আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর
যুগান্তর:
গুলিবিদ্ধ লাশের স্তূপে পুলিশের আগুন
বিজয়ের দিনে আশুলিয়ায় বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ
রক্তে ভেজা সারা শরীর, খালি পায়ে রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে আছেন গুলিবিদ্ধ যুবক। তার রক্তে ভিজে গেছে পিচঢালা পথ। নিথর দেহে তখনও হয়ত টিপটিপ করে জ্বলছিল জীবন প্রদীপ। দুই পুলিশ সদস্য তার হাত ও পায়ের দিকে ধরে ভারী বস্তার মতো করে পাশের রিকশা ভ্যানে ছুড়ে দেন। ভ্যানে আগে থেকেই ছিল লাশের স্তূপ। সেখানে একটির ওপর একটি রক্তাক্ত লাশ চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল। এর আগে পুলিশ গুলিবিদ্ধ মরদেহগুলো গুনে গুনে ভ্যানে তোলে। সর্বশেষ রাস্তা থেকে তুলে ভ্যানে ছুড়ে দেওয়া গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিটি তখনও জীবিত ছিলেন। তার নিথর দেহ ধীরে হলেও ঝাঁকুনি দিয়ে উঠছে। পাশ থেকে কেউ বলছেন, ‘আগুন দিয়ে পুড়াই দিতে হইব।’
মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক, গা শিউরে ওঠা ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ভিডিওর ঘটনাটি কোথায়, কখন, কিভাবে ঘটেছে তা জানতে চান সবাই। ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকিং সাইটের পাশাপাশি অনুসন্ধান চালিয়েছে যুগান্তর। জানা গেছে, ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানার প্রধান ফটকের সামনের সড়কের ঘটেছে এ বর্বর ঘটনা। ভাইরাল ভিডিওটির শেষদিকে পেছনের দেওয়ালটি পর্যবেক্ষণে আরও স্পষ্ট হয় লোকেশন। চোখে পড়ে দেয়ালের ডিজাইন ও একটি রাজনৈতিক পোস্টার। শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, আশুলিয়া থানার পেছনের একটি প্লটের নিরাপত্তা প্রাচীর এটি। ভিডিওটিতে যে পোস্টার দেখা যায়, তা স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার। স্থানীয়রাও নিশ্চিত করেন ঘটনাটি ৫ আগস্ট বিকালের। ওই স্থান থেকে পরে সাতটি দগ্ধ লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাদের পাঁচজনের পরিচয় পেলেও দুজনের পরিচয় মেলেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক দোকানি বলেন, ‘দূর থেকে দেখেছি লাশের ভ্যানে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। পরে সেখান থেকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সাতটি মরদেহ বের করা হয়। যাদের পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-সাজ্জাদ হোসেন সজল, তানজিল আহমেদ সুজয়, বায়েজিদ, শুভ্র হুমায়ন ও স্কুলছাত্র আসশাবুর। তাদের মরদেহ বুঝে পেয়েছেন স্বজনরা। বাকি দুজনের পরিচয় না পাওয়ায় স্থানীয় আমতলা এলাকায় কবর দেওয়া হয়।’ স্থানীয়রা মনে করছেন, লাশের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নিহত আসশাবুরের বড় ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে থানার পাশেই রাস্তায় পড়ে ছিলেন। পরে পুলিশ তার নিথর দেহ রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ভ্যানে উঠিয়ে আগুন দেয়। ভাইটি আমার জীবিত ছিল নাকি মৃত সেটা জানার সুযোগও হয়নি আমাদের।
নিহত বায়েজিদের স্ত্রী বলেন, ‘৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি বায়েজিদ। সারা দিন ফোন দিছি কিন্তু ফোন বন্ধ পাইছি। পরের দিন লাশ পাওয়া গেছে।’
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মানুষ মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।
এদিকে ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট চেক এডিটর কদরুদ্দিন শিশির জানান, ঘটনাটি ৫ আগস্টের। ঢাকার আশুলিয়া থানার নিকটবর্তী বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশের গলি দিয়ে ভেতরে ঢোকার পর থানা ভবনের আগের জায়গায় ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে।
দৈনিক সংগ্রাম:
১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা পাচারে
এস আলম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ অনুসন্ধানে সিআইডি
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থপাচার করেছে এস আলম গ্রুপ। এর সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তি, গোয়েন্দা সংস্থা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা জড়িত ছিল : টিআইবি
তোফাজ্জল হোসাইন কামাল : পদ্মা সেতু বানাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে, তাঁর তিনগুন পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমসহ তাঁর সহযোগিরা। প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা পাচারের তথ্য হাতে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম (এস আলম) ও তাঁর সহযোগী ব্যক্তিদের বিদেশে টাকা পাচারের পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাদের ধারণা, তদন্তের মাধ্যমে টাকা পাচারের প্রকৃত তথ্যটি বেরিয়ে এলে তা হবে চোখ কপালে ওঠার উপক্রম।
গতকাল শনিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এস আলম ও তাঁর সহযোগিদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। সিআইডি এই তদন্ত শুরু করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক এস আলম ও তাঁর সহযোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধ, প্রতারণা, জালিয়াতি ও হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এস আলমসহ তাঁর সহযোগী ব্যক্তিরা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারে জড়িত সন্দেহে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
সিআইডি বলছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এস আলমসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে একদিনের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) অনুমতি গ্রহণ করেছেন। তাঁরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস ও ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে নিজের ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ করেছেন।
সিআইডি বলছে, এস আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলমসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং অপরাধ করেছেন তাঁরা। তারা বলছেন, ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে প্রাথমিক তথ্য ধরে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে; যা অন্তত তিনটা পদ্মাসেতুর খরচের সমান। এই অঙ্ক আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
নয়াদিগন্ত:
সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দাবি
নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে যৌক্তিক দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। একই সাথে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭জন সেনা হত্যা, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যা এবং সর্বশেষ ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিচার দাবি করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে শহীদ, চিরতরে অক্ষম ও আহতদের দ্রুত তালিকা প্রণয়নপূর্বক ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা অনুযায়ী আশু ও ক্ষেত্রবিশেষে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, জুলাই বিপ্লবে শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা, দেশের ধ্বংস প্রায় বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ, অর্থ ও ব্যাংকিং বিভাগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সব বিভাগকে দ্রুত সংস্কার করতে হবে।
গতকাল বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সাথে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা তাদের বক্তব্য মনোযোগসহকারে শোনেন এবং দেশ পরিচালনায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন। গতকালের সংলাপে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো হচ্ছে- খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় পার্টি (জিএম কাদের),গণফোরাম (ড. কামাল)।
ইউনূস ছাড়াও সংলাপে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান কর্নেল অলি : প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে বেরিয়ে ৮৩ দফা দাবির কথা তুলে ধরেন লেবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) ড. অলি আহমেদ বীরবিক্রম। সংস্কারের আগে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন নয় উল্লেখ করে এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, সরকারকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটা সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করতে বলেছি। তা হলে প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে, সেটি ৬ মাস হতে পারে, ৯ মাস পরেও হতে পারে। যত দ্রুত হবে ততই সবার জন্য ভালো।
তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। এখনো আমরা বাংলাদেশকে চাঁদাবাজমুক্ত করতে পারিনি। স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে দেশ, চাঁদাবাজমুক্ত হয় নেই। এখনো কোর্টকাচারিতে ন্যায়বিচার হচ্ছে না। মানুষ ন্যায়বিচার না পেলে এ স্বাধীনতার কোনো দাম নেই।
জামায়াতকে তুচ্ছ কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার নিষিদ্ধ করেছিল উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার আমলে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, গুম খুন হয়েছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চান এলডিপি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যতগুলো ধর্মবিরোধী লেখা গল্প আছে সেগুলো সব বাদ দিতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, নিজের স্বার্থ ভুলে যান, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ভুলে যান। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করেন, সে পরিকল্পনা করেন। এ সময় দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম আলো:
৭২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রেললাইন, ট্রেন চলে কম
রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ ও পুরোনো লাইন সংস্কারে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করার সময় বলা হয়েছিল, এই রেললাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলাচল করবে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই রেলপথ উদ্বোধন করেন। এখন এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
রাজবাড়ী–গোপালগঞ্জের মতো ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্মিত আটটি রেললাইন সক্ষমতার তুলনায় অনেক কম ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাকি সাতটি রেললাইন হলো পাবনা–ঢালারচর, কুমিল্লার লাকসাম–চিনকি আস্তানা (চট্টগ্রামের কাছে), চট্টগ্রামের দোহাজারী–কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া–কুমিল্লার লাকসাম, খুলনা–মোংলা, আখাউড়া–আগরতলা (ভারত) এবং পদ্মা রেলসংযোগ (ঢাকা থেকে যশোর)। এগুলো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭১ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। কিন্তু সুফল কম। ফলে রেললাইনগুলোকে বলা হচ্ছে ‘সাদা হাতি’।
‘সাদা হাতি’ বাগ্ধারাটি দিয়ে বোঝানো হয়, যার পেছনে প্রচুর ব্যয় হয়, কিন্তু সুফল পাওয়া যায় না। থাইল্যান্ডে রাজারা সাদা হাতি পুষতেন। প্রাণীটিকে ধরা হতো পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে। সাদা হাতি দিয়ে কোনো কাজ করানো নিষিদ্ধ ছিল। রাজারা কারও ওপর নাখোশ হলে তাঁকে বিপাকে ফেলতে সাদা হাতি উপহার দিতেন। উপহার পাওয়া ব্যক্তি সাদা হাতি পুষতে গিয়ে আর্থিক দুর্দশার মধ্যে পড়তেন।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওই সব প্রকল্পের কোনোটি নেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়, কোনোটি অর্থায়নকারী কোনো দেশের পরামর্শে, কোনোটি ঠিকাদারদের তৎপরতায়। এখন প্রকল্পগুলো দেশের মানুষের জন্য বোঝায় পরিণত হয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকার যে ১৮ লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ রেখে গেছে, তার একটি অংশ দিয়ে এমন ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
রেললাইন প্রকল্পগুলোর নির্মাণ ব্যয় ও মেয়াদ বারবার বাড়ানো হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই আট প্রকল্পের ছয়টি বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিল চীনের কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পাঁচটিতে তাদের অংশীদার ছিল বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। দুটিতে কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদার।
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে ম্যাক্স গ্রুপ ও তমা কনস্ট্রাকশন। সূত্র বলছে, মূলত বাংলাদেশি প্রভাবশালী ঠিকাদারেরা কাজ পাওয়ার যোগ্যতা বাড়াতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামনে রাখেন। কাজ পাওয়া এবং বাস্তবায়নে স্থানীয় ঠিকাদারেরাই মূল ভূমিকা পালন করেন। একমাত্র পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পে চীনা ঠিকাদার মূল ভূমিকায় ছিল।
বেশি কাজ পাওয়া তমা কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান ভূঁইয়া নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। তমা কনস্ট্রাকশনের পেছনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম রয়েছেন বলে আলোচনা আছে। আত্মগোপনে থাকায় মির্জা আজমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সমকাল:
জামায়াতের ‘ফরওয়ার্ড মার্চ’ ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ
বাস্তবেও কমবেশি সেটিই ঘটেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই জামায়াতে ইসলামী দক্ষ তীরন্দাজের মতো আওয়ামী লীগের পতনকেই মাছের চোখ সাব্যস্ত করেছে। ওই নির্বাচনের আগে তৎকালীন সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও বিবিধ গোয়েন্দা বাহিনী যদিও জামায়াত প্রশ্নে স্পষ্টতই ‘স্টিক অ্যান্ড ক্যারোট’ নীতি গ্রহণ করেছিল, দলটিকে লক্ষ্য থেকে সরানো যায়নি। এমনকি তৎকালীন ২০ দলীয় জোটের প্রধান বিএনপির সঙ্গে জোটভিত্তিক বা যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে অনেক ভাঙা-গড়ার মধ্যেও জামায়াত থেকেছে নিজের পথেই।
সেসময় অপর একটি নিবন্ধে লিখেছিলাম- “প্রশ্ন হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামী কি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির হিসাবমতো চলবে? এ ধরনের ক্যাডারভিত্তিক দল পরের মুখে ঝাল খাচ্ছে–এমন নজির বিশ্বজুড়েই নেই। সাময়িক কৌশলগত কারণে জোট বা আন্দোলনের ঐক্য হতে পারে; কিন্তু চূড়ান্ত অর্থে নিজেদের নীতি ও কর্মসূচিই অনুসরণ করে থাকে। জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রে অতীতে অনেকবারই সেটা দেখা গেছে”। (আওয়ামী লীগের গাজর এবং জামায়াতের দাঁত/ সমকাল, ১২ জুন ২০২৩)।
যাহোক, জামায়াতে ইসলামীর ‘মার্ক টাইম’ প্রবণতা আমার চোখে ধরা পড়ার পর গত ৯ মাসে মরা বুড়িগঙ্গা দিয়েও অনেক জল গড়িয়ে গেছে। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ঘটেছে। মাস দেড়েক আগেও আদালতের খাঁচায় খাঁচায় হাজিরা দেওয়া অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী গত ১ আগস্ট তৃতীয়বারের মতো নিষিদ্ধ হয়ে ২৭ আগস্ট সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তও হয়েছে। এখন দলটি সম্ভবত নেতাকর্মীকে ‘ফরওয়ার্ড মার্চ’ তথা অগ্রসর হওয়ার আদেশ দিয়ে দিয়েছে।
এই ‘ফরওয়ার্ড মার্চ’ প্রবণতাকালে জামায়াতে ইসলামী যে দীর্ঘ আড়াই দশকের শরিক বিএনপিকেও আর পাত্তা দিতে চাইছে না, সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও কথাবার্তায় তা স্পষ্ট। এমনকি যে গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বিএনপি ও জামায়াত যুগপৎ নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছিল, সেই সরকারের মেয়াদ নিয়েও দল দুটির মধ্যে দ্বিমত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিস্তারিত জানতে শিরোনামে ক্লিক করুণ
কালের কন্ঠ:
৩০-৩৫ লাখ ঘুষে পুলিশের এসআই, সার্জেন্টের চাকরি
► নেতৃত্বে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিন্ডিকেট
► পুলিশ সদর দপ্তরের গোপন প্রতিবেদন
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুলিশের এসআই ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগের মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট এই বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে একটি গোপন প্রতিবেদন জমা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র এই তথ্য দিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তালিকা অনুযায়ী পুলিশে ব্যাপক নিয়োগ বাণিজ্য হতো। এই নিয়োগ প্রদানের ফলাফল প্রস্তুতসহ অন্যান্য কার্যক্রম অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সম্পাদন করতেন তাঁর ঘনিষ্ঠ একজন এআইজিসহ আরো কয়েকজন সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তাঁরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে ঘুষ গ্রহণ করেন।
সম্প্রতি প্রাথমিক তদন্তে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় পুলিশে নিয়োগের নামে ঘুষ-দুর্নীতি। এ ক্ষেত্রে তিনি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।
তাঁর নির্দেশে চক্রটি এসআই (সাব-ইন্সপেক্টর) ও সার্জেন্ট নিয়োগে মেধাবী ও যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্য ও অদক্ষদের নিয়োগ দেওয়া শুরু করে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০২৪ সালে আউটসাইড ক্যাডেটের নতুন একটি ব্যাচ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এরই মধ্যে এই ব্যাচের লিখিত পরীক্ষা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় তিন হাজার ২০০ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কাছ থেকে আগের মতোই একইভাবে ওই চক্র বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে।
মানবজমিন:
মনিরুলের আনা ২৫ কোটি টাকা গেল কোথায়?
নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্য, কেনাকাটা, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ উঠছে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)-এর প্রধান কর্মকর্তা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষের দিকে পুরোটা সময় মনিরুল পুলিশ সদরদপ্তর ও ডিএমপি’র কন্ট্রোলরুমে কাটিয়েছেন। সূত্রমতে, আন্দোলন দমন-পীড়নের কাজে খরচের জন্য গণভবন থেকে সর্বশেষ গত ৪ঠা আগস্ট সকালে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আনেন এই মনিরুল। পুরো টাকাটাই তার এসবি অফিসের নিজস্বকক্ষে সুরক্ষিত ছিল। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর মনিরুল আর অফিস করেননি। এসবি সূত্র জানায়, এ সময় এসবি’তে কর্মরত তার হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে পরিচিত দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পুরো টাকাটাই গায়েব করে দেন। সূত্র জানায়, জঙ্গি অভিযান নাটকের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে নাম ছড়িয়ে পড়ে মনিরুলের। এ সময় তার প্রধান ও বিশেষ সহযোগী হিসেবে ছিলেন সাবেক কাউন্টার টেরোরিজম (সিটিটিসি) প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান ও পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অ্যাডমিন) পদে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, গত ৪ঠা আগস্ট গণভবন থেকে ২৫ কোটি টাকা ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রণোদনা হিসেবে এসবি’র ডিউটিরত সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করতে এ টাকা আনেন মনিরুল। এসবি’র এসএস (অর্থ) এবং এসবি প্রধানের স্টাফ অফিসার পুরো বিষয়টি জানতেন।
এসবি’র অতিরিক্ত ডিআইজিকে (প্রশাসন ও অর্থ) তারা বিষয়টি জানালে তিনজন মিলে সব অর্থ আত্মসাৎ করার সিদ্ধান্ত নেন। গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে অজুহাতে এই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর এসবি প্রধানের অফিস কক্ষ, তার বেইলি রোডের বাসা এবং সিটি এসবি’র ডিআইজি অফিসে তারা তিনজন তালা লাগান। ৬ই আগস্ট এসবি কার্যালয়ের সকল সিসিটিভি ও ডিশ লাইন কেটে দেন। ৬ই আগস্ট থেকে ১২ই আগস্ট পর্যন্ত এই সময়ের ভেতর এসবি প্রধান মনিরুলের দপ্তরে রাখা ২৫ কোটি টাকা তিনজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।
বনিক র্বাতা:
লিটারে পেট্রল-অকটেনে কমল ৬ টাকা, কেরোসিন ডিজেলে সোয়া ১ টাকা
ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম কমানো হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম মাসেই চার ধরনের জ্বালানি পণ্যের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার।
পেট্রল ও অকটেনে লিটারপ্রতি কমানো হয়েছে ৬ টাকা করে। আর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমেছে লিটারে ১ টাকা ২৫ পয়সা। সেই হিসাবে চলতি মাসে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম পড়বে ১২১ ও অকটেনে ১২৫ টাকা। ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার পড়বে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা।
গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আজ থেকে এ দাম কার্যকর হয়েছে।
কালবেলা:
গণপূর্তে পীর-মুরিদের চক্র
২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে চারটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ কাগজে-কলমে সেখানে সাতটি আয়োজন দেখিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এ খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। ‘ভুয়া’ তিনটি অনুষ্ঠানের টাকা তুলে ভাগবাটোয়ারা করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ভিভিআইপি প্রোগ্রামের নামে এই অর্থ লোপাটের মূলহোতা প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, যার একক শাসনে চলছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। নিজেকে পীর হিসেবে জাহির করা এই প্রকৌশলীর লুটপাটের সঙ্গী আবার তার স্বীকৃত মুরিদরা। ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন মুরিদ এবং ঠিকাদার নুসরত হোসেন। অন্তত এক ডজন প্রকৌশলী এসব অপকর্মের সরাসরি অংশীদার।
মুরিদদের কাছে তার পরিচিতি নারায়ণগঞ্জের ভূঁইগড়ের হাকিমাবাদ খানকা-ই-মোজাদ্দেদিয়ার ‘পীর সাহেব’ আল্লামা হজরত মোহাম্মদ শামীম আখতার (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী)। দেশ-বিদেশে খানকা শরিফের শাখায় পীরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তার ভক্ত-আশেকানরা। তবে পীরগিরির আড়ালে ঢাকা পড়েছে শামীম আখতারের মূল পরিচয়। পীর-মুরিদের তেলেসমাতিতে বোঝার উপায় নেই, তিনি দেশের অবকাঠামো খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। আর তার আড়ালে থাকা এই পরিচয় ব্যবহার করে গণপূর্তে কায়েম করেছেন মুরিদানি শাসন। পীর সাহেবের পছন্দের মুরিদরাই নিয়ন্ত্রণ করেন সব ঠিকাদারি কাজ।
কয়েকদিন আগে মোহাম্মদপুর থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শাহ কামালকে ৩ কোটি টাকাসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সূত্র বলছে, কিংডম বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস থেকে আটক হন সাবেক ওই সচিব। কিংডম কনস্ট্রাকশন, কিংডম হাউজিং এবং কিংডম বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান শাহ কামাল। আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুসরত হোসেন। উভয়েই শামীম আখতারের মুরিদ। এর মধ্যে নুসরত হোসেন মূলত গণপূর্তের সব রকম ঠিকাদারি কাজের ব্যবস্থাপনা, বণ্টন এবং কমিশন আদায় করেন।
গণপূর্তের অন্তত এক ডজন ঠিকাদার কালবেলাকে জানান, প্রায় চার বছর ধরে গণপূর্তের সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন নুসরত হোসেন। প্রধান প্রকৌশলীর মুরিদ পরিচয়ে তিনি সাধারণ ঠিকাদার এবং প্রকৌশলীদের জিম্মি করে রেখেছেন। যে কোনো কাজ ১০% কমিশন ছাড়া বণ্টন করা হয় না। অন্তত তিনজন ঠিকাদার বলছেন, নুসরত হোসেনের কাছে অনেক ঠিকাদার অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছেন। যাতে ভবিষ্যতে কাজ পাওয়া যায়।
গণপূর্তের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় শতকোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে নুসরতের কিংডম বিল্ডার্সের। গত চার বছরে এই কোম্পানি অন্তত ২০০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছে। তবে ঠিকাদাররা বলছেন, নুসরত নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে কম কাজ করেন। তিনি মূলত প্রধান প্রকৌশলীর ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করেন। সব কাজ ঠিকাদারদের মধ্যে বণ্টন এবং কমিশন আদায় করেন।