ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক জোট গঠন করেছে সৌদি

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক জোট গঠন করেছে সৌদি

ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানের একমাত্র গ্রহণযোগ্য উপায় দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর এ লক্ষ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে একটি বৈশ্বিক জোট গঠন করেছে সৌদি আরব। একই লক্ষ্যে কয়েক দশকের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অঞ্চলটি এখন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এক সভায় তার বক্তৃতার সময় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক জোট উন্মোচন করেন, যেখানে আরব লিগ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও নরওয়ে অংশগ্রহণ করেছিল।

প্রিন্স ফয়সাল জানান, জোটের প্রথম বৈঠকটি রিয়াদে অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, পরবর্তী বৈঠকগুলোও রিয়াদ ও ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হবে। প্রিন্স ফয়সাল আরো জানান, এই উদ্যোগটি আরব ও ইউরোপের যৌথ প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা ন্যায়সঙ্গত ও সামগ্রিক শান্তি অর্জনের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও অপরিবর্তনীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করব।’

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যার প্রথম ধাপ হওয়া উচিত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

এদিকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এতে ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল।

সেই সঙ্গে হামাস শত শত মানুষকে জিম্মি করেছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং অনেকেই এখনো গাজায় রয়েছে। কিন্তু প্রিন্স ফয়সাল বলেন, চলমান যুদ্ধ পাশাপাশি পশ্চিম তীর, আল-আকসা মসজিদ এবং মুসলিম ও খ্রিস্টানদের অন্য পবিত্র স্থানগুলোতে ইসরায়েলি ও ইসরায়েলের অপরাধের কারণে এক বিধ্বংসী মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরো জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর করা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে অভুক্ত রাখার চেষ্টা, উসকানি, মানবিক অবমাননা এবং যৌন সহিংসতাসহ অন্যান্য অপরাধ ও নির্যাতনকে আত্মরক্ষার অধিকার দিয়ে ন্যায়সংগত করা যায় না।

সৌদি আরব বারবার বলেছে, ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে না। তবে ইসরায়েল তাতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি।

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের অধিকাংশ সদস্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এর প্রতি কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন চরমোনাইর পীর

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক জোট গঠন করেছে সৌদি

আপডেট সময় ০৭:৫৫:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানের একমাত্র গ্রহণযোগ্য উপায় দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর এ লক্ষ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে একটি বৈশ্বিক জোট গঠন করেছে সৌদি আরব। একই লক্ষ্যে কয়েক দশকের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অঞ্চলটি এখন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এক সভায় তার বক্তৃতার সময় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক জোট উন্মোচন করেন, যেখানে আরব লিগ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও নরওয়ে অংশগ্রহণ করেছিল।

প্রিন্স ফয়সাল জানান, জোটের প্রথম বৈঠকটি রিয়াদে অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, পরবর্তী বৈঠকগুলোও রিয়াদ ও ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হবে। প্রিন্স ফয়সাল আরো জানান, এই উদ্যোগটি আরব ও ইউরোপের যৌথ প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা ন্যায়সঙ্গত ও সামগ্রিক শান্তি অর্জনের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও অপরিবর্তনীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করব।’

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যার প্রথম ধাপ হওয়া উচিত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

এদিকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এতে ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল।

সেই সঙ্গে হামাস শত শত মানুষকে জিম্মি করেছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং অনেকেই এখনো গাজায় রয়েছে। কিন্তু প্রিন্স ফয়সাল বলেন, চলমান যুদ্ধ পাশাপাশি পশ্চিম তীর, আল-আকসা মসজিদ এবং মুসলিম ও খ্রিস্টানদের অন্য পবিত্র স্থানগুলোতে ইসরায়েলি ও ইসরায়েলের অপরাধের কারণে এক বিধ্বংসী মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরো জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর করা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে অভুক্ত রাখার চেষ্টা, উসকানি, মানবিক অবমাননা এবং যৌন সহিংসতাসহ অন্যান্য অপরাধ ও নির্যাতনকে আত্মরক্ষার অধিকার দিয়ে ন্যায়সংগত করা যায় না।

সৌদি আরব বারবার বলেছে, ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে না। তবে ইসরায়েল তাতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি।

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের অধিকাংশ সদস্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এর প্রতি কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।