী। কেউ বড় পরিসরে ব্যবসা করতে চাইলে এই ট্যাপা জাকিরের মধ্যস্থতায় অনুমতি নিতে হতো রাজীবের কাছ থেকে। অবৈধ টাকায় নির্মিত বিলাসবহুল রাজ প্যালেস ছিল জাকিরের টর্চার সেল। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে এনে এখানে নির্যাতনের পাশাপাশি আমোদ ফুর্তির সব ব্যবস্থাও ছিল রাজ প্যালেসে। চাঁদাবাজির কাজে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতেন ট্যাপা জাকির।

সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে নিহতের স্বজনদের দায়েরকৃত ৭ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ট্যাপা জাকিরকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে রবিবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আন্দোলনের মুখে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের পদত্যাগের ঘোষণা

হিজড়া সেজেও রক্ষা পাননি ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি

আপডেট সময় ০৭:৪০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি ট্যাপা জাকিরকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত জাকিরকে সাভার মডেল থানা থেকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাতে ডিবি পুলিশের সহায়তায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ ব্লকের একটি বাসায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ট্যাপা জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা।

গ্রেপ্তারকৃত ট্যাপা জাকির আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো ফুলতলা মহল্লার আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত ভাগিনা পরিচয়ে তার সকল অপকর্মের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।

পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্বজনেরা সাভার মডেল থানায় বেশ কিছু মামলা দায়ের করেছেন। এর মধ্যে ৭ টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাকির হোসেন ওরফে ট্যাপা জাকির। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গ্রেপ্তার এড়াতে মঞ্জুরুল আলম রাজিবের স্ত্রী ও ছেলেকে সাথে নিয়ে ছদ্মবেশে হিজড়া সেজে পলাতক ছিলেন জাকির। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে শনিবার রাতে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ট্যাপা জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া গণহত্যার মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের অবৈধ অর্থ ও সম্পত্তি দেখভাল করতেন ট্যাপা জাকির। সাবেক উপজেলা রাজিবের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তিনিও হয়ে ওঠেন কয়েকটি ফ্যাক্টরিসহ বিপুল সম্পত্তির মালিক। চলাফেরা করতেন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল গাড়িতে। সাভারে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাজিব ও জাকিরের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে দিতে হতো মোটা অংকের মাসোহারা। চাঁদাবাজি আর দখলদারির মাধ্যমে জাকির হয়ে ওঠেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক।

এছাড়া সাভারের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ছিল জাকিরের সন্ত্রাসী বাহিনী। কেউ বড় পরিসরে ব্যবসা করতে চাইলে এই ট্যাপা জাকিরের মধ্যস্থতায় অনুমতি নিতে হতো রাজীবের কাছ থেকে। অবৈধ টাকায় নির্মিত বিলাসবহুল রাজ প্যালেস ছিল জাকিরের টর্চার সেল। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে এনে এখানে নির্যাতনের পাশাপাশি আমোদ ফুর্তির সব ব্যবস্থাও ছিল রাজ প্যালেসে। চাঁদাবাজির কাজে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতেন ট্যাপা জাকির।

সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে নিহতের স্বজনদের দায়েরকৃত ৭ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ট্যাপা জাকিরকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে রবিবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।