ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এখনো অজ্ঞাত ১৭ মরদেহ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে

জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিলের পরামর্শ

আজকের প্রত্রিকাগুলোর খবর

আকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

সমকাল:

জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিলের পরামর্শ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট জমায়েত হলে শেখ হাসিনার দলকে প্রতিহত করবে অভ্যুত্থানকারীরা। আলাদা বৈঠক থেকে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের যে পরামর্শ দিয়েছেন, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে দলগুলো। উপদেষ্টাদের কথা কম বলে দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সম্পন্নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একটি দলের সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কার করেছেন, তিনি ২০০৮ সালের মতো এবারও ক্ষমতা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। শিক্ষার্থীর অনুরোধে এসেছেন। ছাত্র-জনতার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্পন্ন করার আগে নির্বাচনের চাপ দিলে তিনি দায়িত্বে থাকতে চান না।

গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় যমুনায় ড. ইউনূস বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা শুরু করেন। এরপর একে একে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বিজেপি, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এনডিএম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন হয়। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানিয়ে মৌন মিছিল করতে বলেছেন– এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে

প্রথম আলো:

বিদেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিপুল সম্পদ
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরীর নামে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এ ছাড়া তাঁদের নামে থাকা বিদেশি ব্যাংকের হিসাবগুলোতে বড় অঙ্কের অর্থ জমা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিয়ে এখন পর্যন্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁদের পরিবারের কোনো সদস্য বিদেশে অর্থ নেননি। ফলে কীভাবে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, তাঁর স্ত্রী, পুত্র-কন্যা এবং তাঁদের নামে থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে দেশের ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। এসব হিসাবে আগামী ৩০ দিন কোনো লেনদেন করা যাবে না। এমনকি তাঁদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডেও কোনো লেনদেন হবে না। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গতকাল এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেয়। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও বিএফআইইউয়ের প্রধানের পদত্যাগের পর সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংস্থাটি।

● দুবাই ইসলামিক ব্যাংক, ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের দুবাই শাখায় জমা ৩৯ হাজার ৫৮৩ দিরহাম ও ৬ হাজার ৬৭০ ডলার।

● সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১৪ সালে র‍্যাপিড র‍্যাপ্টর এফজিই ও ২০১৫ সালে জেবা ট্রেডিং এফজিই নামে কোম্পানি খোলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী
রুখমিলা জামান চৌধুরী এখন বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান। সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ২০১৮-২৩ সাল সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বিদেশে তাঁর বিপুল সম্পদের খবর গত নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বিদায়ী সরকারে তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুখমিলা জামান চৌধুরী দুজনই দেশের বাইরে আছেন বলে জানা গেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাইয়ে গড়া সম্পদের ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে গত মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছিলেন, তাঁর বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেছেন। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। বিদেশে তাঁর আলাদা আয়কর নথি আছে। আর বিদেশে তাঁর যে সম্পদ আছে, তার জন্য ব্যাংকঋণ নেওয়া হয়েছে।

মানবজমিন:

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক/সংস্কারে সময় দেয়ার বার্তা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। গতকাল বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব বৈঠক হয়। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন দলগুলোর নেতারা। তারা সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শও দেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সরকার পরিচালনা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে দলগুলোর সার্বিক সহায়তা চান। বৈঠকে ১৫ই আগস্ট শোক দিবস নিয়ে কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনীকে সচল করার তাগিদ দেয়া হয়। কোনো হত্যাকারীর পুনর্বাসনের দায়িত্ব যাতে এই সরকার না নেয় সে বিষয়ে তাগিদ দেয়া হয়। পরবর্তী নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদ দিয়ে দলগুলো বলেছে- এজন্য যৌক্তিক সময় দিতে তারা রাজি। এ ছাড়া উপদেষ্টাদের অতিকথন থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সামনের কয়েকদিন রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়। তারা জনতার মঞ্চ তৈরি করে অবস্থান নেয়ার কথাও জানিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ধারাবাহিক বৈঠক হতে পারে বলে নেতারা জানিয়েছেন।

যুগান্তর:

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার দাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কয়েক শ শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিচারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শেখ হাসিনার বিচার ও ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এই দাবি জানান।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাজারো শিক্ষার্থী এসে জমায়েত হন এবং স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় ‘বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘দখলদারের রাজনীতি/শিক্ষকদের রাজনীতি, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘গেস্টরুম-গণরুম, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, ছিল ও থাকবে। এই অভ্যুত্থানে গণমাধ্যমেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চায়। ছাত্র-জনতা তা কোনোভাবেই হতে দেবে না। আমাদের মূল দাবি, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন।

বনিক র্বাতা:
এখনো অজ্ঞাত ১৭ মরদেহ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আহত ও গুলিবিদ্ধদের বড় অংশই চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। মৃতদেহও এসেছে অনেক। বেশির ভাগই হস্তান্তর করা হয়েছে স্বজনদের কাছে। তবে এখনো মর্গে পড়ে রয়েছে ১৭ মরদেহ, ঢামেক মর্গে নয়টি ও হাসপাতাল মর্গে আটটি। সবগুলোই নাম-পরিচয়হীন, অজ্ঞাতনামা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশ সম্প্রতি কর্মবিরতিতে থাকায় মৃতদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ঢামেক হাসপাতালের মর্গ অফিসে গতকাল গিয়ে জানা যায়, চলতি আগস্টে হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহ এসেছে মোট ৬৪টি। সবই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলমান সংঘর্ষে নিহত। এদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। কেউবা ছাত্রলীগ, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। কেউ আবার আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে বা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কাউকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মৃত্যু হলে মরদেহ রাখা হয় জরুরি বিভাগের মর্গে। মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা ব্যক্তির বিষয়েও সন্দেহ হলে এ মর্গে রেখে নিবন্ধন করা হয়। আর এসব মরদেহ রাখা হয় ফ্রিজে। সেখানে তিনটি ফ্রিজে ১২টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মর্গে।

আবার অস্বাভাবিকভাবে কারো মৃত্যু হয়েছে কিংবা অন্য কোনো হাসপাতালে তা ঘোষণা হয়েছে এমন মরদেহ সরাসরি কলেজের মর্গে নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন তালিকায় এর কোনো তথ্য রাখা হয় না। কলেজের মর্গে ফ্রিজে রাখা যায় ৪০টি মরদেহ। মূলত আইনি জটিলতার কারণে যেসব মরদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া যায় না কিংবা অজ্ঞাত সেগুলোই মূলত এ ফ্রিজে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-পরবর্তী ঘটনায় আহত হয়ে চলতি আগস্টে সাতশরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৯৬ জন। এখনো ১৯৪ জন ভর্তি রয়েছেন। চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে মারা গেছেন ৬৪ জন। এসব মরদেহের তালিকা হাসপাতালের মরচুয়ারি বিভাগে রেজিস্ট্রার করা হয়েছে। কিন্তু যেগুলোর ময়নাতদন্ত হয়নি তাদের তালিকা মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের নয়টি মরদেহের দুটি উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে এবং তিনটি কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে এসেছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে আসা তিনটি মরদেহ পুলিশের বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশরুপান্তর:

৬ মাসের মধ্যে পুলিশে সংস্কার
সম্প্রতি আন্দোলন ঘিরে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শিক্ষার্থী ও নিরপরাধ লোকজনের মৃত্যু এবং পাল্টা হামলার শিকার হওয়া এক নজিরবিহীন ঘটনা। অভিযোগ ওঠে, পুলিশ রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলেছে। এসব ঘটনায় একদিকে পুলিশের মনোবলে প্রভাব পড়ে, অন্যদিকে বাহিনীতে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ অবস্থায় ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ হিসেবে পুলিশের ভাবমূর্তি ফেরাতে বাহিনীতে সংস্কার আসছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুলিশে আমূল পরিবর্তন আসছে। রাজনীতির বেড়াজাল থেকে বাহিনীটিকে বের করে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে বিশদ আলোচনা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরও কাজ শুরু করে দিয়েছে। কোন কোন আইন সংশোধন করা যায় তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশের পোশাক ও মনোগ্রাম পরিবর্তন করা হবে। এখন মনোগ্রামে ‘নৌকা প্রতীক’ রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই বড় ধরনের রদবদল করা হবে। ইতিমধ্যে বদলির তালিকা প্রায় গুছিয়ে আনা হয়েছে।

পুলিশও দাবি করে আসছে, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে পরিত্রাণ চায়। সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও বলেছেন, পুলিশকে জনবান্ধব করতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। পুলিশের কোনো সদস্য রাজনৈতিক বলয়ে থেকে কোনো কিছু করতে পারবেন না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে। তবে সর্বশেষ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলির ঘটনা জনরোষ তৈরি করে। এর ধারাবাহিকতায় গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশের বেশ কয়েকটি থানায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলায় নিহত হন অন্তত ৪২ পুলিশ সদস্য।

কালবেলা:

জামায়াতের দাবি/গণহত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামীর ১১ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদল। যার নেতৃত্বে দেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, সারা দেশে সংঘটিত সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত সরকারের শাসনামলে দায়েরকৃত সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগসহ বিগত সরকারের অপকর্মের মদদদাতা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে তদস্থলে সৎ, দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে। বিগত সরকারের শাসনামলের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তাসহ সব দুর্নীতিবাজদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। বিগত সরকারের আমলে প্রমোশনবঞ্চিতদের দ্রুত প্রমোশন দেওয়া ও সম্মানজনক পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। জোরপূর্বক অবসরপ্রাপ্তদের চাকরিতে ফিরিয়ে আনা/চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের সমর্থনে আরব আমিরাতে বিক্ষোভকারী ৫৭ বাংলাদেশিকে সম্মানজনক পুনর্বাসন করতে হবে। রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতি সচল করার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশের এই কঠিন মুহূর্তে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও সহায়-সম্পদে হামলা চালিয়ে কোনো কুচক্রী মহল যাতে পানি ঘোলাটে করতে না পারে, সেজন্য জামায়াত-ছাত্রশিবির পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে আসছে। যেহেতু বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেছে, সেজন্য ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের পাহারা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রশাসনকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করে যাবো।

জনপ্রিয় সংবাদ

এখনো অজ্ঞাত ১৭ মরদেহ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে

জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিলের পরামর্শ

আপডেট সময় ০৭:২০:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

আকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

সমকাল:

জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিলের পরামর্শ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট জমায়েত হলে শেখ হাসিনার দলকে প্রতিহত করবে অভ্যুত্থানকারীরা। আলাদা বৈঠক থেকে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের যে পরামর্শ দিয়েছেন, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে দলগুলো। উপদেষ্টাদের কথা কম বলে দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সম্পন্নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একটি দলের সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কার করেছেন, তিনি ২০০৮ সালের মতো এবারও ক্ষমতা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। শিক্ষার্থীর অনুরোধে এসেছেন। ছাত্র-জনতার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্পন্ন করার আগে নির্বাচনের চাপ দিলে তিনি দায়িত্বে থাকতে চান না।

গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় যমুনায় ড. ইউনূস বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা শুরু করেন। এরপর একে একে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বিজেপি, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এনডিএম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন হয়। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানিয়ে মৌন মিছিল করতে বলেছেন– এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে

প্রথম আলো:

বিদেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিপুল সম্পদ
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরীর নামে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এ ছাড়া তাঁদের নামে থাকা বিদেশি ব্যাংকের হিসাবগুলোতে বড় অঙ্কের অর্থ জমা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিয়ে এখন পর্যন্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁদের পরিবারের কোনো সদস্য বিদেশে অর্থ নেননি। ফলে কীভাবে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, তাঁর স্ত্রী, পুত্র-কন্যা এবং তাঁদের নামে থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে দেশের ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। এসব হিসাবে আগামী ৩০ দিন কোনো লেনদেন করা যাবে না। এমনকি তাঁদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডেও কোনো লেনদেন হবে না। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গতকাল এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেয়। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও বিএফআইইউয়ের প্রধানের পদত্যাগের পর সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংস্থাটি।

● দুবাই ইসলামিক ব্যাংক, ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের দুবাই শাখায় জমা ৩৯ হাজার ৫৮৩ দিরহাম ও ৬ হাজার ৬৭০ ডলার।

● সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১৪ সালে র‍্যাপিড র‍্যাপ্টর এফজিই ও ২০১৫ সালে জেবা ট্রেডিং এফজিই নামে কোম্পানি খোলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী
রুখমিলা জামান চৌধুরী এখন বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান। সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ২০১৮-২৩ সাল সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বিদেশে তাঁর বিপুল সম্পদের খবর গত নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বিদায়ী সরকারে তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুখমিলা জামান চৌধুরী দুজনই দেশের বাইরে আছেন বলে জানা গেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাইয়ে গড়া সম্পদের ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে গত মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছিলেন, তাঁর বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেছেন। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। বিদেশে তাঁর আলাদা আয়কর নথি আছে। আর বিদেশে তাঁর যে সম্পদ আছে, তার জন্য ব্যাংকঋণ নেওয়া হয়েছে।

মানবজমিন:

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক/সংস্কারে সময় দেয়ার বার্তা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। গতকাল বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব বৈঠক হয়। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন দলগুলোর নেতারা। তারা সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শও দেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সরকার পরিচালনা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে দলগুলোর সার্বিক সহায়তা চান। বৈঠকে ১৫ই আগস্ট শোক দিবস নিয়ে কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনীকে সচল করার তাগিদ দেয়া হয়। কোনো হত্যাকারীর পুনর্বাসনের দায়িত্ব যাতে এই সরকার না নেয় সে বিষয়ে তাগিদ দেয়া হয়। পরবর্তী নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদ দিয়ে দলগুলো বলেছে- এজন্য যৌক্তিক সময় দিতে তারা রাজি। এ ছাড়া উপদেষ্টাদের অতিকথন থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সামনের কয়েকদিন রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়। তারা জনতার মঞ্চ তৈরি করে অবস্থান নেয়ার কথাও জানিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ধারাবাহিক বৈঠক হতে পারে বলে নেতারা জানিয়েছেন।

যুগান্তর:

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার দাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কয়েক শ শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিচারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শেখ হাসিনার বিচার ও ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এই দাবি জানান।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাজারো শিক্ষার্থী এসে জমায়েত হন এবং স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় ‘বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘দখলদারের রাজনীতি/শিক্ষকদের রাজনীতি, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘গেস্টরুম-গণরুম, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, ছিল ও থাকবে। এই অভ্যুত্থানে গণমাধ্যমেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চায়। ছাত্র-জনতা তা কোনোভাবেই হতে দেবে না। আমাদের মূল দাবি, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন।

বনিক র্বাতা:
এখনো অজ্ঞাত ১৭ মরদেহ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আহত ও গুলিবিদ্ধদের বড় অংশই চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। মৃতদেহও এসেছে অনেক। বেশির ভাগই হস্তান্তর করা হয়েছে স্বজনদের কাছে। তবে এখনো মর্গে পড়ে রয়েছে ১৭ মরদেহ, ঢামেক মর্গে নয়টি ও হাসপাতাল মর্গে আটটি। সবগুলোই নাম-পরিচয়হীন, অজ্ঞাতনামা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশ সম্প্রতি কর্মবিরতিতে থাকায় মৃতদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ঢামেক হাসপাতালের মর্গ অফিসে গতকাল গিয়ে জানা যায়, চলতি আগস্টে হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহ এসেছে মোট ৬৪টি। সবই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলমান সংঘর্ষে নিহত। এদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। কেউবা ছাত্রলীগ, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। কেউ আবার আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে বা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কাউকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মৃত্যু হলে মরদেহ রাখা হয় জরুরি বিভাগের মর্গে। মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা ব্যক্তির বিষয়েও সন্দেহ হলে এ মর্গে রেখে নিবন্ধন করা হয়। আর এসব মরদেহ রাখা হয় ফ্রিজে। সেখানে তিনটি ফ্রিজে ১২টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মর্গে।

আবার অস্বাভাবিকভাবে কারো মৃত্যু হয়েছে কিংবা অন্য কোনো হাসপাতালে তা ঘোষণা হয়েছে এমন মরদেহ সরাসরি কলেজের মর্গে নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন তালিকায় এর কোনো তথ্য রাখা হয় না। কলেজের মর্গে ফ্রিজে রাখা যায় ৪০টি মরদেহ। মূলত আইনি জটিলতার কারণে যেসব মরদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া যায় না কিংবা অজ্ঞাত সেগুলোই মূলত এ ফ্রিজে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-পরবর্তী ঘটনায় আহত হয়ে চলতি আগস্টে সাতশরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৯৬ জন। এখনো ১৯৪ জন ভর্তি রয়েছেন। চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে মারা গেছেন ৬৪ জন। এসব মরদেহের তালিকা হাসপাতালের মরচুয়ারি বিভাগে রেজিস্ট্রার করা হয়েছে। কিন্তু যেগুলোর ময়নাতদন্ত হয়নি তাদের তালিকা মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের নয়টি মরদেহের দুটি উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে এবং তিনটি কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে এসেছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে আসা তিনটি মরদেহ পুলিশের বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশরুপান্তর:

৬ মাসের মধ্যে পুলিশে সংস্কার
সম্প্রতি আন্দোলন ঘিরে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শিক্ষার্থী ও নিরপরাধ লোকজনের মৃত্যু এবং পাল্টা হামলার শিকার হওয়া এক নজিরবিহীন ঘটনা। অভিযোগ ওঠে, পুলিশ রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলেছে। এসব ঘটনায় একদিকে পুলিশের মনোবলে প্রভাব পড়ে, অন্যদিকে বাহিনীতে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ অবস্থায় ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ হিসেবে পুলিশের ভাবমূর্তি ফেরাতে বাহিনীতে সংস্কার আসছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুলিশে আমূল পরিবর্তন আসছে। রাজনীতির বেড়াজাল থেকে বাহিনীটিকে বের করে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে বিশদ আলোচনা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরও কাজ শুরু করে দিয়েছে। কোন কোন আইন সংশোধন করা যায় তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশের পোশাক ও মনোগ্রাম পরিবর্তন করা হবে। এখন মনোগ্রামে ‘নৌকা প্রতীক’ রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই বড় ধরনের রদবদল করা হবে। ইতিমধ্যে বদলির তালিকা প্রায় গুছিয়ে আনা হয়েছে।

পুলিশও দাবি করে আসছে, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে পরিত্রাণ চায়। সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও বলেছেন, পুলিশকে জনবান্ধব করতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। পুলিশের কোনো সদস্য রাজনৈতিক বলয়ে থেকে কোনো কিছু করতে পারবেন না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে। তবে সর্বশেষ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলির ঘটনা জনরোষ তৈরি করে। এর ধারাবাহিকতায় গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশের বেশ কয়েকটি থানায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলায় নিহত হন অন্তত ৪২ পুলিশ সদস্য।

কালবেলা:

জামায়াতের দাবি/গণহত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামীর ১১ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদল। যার নেতৃত্বে দেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, সারা দেশে সংঘটিত সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত সরকারের শাসনামলে দায়েরকৃত সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগসহ বিগত সরকারের অপকর্মের মদদদাতা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে তদস্থলে সৎ, দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে। বিগত সরকারের শাসনামলের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তাসহ সব দুর্নীতিবাজদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। বিগত সরকারের আমলে প্রমোশনবঞ্চিতদের দ্রুত প্রমোশন দেওয়া ও সম্মানজনক পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। জোরপূর্বক অবসরপ্রাপ্তদের চাকরিতে ফিরিয়ে আনা/চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের সমর্থনে আরব আমিরাতে বিক্ষোভকারী ৫৭ বাংলাদেশিকে সম্মানজনক পুনর্বাসন করতে হবে। রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতি সচল করার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশের এই কঠিন মুহূর্তে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও সহায়-সম্পদে হামলা চালিয়ে কোনো কুচক্রী মহল যাতে পানি ঘোলাটে করতে না পারে, সেজন্য জামায়াত-ছাত্রশিবির পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে আসছে। যেহেতু বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেছে, সেজন্য ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের পাহারা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রশাসনকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করে যাবো।