ঢাকা ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অস্বাস্থ্যকর মগজে কিলবিল করত কুবুদ্ধি

ভারতে বসে শেখ হাসিনাকে মুখ বন্ধ রাখতে হবে

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:১৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 76

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর:

যুগান্তর:

ভারতে বসে শেখ হাসিনাকে মুখ বন্ধ রাখতে হবে
ফিরিয়ে এনে সবার সামনে বিচার করা হবে * আ.লীগ ছাড়া সবাই ইসলামপন্থি-এমন ভাবনা ছাড়তে হবে * সংখ্যালঘু নির্যাতনকে বড় করে দেখা অজুহাতমাত্র
ভারতে অবস্থান করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের সবাই ইসলামি রাজনৈতিক শক্তি, এমন ভাবনা থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে পত্যর্পণ না করা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে (শেখ হাসিনা) রাখতে চায়, তবে প্রথম শর্ত হলো তাকে চুপ থাকতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। এ অবস্থায় নয়াদিল্লিকে অবশ্যই চিরাচরিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সবাই ইসলামপন্থি এবং শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে-এমন ভাবনা তাদের ছাড়তে হবে।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তা একটি ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’। তিনি বলেছেন, ‘দুই দেশের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশ (সরকার) তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো-তাকে চুপ থাকতে হবে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ভারতে তার (শেখ হাসিনার) অবস্থানের কারণেই কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কারণ, আমরা তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝেমধ্যেই কথা বলছেন, যা সমস্যাজনক। তিনি যদি চুপ থাকতেন, সেখানে নিজের দুনিয়ায় ডুবে থাকতেন, তবে আমরা হয়তো ভুলে যেতাম, মানুষও হয়তো এটা ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি কথা বলছেন, এটা কেউ পছন্দ করছে না।’

১৩ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশে যে সহিংসতা, হত্যা ও ভাঙচুর হয়েছে, এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেন। এ বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটি না আমাদের জন্য ভালো, আর না ভারতের জন্য ভালো। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে।

নয়াদিগন্ত:

শহীদি মার্চে ছাত্র-জনতার ঢল, দেশ গড়ার শপথ
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের এক মাস পূর্তি ও নিহতদের স্মরণে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শহীদি মার্চ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেলা আড়াইটা থেকে ঢাবিসহ রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এতে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি, মাদরাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি নানা শ্রেণী-পেশার লক্ষাধিক মানুষের ঢল নামে। রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হওয়া শহীদি মার্চ নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, কলাবাগান হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউ, সংসদ ভবন বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর শাহবাগ, আবার রাজু ভাস্কর্য ও জাতীয় শহিদ মিনারে এসে শেষ হয়।
শহীদি মার্চ চলাকালীন ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; শহীদদের স্মরণে, ভয় করি না মরণে ; শহীদদের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না ; আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে ; সরকার কী করে, হাসিনা ভারতে ; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলের স্লোগানে দেশ গড়ার শপথ নেন। ছাত্র-জনতা ওই মার্চে অংশগ্রহণকারীদের হাতে জাতীয় পতাকা, জুলাই-আগস্ট এর নানা ঘটনার দৃশ্য সংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দেখা যায় ।
শহীদি মার্চে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। দাবিগুলো হলো : ১) গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ২) শহীদ পরিবারদের আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে, ৩) প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ৪) গণভবনকে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর ঘোষণা করতে হবে, ৫) রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।

মার্চ শুরুর আগে রাজু ভাস্কর্যে সমন্বয়করা বলেন, ঠিক এক মাস আগে আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে দ্বিতীয় বার ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। এই স্বাধীনতার বিনিময়ে আমাদের হাজারো ছাত্র-জনতাকে জীবন দিতে হয়েছিল। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আহত হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন, অনেকে এখনো হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা সেসব শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দেয়ার জন্য। তারা বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করতে পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন। ভারতও আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আমরা ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের দেশের আরেকজন মানুষ হত্যা করেন তাহলে ছাত্র-জনতা আপনাদের কাছ থেকে এর হিসাব নেবে।
মার্চ শেষে শহীদ মিনারে সমাপনী বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের ভাইয়েরা স্বাধীনতা আনতে রক্ত দিয়েছেন। তাদের রক্তের মূল্য দিতে আমরা যেকোনো সময় রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।’
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের শহীদদের রক্ত এবং তাদের স্পিরিট কখনো বৃথা যেতে দেবো না। দেশে এখনো অনেক ফ্যাসিস্টের অস্তিত্ব আছে। আমরা তাদের এবং ফ্যাসিবাদী চিন্তা লালন করা মানুষদের বলতে চাই, স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। কোনো চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট এই বাংলাদেশে হবে না।

প্রথম আলো:

সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়
গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফ্যাসিবাদী দল ও জোটকে প্রকাশ্যে কর্মসূচি (পাবলিক প্রোগ্রাম) পালনের ক্ষেত্রেও সরকার নিরুৎসাহিত করবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটা বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের পঞ্চম বৈঠক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তির দিনে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়।

পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।

মানবজমিন:

শ্রমিক বিক্ষোভ আশুলিয়া ষড়যন্ত্র
কোনো ইস্যু ছাড়াই সাভারের আশুলিয়া এলাকার তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়েছিল একটি অদৃৃশ্য পক্ষ। একেক জায়গায় একেক কথা বলে শ্রমিকদের রাস্তায় নামানো হয়। তাদের সম্মিলিত কোনো দাবি ছিল না।স্থানীয়রা বলছেন পেছনে থাকা একটি পক্ষের রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। পোশাক শ্রমিকদের মাঠে নামিয়ে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে চক্রটি। আন্দোলনে সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি অবস্থান নেয় অনেক বহিরাগত। বেতন বৃদ্ধির দাবির কথা বলায় এই আন্দোলনে সাড়া দেন শ্রমিকরা। কিন্তু সেখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি অস্থিশীল করে তোলেন নেতৃত্ব দেয়া এসব বহিরাগতরা। বুধবার ভাঙচুর শুরু করেন বহিরাগতরাই। বন্ধ কারখানাগুলোর শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নেন। আর চালু থাকা কারখানার শ্রমিকদের উত্তেজিত করে বিক্ষোভ করার কথা বলেন।

গতকাল আশুলিয়ায় কয়েকটি এলাকার বেশ কয়েকটি পোশাক ও অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা যায়।
আন্দোলনের শুরু হয় যেসব কারখানা থেকে তারমধ্যে একটি আশুলিয়ার পার্ল গার্মেন্টস। তারা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ২৮শে আগস্ট। শুরুতে তারা মৌখিকভাবে দাবির কথা জানায়। আন্দোলনে অংশ নেয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের মূলত দাবি ছিল হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা করার দাবিতে। এরপর আমরা লিখিতভাবে জানাই। গার্মেসন্ট থেকে আমাদের জানানো হয় বিষয়টি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর আমরা যথারীতি কাজ করছিলাম। এরপর আমাদের সঙ্গে জুয়েল নামে এক ব্যক্তি যোগাযোগ করে। তিনি শিমুলতলা এলাকার দি ড্রেস অ্যান্ড দি আইডিয়াস পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসাবে পরিচয় দেন। তার সঙ্গে থাকা সাইফুল ইসলাম পরিচয় দেন জামগড়ের আলীস জেন্টস ড্রেসাপ নামে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। দি ড্রেস অ্যান্ড দি আইডিয়াস নামে কারখানার খোঁজ পাওয়া গেলেও আলীস জেন্টস ড্রেসাপ নামে কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

লোটাস ও তাঁর মেয়ের দুবাই সাম্রাজ্য

প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য অনুসন্ধানে দুদ
দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে নিজের আখের গুছিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল ও তার মেয়ে নাফিসা কামাল। সূত্র বলছে, বাপ-মেয়ে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়েছেন। শেয়ারবাজার কারসাজিতে ব্যাপক আলোচিত-বিতর্কিত ব্যবসায়ী থেকে মন্ত্রী বনে যাওয়া লোটাস কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের দুবাইয়ে আবাসন খাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে বিপুল অর্থসম্পদ রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সূত্র বলছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ফি বাবদ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে লোটাস কামাল ও তার পরিবারের নেতৃত্বাধীন চক্র। চক্রটি চাকরির ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। এর আগে ২০১০ সালে শেয়ারবাজার কারসাজি করে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন লোটাস কামাল। এসব টাকা দুবাইয়ে পাচারের তথ্য পেয়ে তা যাচাই-বাছাই শুরু করেছে দুদকের উপপরিচালক নুরুল হুদার নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির (ইইউট্যাক্স) চলতি বছরের ১৬ মে প্রকাশিত তথ্যে বলেছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের আবাসন খাতে ৫৩২ বাংলাদেশির প্রপার্টি মালিকানার (অফ-প্ল্যান অর্থাৎ উন্নয়ন বা নির্মাণ শেষের আগেই কিনে নেওয়া প্রপার্টির মালিকানাসহ) হিসাব পাওয়া গেছে। এ তালিকায় লোটাস কামাল ও তার পরিবারের নাম রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য বলছে, দুবাইয়ের আবাসন খাতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রপার্টির মূল্য ২৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। অফ-প্ল্যান প্রপার্টিসহ এ সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলামের মতে, অর্থমন্ত্রী থাকাকালে লোটাস কামাল সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে দেশের অর্থনীতিকে নিয়ে গেছেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশের আর্থিক খাতে চরম বিশৃঙ্খলার জন্য অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আ হ ম মুস্তফা কামালই দায়ী।

২০০৮ সাল থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা) আসনের এমপি ছিলেন লোটাস কামাল। শেখ হাসিনা সরকারের পতন আঁচ করতে পেরে গত ১৫ জুলাই লোটাস কামাল ও নাফিসা কামাল লাগেজ ভর্তি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বর্তমান সরকার লোটাস কামাল, তার স্ত্রী কাশমিরী কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে, তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।

লোটাস কামালের সংসদীয় এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিগত ১৫ বছর লোটাস কামালের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি ছিলেন সর্বস্তরের মানুষ। টাকার অঙ্ক যিনি বেশি দিতে পারতেন তিনি হতেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার। টাকার বিনিময়ে জুটত দলীয় পদ। ফলে প্রতিটি দপ্তর চলত কামালের ইশারায়। এডিবি, টিয়ার ও কাবিখা বরাদ্দ দিতেন নিজেদের পছন্দের লোকদের। এসব বরাদ্দের কাজ থেকে ৩০ ভাগ টাকা কেটে নিতেন। এভাবে দুর্নীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে পাওয়া শত শত কোটি টাকা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুবাই পৌঁছে যেত লোটাস কামাল ও তার পরিবারের কাছে। আর সেই অর্থে বিগত ১৫ বছরে দুবাইয়ে বিশাল বিত্তবৈভব গড়ে তুলেছেন লোটাস কামাল।

কালের কন্ঠ:

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক মাস পূর্তির দিন গতকাল বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়’ অনুষ্ঠান ডেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেয় বিদায়ি সিইসির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ কমিশন।

অনুষ্ঠানে কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়ে কয়েকটি ফর্মুলা তুলে ধরেন। পাশাপাশি নিজ মেয়াদে আয়োজিত বিভিন্ন নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকার পক্ষে নানা যুক্তি উপস্থাপন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজিত না হওয়ার পেছনে বিদ্যমান নির্বাচনব্যবস্থাকে দায়ী করেন তিনি।
ইসির পদত্যাগের দাবিতে নির্বাচন ভবনের বাইরে কয়েক দিন ধরে অনিবন্ধিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন বিক্ষোভ করে আসছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিইসির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ কমিশন গতকাল পদত্যাগ করবে, তা কিছুটা অনুমেয় ছিল। এদিন ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়’ অনুষ্ঠানে ‘বিদায়ি ভাষণ’ হাতে হাজির হন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তাঁর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব ও মো. আলমগীর উপস্থিত থাকলেও অন্য দুই কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা ও আনিছুর রহমান অনুপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক সংগ্রাম:

বিগত সরকার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে ————ডা. শফিকুর রহমান
* যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন- তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে

* হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো দেশে আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে

* লুণ্ঠনকারীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে* জাতির কাক্সিক্ষত পরিবর্তনকে কেউ যাতে ব্যর্থ করে না দিতে পারে এজন্য সকলে মিলে পাহারাদারী করব

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত সরকার ক্ষমতার লোভে জেদের বশবর্তী হয়ে সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে। সরকার শুধু স্থলভাগেই নয়, আকাশ থেকেও গুলী চালিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যা করেছে। স্বাধীন দেশে পরিচালিত এই গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দল হিসেবে সাড়ে ১৫ বছর পরে আমাদের সাথে বৈরী আচরণ করা হয়েছে। আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে সরকার দিশেহারা হয়ে আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে। আমরা বলেছি আমরা প্রতিশোধ নিব না- এর মানে হচ্ছে আমরা নিজের হাতে আইন তুলে নিব না। কিন্তু যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন- তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তার বিচার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি ক্ষতিগ্রস্ত যারাই মামলা করবেন, আইনের আশ্রয় নিবেন- কোনো মানুষের উপর যেন বেইনসাফি না হয় সেদিকে তীক্ষè দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন আসামী করা না হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকার মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার-এর পরিচালনায় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা:

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অস্বাস্থ্যকর মগজে কিলবিল করত কুবুদ্ধি
একটি মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ থেকে বাস্তবায়ন, বরাদ্দ, বাজেট প্রণয়ন এমনকি যে কোনো ব্যয় মঞ্জুরি—সবকিছুই মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানেই সম্পন্ন হয়। মন্ত্রণালয় ও অধীন সব প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক বা রক্ষক তিনিই। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের দুবারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ভূমিকা ছিল উল্টো। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালের কেনাকাটা, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন, ওষুধ ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সরবরাহ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব কাজেই ভাগ বসাতেন তিনি। মন্ত্রিত্বকে আখের গোছানোর হাতিয়ার বানিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়েছেন জাহিদ মালেক। করোনাকালে টিকা, টেস্ট কিট, নকল মাস্ক বানিয়ে ও ভুয়া আমদানি দেখিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির টাকায় নামে-বেনামে এক ডজনের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ঢাকার গুলশানে আলিশান বাড়ি, গ্রামের বাড়িতে মায়ের নামে বিশাল বাগানবাড়ি এবং এগ্রো ফার্ম তৈরি করেছেন। তা ছাড়া বনানীতে ১৪ তলা ও মানিকগঞ্জে ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছেন। সভা-সেমিনার করতে মানিকগঞ্জে ছেলের নামে করেছেন বিশাল মিলনায়তন ‘শুভ্র সেন্টার’।

এরই মধ্যে সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং তার ছেলেমেয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
করোনাকালে মুন্সীগঞ্জের একটি কারখানায় এন-৯৫ নকল মাস্ক বানিয়ে ভুয়া আমদানি দেখিয়েছেন। এসব মাস্ক হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া হতো। এই কাজটির সঙ্গে সরাসরি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ মিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপের মাধ্যমে করে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সেই সময় টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অযোগ্যতার কারণে করোনাভাইরাস সংকট প্রকট হচ্ছে। এই দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ৫ থেকে ১০ গুণ বাড়তি দামে মানহীন মাস্ক, পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী সরকারিভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

দেশরুপান্তর:

গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে গণভবনকে জাদুঘর বানানো হবে
‘গণহত্যার সম্পূর্ণ বিচারের আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়’
গণভবনকে ‘গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এ কথা জানান। এ সময় সম্পূর্ণ বিচার না হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘‌আমাদের যে গণভবন আছে, সেটির যে নাম, তা প্রকৃত অর্থে সেই গণভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ গণভবনকে যেহেতু ছাত্র-জনতা একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জয় করেছে, এটিকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারে আমলে যত অন্যায়-অবিচার হয়েছে; সবকিছুর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এটিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেন, ‘‌খুব দ্রুত এটির কার্যক্রম শুরু হবে। গণভবন যেমন আছে, জনগণ যেভাবে এটাকে অধিকার করেছে; এটিকে জয় করেছে, ঠিক সে অবস্থায় রাখা হবে। এর মধ্যে ভেতরে আমরা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করব, যাতে এ অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। সে বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সাউথ কোরিয়ায় এমন একটি মেমোরিয়াল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য। পৃথিবীতে আরো বিভিন্ন জায়গায় এটা হয়েছে। আমরা সেখান থেকে এটি প্রস্তুতে তাদের যে অভিজ্ঞতা সেটিকে নেব। ফ্যাসিবাদী সময়ের অত্যাচারের স্মৃতি, আমাদের শহীদদের স্মৃতি কীভাবে সংরক্ষণ করে সুন্দর একটি জাদুঘর করা যায়; এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পঞ্চম বৈঠক। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘‌ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল; সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, সে বিষয়টি আমরা জনগণের কাছে ছেড়েছি। তাদের কোনো পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে সেটিকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা হয়নি। আমরা এটিকে অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। সম্পূর্ণভাবে বিচার করার জন্য সরকার এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অস্বাস্থ্যকর মগজে কিলবিল করত কুবুদ্ধি

ভারতে বসে শেখ হাসিনাকে মুখ বন্ধ রাখতে হবে

আপডেট সময় ০৭:১৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর:

যুগান্তর:

ভারতে বসে শেখ হাসিনাকে মুখ বন্ধ রাখতে হবে
ফিরিয়ে এনে সবার সামনে বিচার করা হবে * আ.লীগ ছাড়া সবাই ইসলামপন্থি-এমন ভাবনা ছাড়তে হবে * সংখ্যালঘু নির্যাতনকে বড় করে দেখা অজুহাতমাত্র
ভারতে অবস্থান করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের সবাই ইসলামি রাজনৈতিক শক্তি, এমন ভাবনা থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে পত্যর্পণ না করা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে (শেখ হাসিনা) রাখতে চায়, তবে প্রথম শর্ত হলো তাকে চুপ থাকতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। এ অবস্থায় নয়াদিল্লিকে অবশ্যই চিরাচরিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সবাই ইসলামপন্থি এবং শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে-এমন ভাবনা তাদের ছাড়তে হবে।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তা একটি ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’। তিনি বলেছেন, ‘দুই দেশের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশ (সরকার) তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না নেওয়া পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো-তাকে চুপ থাকতে হবে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ভারতে তার (শেখ হাসিনার) অবস্থানের কারণেই কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কারণ, আমরা তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝেমধ্যেই কথা বলছেন, যা সমস্যাজনক। তিনি যদি চুপ থাকতেন, সেখানে নিজের দুনিয়ায় ডুবে থাকতেন, তবে আমরা হয়তো ভুলে যেতাম, মানুষও হয়তো এটা ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি কথা বলছেন, এটা কেউ পছন্দ করছে না।’

১৩ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশে যে সহিংসতা, হত্যা ও ভাঙচুর হয়েছে, এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেন। এ বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটি না আমাদের জন্য ভালো, আর না ভারতের জন্য ভালো। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে।

নয়াদিগন্ত:

শহীদি মার্চে ছাত্র-জনতার ঢল, দেশ গড়ার শপথ
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের এক মাস পূর্তি ও নিহতদের স্মরণে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শহীদি মার্চ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেলা আড়াইটা থেকে ঢাবিসহ রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এতে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি, মাদরাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি নানা শ্রেণী-পেশার লক্ষাধিক মানুষের ঢল নামে। রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হওয়া শহীদি মার্চ নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, কলাবাগান হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউ, সংসদ ভবন বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর শাহবাগ, আবার রাজু ভাস্কর্য ও জাতীয় শহিদ মিনারে এসে শেষ হয়।
শহীদি মার্চ চলাকালীন ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; শহীদদের স্মরণে, ভয় করি না মরণে ; শহীদদের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না ; আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে ; সরকার কী করে, হাসিনা ভারতে ; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলের স্লোগানে দেশ গড়ার শপথ নেন। ছাত্র-জনতা ওই মার্চে অংশগ্রহণকারীদের হাতে জাতীয় পতাকা, জুলাই-আগস্ট এর নানা ঘটনার দৃশ্য সংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দেখা যায় ।
শহীদি মার্চে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। দাবিগুলো হলো : ১) গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ২) শহীদ পরিবারদের আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে, ৩) প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ৪) গণভবনকে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর ঘোষণা করতে হবে, ৫) রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।

মার্চ শুরুর আগে রাজু ভাস্কর্যে সমন্বয়করা বলেন, ঠিক এক মাস আগে আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে দ্বিতীয় বার ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। এই স্বাধীনতার বিনিময়ে আমাদের হাজারো ছাত্র-জনতাকে জীবন দিতে হয়েছিল। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আহত হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন, অনেকে এখনো হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা সেসব শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দেয়ার জন্য। তারা বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করতে পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন। ভারতও আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আমরা ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের দেশের আরেকজন মানুষ হত্যা করেন তাহলে ছাত্র-জনতা আপনাদের কাছ থেকে এর হিসাব নেবে।
মার্চ শেষে শহীদ মিনারে সমাপনী বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের ভাইয়েরা স্বাধীনতা আনতে রক্ত দিয়েছেন। তাদের রক্তের মূল্য দিতে আমরা যেকোনো সময় রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।’
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের শহীদদের রক্ত এবং তাদের স্পিরিট কখনো বৃথা যেতে দেবো না। দেশে এখনো অনেক ফ্যাসিস্টের অস্তিত্ব আছে। আমরা তাদের এবং ফ্যাসিবাদী চিন্তা লালন করা মানুষদের বলতে চাই, স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। কোনো চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট এই বাংলাদেশে হবে না।

প্রথম আলো:

সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়
গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফ্যাসিবাদী দল ও জোটকে প্রকাশ্যে কর্মসূচি (পাবলিক প্রোগ্রাম) পালনের ক্ষেত্রেও সরকার নিরুৎসাহিত করবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটা বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের পঞ্চম বৈঠক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তির দিনে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়।

পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।

মানবজমিন:

শ্রমিক বিক্ষোভ আশুলিয়া ষড়যন্ত্র
কোনো ইস্যু ছাড়াই সাভারের আশুলিয়া এলাকার তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়েছিল একটি অদৃৃশ্য পক্ষ। একেক জায়গায় একেক কথা বলে শ্রমিকদের রাস্তায় নামানো হয়। তাদের সম্মিলিত কোনো দাবি ছিল না।স্থানীয়রা বলছেন পেছনে থাকা একটি পক্ষের রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। পোশাক শ্রমিকদের মাঠে নামিয়ে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে চক্রটি। আন্দোলনে সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি অবস্থান নেয় অনেক বহিরাগত। বেতন বৃদ্ধির দাবির কথা বলায় এই আন্দোলনে সাড়া দেন শ্রমিকরা। কিন্তু সেখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি অস্থিশীল করে তোলেন নেতৃত্ব দেয়া এসব বহিরাগতরা। বুধবার ভাঙচুর শুরু করেন বহিরাগতরাই। বন্ধ কারখানাগুলোর শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নেন। আর চালু থাকা কারখানার শ্রমিকদের উত্তেজিত করে বিক্ষোভ করার কথা বলেন।

গতকাল আশুলিয়ায় কয়েকটি এলাকার বেশ কয়েকটি পোশাক ও অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা যায়।
আন্দোলনের শুরু হয় যেসব কারখানা থেকে তারমধ্যে একটি আশুলিয়ার পার্ল গার্মেন্টস। তারা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ২৮শে আগস্ট। শুরুতে তারা মৌখিকভাবে দাবির কথা জানায়। আন্দোলনে অংশ নেয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের মূলত দাবি ছিল হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা করার দাবিতে। এরপর আমরা লিখিতভাবে জানাই। গার্মেসন্ট থেকে আমাদের জানানো হয় বিষয়টি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর আমরা যথারীতি কাজ করছিলাম। এরপর আমাদের সঙ্গে জুয়েল নামে এক ব্যক্তি যোগাযোগ করে। তিনি শিমুলতলা এলাকার দি ড্রেস অ্যান্ড দি আইডিয়াস পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসাবে পরিচয় দেন। তার সঙ্গে থাকা সাইফুল ইসলাম পরিচয় দেন জামগড়ের আলীস জেন্টস ড্রেসাপ নামে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। দি ড্রেস অ্যান্ড দি আইডিয়াস নামে কারখানার খোঁজ পাওয়া গেলেও আলীস জেন্টস ড্রেসাপ নামে কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

লোটাস ও তাঁর মেয়ের দুবাই সাম্রাজ্য

প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য অনুসন্ধানে দুদ
দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে নিজের আখের গুছিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল ও তার মেয়ে নাফিসা কামাল। সূত্র বলছে, বাপ-মেয়ে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়েছেন। শেয়ারবাজার কারসাজিতে ব্যাপক আলোচিত-বিতর্কিত ব্যবসায়ী থেকে মন্ত্রী বনে যাওয়া লোটাস কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের দুবাইয়ে আবাসন খাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে বিপুল অর্থসম্পদ রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সূত্র বলছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ফি বাবদ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে লোটাস কামাল ও তার পরিবারের নেতৃত্বাধীন চক্র। চক্রটি চাকরির ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। এর আগে ২০১০ সালে শেয়ারবাজার কারসাজি করে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন লোটাস কামাল। এসব টাকা দুবাইয়ে পাচারের তথ্য পেয়ে তা যাচাই-বাছাই শুরু করেছে দুদকের উপপরিচালক নুরুল হুদার নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির (ইইউট্যাক্স) চলতি বছরের ১৬ মে প্রকাশিত তথ্যে বলেছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের আবাসন খাতে ৫৩২ বাংলাদেশির প্রপার্টি মালিকানার (অফ-প্ল্যান অর্থাৎ উন্নয়ন বা নির্মাণ শেষের আগেই কিনে নেওয়া প্রপার্টির মালিকানাসহ) হিসাব পাওয়া গেছে। এ তালিকায় লোটাস কামাল ও তার পরিবারের নাম রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য বলছে, দুবাইয়ের আবাসন খাতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রপার্টির মূল্য ২৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। অফ-প্ল্যান প্রপার্টিসহ এ সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলামের মতে, অর্থমন্ত্রী থাকাকালে লোটাস কামাল সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে দেশের অর্থনীতিকে নিয়ে গেছেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশের আর্থিক খাতে চরম বিশৃঙ্খলার জন্য অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আ হ ম মুস্তফা কামালই দায়ী।

২০০৮ সাল থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা) আসনের এমপি ছিলেন লোটাস কামাল। শেখ হাসিনা সরকারের পতন আঁচ করতে পেরে গত ১৫ জুলাই লোটাস কামাল ও নাফিসা কামাল লাগেজ ভর্তি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বর্তমান সরকার লোটাস কামাল, তার স্ত্রী কাশমিরী কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে, তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।

লোটাস কামালের সংসদীয় এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিগত ১৫ বছর লোটাস কামালের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি ছিলেন সর্বস্তরের মানুষ। টাকার অঙ্ক যিনি বেশি দিতে পারতেন তিনি হতেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার। টাকার বিনিময়ে জুটত দলীয় পদ। ফলে প্রতিটি দপ্তর চলত কামালের ইশারায়। এডিবি, টিয়ার ও কাবিখা বরাদ্দ দিতেন নিজেদের পছন্দের লোকদের। এসব বরাদ্দের কাজ থেকে ৩০ ভাগ টাকা কেটে নিতেন। এভাবে দুর্নীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে পাওয়া শত শত কোটি টাকা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুবাই পৌঁছে যেত লোটাস কামাল ও তার পরিবারের কাছে। আর সেই অর্থে বিগত ১৫ বছরে দুবাইয়ে বিশাল বিত্তবৈভব গড়ে তুলেছেন লোটাস কামাল।

কালের কন্ঠ:

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক মাস পূর্তির দিন গতকাল বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়’ অনুষ্ঠান ডেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেয় বিদায়ি সিইসির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ কমিশন।

অনুষ্ঠানে কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়ে কয়েকটি ফর্মুলা তুলে ধরেন। পাশাপাশি নিজ মেয়াদে আয়োজিত বিভিন্ন নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকার পক্ষে নানা যুক্তি উপস্থাপন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজিত না হওয়ার পেছনে বিদ্যমান নির্বাচনব্যবস্থাকে দায়ী করেন তিনি।
ইসির পদত্যাগের দাবিতে নির্বাচন ভবনের বাইরে কয়েক দিন ধরে অনিবন্ধিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন বিক্ষোভ করে আসছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিইসির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ কমিশন গতকাল পদত্যাগ করবে, তা কিছুটা অনুমেয় ছিল। এদিন ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়’ অনুষ্ঠানে ‘বিদায়ি ভাষণ’ হাতে হাজির হন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তাঁর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব ও মো. আলমগীর উপস্থিত থাকলেও অন্য দুই কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা ও আনিছুর রহমান অনুপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক সংগ্রাম:

বিগত সরকার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে ————ডা. শফিকুর রহমান
* যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন- তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে

* হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো দেশে আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে

* লুণ্ঠনকারীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে* জাতির কাক্সিক্ষত পরিবর্তনকে কেউ যাতে ব্যর্থ করে না দিতে পারে এজন্য সকলে মিলে পাহারাদারী করব

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত সরকার ক্ষমতার লোভে জেদের বশবর্তী হয়ে সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে। সরকার শুধু স্থলভাগেই নয়, আকাশ থেকেও গুলী চালিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যা করেছে। স্বাধীন দেশে পরিচালিত এই গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দল হিসেবে সাড়ে ১৫ বছর পরে আমাদের সাথে বৈরী আচরণ করা হয়েছে। আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে সরকার দিশেহারা হয়ে আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে। আমরা বলেছি আমরা প্রতিশোধ নিব না- এর মানে হচ্ছে আমরা নিজের হাতে আইন তুলে নিব না। কিন্তু যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন- তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তার বিচার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি ক্ষতিগ্রস্ত যারাই মামলা করবেন, আইনের আশ্রয় নিবেন- কোনো মানুষের উপর যেন বেইনসাফি না হয় সেদিকে তীক্ষè দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন আসামী করা না হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকার মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার-এর পরিচালনায় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা:

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অস্বাস্থ্যকর মগজে কিলবিল করত কুবুদ্ধি
একটি মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ থেকে বাস্তবায়ন, বরাদ্দ, বাজেট প্রণয়ন এমনকি যে কোনো ব্যয় মঞ্জুরি—সবকিছুই মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানেই সম্পন্ন হয়। মন্ত্রণালয় ও অধীন সব প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক বা রক্ষক তিনিই। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের দুবারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ভূমিকা ছিল উল্টো। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালের কেনাকাটা, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন, ওষুধ ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সরবরাহ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব কাজেই ভাগ বসাতেন তিনি। মন্ত্রিত্বকে আখের গোছানোর হাতিয়ার বানিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়েছেন জাহিদ মালেক। করোনাকালে টিকা, টেস্ট কিট, নকল মাস্ক বানিয়ে ও ভুয়া আমদানি দেখিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির টাকায় নামে-বেনামে এক ডজনের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ঢাকার গুলশানে আলিশান বাড়ি, গ্রামের বাড়িতে মায়ের নামে বিশাল বাগানবাড়ি এবং এগ্রো ফার্ম তৈরি করেছেন। তা ছাড়া বনানীতে ১৪ তলা ও মানিকগঞ্জে ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছেন। সভা-সেমিনার করতে মানিকগঞ্জে ছেলের নামে করেছেন বিশাল মিলনায়তন ‘শুভ্র সেন্টার’।

এরই মধ্যে সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং তার ছেলেমেয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
করোনাকালে মুন্সীগঞ্জের একটি কারখানায় এন-৯৫ নকল মাস্ক বানিয়ে ভুয়া আমদানি দেখিয়েছেন। এসব মাস্ক হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া হতো। এই কাজটির সঙ্গে সরাসরি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ মিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপের মাধ্যমে করে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সেই সময় টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অযোগ্যতার কারণে করোনাভাইরাস সংকট প্রকট হচ্ছে। এই দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ৫ থেকে ১০ গুণ বাড়তি দামে মানহীন মাস্ক, পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী সরকারিভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

দেশরুপান্তর:

গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে গণভবনকে জাদুঘর বানানো হবে
‘গণহত্যার সম্পূর্ণ বিচারের আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়’
গণভবনকে ‘গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এ কথা জানান। এ সময় সম্পূর্ণ বিচার না হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘‌আমাদের যে গণভবন আছে, সেটির যে নাম, তা প্রকৃত অর্থে সেই গণভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ গণভবনকে যেহেতু ছাত্র-জনতা একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জয় করেছে, এটিকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারে আমলে যত অন্যায়-অবিচার হয়েছে; সবকিছুর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এটিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেন, ‘‌খুব দ্রুত এটির কার্যক্রম শুরু হবে। গণভবন যেমন আছে, জনগণ যেভাবে এটাকে অধিকার করেছে; এটিকে জয় করেছে, ঠিক সে অবস্থায় রাখা হবে। এর মধ্যে ভেতরে আমরা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করব, যাতে এ অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। সে বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সাউথ কোরিয়ায় এমন একটি মেমোরিয়াল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য। পৃথিবীতে আরো বিভিন্ন জায়গায় এটা হয়েছে। আমরা সেখান থেকে এটি প্রস্তুতে তাদের যে অভিজ্ঞতা সেটিকে নেব। ফ্যাসিবাদী সময়ের অত্যাচারের স্মৃতি, আমাদের শহীদদের স্মৃতি কীভাবে সংরক্ষণ করে সুন্দর একটি জাদুঘর করা যায়; এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পঞ্চম বৈঠক। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘‌ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল; সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, সে বিষয়টি আমরা জনগণের কাছে ছেড়েছি। তাদের কোনো পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে সেটিকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা হয়নি। আমরা এটিকে অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। সম্পূর্ণভাবে বিচার করার জন্য সরকার এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।’