ঢাকা ০২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়াল

বিদ্যুৎ জ্বালানিতে যথেচ্ছ লুট

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৪৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪
  • 56

 

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

সমকাল:

বিদ্যুৎ জ্বালানিতে যথেচ্ছ লুট

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় খুচরায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। বর্তমানে গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। অর্থাৎ, গত সাড়ে ১৫ বছরে খুচরায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৪২ শতাংশ। ২০০৯ সালে গ্যাসের দুই চুলার মাসিক বিল ছিল ৪৫০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮০ টাকা। অর্থাৎ গেল সাড়ে ১৫ বছরে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৪০ শতাংশ। এই সময়ে বিদ্যুৎ খাতের লোকসান ঠেকেছে ২ লাখ কোটি টাকার ওপরে। বিপরীতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং বিপুল লোকসানের জন্য বিশ্লেষকরা আওয়ামী লীগ সরকারের অপরিকল্পিত উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও দায়মুক্তি আইনের আড়ালে দলীয় ব্যবসায়ীদের সুবিধা প্রদানকে দায়ী করেন। পাশাপাশি ওই সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন মহলের দুর্নীতি এ খাতকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন তারা।

দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতিকে পুঁজি করে দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বিশেষ বিধান পাস করা হয় ২০১০ সালে। এই আইনে টেন্ডার ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এর পর দেশের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদার অবাস্তব প্রাক্কলন করে একের পর এক ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজন না থাকলেও অনেক প্রকল্প দেওয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ ‍উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকসহ প্রায় দুই ডজন সংসদ সদস্য সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা প্রকল্পের কাজ পান।

সামিট, ইউনাইটেড পাওয়ার, বাংলাক্যাট, মোহাম্মদী গ্রুপ, ডরিন, বারাক, সিনহাসহ বেশ কিছু কোম্পানি একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে। যদিও এত বেশি কেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। ফলে অনেক কেন্দ্রই নামমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করে শত শত কোটি টাকা আয় করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আদানি ও রিলায়েন্সকে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ব্যবসা। রাশিয়া ও চীনের কোম্পানিকে গ্যাসকূপ খননের কাজ দেওয়া হয় বেশি দামে। জনগণের প্রবল প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনঘেঁষে ভারতের সঙ্গে যৌথ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। দেশীয় উৎপাদন ও অনুসন্ধানের দিকে নজর না দিয়ে গ্যাস সংকটকে পুঁজি করে অসৎ উদ্দেশ্যে এলএনজি আমদানির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। পছন্দের কোম্পানিকে এলএনজি ব্যবসায় যুক্ত করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

প্রথম আলো :

চার মাসের দুর্যোগে প্রায় ২ কোটি মানুষ আক্রান্ত
এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৪টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত।

পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি।
দেশে গত মে মাস থেকে চলতি আগস্ট পর্যন্ত চার মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব দুর্যোগের মধ্যে ছিল ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। সবচেয়ে বেশি ৫৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যায়। জাতিসংঘের মানবিক–বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

আরেক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলেছে, এবারের বন্যায় ২০ লাখের বেশি শিশু ঝুঁকির মধ্যে আছে। এই শিশুদের বড় অংশ এখনো অভিভাবকদের সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্র বা উঁচু জায়গায় অবস্থান করছে। বিগত ৩৪ বছরে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে এটি সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যা। আর এ বছর এখন পর্যন্ত সব দুর্যোগ মিলিয়ে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৫০ লাখ।

ইউনিসেফ ছাড়াও দুর্যোগ নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর জোট ইন্টার কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ ও হিউম্যানিটারিয়ান টাস্কফোর্স টিম বাংলাদেশের বন্যা নিয়ে যৌথ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ বন্যাকবলিত ১১টি জেলায় সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে খাওয়ার পানির উৎস, পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, পাঠদান কক্ষসহ বেশির ভাগ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ স্কুলের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কালের কন্ঠ:

দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়াল
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী সরকারের ৭০ মন্ত্রী, এমপি, আমলা আর সুবিধাভোগী ভিআইপি ব্যবসায়ী এখন দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের জালে। অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় বিপুল ধন-সম্পদ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির অভিযোগে এরই মধ্যে অনেকেই জেল-জরিমানার মুখে থাকলেও তাঁদের রেহাই নেই দুদকের খড়্গ থেকেও। ক্ষমতার পালাবদলে নখদন্তহীন দুদক তার জাত চেনানোর সুযোগে লম্বা তালিকা করে ভিআইপি দুর্নীতিবাজদের ধরতে কাজ শুরু করেছে। সংস্থাটি গত ১৫ দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়ালবছরে যা না করতে পেরেছে, মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সংস্থাটির হাতে বিশাল কাজের ফর্দ।

যে শীর্ষ ৭০ প্রভাবশালীকে এখন ধরা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৬৪ জনই সাবেক মন্ত্রী-এমপি। বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজন আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী, তিনজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও আমলা রয়েছেন। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এরই মধ্যে দুদক যাদের তদন্তের আওতায় এনেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা ও এমপি সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব কবির বিন আনোয়ারসহ আরো ৬৩ জন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক আজ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজ আবারও বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে তিনি আলোচনা করবেন। বৈঠকে আগামী কত দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে’ একটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করতে পারবে সরকার- সে বিষয়ে আলোচনা করবে দলগুলো। আজকের এ আলোচনার পর অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। আজকের বৈঠকেও আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কেউ উপস্থিত থাকবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে, ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়। সেদিনও আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কেউ বৈঠকে ছিলেন না। গত বৃহস্পতিবারও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, দেশকে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন করবে বলে তাদের জানানো হয়েছে।

এর আগে ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ৮ আগস্ট রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন তার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, এনডিএমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা সাক্ষাৎ করেন। আবার গত ২৯ আগস্ট বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আজকের বৈঠকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ (নূর), গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া), ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নিতে পারে।

নয়াদিগন্ত:

৪৬ দিনের মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্ত করবে জাতিসঙ্ঘ
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের শীর্ষ নির্বাহী ভলকার তুর্ককে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। সেই সাথে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সহিংসতার যত ঘটনা ঘটেছে, সেসবের আনুষ্ঠানিক তদন্তের অনুরোধও করেছেন তিনি।

ভলকার তুর্ক এই আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে নিশ্চয়তা না দিলেও আনুষ্ঠানিক তদন্তের ইস্যুতে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে আগস্টের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ৪৬ দিনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ‘নিরপেক্ষ ও স্বাধীন’ তদন্ত করবে জাতিসঙ্ঘ। একইসাথে কারা এর সাথে জড়িত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ কী, সেটিও খুঁজে বের করে ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের বিষয়েও সুপারিশ করবে জাতিসঙ্ঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কাছে চিঠি দেয়া হলে তারা এই উত্তর দিয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল বাংলাদেশে পাঠাবে। অন্তর্বর্তী সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পূর্ণ সহায়তা দেবে বলে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল আসার আগে আগস্ট ২২ থেকে ২৯ পর্যন্ত একটি অগ্রগামী দল বাংলাদেশ সফর করেছে। তারা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র, উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন।

আন্দোলন চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত কিভাবে করা হবে সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছে অগ্রগামী দলটি। একইসাথে সুশীলসমাজের জন্য ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য মানবাধিকার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছে।
গুম সংক্রান্ত কনভেনশনে পক্ষ হওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশে এর আগে সংঘটিত গুম বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করাকে স্বাগত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুম বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় এবং এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস সরব ভূমিকা পালন করেছে। এ বিষয়ে সব রকম সহায়তা দেয়ার জন্য মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস তৈরি আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসবেন। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি ঢাকা আসতে পারেন বলে জানা গেছে।

যুগান্তর:

গুম প্রতিরোধ দিবসে জানতে চান স্বজনরা
প্রিয়জন জীবিত না মৃত
শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে যারা গুমের শিকার হয়েছেন, তারা জীবিত নাকি মৃত, সেই তথ্য অবিলম্বে জানতে চান তাদের স্বজনরা। এছাড়া তারা গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন।

শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক, আইনজীবী ও নিখোঁজদের স্বজনরা। মানববন্ধনে তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধেরও দাবি জানান।

মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। অবশিষ্ট অপশক্তিগুলো এখনো দেশে অবস্থান করছে। কিন্তু গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য এখনো পরিবারগুলো জানে না। এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের সৌভাগ্য যে আয়নাঘর থেকে মাইকেল চাকমা ফিরতে পেরেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনেকেই ফিরে আসেননি। কেবল ঢাকায়ই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘আয়নাঘর’ রয়েছে।

মানবজমিন:

জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেয়া হয় ইসলামী ব্যাংকের এমডি’র
জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলে নেয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান। শুক্রবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে ‘ব্যাংকিং খাতে দখলদারিত্ব উচ্ছেদ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন তিনি। ওয়েবিনারে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্সের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাডজ্যাংক্ট প্রফেসর মো. মিজানুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হলো এস আলমের ইসলামী ব্যাংক দখল।
২০১৭ সালের ৫ই জানুয়ারি ভোরে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি আবদুল মান্নানকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। একইভাবে নিজ নিজ বাসা থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে তুলে নেয়া হয়। এরপর তাদের জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে ব্যাংকটি দখলে নেয় মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ। পুরো প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করেন ওই গোয়েন্দা সংস্থাটির তৎকালীন কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা উল্লেখ করে ব্যাংকটির সাবেক এমডি বলেন, ক্ষমতায় তখন শেখ হাসিনার সরকার। ওপর মহলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে সংস্থাটি।
পদত্যাগপত্রে জোর করে সই নেয়া হয় বলে দাবি করে আবদুল মান্নান বলেন, আমাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি প্যাডে সই করানো হয়। কিন্তু সেই প্যাড ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কখনই ব্যবহার করেনি।

বনিক বার্তা:

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল
উচ্চ শিক্ষাকে নিচে নামিয়েছেন যারা

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। দেশে বিগত কয়েক দশকে উচ্চ শিক্ষায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত দেড় দশকে। দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬৩। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১০টি।

 

অভিযোগ আছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-রেজিস্ট্রারসহ উচ্চ পর্যায়ের নিয়োগগুলোর ক্ষেত্রে একাডেমিক যোগ্যতার চেয়ে দলীয় আনুগত্যই গুরুত্ব পেয়েছে সবচেয়ে বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকদের খুশি করে এসব পদ বাগানোরও অভিযোগ আছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেও উপাচার্যদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম থেকে শুরু করে অবকাঠামো দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। আবার শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম নিয়েও রয়েছে বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, গত দেড় দশকে দেশে উচ্চ শিক্ষার মান না বেড়ে উল্টো অবনমন হয়েছে। শিক্ষার মানহীনতার পাশাপাশি হানাহানি-কোন্দল আর দুর্নীতিতে কলুষিত হয়েছে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম। এক্ষেত্রে প্রধানতম ভূমিকা রেখেছিলেন দেশের শিক্ষা খাতের নীতিনির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী শিক্ষকরা।

দেশে উচ্চ শিক্ষা খাতের বর্তমান দৈন্যদশার পেছনে সবচেয়ে দায়ীদের অন্যতম মনে করা হয় নুরুল ইসলাম নাহিদকে। নবম ও দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার মেয়াদকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা ব্যাপকভাবে বাড়ে বলে অভিযোগ আছে। এমনকি বেশকিছু নিয়োগে সরাসরি মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে একটি ছিল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার হিসেবে বদরুল ইসলাম শোয়েবের নিয়োগ।

নুরুল ইসলাম নাহিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শোয়েব ২০১০ সালের শেষদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এরপর মাত্র ২ বছর ১১ মাসের মাথায় তাকে রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। যদিও ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগবিধি অনুযায়ী রেজিস্ট্রার হতে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিল। তবে বদরুল ইসলাম শোয়েবকে নিয়োগের আগে নীতিমালা সংশোধন করে অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরের পরিবর্তে চার বছর এবং অভ্যন্তরীণ প্রার্থীর ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলের বিধান রাখা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নুরুল ইসলাম নাহিদের মেয়াদকালে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসও নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁস দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি করে। তাদের মধ্যে ২০১৪ সালে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ৪০ জনকে আটক করা হয় এবং ২০১৮ সালে ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া হয়। বিস্তারিত দেখতে উপরের শিরোনামে ক্লিক করুন

কালবেলা:

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে তাদেরও বড় ভূমিকা
গত দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী সরকারের জমানায় চক্ষুশূল হয়েছিলেন অনেক সাংবাদিক-সমাজকর্মী। জেল-জুলুম, মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে দেশান্তরী হয়েছেন অনেকে। সমাজ-সংসার ফেলে বিদেশ বিভুঁইয়ে কাটানো এসব মানুষ দেশ ছাড়লেও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিবাদে মুখর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার ও সরকারি দলের লোকজনের নানা অপরাধ, দুর্নীতি, গুম, খুন ও নিপীড়নের খবর তথ্যসহ তুলে ধরতেন। কেউ কেউ প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে সংবাদ প্রকাশে রাখতেন বড় ভূমিকা। নানা কারণে ‘চুপ’ থাকা দেশীয় মিডিয়া যেখানে সরকারের গুণকীর্তন করত, তার বিপরীতে এসব মানুষ সত্য প্রকাশে নিয়েছেন সাহসী তৎপরতা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত এ সচেতন মানুষদের ভূমিকা গণতন্ত্রকামী মানুষকে দিয়েছিল আন্দোলনের ভিন্ন এক রসদ।

দৈনিক ইত্তেফাক, ইউএনবিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে বেশ উজ্জ্বল মুখ ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর জাস্ট নিউজ বিডির প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়েন এই সাংবাদিক। দেশ ছাড়লেও সরকারের অন্যায়, অনিয়ম আর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেন আন্তর্জাতিক মহলে। বিশ্বের বড় বড় মিডিয়ায় নিজের লেখনীতে তুলে ধরেন এক স্বৈরাচারী সরকারের গল্প। জাতিসংঘের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংগুলোতে প্রশ্ন করে আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউস এবং ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের নানা অনিয়ম আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরেন তিনি।

জনপ্রিয় বৈশ্বিক গণমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মী জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুর্নীতি এবং শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা অপরাধ সাম্রাজ্যে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সাংবাদিক। এরপর একের পর এক সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নথি ফাঁস করে গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে আস্থার নাম হয়ে ওঠেন জুলকারনাইন। লন্ডনে অবস্থানরত এ সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। নির্ভুল তথ্য সরবরাহ, নানা গোপন নথি প্রকাশ করে সরকারকে বিভিন্ন সময়েই প্রশ্নের মুখে ফেলেন এই সাংবাদিক। বর্তমানে বাংলা আউটলুকের প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
সুইডেনভিত্তিক গণমাধ্যম নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনীম খলিল। নির্বাসনে থাকা এই সাংবাদিক একের পর এক দুর্নীতি এবং অনিয়মের নিউজ প্রকাশ করে সারাবছরই আলোচনায় ছিলেন বাংলাদেশের। সরকারও নেত্র নিউজ সাইট ব্লক করে রাখে বাংলাদেশে। বিদ্যুৎ সেক্টর, ব্যাংক, পুলিশি হত্যাকাণ্ড, গুমসহ দেশের প্রায় সব অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন তাসনীম খলিল এবং নেত্র নিউজ।

ফ্রান্সে নির্বাসনে থাকা বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য। ব্যক্তিজীবনে চিকিৎসক হলেও তিনি সবসময় মানবাধিকার নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। যার ফলে দেশ ছাড়তে হয় তাকে। বিদেশে অবস্থানকালে তিনি যেন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন। সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি এবং দলবাজির কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি ইউটিউবে তুলে ধরতেন বিশ্লেষণাত্মক মতামত। সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় শিক্ষক বাবার সন্তান পিনাকীর গ্রামের বাড়ি দেশের বগুড়া জেলায়।

দেশ রুপান্তর:

বিনিয়োগ তুলে আনাই চ্যালেঞ্জ
গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের নজর বেশি ছিল অবকাঠামো উন্নয়নে। একের পর মেগা প্রকল্পের নামে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর পরামর্শকে পাশ কাটিয়ে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে আলোচিত পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পসহ সড়কের আরও অনেক প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বেশ কিছু প্রকল্প শেষ হলেও এসব প্রকল্পের লাভ তো দূরের কথা, বিনিয়োগ তুলে আনাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

যোগাযোগ বিশ্লেষকরা বলছেন, এগুলোকে এখনো শুধু যাতায়াত করিডর হিসেবে রাখা হয়েছে, অর্থনৈতিক করিডর হিসেবে রূপান্তর করলেই বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব। তা না হলে ঋণ শোধের বড় শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ প্রকল্পগুলো প্রয়োজনে হোক আর অপ্রয়োজনে হোক, বিনিয়োগ যেহেতু হয়েই গেছে, এখন সঠিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি শক্তহাতে দমন করতে পারলেই বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি ছিল আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলোর একটি। বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ বাতিল হওয়ার পর সেটি নির্মাণ করা হয়েছে দেশীয় অর্থায়নেই। ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির ব্যয় নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ২০২২ সালের জুনে এটি উদ্বোধন করা হলেও এখনো বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।

দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়াল

বিদ্যুৎ জ্বালানিতে যথেচ্ছ লুট

আপডেট সময় ০৭:৪৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪

 

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

সমকাল:

বিদ্যুৎ জ্বালানিতে যথেচ্ছ লুট

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় খুচরায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। বর্তমানে গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। অর্থাৎ, গত সাড়ে ১৫ বছরে খুচরায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৪২ শতাংশ। ২০০৯ সালে গ্যাসের দুই চুলার মাসিক বিল ছিল ৪৫০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮০ টাকা। অর্থাৎ গেল সাড়ে ১৫ বছরে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৪০ শতাংশ। এই সময়ে বিদ্যুৎ খাতের লোকসান ঠেকেছে ২ লাখ কোটি টাকার ওপরে। বিপরীতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং বিপুল লোকসানের জন্য বিশ্লেষকরা আওয়ামী লীগ সরকারের অপরিকল্পিত উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও দায়মুক্তি আইনের আড়ালে দলীয় ব্যবসায়ীদের সুবিধা প্রদানকে দায়ী করেন। পাশাপাশি ওই সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন মহলের দুর্নীতি এ খাতকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন তারা।

দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতিকে পুঁজি করে দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বিশেষ বিধান পাস করা হয় ২০১০ সালে। এই আইনে টেন্ডার ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এর পর দেশের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদার অবাস্তব প্রাক্কলন করে একের পর এক ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজন না থাকলেও অনেক প্রকল্প দেওয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ ‍উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকসহ প্রায় দুই ডজন সংসদ সদস্য সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা প্রকল্পের কাজ পান।

সামিট, ইউনাইটেড পাওয়ার, বাংলাক্যাট, মোহাম্মদী গ্রুপ, ডরিন, বারাক, সিনহাসহ বেশ কিছু কোম্পানি একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে। যদিও এত বেশি কেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। ফলে অনেক কেন্দ্রই নামমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করে শত শত কোটি টাকা আয় করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আদানি ও রিলায়েন্সকে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ব্যবসা। রাশিয়া ও চীনের কোম্পানিকে গ্যাসকূপ খননের কাজ দেওয়া হয় বেশি দামে। জনগণের প্রবল প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনঘেঁষে ভারতের সঙ্গে যৌথ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। দেশীয় উৎপাদন ও অনুসন্ধানের দিকে নজর না দিয়ে গ্যাস সংকটকে পুঁজি করে অসৎ উদ্দেশ্যে এলএনজি আমদানির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। পছন্দের কোম্পানিকে এলএনজি ব্যবসায় যুক্ত করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

প্রথম আলো :

চার মাসের দুর্যোগে প্রায় ২ কোটি মানুষ আক্রান্ত
এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৪টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত।

পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি।
দেশে গত মে মাস থেকে চলতি আগস্ট পর্যন্ত চার মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব দুর্যোগের মধ্যে ছিল ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। সবচেয়ে বেশি ৫৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যায়। জাতিসংঘের মানবিক–বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

আরেক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলেছে, এবারের বন্যায় ২০ লাখের বেশি শিশু ঝুঁকির মধ্যে আছে। এই শিশুদের বড় অংশ এখনো অভিভাবকদের সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্র বা উঁচু জায়গায় অবস্থান করছে। বিগত ৩৪ বছরে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে এটি সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যা। আর এ বছর এখন পর্যন্ত সব দুর্যোগ মিলিয়ে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৫০ লাখ।

ইউনিসেফ ছাড়াও দুর্যোগ নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর জোট ইন্টার কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ ও হিউম্যানিটারিয়ান টাস্কফোর্স টিম বাংলাদেশের বন্যা নিয়ে যৌথ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ বন্যাকবলিত ১১টি জেলায় সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে খাওয়ার পানির উৎস, পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, পাঠদান কক্ষসহ বেশির ভাগ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ স্কুলের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কালের কন্ঠ:

দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়াল
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী সরকারের ৭০ মন্ত্রী, এমপি, আমলা আর সুবিধাভোগী ভিআইপি ব্যবসায়ী এখন দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের জালে। অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় বিপুল ধন-সম্পদ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির অভিযোগে এরই মধ্যে অনেকেই জেল-জরিমানার মুখে থাকলেও তাঁদের রেহাই নেই দুদকের খড়্গ থেকেও। ক্ষমতার পালাবদলে নখদন্তহীন দুদক তার জাত চেনানোর সুযোগে লম্বা তালিকা করে ভিআইপি দুর্নীতিবাজদের ধরতে কাজ শুরু করেছে। সংস্থাটি গত ১৫ দুদকের জালে ৭০ রাঘব বোয়ালবছরে যা না করতে পেরেছে, মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সংস্থাটির হাতে বিশাল কাজের ফর্দ।

যে শীর্ষ ৭০ প্রভাবশালীকে এখন ধরা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৬৪ জনই সাবেক মন্ত্রী-এমপি। বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজন আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী, তিনজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও আমলা রয়েছেন। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এরই মধ্যে দুদক যাদের তদন্তের আওতায় এনেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা ও এমপি সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব কবির বিন আনোয়ারসহ আরো ৬৩ জন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক আজ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজ আবারও বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে তিনি আলোচনা করবেন। বৈঠকে আগামী কত দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে’ একটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করতে পারবে সরকার- সে বিষয়ে আলোচনা করবে দলগুলো। আজকের এ আলোচনার পর অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। আজকের বৈঠকেও আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কেউ উপস্থিত থাকবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে, ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়। সেদিনও আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কেউ বৈঠকে ছিলেন না। গত বৃহস্পতিবারও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, দেশকে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন করবে বলে তাদের জানানো হয়েছে।

এর আগে ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ৮ আগস্ট রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন তার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, এনডিএমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা সাক্ষাৎ করেন। আবার গত ২৯ আগস্ট বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আজকের বৈঠকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ (নূর), গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া), ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নিতে পারে।

নয়াদিগন্ত:

৪৬ দিনের মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্ত করবে জাতিসঙ্ঘ
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের শীর্ষ নির্বাহী ভলকার তুর্ককে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। সেই সাথে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সহিংসতার যত ঘটনা ঘটেছে, সেসবের আনুষ্ঠানিক তদন্তের অনুরোধও করেছেন তিনি।

ভলকার তুর্ক এই আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে নিশ্চয়তা না দিলেও আনুষ্ঠানিক তদন্তের ইস্যুতে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে আগস্টের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ৪৬ দিনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ‘নিরপেক্ষ ও স্বাধীন’ তদন্ত করবে জাতিসঙ্ঘ। একইসাথে কারা এর সাথে জড়িত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ কী, সেটিও খুঁজে বের করে ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের বিষয়েও সুপারিশ করবে জাতিসঙ্ঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কাছে চিঠি দেয়া হলে তারা এই উত্তর দিয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল বাংলাদেশে পাঠাবে। অন্তর্বর্তী সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পূর্ণ সহায়তা দেবে বলে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল আসার আগে আগস্ট ২২ থেকে ২৯ পর্যন্ত একটি অগ্রগামী দল বাংলাদেশ সফর করেছে। তারা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র, উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন।

আন্দোলন চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত কিভাবে করা হবে সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছে অগ্রগামী দলটি। একইসাথে সুশীলসমাজের জন্য ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য মানবাধিকার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছে।
গুম সংক্রান্ত কনভেনশনে পক্ষ হওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশে এর আগে সংঘটিত গুম বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করাকে স্বাগত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুম বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় এবং এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস সরব ভূমিকা পালন করেছে। এ বিষয়ে সব রকম সহায়তা দেয়ার জন্য মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস তৈরি আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসবেন। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি ঢাকা আসতে পারেন বলে জানা গেছে।

যুগান্তর:

গুম প্রতিরোধ দিবসে জানতে চান স্বজনরা
প্রিয়জন জীবিত না মৃত
শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে যারা গুমের শিকার হয়েছেন, তারা জীবিত নাকি মৃত, সেই তথ্য অবিলম্বে জানতে চান তাদের স্বজনরা। এছাড়া তারা গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন।

শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক, আইনজীবী ও নিখোঁজদের স্বজনরা। মানববন্ধনে তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধেরও দাবি জানান।

মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। অবশিষ্ট অপশক্তিগুলো এখনো দেশে অবস্থান করছে। কিন্তু গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য এখনো পরিবারগুলো জানে না। এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের সৌভাগ্য যে আয়নাঘর থেকে মাইকেল চাকমা ফিরতে পেরেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনেকেই ফিরে আসেননি। কেবল ঢাকায়ই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘আয়নাঘর’ রয়েছে।

মানবজমিন:

জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেয়া হয় ইসলামী ব্যাংকের এমডি’র
জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলে নেয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান। শুক্রবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে ‘ব্যাংকিং খাতে দখলদারিত্ব উচ্ছেদ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন তিনি। ওয়েবিনারে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্সের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাডজ্যাংক্ট প্রফেসর মো. মিজানুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হলো এস আলমের ইসলামী ব্যাংক দখল।
২০১৭ সালের ৫ই জানুয়ারি ভোরে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি আবদুল মান্নানকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। একইভাবে নিজ নিজ বাসা থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে তুলে নেয়া হয়। এরপর তাদের জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে ব্যাংকটি দখলে নেয় মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ। পুরো প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করেন ওই গোয়েন্দা সংস্থাটির তৎকালীন কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা উল্লেখ করে ব্যাংকটির সাবেক এমডি বলেন, ক্ষমতায় তখন শেখ হাসিনার সরকার। ওপর মহলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে সংস্থাটি।
পদত্যাগপত্রে জোর করে সই নেয়া হয় বলে দাবি করে আবদুল মান্নান বলেন, আমাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি প্যাডে সই করানো হয়। কিন্তু সেই প্যাড ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কখনই ব্যবহার করেনি।

বনিক বার্তা:

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল
উচ্চ শিক্ষাকে নিচে নামিয়েছেন যারা

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। দেশে বিগত কয়েক দশকে উচ্চ শিক্ষায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত দেড় দশকে। দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬৩। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১০টি।

 

অভিযোগ আছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-রেজিস্ট্রারসহ উচ্চ পর্যায়ের নিয়োগগুলোর ক্ষেত্রে একাডেমিক যোগ্যতার চেয়ে দলীয় আনুগত্যই গুরুত্ব পেয়েছে সবচেয়ে বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকদের খুশি করে এসব পদ বাগানোরও অভিযোগ আছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেও উপাচার্যদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম থেকে শুরু করে অবকাঠামো দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। আবার শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম নিয়েও রয়েছে বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, গত দেড় দশকে দেশে উচ্চ শিক্ষার মান না বেড়ে উল্টো অবনমন হয়েছে। শিক্ষার মানহীনতার পাশাপাশি হানাহানি-কোন্দল আর দুর্নীতিতে কলুষিত হয়েছে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম। এক্ষেত্রে প্রধানতম ভূমিকা রেখেছিলেন দেশের শিক্ষা খাতের নীতিনির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী শিক্ষকরা।

দেশে উচ্চ শিক্ষা খাতের বর্তমান দৈন্যদশার পেছনে সবচেয়ে দায়ীদের অন্যতম মনে করা হয় নুরুল ইসলাম নাহিদকে। নবম ও দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার মেয়াদকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা ব্যাপকভাবে বাড়ে বলে অভিযোগ আছে। এমনকি বেশকিছু নিয়োগে সরাসরি মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে একটি ছিল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার হিসেবে বদরুল ইসলাম শোয়েবের নিয়োগ।

নুরুল ইসলাম নাহিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শোয়েব ২০১০ সালের শেষদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এরপর মাত্র ২ বছর ১১ মাসের মাথায় তাকে রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। যদিও ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগবিধি অনুযায়ী রেজিস্ট্রার হতে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিল। তবে বদরুল ইসলাম শোয়েবকে নিয়োগের আগে নীতিমালা সংশোধন করে অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরের পরিবর্তে চার বছর এবং অভ্যন্তরীণ প্রার্থীর ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলের বিধান রাখা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নুরুল ইসলাম নাহিদের মেয়াদকালে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসও নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁস দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি করে। তাদের মধ্যে ২০১৪ সালে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ৪০ জনকে আটক করা হয় এবং ২০১৮ সালে ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া হয়। বিস্তারিত দেখতে উপরের শিরোনামে ক্লিক করুন

কালবেলা:

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে তাদেরও বড় ভূমিকা
গত দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী সরকারের জমানায় চক্ষুশূল হয়েছিলেন অনেক সাংবাদিক-সমাজকর্মী। জেল-জুলুম, মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে দেশান্তরী হয়েছেন অনেকে। সমাজ-সংসার ফেলে বিদেশ বিভুঁইয়ে কাটানো এসব মানুষ দেশ ছাড়লেও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিবাদে মুখর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার ও সরকারি দলের লোকজনের নানা অপরাধ, দুর্নীতি, গুম, খুন ও নিপীড়নের খবর তথ্যসহ তুলে ধরতেন। কেউ কেউ প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে সংবাদ প্রকাশে রাখতেন বড় ভূমিকা। নানা কারণে ‘চুপ’ থাকা দেশীয় মিডিয়া যেখানে সরকারের গুণকীর্তন করত, তার বিপরীতে এসব মানুষ সত্য প্রকাশে নিয়েছেন সাহসী তৎপরতা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত এ সচেতন মানুষদের ভূমিকা গণতন্ত্রকামী মানুষকে দিয়েছিল আন্দোলনের ভিন্ন এক রসদ।

দৈনিক ইত্তেফাক, ইউএনবিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে বেশ উজ্জ্বল মুখ ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর জাস্ট নিউজ বিডির প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়েন এই সাংবাদিক। দেশ ছাড়লেও সরকারের অন্যায়, অনিয়ম আর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেন আন্তর্জাতিক মহলে। বিশ্বের বড় বড় মিডিয়ায় নিজের লেখনীতে তুলে ধরেন এক স্বৈরাচারী সরকারের গল্প। জাতিসংঘের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংগুলোতে প্রশ্ন করে আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউস এবং ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের নানা অনিয়ম আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরেন তিনি।

জনপ্রিয় বৈশ্বিক গণমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মী জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুর্নীতি এবং শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা অপরাধ সাম্রাজ্যে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সাংবাদিক। এরপর একের পর এক সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নথি ফাঁস করে গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে আস্থার নাম হয়ে ওঠেন জুলকারনাইন। লন্ডনে অবস্থানরত এ সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। নির্ভুল তথ্য সরবরাহ, নানা গোপন নথি প্রকাশ করে সরকারকে বিভিন্ন সময়েই প্রশ্নের মুখে ফেলেন এই সাংবাদিক। বর্তমানে বাংলা আউটলুকের প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
সুইডেনভিত্তিক গণমাধ্যম নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনীম খলিল। নির্বাসনে থাকা এই সাংবাদিক একের পর এক দুর্নীতি এবং অনিয়মের নিউজ প্রকাশ করে সারাবছরই আলোচনায় ছিলেন বাংলাদেশের। সরকারও নেত্র নিউজ সাইট ব্লক করে রাখে বাংলাদেশে। বিদ্যুৎ সেক্টর, ব্যাংক, পুলিশি হত্যাকাণ্ড, গুমসহ দেশের প্রায় সব অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন তাসনীম খলিল এবং নেত্র নিউজ।

ফ্রান্সে নির্বাসনে থাকা বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য। ব্যক্তিজীবনে চিকিৎসক হলেও তিনি সবসময় মানবাধিকার নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। যার ফলে দেশ ছাড়তে হয় তাকে। বিদেশে অবস্থানকালে তিনি যেন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন। সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি এবং দলবাজির কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি ইউটিউবে তুলে ধরতেন বিশ্লেষণাত্মক মতামত। সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় শিক্ষক বাবার সন্তান পিনাকীর গ্রামের বাড়ি দেশের বগুড়া জেলায়।

দেশ রুপান্তর:

বিনিয়োগ তুলে আনাই চ্যালেঞ্জ
গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের নজর বেশি ছিল অবকাঠামো উন্নয়নে। একের পর মেগা প্রকল্পের নামে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর পরামর্শকে পাশ কাটিয়ে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে আলোচিত পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পসহ সড়কের আরও অনেক প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বেশ কিছু প্রকল্প শেষ হলেও এসব প্রকল্পের লাভ তো দূরের কথা, বিনিয়োগ তুলে আনাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

যোগাযোগ বিশ্লেষকরা বলছেন, এগুলোকে এখনো শুধু যাতায়াত করিডর হিসেবে রাখা হয়েছে, অর্থনৈতিক করিডর হিসেবে রূপান্তর করলেই বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব। তা না হলে ঋণ শোধের বড় শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ প্রকল্পগুলো প্রয়োজনে হোক আর অপ্রয়োজনে হোক, বিনিয়োগ যেহেতু হয়েই গেছে, এখন সঠিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি শক্তহাতে দমন করতে পারলেই বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি ছিল আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলোর একটি। বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ বাতিল হওয়ার পর সেটি নির্মাণ করা হয়েছে দেশীয় অর্থায়নেই। ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির ব্যয় নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ২০২২ সালের জুনে এটি উদ্বোধন করা হলেও এখনো বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।