ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে এক রাতে দুই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি

মাদারীপুরে এক রাতে দুই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি

মাদারীপুরের বিভিন্ন জায়গায় গেল রাতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় দুই কোটি টাকার ইলিশ মাছ বেচা-কেনা হয়েছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর পূর্ব মুহূর্তে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন ইলিশ বাজারে। জেলা শহরের পুরানবাজার মাছের আড়ত, মস্তফাপুর মৎস্য ভান্ডার সহ রাজৈর, কালকিনি, শিবচর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ইলিশ বেচা-কেনার এ মহোৎসব শুরু হয় শনিবার বিকাল হতে। যা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

আগামী ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা ও বাজারজাত বন্ধ থাকায় এমন বেচা-বিক্রি হয়েছে বলে দাবি মাছ ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে এক রাতে এমন ইলিশের মেলায় পুরো মাদারীপুরই যেন মুখরিত হয়ে উঠে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় এসব মাছের আড়তে ইলিশ কেনার ধুম পড়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার বিকাল থেকেই মাদারীপুর পৌর শহরের পুরানবাজার মাছের আড়তে ইলিশ মাছ নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সময় গাড়ানোর সঙ্গে ক্রেতারাও আসতে শুরু করেন ছোট-বড় আকারের ইলিশ কিনতে।

এদিন, পুরুষের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদেরও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবমিলিয়ে রাত গভীর হলে পুরো মাছের আড়তে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এ যেন রীতিমতো মাছ আর মানুষের মিলন মেলায় রূপ নেয়।

এ কারণে স্থানীয়রাও এটিকে ইলিশের মেলা বলেই আখ্যায়িত করেছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। মাছ কিনতে আসা রাজিব হোসেন বলেন, ‘২২ দিন ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে না। তাই এখন মাছ কিনতে আসছি। তবে গতবার এক কেজি সাইজের ইলিশ ছিল ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, এবার সেই ইলিশ ১৮০০ টাকার উপরে। যে কারণে মাত্র ৩ কেজি ইলিশ কিনছি। না হলে আরও বেশি কিনতাম।’

রনি আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আগে জানলে এ রাতের জন্য দেরি করতাম না। এখন যে দামে ইলিশ কিনলাম, তা আগের চেয়ে আরও বেশি। মানুষ হুজুকে মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। আমিও আসছি, এখন দাম দেখে আর কিনলাম না। এ বছর ইলিশের সরবরাহও তুলনামূলক কম ছিল। যে কারণে বেশি দাম হাঁকিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে পুরো জেলা জুড়ে। সব জায়গায় শত শত মন ইলিশ বিক্রি হয়েছে। তবে দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

অন্যদিকে, এ বছর ইলিশের মেলায় পুরো জেলায় দুই কোটি টাকা উপরে বিক্রি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ইলিশ ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শনিবার রাত ১২টা থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। তাই যত ইলিশ সংগ্রহে ছিল সবই বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ, মাছ মজুতও রাখা যাবে না। ক্রেতারাও আসছে, আমরাও বিক্রি করছি। তবে দাম গতবারের চেয়ে এবার একটু বেশি। যে কারণে ক্রেতারা কম কিনছে।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পুরানবাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর নিষিদ্ধ সময়ের আগের রাতে ইলিশ মাছ বিক্রির ধুম পড়ে। সব মাছ ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার আগ পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি করে। এ আড়তে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। আর জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় এক কোটি টাকা ইলিশ বিক্রি হয়। আমরা সংরক্ষিত সময়ে কোনো ইলিশ কেনা-বেচা করি না।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

মাদারীপুরে এক রাতে দুই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি

আপডেট সময় ০৮:৪৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

মাদারীপুরের বিভিন্ন জায়গায় গেল রাতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় দুই কোটি টাকার ইলিশ মাছ বেচা-কেনা হয়েছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর পূর্ব মুহূর্তে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন ইলিশ বাজারে। জেলা শহরের পুরানবাজার মাছের আড়ত, মস্তফাপুর মৎস্য ভান্ডার সহ রাজৈর, কালকিনি, শিবচর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ইলিশ বেচা-কেনার এ মহোৎসব শুরু হয় শনিবার বিকাল হতে। যা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

আগামী ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা ও বাজারজাত বন্ধ থাকায় এমন বেচা-বিক্রি হয়েছে বলে দাবি মাছ ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে এক রাতে এমন ইলিশের মেলায় পুরো মাদারীপুরই যেন মুখরিত হয়ে উঠে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় এসব মাছের আড়তে ইলিশ কেনার ধুম পড়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার বিকাল থেকেই মাদারীপুর পৌর শহরের পুরানবাজার মাছের আড়তে ইলিশ মাছ নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সময় গাড়ানোর সঙ্গে ক্রেতারাও আসতে শুরু করেন ছোট-বড় আকারের ইলিশ কিনতে।

এদিন, পুরুষের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদেরও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবমিলিয়ে রাত গভীর হলে পুরো মাছের আড়তে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এ যেন রীতিমতো মাছ আর মানুষের মিলন মেলায় রূপ নেয়।

এ কারণে স্থানীয়রাও এটিকে ইলিশের মেলা বলেই আখ্যায়িত করেছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। মাছ কিনতে আসা রাজিব হোসেন বলেন, ‘২২ দিন ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে না। তাই এখন মাছ কিনতে আসছি। তবে গতবার এক কেজি সাইজের ইলিশ ছিল ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, এবার সেই ইলিশ ১৮০০ টাকার উপরে। যে কারণে মাত্র ৩ কেজি ইলিশ কিনছি। না হলে আরও বেশি কিনতাম।’

রনি আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আগে জানলে এ রাতের জন্য দেরি করতাম না। এখন যে দামে ইলিশ কিনলাম, তা আগের চেয়ে আরও বেশি। মানুষ হুজুকে মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। আমিও আসছি, এখন দাম দেখে আর কিনলাম না। এ বছর ইলিশের সরবরাহও তুলনামূলক কম ছিল। যে কারণে বেশি দাম হাঁকিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে পুরো জেলা জুড়ে। সব জায়গায় শত শত মন ইলিশ বিক্রি হয়েছে। তবে দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

অন্যদিকে, এ বছর ইলিশের মেলায় পুরো জেলায় দুই কোটি টাকা উপরে বিক্রি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ইলিশ ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শনিবার রাত ১২টা থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। তাই যত ইলিশ সংগ্রহে ছিল সবই বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ, মাছ মজুতও রাখা যাবে না। ক্রেতারাও আসছে, আমরাও বিক্রি করছি। তবে দাম গতবারের চেয়ে এবার একটু বেশি। যে কারণে ক্রেতারা কম কিনছে।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পুরানবাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর নিষিদ্ধ সময়ের আগের রাতে ইলিশ মাছ বিক্রির ধুম পড়ে। সব মাছ ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার আগ পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি করে। এ আড়তে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। আর জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় এক কোটি টাকা ইলিশ বিক্রি হয়। আমরা সংরক্ষিত সময়ে কোনো ইলিশ কেনা-বেচা করি না।