ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে নির্বাচন দিন: ইশরাক হোসেন Logo ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস, রাবি ছাত্রদলের ২ নেতাকে অব্যাহতি Logo কুমিল্লায় মুজিবনগর সরকার ঘোষণার গুঞ্জনে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল Logo রিজার্ভে হাত না দিয়েই ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ Logo ‘আপনারা না পারলে সিস্টেম ভেঙে নতুনদের নিয়োগ দেওয়া হবে’ Logo ‘মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী আর এমপির ছেলে এমপি হবে, এটা চলতে দেওয়া হবে না’ Logo বিশ্ব দরবারে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুলে ধরল শিবির Logo গণঅভ্যুত্থানে আহত পথশিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান Logo জনগণ স্বৈরশাসক দেখতে চায় না: জামায়াত আমির Logo সাংবাদিকদের সাথে ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সাংবাদিকদের সাথে ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সিনিয়র ও বিট সাংবাদিকদের সাথে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় ঢাকা সেগুনবাগিচায় বাগিচা রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। শুরুতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও শাখা নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে তুলে ধরেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “এক আদর্শিক ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সংগঠনটি নানা ঘাতপ্রতিঘাত, অন্যায় ও জুলুমের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে এবং আজও দৃঢ়ভাবে আদর্শ ও ন্যায়পরায়ণতার পতাকা বহন করে চলেছে।”

তিনি আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদ ও নির্যাতনের সূচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে লগি-বৈঠা দিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর পৈশাচিক নৃত্যের মাধ্যমে তাদের জুলুমতন্ত্রের যাত্রা শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে চিরুনি অভিযানের নামে ছাত্রশিবির নিধনের মিশন শুরু হয়। হাজার হাজার ছাত্রশিবির নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়, শত শত ভাইকে হত্যা করা হয় এবং অনেক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতা এবং সমগ্র জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে এবং অসংখ্য জনতাকে আহত ও পঙ্গু করে দেয়, যার অগণিত প্রমাণ গণমাধ্যমের কাছে রয়েছে।”

এ পর্যায়ে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির সকল শাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ছাত্রদের উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য মেধাবৃত্তি, ভর্তি সহায়তা, চিকিৎসা সেবা এবং ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা প্রদান করছে। ২৪শের আন্দোলনের আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে সামর্থ্য অনুযায়ী দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্রশিবির চায়, সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধিশালী ও উন্নত করতে। আমরা বিশ্বাস করি, নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি প্রজন্মই দেশের উন্নয়ন এবং জাতির ভবিষ্যৎকে আলোকিত করবে।”

ছাত্ররাজনীতির সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, “স্বৈরাচার সরকারের আমলে ছাত্ররাজনীতি একটি কঠিন সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে গণরুম কালচার, ক্যাম্পাসে হল দখল, সিট বাণিজ্য এবং অন্যান্য সংগঠনের সহাবস্থান সহ্য না করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এর বিপরীতে, ছাত্রশিবির সহাবস্থানের ভিত্তিতে কাজ করে এবং সকলের জন্য একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।”

উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্রশিবিরের কাছে কিছু প্রত্যাশা ও পরামর্শ তুলে ধরেন।

সমাপনী বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, “ছাত্রশিবির এমন একটি ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে সৎ, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আদর্শের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আমাদের লক্ষ্য একটি সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা, যেখানে সকল ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সম্মান ও সহযোগিতার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে।”

মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আব্দুল্লাহ, এইচআরডি সম্পাদক আব্দুর রহিম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ তাওফিক, পরিকল্পনা সম্পাদক উসামা রাইয়ান, বিতর্ক সম্পাদক মিজবাহুল করিম, স্পোর্টস সম্পাদক আসাদুজ্জামানসহ ঢাকার বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীলবৃন্দ।

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে নির্বাচন দিন: ইশরাক হোসেন

সাংবাদিকদের সাথে ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৭:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সিনিয়র ও বিট সাংবাদিকদের সাথে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় ঢাকা সেগুনবাগিচায় বাগিচা রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। শুরুতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও শাখা নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে তুলে ধরেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “এক আদর্শিক ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সংগঠনটি নানা ঘাতপ্রতিঘাত, অন্যায় ও জুলুমের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে এবং আজও দৃঢ়ভাবে আদর্শ ও ন্যায়পরায়ণতার পতাকা বহন করে চলেছে।”

তিনি আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদ ও নির্যাতনের সূচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে লগি-বৈঠা দিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর পৈশাচিক নৃত্যের মাধ্যমে তাদের জুলুমতন্ত্রের যাত্রা শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে চিরুনি অভিযানের নামে ছাত্রশিবির নিধনের মিশন শুরু হয়। হাজার হাজার ছাত্রশিবির নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়, শত শত ভাইকে হত্যা করা হয় এবং অনেক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতা এবং সমগ্র জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে এবং অসংখ্য জনতাকে আহত ও পঙ্গু করে দেয়, যার অগণিত প্রমাণ গণমাধ্যমের কাছে রয়েছে।”

এ পর্যায়ে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির সকল শাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ছাত্রদের উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য মেধাবৃত্তি, ভর্তি সহায়তা, চিকিৎসা সেবা এবং ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা প্রদান করছে। ২৪শের আন্দোলনের আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে সামর্থ্য অনুযায়ী দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্রশিবির চায়, সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধিশালী ও উন্নত করতে। আমরা বিশ্বাস করি, নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি প্রজন্মই দেশের উন্নয়ন এবং জাতির ভবিষ্যৎকে আলোকিত করবে।”

ছাত্ররাজনীতির সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, “স্বৈরাচার সরকারের আমলে ছাত্ররাজনীতি একটি কঠিন সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে গণরুম কালচার, ক্যাম্পাসে হল দখল, সিট বাণিজ্য এবং অন্যান্য সংগঠনের সহাবস্থান সহ্য না করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এর বিপরীতে, ছাত্রশিবির সহাবস্থানের ভিত্তিতে কাজ করে এবং সকলের জন্য একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।”

উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্রশিবিরের কাছে কিছু প্রত্যাশা ও পরামর্শ তুলে ধরেন।

সমাপনী বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, “ছাত্রশিবির এমন একটি ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে সৎ, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আদর্শের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আমাদের লক্ষ্য একটি সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা, যেখানে সকল ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সম্মান ও সহযোগিতার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে।”

মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আব্দুল্লাহ, এইচআরডি সম্পাদক আব্দুর রহিম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ তাওফিক, পরিকল্পনা সম্পাদক উসামা রাইয়ান, বিতর্ক সম্পাদক মিজবাহুল করিম, স্পোর্টস সম্পাদক আসাদুজ্জামানসহ ঢাকার বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীলবৃন্দ।