অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, ‘এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি আমরা রক্ষা করে যাচ্ছি।’
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মহানগর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সবধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব জামায়াতে ইসলামীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর এই সরকারকে পরিচালনায় তিনি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের প্রতিনিধি দল কয়েকদফা আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের কাছে আমাদের সুপারিশমালা রেখে এসেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন। আমরাও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলাম। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে যাচ্ছি। এ সহযোগিতা আমাদের থাকবে।’
এখনও ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনও দুই মাস হয়নি, একটা অরাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শুরু থেকেই এই ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ধুলিসাৎ করার জন্য একটা পাল্টা প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, ছাত্র-জনতার সেই বিপ্লবের প্রতিবিপ্লবকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। তারা জুডিশিয়াল ক্যু করার চেষ্টা করেছিল। দলবাজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্টের আপিল ডিভিশনের জাস্টিসরা ষড়যন্ত্র করে প্রথমে তারা একটা ফুলকোর্ট মিটিং করে তারা ষড়যন্ত্র করছিল যে, তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাতিল করবে। এই খবর জানার পর আমাদের দামাল ছাত্র-সমাজ সমস্ত হাইকোর্ট ঘেরাও করেছে এবং বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি করে। তখন প্রধান বিচারপতিসহ আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। আমাদের ছাত্র-সমাজ জুডিশিয়াল ক্যু থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে সফলতার পরিচয় দিয়েছে।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘তারা আনসার কাণ্ড ঘটিয়ে আবার সচিবালয় দখল করে সরকারকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। সেটাও ছাত্রসমাজ রুখে দিয়েছে। জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, ক্ষোভ তৈরি করে সরকারকে তারা ফেইল করাতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বাংলাদেশ সকল ধর্ম, বর্ণ, মানুষের এক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের বাংলাদেশ। সেখানে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে উস্কে দিয়ে বলছে, এখানে হিন্দুরা নিরাপদ নয়। তারা সারা দুনিয়াকে দেখাতে চায় এখানে তারা নিরাপদ নয়। সচিবালয় থেকে শুরু করে জনপ্রশাসনে অনেক জায়গায় স্বৈরাচারের অনেক দোসর ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা আমাদের কথা শুনে না, জনগণের কথা শুনে না। ফ্যাসিবাদের জন্য তাদের অন্তরে অনেক মায়া। এই মায়া করে লাভ হবে না। ওদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকুন।’
মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. মোহা. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সদস্য সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দীন, রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল প্রমুখ।