ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

এইচএসসির বাতিল পরীক্ষার ফল হবে এসএসসির নম্বরের ভিত্তিতে

এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং) হবে মাঝপথে বাতিল করা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। আগে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে ফল প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেবল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নেওয়া হবে না। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল।

গত মাসে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এবারের এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফলাফল কীভাবে প্রকাশ করা হবে, সে বিষয়ে সম্ভাব্য প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ফলাফল তৈরি করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, ইতিমধ্যে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে। বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা আছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিলেন, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এবার এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। মোট পরীক্ষার্থী সাড়ে ১৪ লাখের মতো। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। এ ছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষাও বাকি। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়।

পরে সিদ্ধান্ত হয় যে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। যদিও তা হয়নি। কারণ হিসেবে শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির দিন বিভিন্ন এলাকার থানায় হামলা হয়েছিল। এতে থানায় রাখা প্রশ্নপত্রের ট্রাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় ১১ আগস্টের পরিবর্তে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনে নামেন পরীক্ষার্থীদের অনেকে। তাঁদের দাবি ছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাঁদের মানসিক চাপে ফেলেছে। তাই অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে। একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়।

এ অবস্থায় দুটি বিকল্প নিয়ে ফলাফল প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। এর একটি ছিল, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ৭৫ শতাংশ ও জেএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ২৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনায় নিয়ে ফল প্রকাশ। আরেকটি হলো, শুধু এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করা। শেষে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে করোনাকালে এভাবে বিষয় ম্যাপিং করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সবাই পাস করেন।

ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবি মাহমুদুর রহমানের

এইচএসসির বাতিল পরীক্ষার ফল হবে এসএসসির নম্বরের ভিত্তিতে

আপডেট সময় ০৭:২০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং) হবে মাঝপথে বাতিল করা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। আগে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে ফল প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেবল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নেওয়া হবে না। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল।

গত মাসে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এবারের এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফলাফল কীভাবে প্রকাশ করা হবে, সে বিষয়ে সম্ভাব্য প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ফলাফল তৈরি করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, ইতিমধ্যে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে। বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা আছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিলেন, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এবার এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। মোট পরীক্ষার্থী সাড়ে ১৪ লাখের মতো। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। এ ছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষাও বাকি। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়।

পরে সিদ্ধান্ত হয় যে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। যদিও তা হয়নি। কারণ হিসেবে শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির দিন বিভিন্ন এলাকার থানায় হামলা হয়েছিল। এতে থানায় রাখা প্রশ্নপত্রের ট্রাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় ১১ আগস্টের পরিবর্তে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনে নামেন পরীক্ষার্থীদের অনেকে। তাঁদের দাবি ছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাঁদের মানসিক চাপে ফেলেছে। তাই অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে। একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়।

এ অবস্থায় দুটি বিকল্প নিয়ে ফলাফল প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। এর একটি ছিল, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ৭৫ শতাংশ ও জেএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ২৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনায় নিয়ে ফল প্রকাশ। আরেকটি হলো, শুধু এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করা। শেষে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে করোনাকালে এভাবে বিষয় ম্যাপিং করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সবাই পাস করেন।