ঢাকা ০২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের

এক প্রকল্প থেকেই ৩০০ কোটি লোপাট

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৯:১০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 74

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

মানবজমিন:

এক প্রকল্প থেকেই ৩০০ কোটি লোপাট
কুমিল্লা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাফর মো. শফিউদ্দিন শামীম। এমপি হয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে গড়ে তুলেছিলেন নিজের সাম্রাজ্য। সংস্থাটির যেকোনো প্রকল্পের ঠিকাদার ছিল শামীমের নিজস্ব মালিকানা প্রতিষ্ঠান টিএস ট্রান্সফরমার। জানা গেছে, আরইবি’র উপকেন্দ্র নির্মাণে
৭৭৩ কোটি টাকার দরপত্র ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ ও স্মার্ট মিটার প্রকল্পে বেশি দর দিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সাবেক এমপি শামীমের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন আরইবি’র একাধিক কর্মকর্তা। তারা জানান, দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যুতের এই খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের এই চেয়ারম্যান। অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটও (বিএফআইইউ)। এরই মধ্যে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আরইবি’র খুলনা জোনের উপকেন্দ্র আধুনিকায়নের প্রকল্পেই ২২৭ কোটি টাকা বাড়তি বিল গুনতে হবে আরইবিকে। আগের কাজ শেষ না হতেই আরও একটি লটে সাবেক এমপি শামীমের প্রতিষ্ঠান টিএস ট্রান্সফরমারকে অস্বাভাবিক দরে কাজ দেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তবে সরকারের পটপরিবর্তনের কারণে নতুন লটের যাচাই-বাছাইয়ের দাবি উঠেছে। প্রতিযোগিতামূলক দর নিশ্চিত করা গেলে কমপক্ষে একশ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা।

সূত্র আরও জানায়, গত দেড় দশকে শামীম একটানা আরইবি নিয়ন্ত্রণ করে গেছেন। সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন তিনি। ২০২২ সালে ৮টি প্যাকেজের আওতায় ৩৭টি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণের দরপত্র চাওয়া হয়। দ্বৈত খাম পদ্ধতির ওই দরপত্রে ৯টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও কৌশলে ৬ প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে দেয়া হয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাইলে নানা রকম ভয়-ভীতি দেখানো হয়। নামকরা একাধিক কোম্পানি দরপত্র জমা দিলেও যৌক্তিক কারণ ছাড়াই দরপত্র বাতিল করা হয়। কাজ পাবে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান, সেটি নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন তাই করেছেন প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি)।

প্রথম আলো:

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের
● সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈঠক বিরল।

● প্রথা ভেঙে দুই শীর্ষ নেতার হৃদ্যতাপূর্ণ এই বৈঠক প্রতীকী অর্থেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কারে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানানো হয়।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো দেশের শীর্ষ নেতার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের তেমন নজির নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তো এমন বৈঠক বিরল। গতকাল মঙ্গলবার সেই বিরল বৈঠকটিই অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাছে পেয়ে বুকে টেনে নেন। হাতে হাত রেখে বলেন, বাংলাদেশের সংস্কারের যে লক্ষ্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ঠিক করেছেন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে হোয়াইট হাউস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি থাকবে পূর্ণ সমর্থন।গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে দুই শীর্ষ নেতার বিরল বৈঠকের ছবি ও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে গতকাল রাতে (নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে) বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শীর্ষ নেতাদের জন্য নির্ধারিত সভাকক্ষে ড. ইউনূসের সঙ্গে জো বাইডেনের নির্ধারিত সময় ছিল ১৫ মিনিট। কিন্তু অত্যন্ত উষ্ণ এবং হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ড. ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তাঁর সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেকোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

কালের কন্ঠ:

গোয়েন্দা নজরে নতুন ডিসিরা
আরো জটিল হচ্ছে ডিসি নিয়োগ বিতর্ক। এ নিয়োগের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নও এখন সামনে এসেছে। এরই মধ্যে এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার ক্যাশ চেকসহ চিরকুট পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এদিকে নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে একের পর এক ঘটনার জন্ম হওয়ার প্রেক্ষাপটে সারা দেশের নতুন ডিসিরা এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নতুন ডিসিরা ক্ষমতা হারানো হাসিনা সরকারের ‘সুবিধাভোগী’ কি না, আগের সরকারের মন্ত্রী-সচিবদের এপিএস, পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কি না, ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে চাকরিজীবনের বদলি-পদায়নসহ সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। তাঁরা গত ছয় মাস প্রশাসনের কোথায় ছিলেন, কাদের সঙ্গে চলাফেরা ও উঠাবসা করেছেন তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাঁদের ভূমিকা কী ছিল, তাতেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। তবে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠার পর সরকার ডিসিদের প্রকৃত ‘আমলনামা’ জানার চেষ্টা করছে।

নয়াদিগন্ত:

নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করছে না বিএনপি
নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে না বিএনপি। তবে দলটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ আশা করছে। দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার জনগণের সরকার। তাদের নেয়া সংস্কার উদ্যোগেও জনগণের সম্মতি রয়েছে। তবে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ প্রতিষ্ঠাই এই সরকারের সব সংস্কারকার্যক্রমের প্রধান টার্গেট হওয়া উচিত।
গত সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সমর্থন দেয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি তার পাশে থাকব। যা-ই হোক না কেন। যাতে করে তিনি তার কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারেন।’ তার মতে, দেড় বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত এবং সেনাবাহিনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। একই সাথে তার এ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য এবং সশস্ত্রবাহিনীকে প্রেসিডেন্টের অধীনে নেয়ার ধারণা উঠে এসেছে।

যুগান্তর:

সংস্কার সম্পন্ন করে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন

যে কোনো পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করব * রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা উচিত * বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে ১৮ মাস বা দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে যে কোনো পরিস্থিতিতে পূর্ণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও তিনি জানান। তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও কথা বলেন। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীনে নেওয়া যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

‘বাংলাদেশ আর্মি চিফ প্লেজেস সাপোর্ট ফর ইউনূস ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট কাম হোয়াট মে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও তার সেনাবাহিনী আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমাতে ব্যবস্থা নেয়নি। এটিই শেখ হাসিনার পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। ১৫ বছরের ক্ষমতা থেকে তিনি পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারত চলে যেতে বাধ্য হন।

সোমবার ঢাকায় নিজ কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার একটি রূপরেখাও দিয়েছেন। সেনাপ্রধান বলেন, ‘যা-ই ঘটুক না কেন, আমি তার (মুহাম্মদ ইউনূস) পাশে থাকব। যাতে তিনি তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. ইউনূস বিচার বিভাগ, পুলিশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কালবেলা:

‘জিনের বাদশা’ আবু বকর অবৈধ সম্পদেও বাদশা
বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু আবু বকর সিদ্দিকের। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। সহকর্মীদের কাছে আবু বকরের পরিচিতি ‘জিনের বাদশা’ নামে। ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। গত জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়া এই ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। রাজধানীতে তার রয়েছে কয়েকটি বাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লট। ব্যাংকেও রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা।

চলতি বছরের এপ্রিলে বহুল আলোচিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে আবু বকর সিদ্দিকের ঘুষ-বাণিজ্য। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে দুদকে থাকা অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তনের কথা বলে আবু বকর দাবি করেন ৬০ লাখ টাকা। ওই টাকা নিয়ে আবু বকরের বাসায় গেলে তিনি টাকা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, সেগুলো ডলার বা ইউরো করে নিয়ে আসতে। শামসুজ্জামান বাধ্য হয়ে ডলারে কনভার্ট করে ৬০ লাখ টাকা দেন আবু বকরকে। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর তার ঘুষ, দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দুদক। বেশ কিছুদিন আগেই একজন পরিচালককে তার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও চাকরিকালে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন আবু বকর। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ভবনসহ ডজন খানেক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তাকে টাকা দিলেই মিলে যেত দুদকের ‘ক্লিনশিট’। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে তিনি ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। তার দুই ছেলে থাকেন যুক্তরাজ্যে। ঘুষের টাকা সেখানে পাঠিয়ে দেন হুন্ডিতে। আর সেই টাকা ‘রেমিট্যান্স’ হয়ে আবার চলে আসে আবু বকরের কাছে।

দেশরুপান্তর:

নির্বিচার মামলায় অবিচারের শঙ্কা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হতাহতের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢালাও মামলাগুলোয় নির্বিচারে আসামি করা হচ্ছে বাছবিচার ছাড়াই। এরই মধ্যে কয়েকটি চক্র মেতেছে মামলাবাণিজ্যে। তাদের লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধাররা। মামলায় আসামি না করার জন্য তাদের কাছে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দাবি করা টাকা না দিলেই দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মামলা। শুধু ব্যবসায়ীই নন, বাদ যাচ্ছেন না শিক্ষক, সাংবাদিক ও তারকারাও। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও পূর্বশত্রুতার জেরে মামলার আসামি করারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে আর আসামি চেনেন না বাদীকে। এমনকি ঢাকার ঘটনার মামলায় আসামি করা হয়েছে ঢাকার বাইরের জেলার শত শত মানুষকে।

এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ মামলা প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সঠিক বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের বাইরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যখন ঢাকার ঘটনায় রাজশাহী, রংপুর আর লালমনিরহাট থেকে ১০০-১৫০ মানুষ আসামি হবে, তখন খুব সহজেই অনুমান করা যায় এগুলো বানোয়াট মামলা। এগুলো শুধু হেনস্তার জন্য করা হয়েছে। রংপুর থেকে ১০০ জন মানুষ ঢাকায় এসে একজনকে খুন করবে না। যেখানে লোক মারা গেছে পুলিশের গুলিতে। এগুলো স্ক্রিপ্টেট (সাজানো)। কেউ একজন লিখে দিচ্ছে, সেগুলো থানায় থানায় চলছে। ব্যবসায়ীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা, দুই নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এরপর অমুক এলাকার ২০০ লোক! এগুলো কিছু হলো! এ ধরনের মামলাগুলো করাই হয় প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের

এক প্রকল্প থেকেই ৩০০ কোটি লোপাট

আপডেট সময় ০৯:১০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

মানবজমিন:

এক প্রকল্প থেকেই ৩০০ কোটি লোপাট
কুমিল্লা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাফর মো. শফিউদ্দিন শামীম। এমপি হয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে গড়ে তুলেছিলেন নিজের সাম্রাজ্য। সংস্থাটির যেকোনো প্রকল্পের ঠিকাদার ছিল শামীমের নিজস্ব মালিকানা প্রতিষ্ঠান টিএস ট্রান্সফরমার। জানা গেছে, আরইবি’র উপকেন্দ্র নির্মাণে
৭৭৩ কোটি টাকার দরপত্র ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ ও স্মার্ট মিটার প্রকল্পে বেশি দর দিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সাবেক এমপি শামীমের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন আরইবি’র একাধিক কর্মকর্তা। তারা জানান, দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যুতের এই খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের এই চেয়ারম্যান। অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটও (বিএফআইইউ)। এরই মধ্যে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আরইবি’র খুলনা জোনের উপকেন্দ্র আধুনিকায়নের প্রকল্পেই ২২৭ কোটি টাকা বাড়তি বিল গুনতে হবে আরইবিকে। আগের কাজ শেষ না হতেই আরও একটি লটে সাবেক এমপি শামীমের প্রতিষ্ঠান টিএস ট্রান্সফরমারকে অস্বাভাবিক দরে কাজ দেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তবে সরকারের পটপরিবর্তনের কারণে নতুন লটের যাচাই-বাছাইয়ের দাবি উঠেছে। প্রতিযোগিতামূলক দর নিশ্চিত করা গেলে কমপক্ষে একশ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা।

সূত্র আরও জানায়, গত দেড় দশকে শামীম একটানা আরইবি নিয়ন্ত্রণ করে গেছেন। সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন তিনি। ২০২২ সালে ৮টি প্যাকেজের আওতায় ৩৭টি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণের দরপত্র চাওয়া হয়। দ্বৈত খাম পদ্ধতির ওই দরপত্রে ৯টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও কৌশলে ৬ প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে দেয়া হয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাইলে নানা রকম ভয়-ভীতি দেখানো হয়। নামকরা একাধিক কোম্পানি দরপত্র জমা দিলেও যৌক্তিক কারণ ছাড়াই দরপত্র বাতিল করা হয়। কাজ পাবে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান, সেটি নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন তাই করেছেন প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুর রহমান ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি)।

প্রথম আলো:

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের
● সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈঠক বিরল।

● প্রথা ভেঙে দুই শীর্ষ নেতার হৃদ্যতাপূর্ণ এই বৈঠক প্রতীকী অর্থেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কারে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানানো হয়।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো দেশের শীর্ষ নেতার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের তেমন নজির নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তো এমন বৈঠক বিরল। গতকাল মঙ্গলবার সেই বিরল বৈঠকটিই অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাছে পেয়ে বুকে টেনে নেন। হাতে হাত রেখে বলেন, বাংলাদেশের সংস্কারের যে লক্ষ্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ঠিক করেছেন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে হোয়াইট হাউস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি থাকবে পূর্ণ সমর্থন।গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে দুই শীর্ষ নেতার বিরল বৈঠকের ছবি ও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে গতকাল রাতে (নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে) বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শীর্ষ নেতাদের জন্য নির্ধারিত সভাকক্ষে ড. ইউনূসের সঙ্গে জো বাইডেনের নির্ধারিত সময় ছিল ১৫ মিনিট। কিন্তু অত্যন্ত উষ্ণ এবং হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ড. ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তাঁর সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেকোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

কালের কন্ঠ:

গোয়েন্দা নজরে নতুন ডিসিরা
আরো জটিল হচ্ছে ডিসি নিয়োগ বিতর্ক। এ নিয়োগের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নও এখন সামনে এসেছে। এরই মধ্যে এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার ক্যাশ চেকসহ চিরকুট পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এদিকে নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে একের পর এক ঘটনার জন্ম হওয়ার প্রেক্ষাপটে সারা দেশের নতুন ডিসিরা এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নতুন ডিসিরা ক্ষমতা হারানো হাসিনা সরকারের ‘সুবিধাভোগী’ কি না, আগের সরকারের মন্ত্রী-সচিবদের এপিএস, পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কি না, ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে চাকরিজীবনের বদলি-পদায়নসহ সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। তাঁরা গত ছয় মাস প্রশাসনের কোথায় ছিলেন, কাদের সঙ্গে চলাফেরা ও উঠাবসা করেছেন তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাঁদের ভূমিকা কী ছিল, তাতেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। তবে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠার পর সরকার ডিসিদের প্রকৃত ‘আমলনামা’ জানার চেষ্টা করছে।

নয়াদিগন্ত:

নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করছে না বিএনপি
নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে না বিএনপি। তবে দলটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ আশা করছে। দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার জনগণের সরকার। তাদের নেয়া সংস্কার উদ্যোগেও জনগণের সম্মতি রয়েছে। তবে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ প্রতিষ্ঠাই এই সরকারের সব সংস্কারকার্যক্রমের প্রধান টার্গেট হওয়া উচিত।
গত সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সমর্থন দেয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি তার পাশে থাকব। যা-ই হোক না কেন। যাতে করে তিনি তার কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারেন।’ তার মতে, দেড় বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত এবং সেনাবাহিনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। একই সাথে তার এ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য এবং সশস্ত্রবাহিনীকে প্রেসিডেন্টের অধীনে নেয়ার ধারণা উঠে এসেছে।

যুগান্তর:

সংস্কার সম্পন্ন করে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন

যে কোনো পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করব * রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা উচিত * বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে ১৮ মাস বা দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে যে কোনো পরিস্থিতিতে পূর্ণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও তিনি জানান। তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও কথা বলেন। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীনে নেওয়া যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

‘বাংলাদেশ আর্মি চিফ প্লেজেস সাপোর্ট ফর ইউনূস ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট কাম হোয়াট মে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও তার সেনাবাহিনী আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমাতে ব্যবস্থা নেয়নি। এটিই শেখ হাসিনার পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। ১৫ বছরের ক্ষমতা থেকে তিনি পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারত চলে যেতে বাধ্য হন।

সোমবার ঢাকায় নিজ কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার একটি রূপরেখাও দিয়েছেন। সেনাপ্রধান বলেন, ‘যা-ই ঘটুক না কেন, আমি তার (মুহাম্মদ ইউনূস) পাশে থাকব। যাতে তিনি তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. ইউনূস বিচার বিভাগ, পুলিশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কালবেলা:

‘জিনের বাদশা’ আবু বকর অবৈধ সম্পদেও বাদশা
বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু আবু বকর সিদ্দিকের। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। সহকর্মীদের কাছে আবু বকরের পরিচিতি ‘জিনের বাদশা’ নামে। ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। গত জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়া এই ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। রাজধানীতে তার রয়েছে কয়েকটি বাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লট। ব্যাংকেও রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা।

চলতি বছরের এপ্রিলে বহুল আলোচিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে আবু বকর সিদ্দিকের ঘুষ-বাণিজ্য। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে দুদকে থাকা অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তনের কথা বলে আবু বকর দাবি করেন ৬০ লাখ টাকা। ওই টাকা নিয়ে আবু বকরের বাসায় গেলে তিনি টাকা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, সেগুলো ডলার বা ইউরো করে নিয়ে আসতে। শামসুজ্জামান বাধ্য হয়ে ডলারে কনভার্ট করে ৬০ লাখ টাকা দেন আবু বকরকে। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর তার ঘুষ, দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দুদক। বেশ কিছুদিন আগেই একজন পরিচালককে তার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও চাকরিকালে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন আবু বকর। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ভবনসহ ডজন খানেক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তাকে টাকা দিলেই মিলে যেত দুদকের ‘ক্লিনশিট’। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে তিনি ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। তার দুই ছেলে থাকেন যুক্তরাজ্যে। ঘুষের টাকা সেখানে পাঠিয়ে দেন হুন্ডিতে। আর সেই টাকা ‘রেমিট্যান্স’ হয়ে আবার চলে আসে আবু বকরের কাছে।

দেশরুপান্তর:

নির্বিচার মামলায় অবিচারের শঙ্কা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হতাহতের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢালাও মামলাগুলোয় নির্বিচারে আসামি করা হচ্ছে বাছবিচার ছাড়াই। এরই মধ্যে কয়েকটি চক্র মেতেছে মামলাবাণিজ্যে। তাদের লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধাররা। মামলায় আসামি না করার জন্য তাদের কাছে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দাবি করা টাকা না দিলেই দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মামলা। শুধু ব্যবসায়ীই নন, বাদ যাচ্ছেন না শিক্ষক, সাংবাদিক ও তারকারাও। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও পূর্বশত্রুতার জেরে মামলার আসামি করারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে আর আসামি চেনেন না বাদীকে। এমনকি ঢাকার ঘটনার মামলায় আসামি করা হয়েছে ঢাকার বাইরের জেলার শত শত মানুষকে।

এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ মামলা প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সঠিক বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের বাইরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যখন ঢাকার ঘটনায় রাজশাহী, রংপুর আর লালমনিরহাট থেকে ১০০-১৫০ মানুষ আসামি হবে, তখন খুব সহজেই অনুমান করা যায় এগুলো বানোয়াট মামলা। এগুলো শুধু হেনস্তার জন্য করা হয়েছে। রংপুর থেকে ১০০ জন মানুষ ঢাকায় এসে একজনকে খুন করবে না। যেখানে লোক মারা গেছে পুলিশের গুলিতে। এগুলো স্ক্রিপ্টেট (সাজানো)। কেউ একজন লিখে দিচ্ছে, সেগুলো থানায় থানায় চলছে। ব্যবসায়ীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা, দুই নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এরপর অমুক এলাকার ২০০ লোক! এগুলো কিছু হলো! এ ধরনের মামলাগুলো করাই হয় প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য।’