ঢাকা ০৭:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাজারের আগুন নিভবে কবে

ভারত ছাড়ছেন শেখ হাসিনা

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৫৬:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • 135

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

মানবজমিন:

ভারত ছাড়ছেন শেখ হাসিনা
প্রবল গণআন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য কোথায়? এনিয়ে কৌতূহল। নানা গুঞ্জন তো আছেই। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে জানতে চেয়েছে, শেখ হাসিনা কীভাবে, কোন ব্যবস্থায় দিল্লিতে অবস্থান করছেন? জবাবে ভারত নাকি বলেছে, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে তিনি চলে যাবেন। এই খবর ঢাকার সরকারি মহলকেও জানানো হয়েছে। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে তিনি দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করেন। এরপর থেকে তিনি কোথায় আছেন তা আর প্রকাশ পায়নি।

শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকা কূটনৈতিক পাসপোর্টও (লাল পাসপোর্ট) বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এ ধরনের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ভারতে ৪৫ দিন বৈধভাবে থাকতে পারেন। ইতিমধ্যে ভারতে শেখ হাসিনা প্রায় ২ মাস ধরে অবস্থান করছেন। কূটনৈতিক পাসপোর্টে তার বৈধভাবে অবস্থানের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এখন তিনি কোন স্ট্যাটাসে দেশটিতে অবস্থান করছেন তা পরিষ্কার নয়। ভারতের পক্ষ থেকেও বিষয়টি খোলাসা করা হয়নি।

দেশরুপান্তর:

বাজারের আগুন নিভবে কবে
প্রায় দুই বছর ধরে ভোগ্যপণ্যের বাজারে বেসামাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, আমদানিনির্ভরতা, বাজারে সিন্ডিকেট, মজুদদারির কারণে বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। এ ছাড়া বিগত সরকারের সময়ে বাজার নজরদারির ঘাটতি এবং অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি নিত্যপণ্যের বাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত দুই মাসে মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা নিম্নযাত্রা দেখা গেলেও জনসাধারণের স্বস্তির জায়গা এখনো অনেক দূর। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত দুই মাসেও ভোগ্যপণ্যের গড় দাম বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। বিশেষ করে ডিম, আটা, ডাল, পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে অনেকটা বেপরোয়াভাবে। এতে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

প্রথম আলো:

আয়নাঘরের’ প্রমাণ পেল কমিশন, ৪০০ অভিযোগ

শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে জোরপূর্বক মানুষকে তুলে নিয়ে গুম করে রাখার গোপন বন্দিশালার প্রমাণ পেয়েছে এ–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। তারা বলছে, ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই বন্দিশালার অবস্থান ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের চৌহদ্দির মধ্যে, যা একসময় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য গুলশানে তাদের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় কমিশনের অন্য চার সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কার্যক্রম শুরুর পর গত ১৩ কার্যদিবসে এই কমিশনে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগকারীদের বড় অংশ এখনো নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের স্বজন বলে কমিশন সূত্র জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুম–সংক্রান্ত কমিশন গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে কমিশনের সদস্যরা দেখতে পান, ডিজিএফআইয়ের কার্যালয় চৌহদ্দির মধ্যে একটি দোতলা ভবন রয়েছে। যার নিচতলায় ২০ থেকে ২২টি সেল (বন্দিশালার কক্ষ) রয়েছে। তবে এসব সেলে এখন কেউ নেই, খালি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই সদর দপ্তরের কম্পাউন্ডে অবস্থিত দোতলা ভবনের নিচতলায় ছিল জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল। দোতলার কক্ষগুলো ব্যবহৃত হতো প্রশাসনিক কাজে। ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় গোপন বন্দিশালার যে বর্ণনা আমরা পেয়েছি, জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের সঙ্গে তার পুরোপুরি মিল আছে।’

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১০ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বা লক্ষ্যবস্তু করা ব্যক্তিদের গুম করার প্রবণতা শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এটা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা গোপন বন্দিশালা পরিচালনা ও গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনার দাবিতে সোচ্চার হন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

দেশে ঋণ খেলাপের জনক সালমান
এক ব্যাংক থেকেই নেওয়া ২৫ হাজার কোটি টাকার ৭২ শতাংশ খেলাপিব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার যত কৌশল আছে, তার সবগুলোই প্রয়োগ করেছেন সালমান এফ রহমান। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার নতুন নিয়ম তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বাধ্য করেছিলেন তিনি। ঋণের টাকা ফেরত না দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংককে বড় ঝুঁকিতে ফেলেছে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার ওপরে। তাই সালমান এফ রহমানকে বাংলাদেশের ‘ঋণ খেলাপের জনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন অনেকেই। গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শেয়ারবাজার ও ব্যাংক খাতে কেলেঙ্কারির মূলহোতাদের একজন হিসেবে গত ১৫ বছর ধরেই আলোচনায় ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ ও সময়মতো পরিশোধ না করার পাশাপাশি কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে তুলে নিয়েছেন ৬ হাজার কোটি টাকা। বেক্সিমকোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে গত মঙ্গলবার ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শেয়ারবাজার এবং ব্যাংক খাতকে বিপর্যস্ত অবস্থায় রেখে গেছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ অবস্থার জন্য অন্যতম দায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সরকারি এই ব্যাংকটিকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। তার ঋণের পরিমাণ ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে নয় গুণ বেশি। এটা সালমানের ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা মেরে দেওয়ার অনেক ঘটনার মাত্র একটি উদাহরণ।

কালবেলা:

সামিট সিন্ডিকেটের কবজায় ইন্টারনেট
বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার কারণে ইন্টারনেট সেবার একক কর্তৃত্ব হারিয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। একসময় একক নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বর্তমানে দেশের চাহিদার অর্ধেকেরও কম ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি। বাকি অর্ধেকের বেশি সরবরাহ করে বেসরকারি ৭টি কোম্পানি। যদিও দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটির।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬ হাজার জিবিপিস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথের চাহিদা রয়েছে। আর বিএসসিপিএলসি দুটি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে। অথচ কোম্পানিটির সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ২০০ জিবিপিএস। অন্যদিকে, আইটিসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে ৩ হাজার ৩০০ জিবিপিএস। যার শুধু সামিটই সরবরাহ করে ৮০ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে বিএসসিপিএলসির অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে প্রায় ৫ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ। সরকার হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব।

সক্ষমতা থাকার পরও কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ বিক্রি কমে যাচ্ছে—এর কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং ‘কাছের লোকদের’ মালিকানাধীন কোম্পানিকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। ফলে সরকারি কোম্পানিটির সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকেরও নিচে নেমে আসে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে সামিট। আমদানি থেকে শুরু করে গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট সরবরাহের সব ধরনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আলোচিত এই কোম্পানিকে। সরকারি কর্মকর্তারাই এই সুযোগ করে দিয়েছেন।

কালের কন্ঠ:

ব্যবসা-বাণিজ্যে উদ্বেগ আস্থার সংকট
অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে আগের সরকারের ভুল নীতির রেশ কাটেনি এখনো। ডলারপ্রবাহ সামান্য বাড়লেও সংকট আছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় অব্যাহতভাবে বাড়ছে সুদের হার। ফলে উচ্চ সুদের হারে বিনিয়োগ স্থবিরতা প্রকট হচ্ছে।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সহিংসতা, শিল্পাঞ্চলে টানা অস্থিরতা, বিক্ষোভ, সংঘর্ষ। মানুষ বদল হয়েছে ঠিকই; কিন্তু আগের মতো জেঁকে বসেছে চাঁদাবাজিও। নানা অজুহাতে দাবিদাওয়ার আড়ালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলা, নিরপরাধ ব্যবসায়ীদের হয়রানিমূলক মামলাসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মহলে আস্থাহীনতা, শঙ্কা, ভয় আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। থমকে আছে ব্যবসার প্রসার ও নতুন বিনিয়োগ।
আছে ভাবমূর্তির সংকটও। এ কারণে দুই মাস ধরে পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে আসছেন না। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে রপ্তানিমুখী শিল্প, মানুষের কর্মসংস্থান ও সরকারের রাজস্ব আয়। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

নয়াদিগন্ত:

আ’লীগের অপকর্মের দায় নিতে রাজি নয় ১৪ দলের শরিকরা

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্মরণকালের মহাবিপর্যয় ঘটেছে দলটির। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ প্রধানের ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং দলটির সব পর্যায়ের নেতা-মন্ত্রী ও এমপিদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পরই দীর্ঘ দিন ধরে সুখে-দুখে পাশে থাকা জোটসঙ্গী দলগুলোও বোল পাল্টাতে শুরু করেছে। জোটসঙ্গী হিসেবে টানা ১৬ বছর সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও এখন আওয়ামী লীগের অতীতের কোনো অপকর্মের দায়ভার নিতেও রাজি নয় শরিকদলগুলো। যদিও গণহত্যার হুকুমদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত বুধবার একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এ বিষয়টি নিয়ে জোটসঙ্গীরা বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন। অভিযোগ প্রাথমিক অবস্থায় থাকায় বিষয়টি আপাতত পর্যবেক্ষণ করছেন জোটের শরিকরা। তাদের মতে, জোটের প্রত্যেক দলের নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ আছে। যদিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসের ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট গঠন হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে টানা ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেয়াদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জাপা, তরিকত ফেডারেশন অন্যতম। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছিল জোট প্রধান। তাদের কথামতোই সব চলত। তারাই সরকারের সুযোগ-সুবিধাভোগী। এ দেশে যত লুটপাট, গুম, খুন, বিরোধী দল দমনসহ অন্যান্য যেসব অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই করেছে। শরিকদলগুলো শুধু জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের সময় সক্রিয় ছিল। ফলে তাদের অতীতের অপকর্মের দায়ভার শরিকরা কেন নেবে- তাদের এমন প্রশ্নও রয়েছে।

যুগান্তর:

ঘুসের খবরে তোলপাড়
ডিসি (জেলা প্রশাসক) নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সারা দেশের মাঠ প্রশাসন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইছে। বেশ উদ্বিগ্ন সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

এ ব্যাপারে তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা হলেন-ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ তদন্তসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানান।

সমকাল:

মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ প্রকাশ
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরাইলের বিমান হামলার ঘটনায় বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নিয়ে জাতিসংঘের কার্যকারিতা জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক করছে বলে মনে করেন তিনি। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বুধবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করেছে ইসরায়েল। এসব হামলায় অসংখ্য শিশু, নারী ও পুরুষ হতাহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বহু স্থাপনা।

অথচ বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিল আলোচনার পর আলোচনা করে চলেছে। অথচ এখনো পর্যন্ত এই ভয়ঙ্কর ও প্রাণঘাতী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারছে না। জাতিসংঘের কার্যকারিতা নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ প্রাণঘাতী, বিবেকহীন ও অর্থহীন যুদ্ধ এখনই বন্ধ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারলে বিশ্ব আরও বেশি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কালবিলম্ব না করে এ বিষয়ে জাতিসংঘের কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

বনিক বার্তা:

সামিট-আদানি-বেক্সিমকোসহ ১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বা বিশেষ আইনের অধীনে হওয়া ভারতের আদানি, বাংলাদেশের সামিট ও বেক্সিমকোসহ ১১ প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সরবরাহ-সংক্রান্ত চুক্তি খতিয়ে দেখবে সরকার। এজন্য তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত চেয়েছে সরকার গঠিত জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি। বিভিন্ন ধাপে আরো তথ্য চাওয়া হবে বলে কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এজন্য সরকার গঠিত জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির দ্বিতীয় সভায় (২৮ সেপ্টেম্বর) ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

বাজারের আগুন নিভবে কবে

ভারত ছাড়ছেন শেখ হাসিনা

আপডেট সময় ০৭:৫৬:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

মানবজমিন:

ভারত ছাড়ছেন শেখ হাসিনা
প্রবল গণআন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য কোথায়? এনিয়ে কৌতূহল। নানা গুঞ্জন তো আছেই। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে জানতে চেয়েছে, শেখ হাসিনা কীভাবে, কোন ব্যবস্থায় দিল্লিতে অবস্থান করছেন? জবাবে ভারত নাকি বলেছে, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে তিনি চলে যাবেন। এই খবর ঢাকার সরকারি মহলকেও জানানো হয়েছে। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে তিনি দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করেন। এরপর থেকে তিনি কোথায় আছেন তা আর প্রকাশ পায়নি।

শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকা কূটনৈতিক পাসপোর্টও (লাল পাসপোর্ট) বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এ ধরনের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ভারতে ৪৫ দিন বৈধভাবে থাকতে পারেন। ইতিমধ্যে ভারতে শেখ হাসিনা প্রায় ২ মাস ধরে অবস্থান করছেন। কূটনৈতিক পাসপোর্টে তার বৈধভাবে অবস্থানের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এখন তিনি কোন স্ট্যাটাসে দেশটিতে অবস্থান করছেন তা পরিষ্কার নয়। ভারতের পক্ষ থেকেও বিষয়টি খোলাসা করা হয়নি।

দেশরুপান্তর:

বাজারের আগুন নিভবে কবে
প্রায় দুই বছর ধরে ভোগ্যপণ্যের বাজারে বেসামাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, আমদানিনির্ভরতা, বাজারে সিন্ডিকেট, মজুদদারির কারণে বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। এ ছাড়া বিগত সরকারের সময়ে বাজার নজরদারির ঘাটতি এবং অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি নিত্যপণ্যের বাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত দুই মাসে মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা নিম্নযাত্রা দেখা গেলেও জনসাধারণের স্বস্তির জায়গা এখনো অনেক দূর। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত দুই মাসেও ভোগ্যপণ্যের গড় দাম বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। বিশেষ করে ডিম, আটা, ডাল, পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে অনেকটা বেপরোয়াভাবে। এতে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

প্রথম আলো:

আয়নাঘরের’ প্রমাণ পেল কমিশন, ৪০০ অভিযোগ

শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে জোরপূর্বক মানুষকে তুলে নিয়ে গুম করে রাখার গোপন বন্দিশালার প্রমাণ পেয়েছে এ–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। তারা বলছে, ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই বন্দিশালার অবস্থান ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের চৌহদ্দির মধ্যে, যা একসময় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য গুলশানে তাদের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় কমিশনের অন্য চার সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কার্যক্রম শুরুর পর গত ১৩ কার্যদিবসে এই কমিশনে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগকারীদের বড় অংশ এখনো নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের স্বজন বলে কমিশন সূত্র জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুম–সংক্রান্ত কমিশন গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে কমিশনের সদস্যরা দেখতে পান, ডিজিএফআইয়ের কার্যালয় চৌহদ্দির মধ্যে একটি দোতলা ভবন রয়েছে। যার নিচতলায় ২০ থেকে ২২টি সেল (বন্দিশালার কক্ষ) রয়েছে। তবে এসব সেলে এখন কেউ নেই, খালি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই সদর দপ্তরের কম্পাউন্ডে অবস্থিত দোতলা ভবনের নিচতলায় ছিল জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল। দোতলার কক্ষগুলো ব্যবহৃত হতো প্রশাসনিক কাজে। ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় গোপন বন্দিশালার যে বর্ণনা আমরা পেয়েছি, জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের সঙ্গে তার পুরোপুরি মিল আছে।’

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১০ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বা লক্ষ্যবস্তু করা ব্যক্তিদের গুম করার প্রবণতা শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এটা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা গোপন বন্দিশালা পরিচালনা ও গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনার দাবিতে সোচ্চার হন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

দেশে ঋণ খেলাপের জনক সালমান
এক ব্যাংক থেকেই নেওয়া ২৫ হাজার কোটি টাকার ৭২ শতাংশ খেলাপিব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার যত কৌশল আছে, তার সবগুলোই প্রয়োগ করেছেন সালমান এফ রহমান। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার নতুন নিয়ম তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বাধ্য করেছিলেন তিনি। ঋণের টাকা ফেরত না দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংককে বড় ঝুঁকিতে ফেলেছে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার ওপরে। তাই সালমান এফ রহমানকে বাংলাদেশের ‘ঋণ খেলাপের জনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন অনেকেই। গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শেয়ারবাজার ও ব্যাংক খাতে কেলেঙ্কারির মূলহোতাদের একজন হিসেবে গত ১৫ বছর ধরেই আলোচনায় ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ ও সময়মতো পরিশোধ না করার পাশাপাশি কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে তুলে নিয়েছেন ৬ হাজার কোটি টাকা। বেক্সিমকোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে গত মঙ্গলবার ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শেয়ারবাজার এবং ব্যাংক খাতকে বিপর্যস্ত অবস্থায় রেখে গেছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ অবস্থার জন্য অন্যতম দায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সরকারি এই ব্যাংকটিকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। তার ঋণের পরিমাণ ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে নয় গুণ বেশি। এটা সালমানের ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা মেরে দেওয়ার অনেক ঘটনার মাত্র একটি উদাহরণ।

কালবেলা:

সামিট সিন্ডিকেটের কবজায় ইন্টারনেট
বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার কারণে ইন্টারনেট সেবার একক কর্তৃত্ব হারিয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। একসময় একক নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বর্তমানে দেশের চাহিদার অর্ধেকেরও কম ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি। বাকি অর্ধেকের বেশি সরবরাহ করে বেসরকারি ৭টি কোম্পানি। যদিও দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটির।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬ হাজার জিবিপিস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথের চাহিদা রয়েছে। আর বিএসসিপিএলসি দুটি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে। অথচ কোম্পানিটির সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ২০০ জিবিপিএস। অন্যদিকে, আইটিসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে ৩ হাজার ৩০০ জিবিপিএস। যার শুধু সামিটই সরবরাহ করে ৮০ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে বিএসসিপিএলসির অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে প্রায় ৫ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ। সরকার হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব।

সক্ষমতা থাকার পরও কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ বিক্রি কমে যাচ্ছে—এর কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং ‘কাছের লোকদের’ মালিকানাধীন কোম্পানিকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। ফলে সরকারি কোম্পানিটির সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকেরও নিচে নেমে আসে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে সামিট। আমদানি থেকে শুরু করে গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট সরবরাহের সব ধরনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আলোচিত এই কোম্পানিকে। সরকারি কর্মকর্তারাই এই সুযোগ করে দিয়েছেন।

কালের কন্ঠ:

ব্যবসা-বাণিজ্যে উদ্বেগ আস্থার সংকট
অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে আগের সরকারের ভুল নীতির রেশ কাটেনি এখনো। ডলারপ্রবাহ সামান্য বাড়লেও সংকট আছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় অব্যাহতভাবে বাড়ছে সুদের হার। ফলে উচ্চ সুদের হারে বিনিয়োগ স্থবিরতা প্রকট হচ্ছে।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সহিংসতা, শিল্পাঞ্চলে টানা অস্থিরতা, বিক্ষোভ, সংঘর্ষ। মানুষ বদল হয়েছে ঠিকই; কিন্তু আগের মতো জেঁকে বসেছে চাঁদাবাজিও। নানা অজুহাতে দাবিদাওয়ার আড়ালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলা, নিরপরাধ ব্যবসায়ীদের হয়রানিমূলক মামলাসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মহলে আস্থাহীনতা, শঙ্কা, ভয় আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। থমকে আছে ব্যবসার প্রসার ও নতুন বিনিয়োগ।
আছে ভাবমূর্তির সংকটও। এ কারণে দুই মাস ধরে পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে আসছেন না। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে রপ্তানিমুখী শিল্প, মানুষের কর্মসংস্থান ও সরকারের রাজস্ব আয়। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

নয়াদিগন্ত:

আ’লীগের অপকর্মের দায় নিতে রাজি নয় ১৪ দলের শরিকরা

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্মরণকালের মহাবিপর্যয় ঘটেছে দলটির। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ প্রধানের ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং দলটির সব পর্যায়ের নেতা-মন্ত্রী ও এমপিদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পরই দীর্ঘ দিন ধরে সুখে-দুখে পাশে থাকা জোটসঙ্গী দলগুলোও বোল পাল্টাতে শুরু করেছে। জোটসঙ্গী হিসেবে টানা ১৬ বছর সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও এখন আওয়ামী লীগের অতীতের কোনো অপকর্মের দায়ভার নিতেও রাজি নয় শরিকদলগুলো। যদিও গণহত্যার হুকুমদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত বুধবার একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এ বিষয়টি নিয়ে জোটসঙ্গীরা বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন। অভিযোগ প্রাথমিক অবস্থায় থাকায় বিষয়টি আপাতত পর্যবেক্ষণ করছেন জোটের শরিকরা। তাদের মতে, জোটের প্রত্যেক দলের নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ আছে। যদিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসের ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট গঠন হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে টানা ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেয়াদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জাপা, তরিকত ফেডারেশন অন্যতম। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছিল জোট প্রধান। তাদের কথামতোই সব চলত। তারাই সরকারের সুযোগ-সুবিধাভোগী। এ দেশে যত লুটপাট, গুম, খুন, বিরোধী দল দমনসহ অন্যান্য যেসব অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই করেছে। শরিকদলগুলো শুধু জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের সময় সক্রিয় ছিল। ফলে তাদের অতীতের অপকর্মের দায়ভার শরিকরা কেন নেবে- তাদের এমন প্রশ্নও রয়েছে।

যুগান্তর:

ঘুসের খবরে তোলপাড়
ডিসি (জেলা প্রশাসক) নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সারা দেশের মাঠ প্রশাসন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইছে। বেশ উদ্বিগ্ন সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

এ ব্যাপারে তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা হলেন-ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ তদন্তসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানান।

সমকাল:

মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ প্রকাশ
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরাইলের বিমান হামলার ঘটনায় বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নিয়ে জাতিসংঘের কার্যকারিতা জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক করছে বলে মনে করেন তিনি। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বুধবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করেছে ইসরায়েল। এসব হামলায় অসংখ্য শিশু, নারী ও পুরুষ হতাহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বহু স্থাপনা।

অথচ বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিল আলোচনার পর আলোচনা করে চলেছে। অথচ এখনো পর্যন্ত এই ভয়ঙ্কর ও প্রাণঘাতী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারছে না। জাতিসংঘের কার্যকারিতা নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ প্রাণঘাতী, বিবেকহীন ও অর্থহীন যুদ্ধ এখনই বন্ধ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারলে বিশ্ব আরও বেশি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কালবিলম্ব না করে এ বিষয়ে জাতিসংঘের কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

বনিক বার্তা:

সামিট-আদানি-বেক্সিমকোসহ ১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বা বিশেষ আইনের অধীনে হওয়া ভারতের আদানি, বাংলাদেশের সামিট ও বেক্সিমকোসহ ১১ প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সরবরাহ-সংক্রান্ত চুক্তি খতিয়ে দেখবে সরকার। এজন্য তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত চেয়েছে সরকার গঠিত জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি। বিভিন্ন ধাপে আরো তথ্য চাওয়া হবে বলে কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এজন্য সরকার গঠিত জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির দ্বিতীয় সভায় (২৮ সেপ্টেম্বর) ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়।