দেশের সর্ববৃহৎস্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে দুই দিনে ৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ভারতে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার প্রথম চালানে ২০টি ট্রাকে ৫৪ মেট্রিক টন ৪৬০ কেজি এবং আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ১৫ টি ট্রাকে ৪৫ মেট্রিক টন ২০০ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ভারতে।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। বন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ২০টি ট্রাকে ৫৪ মেট্রিক টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ৪৫ মেট্রিক টন ২০০ কেজির মতো গেটপাস হয়েছে। এ নিয়ে দুই দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হলো ৯৯ মেট্রিক টন ৬৬০ কেজি ইলিশ।
প্রতি কেজি ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ১০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি এক হাজার ১৮০ টাকা দরে। জানা গেছে, পূজার আগে পদ্মার ইলিশ পেয়ে ভারতীয়রা খুশি হলেও রপ্তানিতে দেশে ইলিশের সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতারা। বর্তমানে দেশীয় বাজারে কেজিতে ইলিশের দাম বেড়েছে ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। বেনাপোল বাজারের মাছের আড়তে পাইকারিতে প্রতি এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ৬৫০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সে হিসাবে একই আকারের ইলিশ প্রায় ৫০০-৬০০ টাকা কমে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ ১০ মার্কিন ডলার রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করেছে কয়েক বছর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখনো সেই পরিপত্র অনুযায়ীই রপ্তানি হচ্ছে। তবে ইলিশের দেশীয় বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে দাম সমন্বয় হতে পারে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান। নাভারণ বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, স্থানীয় বাজারে যেখানে প্রতি কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬৫০ টাকা বিক্রি হয়, সেখানে ভারতে ১০ ডলার বা ১ হাজার ১৮০ টাকা কেজিতে কিভাবে রপ্তানি হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
এ ছাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম আকারের ইলিশ গতকাল দেড় হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি। বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোলে ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারতে দুর্গাপূজা মানে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা, প্রিয়জনদের সঙ্গে আড্ডা আর জমজমাট খাওয়াদাওয়া। ইলিশ ছাড়া বাঙালির খাওয়াদাওয়া যেন পরিপূর্ণ হয় না। আর দুর্গাপূজার আগেই ভোজনরসিক বাঙালির কাছে সর্বোৎকৃষ্ট মহরত। রেস্তোরাঁ হোক বা বাড়িতে অষ্টমী বা নবমীর দুপুরে শরষে ইলিশ, ইলিশ ভাপা বা ইলিশ পাতুরি, ইলিশ বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ না করলে পূজার আনন্দ অনেকটাই মাটি হয়ে যায়। স্বাদে-গন্ধে পদ্মার ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। এবার বাংলাদেশের ইলিশ আসার কারণে পূজায় ইলিশ রসনায় তৃপ্ত হবে বঙ্গ সমাজ এ কথা বলাই বাহুল্য।