ঢাকা ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক যুগ পর ঢাবির লাইব্রেরীতে ৭২-৭৫ সালের পত্রিকা পড়তে পারছেন পাঠক

এক যুগ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে থাকা ১৯৭২-৭৫ সালের পত্রিকাগুলোর ‘হার্ড কপি’ (ছাপা কাগজ) উন্মুক্ত করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর অনেকটা অঘোষিতভাবে সবার জন্য সেগুলো উন্মুক্ত করা হয়। এখন ওই চার বছরের পত্রিকা সবাই দেখতে ও পড়তে পারছেন।

রোববার (১৮ আগস্ট) সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে গিয়ে বিষয় দেখা যায়।

জানা গেছে, ২০১২-১৩ সালের দিকে ‘টেকনিক্যাল কারণ’ দেখিয়ে পত্রিকার হার্ড কপি শিক্ষার্থীদের জন্য অলিখিতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও গবেষকদের এসব পত্রিকার ছাপা অংশের স্ক্যান করা কপি প্রিন্ট করে দেওয়া হতো। কেউ চাইলেও এর মূল কপি দেখতে পেত না।

সুনির্দিষ্টভাবে কোন তারিখ থেকে এসব পত্রিকা দেখানো বন্ধ করা হয় সংশ্লিষ্টদের কেউ তা সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি। একজন উপ-গ্রন্থাগারিকের মতে, ২০১২-১৩ সালের দিকে ‘টেকনিক্যাল কারণে’ সব পত্রিকার কপি দেখানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে প্রায় ১ যুগ পর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৪ বা তারও আগে থেকে ১৯৭২-৭৫ সালের প্রকাশিত পত্রিকার কপি দেখানো বন্ধ হয়। তখন থেকে কেউ ওই ৪ বছরের পত্রিকা হাতে ধরে পড়তে পারেননি। খুব জরুরি হলে পত্রিকার নির্দিষ্ট কোনো খবর বা লেখার অংশ নেওয়া যেত স্ক্যান করা ‘সফট কপি’ হিসেবে। সবশেষ এ বছরের শুরুতেও কয়েকজন সাংবাদিক আর্কাইভ সেকশনে গিয়েছিলেন মূল পত্রিকা দেখার জন্য। কিন্তু তাদেরকে পত্রিকা দেখানো হয়নি। যদিও তারা ১৯৭২ সালের আগের পত্রিকার কপি দেখতে পেয়েছিলেন।

ডেইলি অবজারভার পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদক তাওসিফুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বছরের প্রথম দিকে আর্কাইভ সেকশনে কিছু ডকুমেন্টস দেখতে যাই। কিন্তু সেখানে ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কোনো ডকুমেন্টস রাখা ছিল না। আগের ও পরের ডকুমেন্টস যে কেউ চাইলে দেখতে পেত। শুধু এই ৪ বছরের ডকুমেন্টস সরিয়ে রাখা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এম এইচ ইমরান বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল তা জানার জন্য আর্কাইভ সেকশনে গেলে তারা আমাকে ১৯৭২-৭৫ সালের পত্রিকা দেখায়নি। সেগুলো ছিঁড়ে গেছে বা দেখানোর উপযুক্ত নয় বলে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত উপ-গ্রন্থাগারিক মীর নজরুল ইসলাম বলেন, এই আর্কাইভগুলোর হার্ড কপি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে যার প্রয়োজন সে অনলাইন সেকশন থেকে নিতে পারত।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. নাসিরুদ্দিন মুন্সী বলেন, এই রেকর্ডগুলো আমাদের আর্কাইভে থাকলে সবাই পাবে। মাঝে বিচার বিভাগের কমিশনের মামলার সুবিধার জন্য কিছু ডকুমেন্টস তারা পিক করে নিয়েছিল। এখন থেকে সেগুলোর হার্ড কপি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

এক যুগ পর ঢাবির লাইব্রেরীতে ৭২-৭৫ সালের পত্রিকা পড়তে পারছেন পাঠক

আপডেট সময় ১২:২৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

এক যুগ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে থাকা ১৯৭২-৭৫ সালের পত্রিকাগুলোর ‘হার্ড কপি’ (ছাপা কাগজ) উন্মুক্ত করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর অনেকটা অঘোষিতভাবে সবার জন্য সেগুলো উন্মুক্ত করা হয়। এখন ওই চার বছরের পত্রিকা সবাই দেখতে ও পড়তে পারছেন।

রোববার (১৮ আগস্ট) সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে গিয়ে বিষয় দেখা যায়।

জানা গেছে, ২০১২-১৩ সালের দিকে ‘টেকনিক্যাল কারণ’ দেখিয়ে পত্রিকার হার্ড কপি শিক্ষার্থীদের জন্য অলিখিতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও গবেষকদের এসব পত্রিকার ছাপা অংশের স্ক্যান করা কপি প্রিন্ট করে দেওয়া হতো। কেউ চাইলেও এর মূল কপি দেখতে পেত না।

সুনির্দিষ্টভাবে কোন তারিখ থেকে এসব পত্রিকা দেখানো বন্ধ করা হয় সংশ্লিষ্টদের কেউ তা সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি। একজন উপ-গ্রন্থাগারিকের মতে, ২০১২-১৩ সালের দিকে ‘টেকনিক্যাল কারণে’ সব পত্রিকার কপি দেখানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে প্রায় ১ যুগ পর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৪ বা তারও আগে থেকে ১৯৭২-৭৫ সালের প্রকাশিত পত্রিকার কপি দেখানো বন্ধ হয়। তখন থেকে কেউ ওই ৪ বছরের পত্রিকা হাতে ধরে পড়তে পারেননি। খুব জরুরি হলে পত্রিকার নির্দিষ্ট কোনো খবর বা লেখার অংশ নেওয়া যেত স্ক্যান করা ‘সফট কপি’ হিসেবে। সবশেষ এ বছরের শুরুতেও কয়েকজন সাংবাদিক আর্কাইভ সেকশনে গিয়েছিলেন মূল পত্রিকা দেখার জন্য। কিন্তু তাদেরকে পত্রিকা দেখানো হয়নি। যদিও তারা ১৯৭২ সালের আগের পত্রিকার কপি দেখতে পেয়েছিলেন।

ডেইলি অবজারভার পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদক তাওসিফুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বছরের প্রথম দিকে আর্কাইভ সেকশনে কিছু ডকুমেন্টস দেখতে যাই। কিন্তু সেখানে ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কোনো ডকুমেন্টস রাখা ছিল না। আগের ও পরের ডকুমেন্টস যে কেউ চাইলে দেখতে পেত। শুধু এই ৪ বছরের ডকুমেন্টস সরিয়ে রাখা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এম এইচ ইমরান বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল তা জানার জন্য আর্কাইভ সেকশনে গেলে তারা আমাকে ১৯৭২-৭৫ সালের পত্রিকা দেখায়নি। সেগুলো ছিঁড়ে গেছে বা দেখানোর উপযুক্ত নয় বলে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত উপ-গ্রন্থাগারিক মীর নজরুল ইসলাম বলেন, এই আর্কাইভগুলোর হার্ড কপি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে যার প্রয়োজন সে অনলাইন সেকশন থেকে নিতে পারত।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. নাসিরুদ্দিন মুন্সী বলেন, এই রেকর্ডগুলো আমাদের আর্কাইভে থাকলে সবাই পাবে। মাঝে বিচার বিভাগের কমিশনের মামলার সুবিধার জন্য কিছু ডকুমেন্টস তারা পিক করে নিয়েছিল। এখন থেকে সেগুলোর হার্ড কপি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।