অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতার ওপর দেশের আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, এই সরকার সফল হলে দেশের মানুষের জন্য ভালো হবে। আর যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশের মানুষকে ভুগতে হবে। তাই সরকারকে সফল করার জন্য সবার সহযোগিতা করা উচিত।
‘দেশে বেকারত্ব মহামারি নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাত দফা প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নুরুল হক এ কথা বলেন।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ে এ সভা হয়।
সভায় নুরুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, অথচ তার দোসরেরা এখনো সক্রিয়। তারা গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গোপালগঞ্জের হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আটক করার দাবি জানান নুরুল হক। তা না হলে সেখানকার প্রশাসনের কারও চাকরি থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নুরুল হক বলেন, গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীরা সংগঠিত হয়ে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করেছিল, এটা লজ্জার। তিনি বলেন, তাদের শায়েস্তা করতে না পারলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে।
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয় মন্তব্য করে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, এরই মধ্যে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্র স্থবির হয়ে আছে। রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলকে দূরে রেখে কি রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবেন?
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, এই সাত দফা প্রস্তাব তরুণদের মুক্তির লক্ষ্যে অবিসংবাদিত প্রস্তাব। সরকার অনতিবিলম্বে এসব প্রস্তাব আমলে নেবে, অন্যথায় সারা দেশে তরুণসমাজের মধ্যে জনমত তৈরি করা হবে। ২০ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন ও ২২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর সারা দেশে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাত দফার মধ্যে রয়েছে সব ধরনের বৈষম্যমুক্ত চাকরি ও কর্মসংস্থানকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিবছর নিয়মিত বেকারত্বের জরিপ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে চাহিদাভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আইসিটি সেক্টরে তরুণদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সব ধরনের চাকরিতে আবেদন ফি, অবৈধ সুপারিশ, যেকোনো জামানত ও বয়সসীমামুক্ত চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুষ ও দুর্নীতির মতো অসদুপায়ে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া বন্ধ এবং সরকারি ও বেসরকারি চাকরির বৈষম্য অবসান ঘটাতে হবে ইত্যাদি।