ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাহজালাল বিমানবন্দরের সেবার মানোন্নয়ন, খুশি যাত্রীরা

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের সেবায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। এতে খুশি যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর সামনে সৌদি প্রবাসী আক্তার হোসেন বলেন, ‘চাকরির সুবাদে দীর্ঘ ১০ বছর জেদ্দায় থাকি। প্রতি বছরই ছুটিতে দেশে আসি। সব সময়ই লাগেজ পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেক সময় লাগেজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মালামাল চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এবার যাত্রীদের তেমন কোনো ভোগান্তি নেই। এমনকি ইমিগ্রেশন পুলিশের যেসব সদস্য আগে গোমড়া মুখ করে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেন, এখন তাদের ব্যবহার খুবই আন্তরিক।’

বেলা ১১টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন গাজীপুরের সাইফুল আলম। তিনিও বিমানবন্দরের নাগরিক সেবায় সন্তুষ্টির কথা জানান।

সাইফুল আলম বলেন, ‘দেশে ফিরে অনেক প্রবাসীর কাছে সিম থাকে না। পরিবারের কেউ বিমানবন্দরে এলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা খুঁজে বের করতে কষ্ট হতো। এখন দেখলাম, বিমানবন্দরের ভেতরে যাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা স্থানে টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ টেলিফোন ব্যবহার না জানলে সংশ্লিষ্টরা সহযোগিতা করছেন। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই আছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এমন আন্তরিকতা আগে দেখেনি কেউ।’

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শাহজালাল বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তাদের রদবদল হয়। মূলত তখন থেকেই বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা বাড়তে থাকে। এখন এই ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।

বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘গত আগস্ট থেকে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যে পরিবর্তন লেগেছে, তা যেন অব্যাহত থাকে। সে জন্য প্রায় প্রতিদিনই বিমানবন্দর পরির্দশন করি। বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলি, যাতে তারা যাত্রীদের পর্যাপ্ত সেবা দেন। এছাড়া সবাইকে বলেছি, যাতে তারা যাত্রীদের তথা প্রবাসীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। একদিন আমি পরিচয় গোপন রেখে যাত্রীদের সঙ্গে ইমিগ্রেশন, লাগেজ সংগ্রহ, চেকিং কার্যক্রম পরির্দশন করেছি। দেখেছি, বিমানবন্দরের সেবায় প্রায় সব যাত্রী সন্তুষ্ট। এখন শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বিশ্বমানের সেবা পাবেন যাত্রীরা।’

শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। এখন দেশের যে কেউ কল সেন্টারে (০৯৬১৪-০১৩৬০০) যোগাযোগ করে সেবা নিতে পারছেন। এছাড়া যাত্রীসেবা বাড়াতে একই দিন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ কল সেন্টারে বিমানবন্দর-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানা যায়।

আর পোর্টালে কাস্টমস ডিউটি অফিসারদের নামের তালিকা, ইমিগ্রেশন পুলিশের সেবা, নিরাপত্তা সেবা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার তথ্য, হুইলচেয়ার সেবা, ব্যাংকিং ও মানি এক্সচেঞ্জ সেবা, জরুরি প্রয়োজনে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত সব কর্মকর্তার ফোন নম্বর, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেবা, কোন উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার কোন উড়োজাহাজ কখন ছেড়ে যাবে, কখন এসে পৌঁছাবে তা ঘরে বসেই জানতে পারছেন যাত্রীরা। তবে গত আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে এসব সেবার প্রচার বেড়েছে। আর বিমানবন্দরে কর্মরত সবার ব্যবহারেও পরিবর্তন ঘটেছে।

ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে অনশনে ৮ শিক্ষার্থী

শাহজালাল বিমানবন্দরের সেবার মানোন্নয়ন, খুশি যাত্রীরা

আপডেট সময় ০৩:৪৪:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের সেবায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। এতে খুশি যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর সামনে সৌদি প্রবাসী আক্তার হোসেন বলেন, ‘চাকরির সুবাদে দীর্ঘ ১০ বছর জেদ্দায় থাকি। প্রতি বছরই ছুটিতে দেশে আসি। সব সময়ই লাগেজ পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেক সময় লাগেজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মালামাল চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এবার যাত্রীদের তেমন কোনো ভোগান্তি নেই। এমনকি ইমিগ্রেশন পুলিশের যেসব সদস্য আগে গোমড়া মুখ করে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেন, এখন তাদের ব্যবহার খুবই আন্তরিক।’

বেলা ১১টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন গাজীপুরের সাইফুল আলম। তিনিও বিমানবন্দরের নাগরিক সেবায় সন্তুষ্টির কথা জানান।

সাইফুল আলম বলেন, ‘দেশে ফিরে অনেক প্রবাসীর কাছে সিম থাকে না। পরিবারের কেউ বিমানবন্দরে এলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা খুঁজে বের করতে কষ্ট হতো। এখন দেখলাম, বিমানবন্দরের ভেতরে যাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা স্থানে টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ টেলিফোন ব্যবহার না জানলে সংশ্লিষ্টরা সহযোগিতা করছেন। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই আছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এমন আন্তরিকতা আগে দেখেনি কেউ।’

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শাহজালাল বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তাদের রদবদল হয়। মূলত তখন থেকেই বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা বাড়তে থাকে। এখন এই ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।

বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘গত আগস্ট থেকে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যে পরিবর্তন লেগেছে, তা যেন অব্যাহত থাকে। সে জন্য প্রায় প্রতিদিনই বিমানবন্দর পরির্দশন করি। বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলি, যাতে তারা যাত্রীদের পর্যাপ্ত সেবা দেন। এছাড়া সবাইকে বলেছি, যাতে তারা যাত্রীদের তথা প্রবাসীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। একদিন আমি পরিচয় গোপন রেখে যাত্রীদের সঙ্গে ইমিগ্রেশন, লাগেজ সংগ্রহ, চেকিং কার্যক্রম পরির্দশন করেছি। দেখেছি, বিমানবন্দরের সেবায় প্রায় সব যাত্রী সন্তুষ্ট। এখন শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বিশ্বমানের সেবা পাবেন যাত্রীরা।’

শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। এখন দেশের যে কেউ কল সেন্টারে (০৯৬১৪-০১৩৬০০) যোগাযোগ করে সেবা নিতে পারছেন। এছাড়া যাত্রীসেবা বাড়াতে একই দিন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ কল সেন্টারে বিমানবন্দর-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানা যায়।

আর পোর্টালে কাস্টমস ডিউটি অফিসারদের নামের তালিকা, ইমিগ্রেশন পুলিশের সেবা, নিরাপত্তা সেবা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার তথ্য, হুইলচেয়ার সেবা, ব্যাংকিং ও মানি এক্সচেঞ্জ সেবা, জরুরি প্রয়োজনে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত সব কর্মকর্তার ফোন নম্বর, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেবা, কোন উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার কোন উড়োজাহাজ কখন ছেড়ে যাবে, কখন এসে পৌঁছাবে তা ঘরে বসেই জানতে পারছেন যাত্রীরা। তবে গত আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে এসব সেবার প্রচার বেড়েছে। আর বিমানবন্দরে কর্মরত সবার ব্যবহারেও পরিবর্তন ঘটেছে।