ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু Logo চীনে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে যা বলেছিলেন ড. ইউনূস? যেজন্য হতভম্ব ভারত Logo জামায়াতের ঈদ উপলক্ষে প্রীতি ভোজের ঘটনায় বিএনপি – যুবলীগের হামলা Logo শহীদ নাসিব হাসান রিহান-এর পরিবারের সদস্যদের সাথে আমীরে জামায়াতের ঈদ কুশল বিনিময় Logo ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ Logo মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ২ হাজার ছাড়াল নিহতের সংখ্যা Logo গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: খালেদা জিয়া Logo ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের পদত্যাগ Logo ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’স্লোগান, বিএনপির সাথে সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ ১ Logo আইপিএলসহ টিভিতে যা দেকবেন আজ

‘শেখ মুজিব হত্যার ট্যাগ’ নিয়েও আ.লীগ সরকারে ছিলেন ইনু

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই লাগাতার অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। প্রায় তিন মাস ধরে চলে সেই অবরোধ। অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা শুরু হয়। অনেকেই আগুনে পুড়ে মারা যান সেই সময়। যদিও পেট্রোল বোমা হামলায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন হাসানুল হক ইনু।

সাংবাদিকরা নিয়মিতই তাকে এসব হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন। একদিন তিনি বললেন, এটাকে বলে অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের অগ্নি-সন্ত্রাসীরা দেশে অরাজকতার জন্য এমন অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে।

প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করতেন। একে একে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইনু। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কথা উল্লেখ করে তিনি ‘আগুন-সন্ত্রাসীদের মাইনাসের পক্ষে’ মতামত দেন।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে গত ৩০ জুলাই জামায়াত-শিবিরকে ‘অগ্নি সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে মতামত দিয়েছিলেন ইনু। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক এই তথ্যমন্ত্রীকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইনুর বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর উল্লাস করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হলেও ২০২৪ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের অনেকেই ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলতেন। তাদের একজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যিনি একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।

২০২১ সালে বিএমএ ভবনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শেখ সেলিম বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ব্রিগেড কমান্ডারদের কেউ বঙ্গবন্ধুর লাশটা দেখতে যায়নি। সবাই রেডিও স্টেশনে গেছে। সেদিন যারা রেডিও স্টেশনে গেছে, তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। খুনিদের সমর্থন করতে তারা গিয়েছিল। ইনু-তাহের, যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিল, তারাও গিয়েছিল খুনিদের সমর্থন করতে। বঙ্গভবনে গিয়ে তারা খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিল।

সর্বশেষ ২০২৩ সালেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে একই কথা বলেন শেখ সেলিম। তবে, বরাবরই জাসদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এই কথা অস্বীকার করা হতো।

ইনুকে বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা মামলা এবং রাজধানীর মিরপুরে শিক্ষার্থী আলভী হত্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মঙ্গলবার আদালতে তুলে রিমান্ডে চাইবে ডিবি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু

‘শেখ মুজিব হত্যার ট্যাগ’ নিয়েও আ.লীগ সরকারে ছিলেন ইনু

আপডেট সময় ০৭:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই লাগাতার অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। প্রায় তিন মাস ধরে চলে সেই অবরোধ। অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা শুরু হয়। অনেকেই আগুনে পুড়ে মারা যান সেই সময়। যদিও পেট্রোল বোমা হামলায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন হাসানুল হক ইনু।

সাংবাদিকরা নিয়মিতই তাকে এসব হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন। একদিন তিনি বললেন, এটাকে বলে অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের অগ্নি-সন্ত্রাসীরা দেশে অরাজকতার জন্য এমন অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে।

প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করতেন। একে একে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইনু। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কথা উল্লেখ করে তিনি ‘আগুন-সন্ত্রাসীদের মাইনাসের পক্ষে’ মতামত দেন।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে গত ৩০ জুলাই জামায়াত-শিবিরকে ‘অগ্নি সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে মতামত দিয়েছিলেন ইনু। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক এই তথ্যমন্ত্রীকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইনুর বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর উল্লাস করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হলেও ২০২৪ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের অনেকেই ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলতেন। তাদের একজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যিনি একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।

২০২১ সালে বিএমএ ভবনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শেখ সেলিম বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ব্রিগেড কমান্ডারদের কেউ বঙ্গবন্ধুর লাশটা দেখতে যায়নি। সবাই রেডিও স্টেশনে গেছে। সেদিন যারা রেডিও স্টেশনে গেছে, তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। খুনিদের সমর্থন করতে তারা গিয়েছিল। ইনু-তাহের, যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিল, তারাও গিয়েছিল খুনিদের সমর্থন করতে। বঙ্গভবনে গিয়ে তারা খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিল।

সর্বশেষ ২০২৩ সালেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে একই কথা বলেন শেখ সেলিম। তবে, বরাবরই জাসদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এই কথা অস্বীকার করা হতো।

ইনুকে বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা মামলা এবং রাজধানীর মিরপুরে শিক্ষার্থী আলভী হত্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মঙ্গলবার আদালতে তুলে রিমান্ডে চাইবে ডিবি।