বিদ্যুৎ বিক্রয় বাবদ বকেয়া অর্থ আদায়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগাদা দিচ্ছে ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। গ্রুপের কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশের কাছ থেকে তাদের পাওনা বর্তমানে প্রায় ৫০ কোটি ডলার।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে আদানি গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা জানি যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। (দেশটির) নতুন সরকারের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং বকেয়া পরিশোধ সংক্রান্ত আলোচনার পাশাপাশি সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়েও আমাদের কথাবার্তা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের কাজ শুরু করেছিল আদানি গোষ্ঠী, ২০২২ সারের ডিসেম্বরে তা শেষ হয়। বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের শতভাগ বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে।
গত বছর থেকে তা শুরুও হয়েছে। তবে চলতি বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর সার্বিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে অনেক। ইতোমধ্যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত যাবতীয় চুক্তি পর্যালোচনার ঘোষণা দিয়েছে। এসব ঘোষণার মধ্যে আদানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিও রয়েছে।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের জ্বালানি বিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা ফয়জুল কবির খান ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, আদানিগোষ্ঠীর কাছে বাংলাদেশের পাওনা রয়েছে ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার এবং এই অর্থ পরিশোধে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে বাংলাদেশের সরকার।
এদিকে, গুঞ্জন উঠেছিল যে সরকার পরিবর্তনের জেরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে আদানিগোষ্ঠী। সেই গুঞ্জন নাকচ করে দিয়ে আদানি গ্রুপের কর্মকর্তারা বলেছেন, “আমাদের গোড্ডার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভারতের জাতীয় গ্রিড বা অন্য কোনো দেশের গ্রিডের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। শিগগিরই এমন ঘটবে— এমন কোনো সম্ভাবনাও নেই।”