ঢাকা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: সরকারি হাসপাতালেই ৪০৭ জনের মৃত্যু

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: সরকারি হাসপাতালেই ৪০৭ জনের মৃত্যু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়ে ১৫ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১৮ হাজার ৫৭৬ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, মৃত্যু ব্যক্তিদের মধ্যে ১১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি এবং ২৯০ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বিএসএমএমইউ) কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত চিকিৎসাকেন্দ্র এবং সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে কতজন চিকিৎসা নিয়েছেন এবং কতজন মারা গেছেন সে তথ্য দিতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলেছেন, দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে তিন হাজারের বেশি। সবমিলে প্রায় ৫ হাজার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দালনে আহত অনেকেই এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সঙ্গে নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনের বিষয় জড়িত। ফলে সরকারি-বেসরকারি সবগুলোর সঠিক তথ্য জানানো জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে-আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা বুলেট, রাবার বুলেট, গুলি, ছররা গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, ধারালো অস্ত্র, লাঠি ও ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই চোখ, হাত, পা, মুখ, মাথা, বুক ও পিঠে গুরুতর জখমের শিকার ছিলেন।
অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) শাখা থেকে পাওয়া তথ্যমতে ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার ৫৭৬ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। শারীরিক পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় তাদের ১ হাজার ২৪৫ জনকে ভর্তি করা হয়। ২৩৮ জন মারা যান। মৃতদের মধ্যে ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় এবং ১৭১ জনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকার পরে সবচেয়ে বেশি আহত ও মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এই বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ১ হাজার ৯৩২ জন। তাদের মধ্যে ৫০৪ জনকে ভর্তি করে সেবা দেওয়া হয়। চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৪৮ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন ভর্তি অবস্থায় এবং ৩৯ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া বরিশাল বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৪৪২ জন, হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৩১৫ জনকে। ভর্তি রোগীদের কেউ মারা না গেলেও দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম মৃত্যু হয় রংপুর বিভাগে। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে-এই বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ২১৩ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আহতদের ৭৬৫ জনকে বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৩ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আরও ১৩ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহী বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৯৭ জন, ভর্তি হয়েছে ৮১২ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন। মৃত্যুদের মধ্যে ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং ৯ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা দেওয়া হয়।

সিলেট বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৯৫ জন, হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়েছে ৩০০ জনকে। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন এবং ২১ জনকে মৃত অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আনা হয়।

খুলনা বিভাগে আহত হয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৯৭৫ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে ৪৯০ জনকে ভর্তি করা হয়। খুলনায় মারা গেছেন ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ৯ জন হাসপাতালে এবং ২৬ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।

প্রথম আলো:

এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের (এস আলম) বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির আয়কর বিভাগ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। ঢাকার কর অঞ্চল-১৫ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি এস আলমের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ৯২টি প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখায় যদি তাঁদের নামে কোনো হিসাব থাকে, সে ব্যাপারে তথ্য জানাতে হবে এনবিআরকে।

এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংক দখল করে লুট, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে। গণ–আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ঘনিষ্ঠ ও তাঁদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়া অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এস আলমের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, কমার্স ব্যাংকসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এস আলম পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি গ্রুপটির অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও দেশ ছেড়েছেন।
কর অঞ্চল-১৫ সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মা চেমন আরা বেগম ও ভাই আবদুল্লাহ হাসানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের মা–বাবা, স্ত্রী, ছেলে–মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করা হয়েছে। ফলে কার্যত এস আলমসহ তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের সব ব্যাংক হিসাবের তথ্যই চেয়ে পাঠিয়েছে এনবিআর। আলোচিত–সমালোচিত এই ব্যবসায়ীর সব ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবও তলবের তালিকায় পড়েছে।

তবে তলবের তালিকার বাইরে রয়েছেন সাইফুল আলমের জামাতা বেলাল আহমেদ, তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ও ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী।

এস আলম নামেই বেশি পরিচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম বেশির ভাগ সময় বিদেশে অবস্থান করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর পক্ষে এসব ব্যক্তিই মূলত সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অপরাধ করেন।

মানজমিন:

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি

আওয়ামী লীগ যদি প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তাই দেশ নিয়ে ছেলেখেলা না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল সকালে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অন্যরা। অন্যদিকে শাহবাগের ফুলের দোকানের সামনে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী সাংস্কৃতিক জোট। এ সময় তারা বক্তব্যসহ বিভিন্ন নাচ-গান পরিবেশন করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের রাজপথে নামার প্রয়োজন ছিল না উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, কিন্তু ওই কুচক্রী মহল ও ফ্যাসিজমের দোসররা এখনো চক্রান্ত করছে। তারা দেশের এবং দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন জনের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। তারা বিভিন্ন অপচেষ্টা করে যে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে, সেটি প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্র-জনতাকে আবার রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমরা চাই না আমাদের রাস্তায় নামার মাধ্যমে আমাদের একজন ভাইবোনের চলাফেরায় বিন্দুমাত্র অসুবিধা হোক। কিন্তু দেশ যখন সংকটে পড়ে যায়, তখন আমাদের কষ্ট করে হলেও রাস্তায় নামতে হয়। কারণ দেশ যদি দিন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

বিজ্ঞাপন
সে জায়গা থেকে আমরা ছাত্র-জনতা আজকে আবার রাস্তায় নেমে এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা শুনছি বিভিন্ন মহল থেকে আজকের ১৫ই আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল তারা আবার একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, ছাত্র-জনতা গত ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে, তারা যদি আবার দেশে একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে, তাহলে তাদের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এজন্য তাদের আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে হুঁশিয়ার এবং সাবধান করে দিতে চাই, এদেশ নিয়ে আর কোনো ছেলেখেলা করার চেষ্টা করবেন না। তিনি আরও বলেন, এ দেশটা ছাত্র-জনতা মিলে একসঙ্গে যেদিকে যাওয়া প্রয়োজন সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করবো। কেউ যদি আমাদের এই দেশ নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনো অপচেষ্টা করে ছাত্র-জনতা যেকোনো মুহূর্তে রাস্তায় নেমে তাদের প্রতিহত করবে।

বনিক র্বাতা:

গ্যাস ও জ্বালানি তেলে বকেয়া ১৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
এলএনজি ও জ্বালানি তেল আমদানিতে বকেয়ার পরিমাণ ১ দশমিক ২ বিলিয়ন (১২০ কোটি) ডলার ছাড়িয়েছে। বর্তমান বিনিময় হারে প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এলএনজিতে জুলাই পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ডলার। জ্বালানি তেলে বকেয়া ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) ডলারের বেশি। বিপুল এ বকেয়া পরিশোধে জ্বালানি বিভাগকে চাপ দিচ্ছে সরবরাহকারীরা।

জ্বালানি বিভাগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত ডলারের সংস্থান না থাকায় জ্বালানি আমদানি বাবদ বকেয়া বেড়ে চলেছে। দ্রুত তা পরিশোধ না হলে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে ঝুঁকিতে পড়তে পারে বাংলাদেশ। তবে অর্থ বিভাগ থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে এ ঝুঁকি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে।

বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানান, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ও স্পট মার্কেট এলএনজি আমদানি এবং দেশে গ্যাস উত্তোলনকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইওসি) পাওনা চলতি মাস পর্যন্ত বকেয়া পড়েছে ৭০০ মিলিয়ন ডলার। আর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে বকেয়া রয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘এ বকেয়া পরিশোধে সরবরাহকারীদের দিক থেকে এক ধরনের চাপ রয়েছে। তবে অর্থ বিভাগ থেকে নিয়মিত অর্থ পেলে এ জটিলতা থাকবে না বলে আশা করি। সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তারা আমদানি ও বিল পরিশোধ নিয়মিত রাখলে কোনো ধরনের অসুবিধা নেই বলে জানিয়েছে।’

দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল আমদানিতে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর পাওনা বকেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা বেড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

সরবরাহকারীদের বকেয়া পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকে দফায় দফায় বৈঠক করেছে জ্বালানি বিভাগ। ডলারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে কয়েক দফা চিঠি দেয়া হলেও মুদ্রাটির সংস্থান হচ্ছে না। সরবরাহকারীদের বিলম্বিত বিল দ্রুত পরিশোধ করা না গেলে জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান বিপিসির কর্মকর্তারা।

দেশে জ্বালানি তেল আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। সংস্থাটি সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রতি মাসে ১৭-১৮টি এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়। এসব এলসি দায় মেটাতে প্রতি মাসে গড়ে খরচ হয় ৪৫০-৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে গড়ে ৩৫০-৪০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যায়। ফলে বাকি অর্থ বকেয়া থেকে যায়, যা পরিশোধে ৩০-৪৫ দিন সময় লাগে।

দেশে গত মাসের মাঝামাঝি থেকে চলতি মাসের ১০ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রমে বেশ ব্যাঘাত ঘটেছে। এ সময় জ্বালানি তেল আমদানি কার্যক্রম চালু থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সরবরাহ কার্যত বন্ধ ছিল। সরবরাহকারীদের অর্থও পরিশোধ করা যায়নি।

বিপিসি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫৯ লাখ ১০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৮০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল জিটুজি চুক্তির আওতায় এবং ২৮ লাখ ৩০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানির কথা রয়েছে। এর বাইরে ১৪ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিপিসি।

দেশে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে ২০১৮ সাল থেকে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাতার ও ওমান থেকে এবং স্পট মার্কেট থেকে নিয়মিত কেনা হচ্ছে গ্যাস। এছাড়া দেশে গ্যাস উত্তোলনকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানের (আইওসি) কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া পড়েছে। সব মিলিয়ে গ্যাস খাতে মোট বকেয়া ৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

দ্য ডেইলি স্টার:

সরকারের সিদ্ধান্তের পর শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বলা হবে ভারতকে: রয়টার্সকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভারত থেকে ফেরত আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে ভারতকে অনুরোধ করা হবে কি না, সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমাদের তাদের (ভারতকে) অনুরোধ করতে হবে তাকে (শেখ হাসিনাকে) বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে।’

‘এটি ভারত সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। ভারত এটি জানে এবং আমি নিশ্চিত যে তারা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবে,’ বলেন তিনি।

সমকাল:

একের পর এক মামলা, আসামি ‘প্রভাবশালী’
শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক মামলা হচ্ছে। সেসব মামলার আসামি হচ্ছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি। অনেককে আবার নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। মামলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি ছাড়াও প্রশাসনের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী অনেক কর্মকর্তার নামও আসামির তালিকায় থাকছে। তাদের অনেকেই এখন আত্মগোপনে। কেউ কেউ দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন বলে আলোচনা আছে।

এদিকে ছাত্র আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে র‍্যাবের গুলিতে ১২ বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের নামে আরও একটি হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের নামে আরেকটি মামলার আবেদন করা হয়। দুই মামলার বাদীর জবানবন্দি নিয়ে দুই থানা কর্তৃপক্ষকে সরাসরি এজাহার (এফআইআর) গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে গত তিন দিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলার আবেদন ও একটি অপহরণ মামলা হলো।

এদিকে, রাজধানীর পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যা মামলায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

দৈনিক সংগ্রাম:

বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে কেউ আসেনি 
স্টাফ রিপোর্টার: বিগত ১৫ বছর ধরে প্রতিবছর ১৫ আগস্টের সকাল থেকে মানুষের পা ফেলার জায়গা থাকতো না বনানী কবরস্থানে। শ্রদ্ধা, ফুলের ডালা, প্রার্থনায় সামিল হতে দলে দলে মানুষের ঢল নামতো এই কবরস্থানে। কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়েছিল এই কবরস্থানে।

সে কারণে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগসহ তার অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এ বছর চিরচেনা দৃশ্যপট নেই বনানী কবরস্থানে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বনানী কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায় দলীয় নেতাকর্মীদের আনাগোনা নেই, সুনসান নীরবতা পুরো কবরস্থান জুড়ে, যেমন থাকে বছরের বাকি দিনগুলোতেও। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কবরগুলো অন্যান্য বছর ১৫ আগস্ট ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হতো। তবে এ বছর কবরগুলোতে নেই একটি ফুলের ডালাও। কোনো নেতা-কর্মীর উপস্থিতিও নেই। মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একজন কবর জিয়ারত করতে ঢুকে আবার বের হয়ে যাচ্ছেন।

বনানী কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন খোরশেদ আলম নামে একজন কর্মী। তিনি বনানী করবস্থানের দৃশ্যপটের বর্ণনা করে বলেন, অন্যান্য বছর এই ১৫ আগস্টের দিনে বনানী করবস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজ কোনো নেতাকর্মীকে এখানে আসতে দেখিনি। কবরগুলোতে অন্যান্য বছর ফুলের ডালার স্তূপ পড়ে যেত, কিন্তু এবার কবরগুলোতে একটিও ফুল নেই।

একই ধরনের কথা বলেন কবরস্থানের বাইরে চায়ের দোকানি খোকন আহমেদ।

তিনি বলেন, সকাল থেকে বনানী করবস্থানে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীকে আসতে দেখেনি। অন্যান্য বার বাইরে এখানে গাড়ির পার্কিং করার জায়গা থাকতো না, ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মী এখানে আসতো। কিন্তু আজ কোনো ভিড় নেই।

১৯৭৫ সালের এই দিনে এক দল বিপথগামী সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করে। দীর্ঘদিন ধরে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়।

নয়াদিগন্ত:

বিচারপতি অপসারণের রিভিউ শুনানি সুপ্রিম কোর্টের ভ্যাকেশনের পর
বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ রিটকারীর পক্ষে শুনানির জন্য আবেদনের পর এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। বিবাদী পক্ষে (রিট আবেদনকারী) ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, সরকারের রিভিউ দীর্ঘদিন শুনানি হয়নি। এখন নতুন পেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি নবনিযুক্ত হয়েছেন। অন্যান্য বিচারকরা নতুন নিয়োগ পেয়েছেন, সেজন্য আমি এটা মেনশন করেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন ওনাদের একটু ইনস্ট্রাকশন দরকার আছে। উনিও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত। তখন কোর্ট বললেন, এটা শুনবেন। তবে সেটা ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন। (সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির এক সপ্তাহ পর)। অর্থাৎ ভ্যাকেশনের এক সপ্তাহ পর শুনানি হবে। সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি।

কালবেলা:

দলবাজির পরিণামে ভুগছে স্বাস্থ্য খাত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য খাতে। এতদিন যারা ক্ষমতার দাপটে আধিপত্য দেখিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন। চিকিৎসক ও শিক্ষকদের অনুপস্থিতির কারণে বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে সংকট তৈরি হয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য প্রশাসনেও এর প্রভাবে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে চিকিৎসকরা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবস্থার উত্তরণে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাস্থ্য খাত গড়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসক পেশাজীবীরা বিশেষ সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনে সম্পৃক্ত হন। এতে অনেক ক্ষেত্রে অযোগ্যরা পদোন্নতিসহ বিভিন্ন সুবিধা পেয়েছেন, যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিগত সময়ে রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত ও বিব্রত বোধ করছেন। ফলে তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। এতে স্বাস্থ্য প্রশাসনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

অধ্যাপক বে-নজির বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিতে হবে, যিনি যে দায়িত্বে আছেন, তিনি সেই দায়িত্ব পালন করবেন। কারও বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এরপর একটা কমিশন করতে হবে, সেই কমিশন বিগত সময়ের সব বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি বিশ্লেষণ করে যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের প্রাপ্য মর্যাদার সুপারিশ করবে। যদি কেউ অনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তাহলে বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে কারও বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে বৈষম্য দূর হবে। এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত কোনো চিকিৎসক রাজনৈতিক কাজে যুক্ত হতে পারবেন না এই মর্মে বিধিবিধান জারি করতে হবে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনই (বিএমএ) চিকিৎসকদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন। যার মাধ্যমে চিকিৎসকরা তাদের দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করবেন

দেশরুপান্তর:

যেভাবে ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্ভব
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সময়ের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পুলিশ ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গত বুধবার আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। এদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলেন, প্রচলিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে এসব হত্যাকা-ের বিচার সম্ভব।

বুধবারের আবেদনটি জমা দেওয়ার পর তদন্ত সংস্থা এটিকে মামলা হিসেবে রেজিস্ট্রিভুক্ত করে। তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. আতাউর রহমান এ মামলার প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে নিয়ে ছয়জনের একটি কমিটি তদন্তকাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া এই ছয়জনকে আরও বেশ কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তা সহযোগিতা করবেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তারা ঘটনার সময়কালে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা শুরু করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত ২০ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগং রোডে পুলিশের গুলিতে নিহত মো. মেহেদীর বাবা মো. সানাউল্লাহর পক্ষে এ অভিযোগটি দাখিল করা হয়। সানাউল্লাহকে আইনি সহায়তা দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সংস্থা অভিযোগটি তদন্তের জন্য গ্রহণ করেছে।

আইসিটি আইনে বিচার চলবে : গত বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এই আইনের সংশোধনী হয়েছে। সেই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা; আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনের গণহত্যাও বোঝাচ্ছি। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য ইতিমধ্যে ছোটখাটো গবেষণা করেছি। আমরা দেখেছি, এ আইনের অধীনে হত্যাকা-ে জড়িত ব্যক্তি ও যারা আদেশ দিয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।’

অতীত কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ, মিছিল করলেই ব্যবস্থা: আইজিপি

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: সরকারি হাসপাতালেই ৪০৭ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ০৮:৫৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: সরকারি হাসপাতালেই ৪০৭ জনের মৃত্যু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়ে ১৫ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১৮ হাজার ৫৭৬ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, মৃত্যু ব্যক্তিদের মধ্যে ১১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি এবং ২৯০ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বিএসএমএমইউ) কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত চিকিৎসাকেন্দ্র এবং সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে কতজন চিকিৎসা নিয়েছেন এবং কতজন মারা গেছেন সে তথ্য দিতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলেছেন, দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে তিন হাজারের বেশি। সবমিলে প্রায় ৫ হাজার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দালনে আহত অনেকেই এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সঙ্গে নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনের বিষয় জড়িত। ফলে সরকারি-বেসরকারি সবগুলোর সঠিক তথ্য জানানো জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে-আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা বুলেট, রাবার বুলেট, গুলি, ছররা গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, ধারালো অস্ত্র, লাঠি ও ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই চোখ, হাত, পা, মুখ, মাথা, বুক ও পিঠে গুরুতর জখমের শিকার ছিলেন।
অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) শাখা থেকে পাওয়া তথ্যমতে ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার ৫৭৬ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। শারীরিক পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় তাদের ১ হাজার ২৪৫ জনকে ভর্তি করা হয়। ২৩৮ জন মারা যান। মৃতদের মধ্যে ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় এবং ১৭১ জনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকার পরে সবচেয়ে বেশি আহত ও মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এই বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ১ হাজার ৯৩২ জন। তাদের মধ্যে ৫০৪ জনকে ভর্তি করে সেবা দেওয়া হয়। চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৪৮ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন ভর্তি অবস্থায় এবং ৩৯ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া বরিশাল বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৪৪২ জন, হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৩১৫ জনকে। ভর্তি রোগীদের কেউ মারা না গেলেও দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম মৃত্যু হয় রংপুর বিভাগে। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে-এই বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ২১৩ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আহতদের ৭৬৫ জনকে বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৩ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আরও ১৩ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহী বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৯৭ জন, ভর্তি হয়েছে ৮১২ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন। মৃত্যুদের মধ্যে ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং ৯ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা দেওয়া হয়।

সিলেট বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৯৫ জন, হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়েছে ৩০০ জনকে। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন এবং ২১ জনকে মৃত অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আনা হয়।

খুলনা বিভাগে আহত হয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৯৭৫ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে ৪৯০ জনকে ভর্তি করা হয়। খুলনায় মারা গেছেন ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ৯ জন হাসপাতালে এবং ২৬ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।

প্রথম আলো:

এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের (এস আলম) বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির আয়কর বিভাগ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। ঢাকার কর অঞ্চল-১৫ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি এস আলমের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ৯২টি প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখায় যদি তাঁদের নামে কোনো হিসাব থাকে, সে ব্যাপারে তথ্য জানাতে হবে এনবিআরকে।

এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংক দখল করে লুট, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে। গণ–আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ঘনিষ্ঠ ও তাঁদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়া অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এস আলমের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, কমার্স ব্যাংকসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এস আলম পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি গ্রুপটির অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও দেশ ছেড়েছেন।
কর অঞ্চল-১৫ সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মা চেমন আরা বেগম ও ভাই আবদুল্লাহ হাসানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের মা–বাবা, স্ত্রী, ছেলে–মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করা হয়েছে। ফলে কার্যত এস আলমসহ তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের সব ব্যাংক হিসাবের তথ্যই চেয়ে পাঠিয়েছে এনবিআর। আলোচিত–সমালোচিত এই ব্যবসায়ীর সব ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবও তলবের তালিকায় পড়েছে।

তবে তলবের তালিকার বাইরে রয়েছেন সাইফুল আলমের জামাতা বেলাল আহমেদ, তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ও ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী।

এস আলম নামেই বেশি পরিচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম বেশির ভাগ সময় বিদেশে অবস্থান করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর পক্ষে এসব ব্যক্তিই মূলত সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অপরাধ করেন।

মানজমিন:

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি

আওয়ামী লীগ যদি প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তাই দেশ নিয়ে ছেলেখেলা না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল সকালে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অন্যরা। অন্যদিকে শাহবাগের ফুলের দোকানের সামনে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী সাংস্কৃতিক জোট। এ সময় তারা বক্তব্যসহ বিভিন্ন নাচ-গান পরিবেশন করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের রাজপথে নামার প্রয়োজন ছিল না উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, কিন্তু ওই কুচক্রী মহল ও ফ্যাসিজমের দোসররা এখনো চক্রান্ত করছে। তারা দেশের এবং দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন জনের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। তারা বিভিন্ন অপচেষ্টা করে যে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে, সেটি প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্র-জনতাকে আবার রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমরা চাই না আমাদের রাস্তায় নামার মাধ্যমে আমাদের একজন ভাইবোনের চলাফেরায় বিন্দুমাত্র অসুবিধা হোক। কিন্তু দেশ যখন সংকটে পড়ে যায়, তখন আমাদের কষ্ট করে হলেও রাস্তায় নামতে হয়। কারণ দেশ যদি দিন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

বিজ্ঞাপন
সে জায়গা থেকে আমরা ছাত্র-জনতা আজকে আবার রাস্তায় নেমে এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা শুনছি বিভিন্ন মহল থেকে আজকের ১৫ই আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল তারা আবার একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, ছাত্র-জনতা গত ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে, তারা যদি আবার দেশে একটি পাল্টা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে, তাহলে তাদের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এজন্য তাদের আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে হুঁশিয়ার এবং সাবধান করে দিতে চাই, এদেশ নিয়ে আর কোনো ছেলেখেলা করার চেষ্টা করবেন না। তিনি আরও বলেন, এ দেশটা ছাত্র-জনতা মিলে একসঙ্গে যেদিকে যাওয়া প্রয়োজন সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করবো। কেউ যদি আমাদের এই দেশ নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনো অপচেষ্টা করে ছাত্র-জনতা যেকোনো মুহূর্তে রাস্তায় নেমে তাদের প্রতিহত করবে।

বনিক র্বাতা:

গ্যাস ও জ্বালানি তেলে বকেয়া ১৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
এলএনজি ও জ্বালানি তেল আমদানিতে বকেয়ার পরিমাণ ১ দশমিক ২ বিলিয়ন (১২০ কোটি) ডলার ছাড়িয়েছে। বর্তমান বিনিময় হারে প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এলএনজিতে জুলাই পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ডলার। জ্বালানি তেলে বকেয়া ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) ডলারের বেশি। বিপুল এ বকেয়া পরিশোধে জ্বালানি বিভাগকে চাপ দিচ্ছে সরবরাহকারীরা।

জ্বালানি বিভাগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত ডলারের সংস্থান না থাকায় জ্বালানি আমদানি বাবদ বকেয়া বেড়ে চলেছে। দ্রুত তা পরিশোধ না হলে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে ঝুঁকিতে পড়তে পারে বাংলাদেশ। তবে অর্থ বিভাগ থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে এ ঝুঁকি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে।

বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানান, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ও স্পট মার্কেট এলএনজি আমদানি এবং দেশে গ্যাস উত্তোলনকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইওসি) পাওনা চলতি মাস পর্যন্ত বকেয়া পড়েছে ৭০০ মিলিয়ন ডলার। আর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে বকেয়া রয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘এ বকেয়া পরিশোধে সরবরাহকারীদের দিক থেকে এক ধরনের চাপ রয়েছে। তবে অর্থ বিভাগ থেকে নিয়মিত অর্থ পেলে এ জটিলতা থাকবে না বলে আশা করি। সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তারা আমদানি ও বিল পরিশোধ নিয়মিত রাখলে কোনো ধরনের অসুবিধা নেই বলে জানিয়েছে।’

দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল আমদানিতে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর পাওনা বকেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা বেড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

সরবরাহকারীদের বকেয়া পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকে দফায় দফায় বৈঠক করেছে জ্বালানি বিভাগ। ডলারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে কয়েক দফা চিঠি দেয়া হলেও মুদ্রাটির সংস্থান হচ্ছে না। সরবরাহকারীদের বিলম্বিত বিল দ্রুত পরিশোধ করা না গেলে জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান বিপিসির কর্মকর্তারা।

দেশে জ্বালানি তেল আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। সংস্থাটি সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রতি মাসে ১৭-১৮টি এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়। এসব এলসি দায় মেটাতে প্রতি মাসে গড়ে খরচ হয় ৪৫০-৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে গড়ে ৩৫০-৪০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যায়। ফলে বাকি অর্থ বকেয়া থেকে যায়, যা পরিশোধে ৩০-৪৫ দিন সময় লাগে।

দেশে গত মাসের মাঝামাঝি থেকে চলতি মাসের ১০ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রমে বেশ ব্যাঘাত ঘটেছে। এ সময় জ্বালানি তেল আমদানি কার্যক্রম চালু থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সরবরাহ কার্যত বন্ধ ছিল। সরবরাহকারীদের অর্থও পরিশোধ করা যায়নি।

বিপিসি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫৯ লাখ ১০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৮০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল জিটুজি চুক্তির আওতায় এবং ২৮ লাখ ৩০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমদানির কথা রয়েছে। এর বাইরে ১৪ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিপিসি।

দেশে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে ২০১৮ সাল থেকে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাতার ও ওমান থেকে এবং স্পট মার্কেট থেকে নিয়মিত কেনা হচ্ছে গ্যাস। এছাড়া দেশে গ্যাস উত্তোলনকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানের (আইওসি) কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া পড়েছে। সব মিলিয়ে গ্যাস খাতে মোট বকেয়া ৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

দ্য ডেইলি স্টার:

সরকারের সিদ্ধান্তের পর শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বলা হবে ভারতকে: রয়টার্সকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভারত থেকে ফেরত আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে ভারতকে অনুরোধ করা হবে কি না, সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমাদের তাদের (ভারতকে) অনুরোধ করতে হবে তাকে (শেখ হাসিনাকে) বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে।’

‘এটি ভারত সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। ভারত এটি জানে এবং আমি নিশ্চিত যে তারা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবে,’ বলেন তিনি।

সমকাল:

একের পর এক মামলা, আসামি ‘প্রভাবশালী’
শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক মামলা হচ্ছে। সেসব মামলার আসামি হচ্ছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি। অনেককে আবার নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। মামলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি ছাড়াও প্রশাসনের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী অনেক কর্মকর্তার নামও আসামির তালিকায় থাকছে। তাদের অনেকেই এখন আত্মগোপনে। কেউ কেউ দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন বলে আলোচনা আছে।

এদিকে ছাত্র আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে র‍্যাবের গুলিতে ১২ বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের নামে আরও একটি হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের নামে আরেকটি মামলার আবেদন করা হয়। দুই মামলার বাদীর জবানবন্দি নিয়ে দুই থানা কর্তৃপক্ষকে সরাসরি এজাহার (এফআইআর) গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে গত তিন দিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলার আবেদন ও একটি অপহরণ মামলা হলো।

এদিকে, রাজধানীর পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যা মামলায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

দৈনিক সংগ্রাম:

বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে কেউ আসেনি 
স্টাফ রিপোর্টার: বিগত ১৫ বছর ধরে প্রতিবছর ১৫ আগস্টের সকাল থেকে মানুষের পা ফেলার জায়গা থাকতো না বনানী কবরস্থানে। শ্রদ্ধা, ফুলের ডালা, প্রার্থনায় সামিল হতে দলে দলে মানুষের ঢল নামতো এই কবরস্থানে। কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়েছিল এই কবরস্থানে।

সে কারণে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগসহ তার অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এ বছর চিরচেনা দৃশ্যপট নেই বনানী কবরস্থানে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বনানী কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায় দলীয় নেতাকর্মীদের আনাগোনা নেই, সুনসান নীরবতা পুরো কবরস্থান জুড়ে, যেমন থাকে বছরের বাকি দিনগুলোতেও। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কবরগুলো অন্যান্য বছর ১৫ আগস্ট ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হতো। তবে এ বছর কবরগুলোতে নেই একটি ফুলের ডালাও। কোনো নেতা-কর্মীর উপস্থিতিও নেই। মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একজন কবর জিয়ারত করতে ঢুকে আবার বের হয়ে যাচ্ছেন।

বনানী কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন খোরশেদ আলম নামে একজন কর্মী। তিনি বনানী করবস্থানের দৃশ্যপটের বর্ণনা করে বলেন, অন্যান্য বছর এই ১৫ আগস্টের দিনে বনানী করবস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজ কোনো নেতাকর্মীকে এখানে আসতে দেখিনি। কবরগুলোতে অন্যান্য বছর ফুলের ডালার স্তূপ পড়ে যেত, কিন্তু এবার কবরগুলোতে একটিও ফুল নেই।

একই ধরনের কথা বলেন কবরস্থানের বাইরে চায়ের দোকানি খোকন আহমেদ।

তিনি বলেন, সকাল থেকে বনানী করবস্থানে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীকে আসতে দেখেনি। অন্যান্য বার বাইরে এখানে গাড়ির পার্কিং করার জায়গা থাকতো না, ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মী এখানে আসতো। কিন্তু আজ কোনো ভিড় নেই।

১৯৭৫ সালের এই দিনে এক দল বিপথগামী সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করে। দীর্ঘদিন ধরে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়।

নয়াদিগন্ত:

বিচারপতি অপসারণের রিভিউ শুনানি সুপ্রিম কোর্টের ভ্যাকেশনের পর
বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ রিটকারীর পক্ষে শুনানির জন্য আবেদনের পর এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। বিবাদী পক্ষে (রিট আবেদনকারী) ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, সরকারের রিভিউ দীর্ঘদিন শুনানি হয়নি। এখন নতুন পেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি নবনিযুক্ত হয়েছেন। অন্যান্য বিচারকরা নতুন নিয়োগ পেয়েছেন, সেজন্য আমি এটা মেনশন করেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন ওনাদের একটু ইনস্ট্রাকশন দরকার আছে। উনিও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত। তখন কোর্ট বললেন, এটা শুনবেন। তবে সেটা ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন। (সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির এক সপ্তাহ পর)। অর্থাৎ ভ্যাকেশনের এক সপ্তাহ পর শুনানি হবে। সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি।

কালবেলা:

দলবাজির পরিণামে ভুগছে স্বাস্থ্য খাত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য খাতে। এতদিন যারা ক্ষমতার দাপটে আধিপত্য দেখিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন। চিকিৎসক ও শিক্ষকদের অনুপস্থিতির কারণে বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে সংকট তৈরি হয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য প্রশাসনেও এর প্রভাবে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে চিকিৎসকরা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবস্থার উত্তরণে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাস্থ্য খাত গড়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসক পেশাজীবীরা বিশেষ সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনে সম্পৃক্ত হন। এতে অনেক ক্ষেত্রে অযোগ্যরা পদোন্নতিসহ বিভিন্ন সুবিধা পেয়েছেন, যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিগত সময়ে রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত ও বিব্রত বোধ করছেন। ফলে তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। এতে স্বাস্থ্য প্রশাসনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

অধ্যাপক বে-নজির বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিতে হবে, যিনি যে দায়িত্বে আছেন, তিনি সেই দায়িত্ব পালন করবেন। কারও বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এরপর একটা কমিশন করতে হবে, সেই কমিশন বিগত সময়ের সব বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি বিশ্লেষণ করে যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের প্রাপ্য মর্যাদার সুপারিশ করবে। যদি কেউ অনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তাহলে বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে কারও বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে বৈষম্য দূর হবে। এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত কোনো চিকিৎসক রাজনৈতিক কাজে যুক্ত হতে পারবেন না এই মর্মে বিধিবিধান জারি করতে হবে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনই (বিএমএ) চিকিৎসকদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন। যার মাধ্যমে চিকিৎসকরা তাদের দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করবেন

দেশরুপান্তর:

যেভাবে ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্ভব
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সময়ের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পুলিশ ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গত বুধবার আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। এদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলেন, প্রচলিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে এসব হত্যাকা-ের বিচার সম্ভব।

বুধবারের আবেদনটি জমা দেওয়ার পর তদন্ত সংস্থা এটিকে মামলা হিসেবে রেজিস্ট্রিভুক্ত করে। তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. আতাউর রহমান এ মামলার প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে নিয়ে ছয়জনের একটি কমিটি তদন্তকাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া এই ছয়জনকে আরও বেশ কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তা সহযোগিতা করবেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তারা ঘটনার সময়কালে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা শুরু করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত ২০ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগং রোডে পুলিশের গুলিতে নিহত মো. মেহেদীর বাবা মো. সানাউল্লাহর পক্ষে এ অভিযোগটি দাখিল করা হয়। সানাউল্লাহকে আইনি সহায়তা দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সংস্থা অভিযোগটি তদন্তের জন্য গ্রহণ করেছে।

আইসিটি আইনে বিচার চলবে : গত বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এই আইনের সংশোধনী হয়েছে। সেই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা; আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনের গণহত্যাও বোঝাচ্ছি। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য ইতিমধ্যে ছোটখাটো গবেষণা করেছি। আমরা দেখেছি, এ আইনের অধীনে হত্যাকা-ে জড়িত ব্যক্তি ও যারা আদেশ দিয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।’