পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিন নারী ও দুই শিশুও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
কুররামের এক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আধাসামরিক বাহিনীর প্রহরায় একটি সুন্নি গাড়িবহর শনিবার যাত্রা করার সময় আক্রমণের শিকার হয়। এতে ১৪ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে তিন নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
এ ছাড়া ছয়জন আহত হয়েছে। পরে সীমান্ত পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজন আক্রমণকারীকে হত্যা করে, যাদের শিয়া হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
সুন্নি ও শিয়া মুসলিম উপজাতিদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় বিরতিহীন সহিংস লড়াই চলছে। কুররাম আগে আধা-স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ছিল।
সেখানে বহু বছর ধরে সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ইতিহাস রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে শত শত প্রাণহানি ঘটেছে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সাম্প্রতিক এই হামলা ছিল ‘সাম্প্রদায়িকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, যা ‘গত দুই দশক ধরে এই অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টি করছে। ‘প্রত্যেক সংঘর্ষই শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক রূপ নেয়’।
জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসেও সংঘর্ষে বহু মানুষ নিহত হয়েছে। পরে জিরগা বা গোত্রীয় পরিষদের আহ্বানে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করার পর সে সংঘর্ষ শেষ হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বর্তমানে নতুন করে শান্তিচুক্তি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পাকিস্তানে গোত্রীয় ও পারিবারিক বিবাদ খুবই সাধারণ বিষয়। তবে খাইবারপাখতুনখোয়ার মতো দূরবর্তী এলাকায় এই বিবাদগুলো দীর্ঘমেয়াদি ও সহিংস হতে পারে, যেখানে মানুষ ঐতিহ্যবাহী গোত্রীয় মর্যাদার নিয়ম মেনে চলে। সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে শিয়া সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে।