বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন এলাকায় আব্দুল মোতালেব (১৪) নামের এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. খোকন মিয়া আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। শাজাহান খানের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিরা দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন শুরু করতে পুলিশ, র্যাব ও ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। এর পর পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা-নির্যাতন চালায়। এতে শত শত মানুষ মারা যান। অনেক লোক আহত ও পঙ্গু হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বাদীর ছেলে আব্দুল মোতালিব (১৪) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডি থানাধীন জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর বাদীর ছেলে অন্যান্য ছাত্র ও সাধারণ মানুষদের সাথে অবস্থানকালে আসামিগণের পরিকল্পনা ও হুকুমে হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ, র্যাব, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে। তারা শত শত সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, ককটের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও রাবার বুলেট ছোড়ে। ঘটনাস্থলে অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। এর মধ্যে আব্দুল মোতালিব বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
এই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আব্দুল মতিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন।