ঢাকা ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতায় সেজেছে পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

“শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি,
ছাড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি।”-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস নিয়ে হয় শরৎকাল। শরৎ কালকে গুণবাচক নামে ঋতুর রানীও বলা হয়। শরৎকালের প্রকৃতি হয় কোমল, শান্ত-স্নিগ্ধ, উদার। ক্ষণিকের জন্য মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত হয়। নদী, বিল, পুকুর ও হাওরের স্বচ্ছ পানির বুকে শুভ্র শাপলার পাগল করা হাসি প্রেয়সীর হৃদয়কাড়া হাসির মতোই মনে হয়। তাইতো শরতের বন্দনায় নির্মলেন্দু গুণ তার একটি কবিতায় লিখেছেন:-
“ওগো কাশের মেয়ে
আজকে আমার মন জুড়ালো তোমার দেখা পেয়ে,
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালবাসার কাশ
তাইতো আমি এই শরতে তোমার কৃতদাস।”

বাধা ধরা সময় দুই মাস হলেও আমার মনে হয় সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পায় এই শরৎকাল। সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পেলেও শরৎ যেন প্রকৃতির সুভ্রতায় আনন্দ দেবার মাত্রাটা অন্যসব ঋতু থেকে এগিয়ে। নদীর কিনারে বালির চরে হেসে ওঠে কাশবন। এসময় মানুষের মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে।প্রকৃতির আবহাওয়া থাকে নাতিশীতোষ্ণ, না গরম না শীত।কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আবার কখনো আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে এক চিলতে সোনালী রোদ। এই কারণেই ভ্রমণ পিপাসুরা ভ্রমণ করে খুব বেশি মজা পায় এই শরতেই।

ঠিক তার ব্যতিক্রম নয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শরৎ এলে কাশফুলের শুভ্রতা আর প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় পাবিপ্রবি হয়ে ওঠে এক রোমান্থন স্থান। এবছরেও শরতের আগমনী বার্তায় কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে গেছে প্রিয় পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ভবনের সামনে থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশে, নবনির্মিত হল এর সামনে, ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃতির এই মেলবন্ধন দেখতে প্রায় প্রতিদিন ভিড় করেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য দর্শনার্থীরা।

প্রতিদিন বিকেল হলেই ক্যাম্পাসে আনাগোনা বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের, পশ্চিম আকাশে সূর্য মামা যতক্ষণ না হেলে পড়ে যায়,প্রকৃতি প্রেমিরাও ঠিক ততক্ষণ সুভ্র কাশফুলের মায়ায় আচ্ছাদিত থাকে। মৃদু বৃষ্টি আর আকাশের শুভ্রতায় ক্যাম্পাসের প্রকৃতি যেন মেলে ধরে তার আপন মহিমা, বিস্তার করতে চাই তার সুশোভিত রূপ। বাহারি এই রুপের সুধা নিতে কেউ বন্ধুদের সাথে দলবেধে ঘুরতে আসেন,কেউবা আবার তার প্রিয়তমাকে নিয়ে। প্রিয়তমার নীল শাড়ি আর কাশফুলের সুভ্রতাকে কেউবা আবার ক্যামেরাবন্দী করায় ব্যাস্ত সময় পার করেন। কেউ কেউ সুন্দর এই মুহুর্তগুলোকে আজীবন স্বরণীয় রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতি হিসেবে বাক্সবন্দি করেন। এভাবেই শরৎ তার রুপ বৈচিত্র্য দিয়ে পাবিপ্রবিকে আলিঙ্গন করেছে, যার মুগ্ধতায় আনন্দিত নানা শ্রেনীর মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।

কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। কাশফুল উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে

শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতায় সেজেছে পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

আপডেট সময় ০৯:৩০:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

“শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি,
ছাড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি।”-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস নিয়ে হয় শরৎকাল। শরৎ কালকে গুণবাচক নামে ঋতুর রানীও বলা হয়। শরৎকালের প্রকৃতি হয় কোমল, শান্ত-স্নিগ্ধ, উদার। ক্ষণিকের জন্য মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত হয়। নদী, বিল, পুকুর ও হাওরের স্বচ্ছ পানির বুকে শুভ্র শাপলার পাগল করা হাসি প্রেয়সীর হৃদয়কাড়া হাসির মতোই মনে হয়। তাইতো শরতের বন্দনায় নির্মলেন্দু গুণ তার একটি কবিতায় লিখেছেন:-
“ওগো কাশের মেয়ে
আজকে আমার মন জুড়ালো তোমার দেখা পেয়ে,
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালবাসার কাশ
তাইতো আমি এই শরতে তোমার কৃতদাস।”

বাধা ধরা সময় দুই মাস হলেও আমার মনে হয় সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পায় এই শরৎকাল। সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পেলেও শরৎ যেন প্রকৃতির সুভ্রতায় আনন্দ দেবার মাত্রাটা অন্যসব ঋতু থেকে এগিয়ে। নদীর কিনারে বালির চরে হেসে ওঠে কাশবন। এসময় মানুষের মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে।প্রকৃতির আবহাওয়া থাকে নাতিশীতোষ্ণ, না গরম না শীত।কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আবার কখনো আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে এক চিলতে সোনালী রোদ। এই কারণেই ভ্রমণ পিপাসুরা ভ্রমণ করে খুব বেশি মজা পায় এই শরতেই।

ঠিক তার ব্যতিক্রম নয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শরৎ এলে কাশফুলের শুভ্রতা আর প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় পাবিপ্রবি হয়ে ওঠে এক রোমান্থন স্থান। এবছরেও শরতের আগমনী বার্তায় কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে গেছে প্রিয় পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ভবনের সামনে থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশে, নবনির্মিত হল এর সামনে, ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃতির এই মেলবন্ধন দেখতে প্রায় প্রতিদিন ভিড় করেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য দর্শনার্থীরা।

প্রতিদিন বিকেল হলেই ক্যাম্পাসে আনাগোনা বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের, পশ্চিম আকাশে সূর্য মামা যতক্ষণ না হেলে পড়ে যায়,প্রকৃতি প্রেমিরাও ঠিক ততক্ষণ সুভ্র কাশফুলের মায়ায় আচ্ছাদিত থাকে। মৃদু বৃষ্টি আর আকাশের শুভ্রতায় ক্যাম্পাসের প্রকৃতি যেন মেলে ধরে তার আপন মহিমা, বিস্তার করতে চাই তার সুশোভিত রূপ। বাহারি এই রুপের সুধা নিতে কেউ বন্ধুদের সাথে দলবেধে ঘুরতে আসেন,কেউবা আবার তার প্রিয়তমাকে নিয়ে। প্রিয়তমার নীল শাড়ি আর কাশফুলের সুভ্রতাকে কেউবা আবার ক্যামেরাবন্দী করায় ব্যাস্ত সময় পার করেন। কেউ কেউ সুন্দর এই মুহুর্তগুলোকে আজীবন স্বরণীয় রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতি হিসেবে বাক্সবন্দি করেন। এভাবেই শরৎ তার রুপ বৈচিত্র্য দিয়ে পাবিপ্রবিকে আলিঙ্গন করেছে, যার মুগ্ধতায় আনন্দিত নানা শ্রেনীর মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।

কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। কাশফুল উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।