ঢাকা ০৯:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে যাবে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য ড. মো. দিদার-উল-আলম আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বাস ভবন ঘেরাও এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. আব্দুল বাকী এবং রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন এর পদত্যাগের দাবিতে স্টেপ ডাউন ভিসি কর্মসূচি পালনকালে এই ঘোষণা দেয় নেতৃবৃন্দ।

রবিবার (১৮ আগস্ট) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সকাল ১১ টায় নোবিপ্রবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সমন্বয়কবৃন্দের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করে যা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাস ভবনে এসে অবস্থান করে।

এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার এর পদত্যাগ চেয়ে প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখে।

আন্দোলনের সমন্বয়ক বানী ইয়ামিন বলেন, “গতকালকে এক আনসার ভাই আমাকে বলতেছিলো, এই ভিসি কতটা নির্লজ্জ,তারা ছাত্রদেরকে কতটা কষ্ট দিচ্ছে। একজন আনসার ভাই যদি এই জিনিসটা বুঝে, আপনি একজন শিক্ষিত হয়ে কিভাবে এটা বুঝেন না। সংগ্রামী ভাইয়েরা, এই ভিসি একজন নির্লজ্জ ভিসি, একজন দুর্নীতিবাজ ভিসি। আমরা শুনেছি, তার টাকার প্রতি এত লোভ, সে বাংলোর ভাড়া দিয়ে বাসা ভাড়া দেন। সে বাসা ভাড়ার লোভ সামলাতে পারে না, ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এখান থেকে বলে দিতে চাই, আজকের মধ্যে যদি আপনারা পদত্যাগ না করেন, নির্লজ্জ ভিসি, প্রো-ভিসি যদি পদত্যাগ না করে, আমরা কাল থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেবো। আমাদের ছাত্ররা অনশনে যাবে। দিন রাত করে আমরা এই ভিসির বাংলো পাহাড়া দিবো। আমরা এখান থেকে পদত্যাগপত্র লিখে ঢাকাতে পাস করবো। আপনারা জানেন, এই নির্লজ্জ ভিসি প্রথম আলোকে বলেছিলো যে ছাত্ররা নাকি তাকে চায়। আপনার যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকে তাহলে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে যান চলে যান চলে যান। এই ছাত্রসমাজ আপনার মত দুর্নীতিবাজ ভিসি চায় না। “

আরেক সমন্বয়ক মারুফা বলেন, আমরা মা বাবার পরে সাধারনত সবাই শিক্ষকদের শ্রদ্ধার আসনে বসাই। কিন্তু ইতিমধ্যে আমাদের ভার্সিটির নির্লজ্জ ভিসি, প্রো-ভিসি প্রমান করেছে মা-বার পরে যে তাদের সম্মান দেই, ঐ সম্মানের যোগ্যতা তাদের নেই। যখন কোটা আন্দোলনে আমার হাজার হাজর ভাই বোনেরা মারা যাচ্ছিলো তখন এই ভিসি রেস্টুরেন্টে বসে হ্যাপি বাড্ডের গান লাগিয়ে কেক কেটেছে। সে কিসের ভিসি, সে কিসের শিক্ষক আমি জানতে চাই সে কি ভাবে ‘প্রথম আলো’ কে বলেছে পদত্যাগ করার কারণ পায় না।

তিনি আরো বলেন, “সে আজকে আসুক, দেখুক আমাদের এই জনসমাগম। যখন আমার হাজার হাজার ভাই মারা যাচ্ছিলো সে ‘শোক দিবস’ পালন করতেছিলো শিক্ষকদের নিয়ে। যে শিক্ষকদেরকে ছাত্ররা চাইছে পদত্যাগ করতে, সে কি ভাবে সেই শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষক সমিতি গঠন করে। তার লজ্জা থাকা উচিৎ যে সেই কমিটি থেকে ছয় জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছে। এর থেকে লজ্জার বিষয় আর কি হতে পারে। আমরা এটা চাই যে এই ভিসি এই ক্যাম্পাসে না থাকুক, এই ভিসিকে আমরা চাই না। এই ভিসির পদত্যাগ চাই।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ আগস্ট থেকে নোবিপ্রবির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানালে ইতিমধ্যে কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের প্রধানসহ অনেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার পদত্যাগ না করায় লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে অনশন, মার্চ টু রিজাইনসহ মার্চ টু ঢাকা (ভিসির বাসা ঘেরাও) কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন শিক্ষার্থীরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে যাবে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় ০৬:১৯:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য ড. মো. দিদার-উল-আলম আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বাস ভবন ঘেরাও এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. আব্দুল বাকী এবং রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন এর পদত্যাগের দাবিতে স্টেপ ডাউন ভিসি কর্মসূচি পালনকালে এই ঘোষণা দেয় নেতৃবৃন্দ।

রবিবার (১৮ আগস্ট) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সকাল ১১ টায় নোবিপ্রবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সমন্বয়কবৃন্দের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করে যা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাস ভবনে এসে অবস্থান করে।

এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার এর পদত্যাগ চেয়ে প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখে।

আন্দোলনের সমন্বয়ক বানী ইয়ামিন বলেন, “গতকালকে এক আনসার ভাই আমাকে বলতেছিলো, এই ভিসি কতটা নির্লজ্জ,তারা ছাত্রদেরকে কতটা কষ্ট দিচ্ছে। একজন আনসার ভাই যদি এই জিনিসটা বুঝে, আপনি একজন শিক্ষিত হয়ে কিভাবে এটা বুঝেন না। সংগ্রামী ভাইয়েরা, এই ভিসি একজন নির্লজ্জ ভিসি, একজন দুর্নীতিবাজ ভিসি। আমরা শুনেছি, তার টাকার প্রতি এত লোভ, সে বাংলোর ভাড়া দিয়ে বাসা ভাড়া দেন। সে বাসা ভাড়ার লোভ সামলাতে পারে না, ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এখান থেকে বলে দিতে চাই, আজকের মধ্যে যদি আপনারা পদত্যাগ না করেন, নির্লজ্জ ভিসি, প্রো-ভিসি যদি পদত্যাগ না করে, আমরা কাল থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেবো। আমাদের ছাত্ররা অনশনে যাবে। দিন রাত করে আমরা এই ভিসির বাংলো পাহাড়া দিবো। আমরা এখান থেকে পদত্যাগপত্র লিখে ঢাকাতে পাস করবো। আপনারা জানেন, এই নির্লজ্জ ভিসি প্রথম আলোকে বলেছিলো যে ছাত্ররা নাকি তাকে চায়। আপনার যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকে তাহলে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে যান চলে যান চলে যান। এই ছাত্রসমাজ আপনার মত দুর্নীতিবাজ ভিসি চায় না। “

আরেক সমন্বয়ক মারুফা বলেন, আমরা মা বাবার পরে সাধারনত সবাই শিক্ষকদের শ্রদ্ধার আসনে বসাই। কিন্তু ইতিমধ্যে আমাদের ভার্সিটির নির্লজ্জ ভিসি, প্রো-ভিসি প্রমান করেছে মা-বার পরে যে তাদের সম্মান দেই, ঐ সম্মানের যোগ্যতা তাদের নেই। যখন কোটা আন্দোলনে আমার হাজার হাজর ভাই বোনেরা মারা যাচ্ছিলো তখন এই ভিসি রেস্টুরেন্টে বসে হ্যাপি বাড্ডের গান লাগিয়ে কেক কেটেছে। সে কিসের ভিসি, সে কিসের শিক্ষক আমি জানতে চাই সে কি ভাবে ‘প্রথম আলো’ কে বলেছে পদত্যাগ করার কারণ পায় না।

তিনি আরো বলেন, “সে আজকে আসুক, দেখুক আমাদের এই জনসমাগম। যখন আমার হাজার হাজার ভাই মারা যাচ্ছিলো সে ‘শোক দিবস’ পালন করতেছিলো শিক্ষকদের নিয়ে। যে শিক্ষকদেরকে ছাত্ররা চাইছে পদত্যাগ করতে, সে কি ভাবে সেই শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষক সমিতি গঠন করে। তার লজ্জা থাকা উচিৎ যে সেই কমিটি থেকে ছয় জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছে। এর থেকে লজ্জার বিষয় আর কি হতে পারে। আমরা এটা চাই যে এই ভিসি এই ক্যাম্পাসে না থাকুক, এই ভিসিকে আমরা চাই না। এই ভিসির পদত্যাগ চাই।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ আগস্ট থেকে নোবিপ্রবির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানালে ইতিমধ্যে কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের প্রধানসহ অনেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার পদত্যাগ না করায় লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে অনশন, মার্চ টু রিজাইনসহ মার্চ টু ঢাকা (ভিসির বাসা ঘেরাও) কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন শিক্ষার্থীরা।