আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ
কালবেলা:
যেমন খুশি তেমন খাও সিন্ডিকেট ডেসকোতে
রাজধানীর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানিতে (ডেসকো) বছরের পর বছর ধরে চলছে দেদার লুটপাট। অবাস্তব প্রকল্প গ্রহণ, প্রকল্প ব্যয় কয়েক গুণ বৃদ্ধি, নিয়োগের ক্ষেত্রে চরম আত্মীয়করণ, দুর্বল ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে টাকা আত্মসাৎ, কেনাকাটায় অতিরিক্ত ব্যয়, অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণসহ এহেন কোনো অবৈধ কাজ নেই, যা এই প্রতিষ্ঠানে হয়নি। ডেসকো পরিচালনার নীতিই যেন ‘যেমন খুশি তেমন খাও’। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই লুটপাটে নেতৃত্ব দিচ্ছে কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট। অনেকটা প্রকাশ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি হলেও সবসময়ই নীরব ছিল বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। কারণ দুর্নীতিবাজ চক্রের প্রতি সাবেক মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর আশীর্বাদ ছিল।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটলেও ডেসকোতে তার আঁচ লাগেনি। উল্টো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা একাট্টা হয়ে আগের মতোই লুটপাটে সহায়ক প্রকল্প পাস করাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানে সক্রিয় দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।
জানা গেছে, ‘ঢাকা পাওয়ার সিস্টেম এক্সপেনশন অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং’ প্রজেক্টের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় কেনাকাটা বাবদ প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। নথিপত্র বলছে, এই ২শ কোটি টাকার কেনাকাটায়ও নেওয়া হয়েছে বড় অনিয়মের আশ্রয়। কোনো কোনো পণ্য দুই থেকে তিন গুণ বেশি ব্যয়ে কেনা হয়েছে।
নয়াদিগন্ত:
রাষ্ট্র সংস্কারে ৬ কমিশন
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতী অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
বক্তব্যের শুরুতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সব শহীদের প্রতি। আমি আরো স্মরণ করছি তাদের যারা ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতী অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে, আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ববরণ করেছে, হারিয়েছে তাদের চোখের দৃষ্টি।
তিনি বলেন, সেসব বীরকে স্মরণ করছি যারা মিথ্যাচার, লুটপাট, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক দফা দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি আমাদের ভাইবোনদের, আমাদের সন্তানদের যারা এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসন সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, আগেও জানিয়েছি, আবারো জানাচ্ছি, গণ-অভ্যুত্থানে সব শহীদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।
সব আহত শিক্ষার্থী, শ্রমিক, জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আহতদের দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহীদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন নতুন তথ্য পাওয়ার ভিত্তিতে এই তালিকা হালনাগাদ করা হতে থাকবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
লাখো কোটি টাকা লোপাট
♦ সড়ক উন্নয়নের নামে হরিলুট ♦ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে দ্বিগুণ ব্যয়
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার সারা দেশে সড়ক ও যোগাযোগ খাতের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে লাখো কোটি টাকা লোপাট করেছে। তবু অনেক প্রকল্পের কাজ মেয়াদ শেষেও অসমাপ্ত রয়ে গেছে। উপরন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা দেশে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে শত শত অপ্রয়োজনীয় এবং কম প্রয়োজনীয় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন, দফায় দফায় মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এবং দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প কাটছাঁট হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এমনকি বাস্তবায়নাধীন কম-প্রয়োজনীয় প্রকল্পও বন্ধ করার পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন এই উপদেষ্টা। এদিকে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মঙ্গলবার সচিবালয়ে সফররত বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলকে বলেছেন, গত সরকার (আওয়ামী লীগ) তাদের প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে শত শত প্রকল্প নিয়েছে। তারা অনেক ব্যয়বহুল প্রকল্প নিয়েছে, সেগুলো অর্থনৈতিকভাবে সফল নয়। জানা গেছে, পরিবর্তিত বাস্তবতায় এসব কম গুরুত্বপূর্ণ এবং অতিমূল্যায়িত প্রকল্প বাতিল এবং স্থগিত করার চিন্তাভাবনা চলছে। যেসব প্রকল্পে অগ্রগতি খুবই কম সেসব প্রকল্প বাতিল বা স্থগিত রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া আলোচিত ১৫টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। এই ১৫ প্রকল্পে মূল ব্যয় ছিল ৭৭ হাজার কোটি টাকা। অতিমূল্যায়নের কারণে সেখানে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এভাবে প্রায় প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পেই মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে লাখো কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত মেয়াদে শেষ করা যাচ্ছে না। ফলে দফায় দফায় বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পায় ব্যয়ও। এমন ১৫টি প্রকল্পের পেছনে মূল ব্যয়ের তুলনায় বাড়তি খরচ হতে যাচ্ছে ৬০ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা মূল ব্যয়ের প্রায় দ্বিগুণ। অনুমোদনের সময় এই ১৫ প্রকল্পের ব্যয় ধরা ছিল ৭৭ হাজার ৮৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।
সড়ক পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প যদি সঠিকভাবে তৈরি হতো এবং সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে বাড়তি টাকা লাগার কথা নয়। এটা জাতির জন্য বড় অপচয়। সেই সঙ্গে যে সময়ে যেসব সুফল পাওয়ার কথা, সেগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ ও জাতি। এর পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসময়ের কারণে বাড়তি যোগ হয়েছে জনদুর্ভোগ। প্রসঙ্গত, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রকল্পের বিষয়টি দৃষ্টান্ত হিসাবে উল্লেখ করা যায়। বিআরটি গাজীপুর-এয়ারপোর্ট (গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট) প্রকল্প। দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ায় চার বছরের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখন সময় লাগছে ১২ বছর। সর্বশেষ মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
এটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২০৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ফলে এ প্রকল্পে বাড়তি যাচ্ছে ২২২৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এই অদূরদর্শী প্রকল্পের কারণে গাজীপুর-এয়ারপোর্ট সড়কের দুই পাশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে যানজট লাগছে সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে। প্রকল্প শুরুর আগেই এর সুফল প্রাপ্তি নিয়ে নানারকম সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে।
যুগান্তর:
প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বাংলাদেশে
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা। সে চেষ্টাই করছে সরকার। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী শুধু জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) বাড়লেই অর্থনীতি ভালো হয় না। এজন্য টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই সরকারের লক্ষ্য বলে জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়টি দেখা হবে। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হয়েছে এদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নে। এ কাজে একটু সময় লাগবে। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত তার কার্যালয়ে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : রাজনৈতিক সরকারের আমলের মতো দেশে আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প থাকবে না। গত দেড় দশকে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। বড় বড় প্রকল্প কেন এতবার সংশোধন করা হয়েছে, নকশা কেন সংশোধন করতে হয়েছে, বারবার সংশাধন ও ব্যয় বাড়াতে হয়েছে। কাদের স্বার্থে এগুলো করা হয়েছে। অদক্ষতা বা কিছুটা হলেও ঠিকাদারদের যোগসাজশে এসব করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম ভুল আমরা না করি সেজন্য চেষ্টা থাকবে। এজন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করা দরকার। সরকারের অনেক জায়গায় বড় বড় দুর্নীতি আছে। এটা আমরা সবাই জানি। যেগুলো অনেক কম খরচে হতে পারত। কিন্তু উপযুক্ত মূল্যায়ন ও উপযুক্ত বাস্তবায়নের অভাবে খরচ বেড়ে গেছে। দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর প্রতি ইউনিট রাস্তা বা সড়ক বা বিভিন্ন অবকাঠামোতে যে ব্যয় হয়েছে তা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আমরা সেগুলো দেখছি। তবে সময় লাগবে।
প্রথম আলো:
সংস্কারের মাধ্যমে নতুন যাত্রা শুরু করতে চাই
৬ বিশিষ্টজনের নেতৃত্বে ৬ সংস্কার কমিশন গঠন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁরা সংস্কার চান। সংস্কারের মাধ্যমে জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চান। এই সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে তিনি ছয়টি কমিশন গঠনের কথা বলেছেন। এসব কমিশনের কাজ
আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কারখানা খোলা রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করা হবে।
পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নামও ঘোষণা করেন। তাঁরা হলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান শাহদীন মালিক, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন (সাবেক স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন সচিব) এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশনপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শ সভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
কালের কন্ঠ:
পোশাকশিল্পে অস্থিরতা, বিক্ষোভ আগুন
সরকার, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পরও থামছে না পোশাক শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক অসন্তোষ। এর প্রভাবে গতকাল বুধবার বন্ধ ছিল ১১৪ কারখানা। এর মধ্যে ৫৪ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন মালিকরা।
শিল্পাঞ্চলে গার্মেন্টসশিল্পে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ভাঙচুর ও বেআইনি ধর্মঘটের কারণে কারখানা চালানোর অনুকূল পরিবেশ না থাকায় এবং সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে অনেক মালিক বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা অনুসারে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
এতে কারখানা বন্ধ থাকাকালে শ্রমিকরা কোনো মজুরি পাবেন না।
এদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন, পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিক যাতে ব্যাংক থেকে দ্রুত ঋণ পেতে পারেন, এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা ঘোষাণার ফলে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়বে বলে মনে করেন শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহামান।
তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ জিইয়ে রাখতে তৃতীয় পক্ষের সুযোগ আরো বাড়বে। বিনা মজুরিতে এই সময় ছুটিতে থাকার ফলে শ্রমিক অসন্তোষকে আরো উসকে দেওয়া হলো বলে তিনি মনে করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিব্রত করতে তৃতীয় পক্ষ বর্তমান শ্রমিক অসন্তোষের জন্য দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারখানাগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাদের হাত থেকে হাতবদল হওয়া ঝুট ব্যবসায়ীরা বিএনপির হাইব্রিড নেতাদের সামনে এনে এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছেন।
পরিস্থিতি নাগালে আনতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করার পাশাপাশি কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন এই নেতা।
মানবজমিন
শতকোটি টাকার মালিক সিলেটের চিনি বুঙারী আবুল
সিলেটে হাজার কোটি টাকার চিনির চোরাকারবারে নাম একটাই। বুঙারী আবুল। পুরো নাম আবুল হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ দু’বছরে চিনি ‘বুঙার’ লাইনের মালিক হয়ে দু’হাতে টাকা কামিয়েছেন। আর এই টাকা দিয়ে নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেছেন। কতো টাকার মালিক বুঙারী আবুল- এ প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনুমান করতে পারছেন না। দুই বছরে প্রতিদিন ৫০-৬০ লাখ টাকা কামিয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। এ কারণে কেউ বলছেন, শতকোটি টাকার মালিক। তবে অঢেল সম্পদের মালিক যে হয়েছে, তার প্রমাণ মিলে সিলেটের চিনি চোরাকারবারের নিরাপদ জোন হরিপুরের উতলার পাড়ে গড়ে তোলা অট্টালিকা দেখে। ৩-৪ কোটি টাকা খরচ করে ওই অট্টালিকা নির্মাণ করা হচ্ছে। টাকায় অন্ধ আবুল নিজেই নিজেকে ‘চৌধুরী’ উপাধিতেও ভূষিত করতে শুরু করেছেন। ছিপছিপে গড়নের যুবক আবুল হোসেন। বয়স ৩০ কিংবা ৩২ বছর। সিলেটের হরিপুরে ক্ষমতা ও দাপটের এক জ্বলন্ত উদাহরণ তিনি। বাড়ি হরিপুর বাজারের ব্রিজের কাছে ছিল। ফেরি করে জ্বালানি তেল বিক্রি করার ব্যবসা তাদের দীর্ঘদিনের। এ সময় জাফলং কোয়ারিতে বোমা মেশিনে ফেরি করে ডিজেল বিক্রি করতো। পারিবারিক দেনার দায়ে এক সময় হরিপুরের বাড়ি বিক্রি করে চলে যান পার্শ্ববর্তী ৭ নম্বর গ্যাস ফিল্ডের উতলার পাড়ে। প্রায় ৫ বছর আগে ঢুকে পড়ে চোরাই লাইনে। সিলেট জেলা পুলিশের ডিবির সোর্স হিসেবে সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে নিয়ে আসা পণ্যের লাইনের টাকা তুলতো। আর ওই টাকা সে ডিবি ও থানা পুলিশকে দিয়ে নিজের অংশ রেখে দিতো। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিলেট জেলা পুলিশের ডিবি উত্তরের তৎকালীন ওসি রেফায়েত চৌধুরীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে তার। ডিবি’র ওসির নিজস্ব মানুষ হিসেবে সে চোরাই সাম্রাজ্যে দাপট দেখাতে শুরু করে। দুই থেকে আড়াই বছর আগে গরু ও মহিষ চোরাচালান থেকে চিনির চোরাচালানে ডাইভার্ট হন সীমান্তের চোরাকারবারিরা। এই সুযোগে প্রথমে ডিবির ও পরবর্তীতে পুলিশ, বিজিবি’র একক লাইনম্যান হয়ে যায় আবুল হোসেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সিলেটের চিনির কারবারিরা জানিয়েছেন, আবুল তার চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের নামে লাইনের রিসিট দিয়ে হরিপুর থেকে গাড়ি ছাড়তো। আর এই এন্টারপ্রাইজের চালান রশিদ গোটা দেশের পুলিশের কাছে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে এলাকার মানুষের প্রতিবাদের মুখে চৌধুরী নাম পরিবর্তন বিজয় নাম পরিবর্তন করে। বর্তমানে বিজয় এন্টারপ্রাইজের নামে রশিদ দিচ্ছে। প্রতিটি গাড়ি থেকে সে লাইনে ৬০ হাজার টাকা নিতো। কোনো কোনো দিন ২৫০ থেকে ৩০০টি গাড়ি ছেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন একশ’র ওপরে চিনিভর্তি গাড়ি হরিপুর ছেড়েছে। এতে দেখা গেছে; ডিবি, পুলিশ ও বিজিবি’র নাম করে প্রতিদিন কোটি টাকার মতো টাকা তুলতো। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নামমাত্র টাকা দিয়ে পুরো টাকাই লুটে নিতো। এভাবে টাকার মালিক হয়েছে আবুল। ৫ই আগস্টের অভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত আবুল একচেটিয়া লাইনের ব্যবসা করেছে। এ কারণে চিনি ব্যবসায়ীদের ধারণা; আবুল শতকোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছে। আর এই টাকা কামিয়ে সে হরিপুরের পার্শ্ববর্তী গ্যাসকূপ এলাকার উতলার পাড়ে ৩-৪ কোটি টাকা খরচ করে অট্টালিকা তৈরি করছে। বাড়ির কাছে শাহ মাদার ফিলিং স্টেশন নামে একটি বন্ধ পেট্রোল পাম্প ছিল। কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগ করে ওই পাম্পের ৬০ ভাগ শেয়ার কিনেছে। ফের চালু করে পাম্পের নিচতলায় নিজের চিনি ব্যবসার অফিস খুলেছে। পাম্পের মালিক আবুল কালাম শেয়ার বিক্রির কথা মানবজমিনের কাছে স্বীকার করেছে। এ ছাড়া, বটেশ্বর এলাকার একটি হাউজিং নামে-নামে কোটি টাকা দিয়ে কয়েকটি প্লট, শাহ সুন্দর এলাকার আরেকটি হাউজিংয়ে প্লট ও হরিপুর এলাকায় জমি কিনেছেন আবুল। স্থানীয়রা এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, ঢাকার একটি নামকরা আবাসিক এলাকায় কয়েক কোটি টাকা দিয়ে একটি ফ্লাট কিনেছেন। ঢাকার সম্পদের কথা তিনি তার পরিচিত কয়েকজনের কাছে স্বীকারও করেছেন। পুলিশের এক কর্মকর্তা ওই সম্পদ দেখভাল করেন। বছর খানেক ২২ লাখ দিয়ে নিজের জন্য একটি করোলা ফিল্টার কার কিনেছিল আবুল। ওই কার কিছুদিন ব্যবহারের পর নতুন করে ৪৬ লাখ টাকা খরচ করে করোলা ক্রস নামে আরেকটি গাড়ি কিনেছেন। হরিপুরের স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাসে ডিবির সাবেক ওসি রেফায়েত চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের একটি শোরুম থেকে এককালীন টাকা দিয়ে ওই গাড়ি কিনেছেন।
বনিক বার্তা:
উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলারের অনুরোধ করা হয়েছে
দেশের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ও জাইকার কাছে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রিম অর্থ পরিশোধ ও বকেয়া পাওনা নিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা চলছে।’
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিতীয় ভাষণ। এর আগে ২৫ আগস্ট প্রথমবারের মতো তিনি জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে গতকালের ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া ও চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সব উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে সম্পর্ক আরো নিবিড় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সব অর্থনৈতিক সূচক এবং পরিসংখ্যানের প্রকৃত মান বা সংখ্যা প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, প্রাক্কলন এবং প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
সমকাল:
অগ্নিঝরা বিতর্কে কমলার বাজিমাত
নভেম্বরের নির্বাচনের আগে ঐতিহাসিক ও ভাগ্য নির্ধারণী প্রথম এবং খুব সম্ভবত শেষ বিতর্কে মঞ্চের সব আলো কেড়ে নিয়ে আরও ঝলমলে, আরও দেদীপ্যমান হয়ে উঠলেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৯০ মিনিটের বিতর্কে তিনি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।
উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্কে কমলা হয়ে ওঠেন আরও উজ্জ্বল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন অনন্য শৈলীতে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কুপোকাত করার প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য কমলা তাঁর আইনজীবীর দক্ষতার ঝলকানি দেখান।
মঙ্গলবার রাতে এবিসি নিউজ আয়োজিত এ বিতর্কে তারা গর্ভপাত, অর্থনীতি, অভিবাসন, গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তীব্র বিতণ্ডায় জড়ান। তবে ট্রাম্প এ সময় নিজে রক্ষণাত্মক অবস্থান নিতে বাধ্য হন।
বিতর্কে কমলার পারফরম্যান্স সম্পর্কে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, দু’জনের ‘বৈসাদৃশ্য এমনকি নিঃশব্দে স্পষ্ট ছিল। কমলা হাসলেন এবং জ্বলে উঠলেন। তিনি হয়ে ওঠেন বিতর্কের নিয়ন্তা। কমলার পাতা ফাঁদে ট্রাম্প ঝাঁপিয়ে পড়েন।’
প্রায় আড়াই মাস আগে গত ২৭ জুন ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে নাস্তানাবুদ হয়ে নির্বাচনী দৌড় থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এবার কমলা তা পুষিয়ে দিয়েছেন। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে দুই প্রার্থী হ্যান্ডশেক করেন। কমলাই হাত বাড়িয়ে দেন ট্রাম্পের দিকে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর এবারই প্রথম ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ ঘটল তাঁর।
ট্রাম্প এ সময় ‘কমলা হ্যারিস’ সম্বোধন করে তাঁকে বলেন, বিতর্কে ‘মজা করুন’, মানে প্রাণবন্ত থাকুন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীকে এমন সুপরামর্শ দিলেও ট্রাম্প নিজে কিন্তু সেই সুযোগ পাননি। তিনি ছিলেন বিচলিত।
বিতর্কে অভিবাসন প্রসঙ্গ এলে ট্রাম্প দাবি করেন, ওহাইও শহরে পোষা প্রাণী খাচ্ছে অভিবাসীরা। এবিসি নিউজ মডারেটরদের একজন তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন। আর কমলা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে লক্ষ্য করে হেসে দেন এবং বলেন, তিনি ‘চরমপন্থা’ ধরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো বলছে, বিতর্কে কমলা জিতেছেন। যদিও কিছু রক্ষণশীল আউটলেট ট্রাম্পের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মডারেটরদের সমালোচনা করেছে।
রক্ষণশীল-ঘেঁষা ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল একাধিক মতামত প্রকাশ করেছে। তাতে একজন ভাষ্যকার লিখেছেন, ট্রাম্প ‘নকআউট ধাক্কা দেওয়ার সুযোগটি হাতছাড়া করেছেন।’ আরেকটি রক্ষণশীল প্রকাশনা নিউইয়র্ক পোস্ট বলছে, ট্রাম্পকে বিচলিত করেছেন কমলা। তিনি ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে মডারেটররা ‘কমলার চেয়ে ট্রাম্পকে অনেক বেশি কঠিন প্রশ্ন করেছেন বলে’ তিনি মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্পের পছন্দের ফক্স নিউজ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে, কমলা বিতর্কে ‘জিতেছেন’। সিএনএন/এসএসআরএস জরিপে ৬০০ জন নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৬৩ শতাংশ বলেছেন, কমলা সেরা পারফরমার এবং ৩৭ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষ নিয়েছেন।
দেশ রুপান্তর:
শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যাদের শৃঙ্খলা ভাঙছেন তারাই
দেশে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্মকর্তারাই নিজেদের স্বার্থে সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছেন এক মাসের বেশি সময় ধরে। প্রায় প্রতিদিনই সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে ভিড় করছেন তদবিরকারী কর্মকর্তারা। মাঠ প্রশাসনেও এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।
প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে পেট্রোবাংলা, এলজিইডি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়সহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলন করছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসেও প্রশাসনে কাজের গতি ফেরেনি। এতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। সচিবালয়ে অনেক কর্মকর্তা দাপ্তরিক কাজ ফেলে নিজেদের সুবিধা আদায় কিংবা অন্যের বদলি বা পদোন্নতি কীভাবে ঠেকানো যায় তা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের এসব কর্মকর্তা নিজেরাই যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, তাহলে তারা দেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় কতটা ভূমিকা রাখতে পারবেন। কিন্তু শৃঙ্খলা ফেরাতে গত এক মাসে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে কঠোর কোনো বার্তা বা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে প্রশাসনের ওপর এত চাপ তৈরি হয়নি কখনো। বিগত দেড় দশকে পুলিশ, জনপ্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কিংবা পদায়নের ক্ষেত্রে যোগ্যতার চেয়ে দলীয় বিবেচনা অগ্রাধিকার দিয়ে বৈষম্যের পাহাড় তৈরি করেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। আর এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রশাসনে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সময় লাগবে।
দৈনিক সংগ্রাম:
দেখামাত্র গুলী করার নিদের্শ কোনো নৈতিক শিক্ষা অর্জনকারী ব্যক্তি দিতে পারে না -অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, দেখামাত্র গুলী করার নিদের্শ দেওয়া কোনো নৈতিক শিক্ষা অর্জনকারী ব্যক্তি দিতে পারে না। শেখ হাসিনা দেখামাত্র গুলী করার নিদের্শ দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি নৈতিকতাহীন, বর্বর, অমানবিক, মনুষ্যত্বহীন এবং ক্ষমতা লোভী মানুষরূপী পশু। চরিত্র শেষ হলে হারাবার কিছু আর থাকে না। তিনি বলেন, এরা গত ১৫ বছর মানুষকে কথা বলতে দেয়নি। অধিকার আদায়ে রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি। খুুন-গুম, হত্যা, হামলা-মামলা দিয়ে মানুষকে দিনের পর দিন বিপ্লবী আর বিদ্রোহী হয়ে উঠতে বাধ্য করেছে। যার ফলে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার দোসরা এখনো রয়ে গেছে। এদেরকে দমন না করলে ছাত্র-জনতার বিপ্লব ধরে রাখা যাবে না। তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কত দাবি উত্থাপিত হচ্ছে, কত দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে আসছে। দাবি পূরণ করার জন্য উপদেষ্টা সরকার নয়, দাবি পূরণের জন্য প্রয়োজন জনগণের নির্বাচিত সরকার। তিনি আরো বলেন, অতীতে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে ক্ষমতা আর ছাড়তে চায় না। আবার অতীতে কেউ কেউ ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে নতুন নতুন দল গঠন করে ক্ষমতা আকড়ে ধরার চেষ্টাও করেছে। তিনি রাষ্ট্র সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান।
গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কর্তৃক কাঙ্খিত শিক্ষানীতি ও আমাদের করণীয় নির্ধারণে আয়োজিত শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী (দক্ষিণ) সভাপতি প্রফেসর নূর নবী মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সম্মেলনে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী (দক্ষিণ) সভাপতি প্রফেসর নূর নবী মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. আ: মান্নান, অধ্যক্ষ মুফতি ড. আবু ইউসুফ খান, প্রফেসর মোখতার হোসেন, ড. সরোয়ার হোসেন, ড. ওমর আলী, প্রফেসর ড. আ. রব, প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম, প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী, হাফেজ মাওলানা কারী বিলাল হোসাইন, শিকদার আ. কুদ্দুস, মনোয়ার হোসেন, মনির হোসেন হেলালী, আলি আকবর গাজী, আঃ করিম শাহিন, মাকসুদুর রহমান, ডক্টর আ. ছবুর মাতুব্বর, অধ্যক্ষ ড. মেশাররফ হোসাইন, আরিফুল ইসলাম অপু, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন প্রমুখ।