ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে আলেম-ওলামা ও দ্বীনদার প্রপার্টি’ নামে খৈলাদী বিল ভরাট

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি করপোরেশনে আবাসন প্রকল্পের জন্য খৈলাদী বিল ভরাট করা হচ্ছে। ‘আলেম-ওলামা ও দ্বীনদার প্রপার্টি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান জলাশয় ও কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এই বিল ভরাট করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজন বলছে, বালু ফেলে বিলের প্রায় ৭৫ বিঘা জমি ভরাট করতে দুই কিলোমিটার দূরে তুরাগ নদ পর্যন্ত ড্রেজারের পাইপ বসানো হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও রাজউকের ড্যাপে জলাশয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এই বিল।

ইটাহাটা এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ মো. শুক্কুর আলী বলেন, বিলে কয়েক হাজার বিঘা জমি আছে। বর্ষা মৌসুমে বিলের মাছ ও বোরো মৌসুমের ধান এলাকার কৃষকদের প্রধান আয়ের উৎস। বিল ভরাট করা হলে চাষাবাদ ব্যাহত হবে। এলাকা হবে মাছশূন্য। হারাবে জীব বৈচিত্র্য।

জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে বিল ভরাট ও আবাসন প্রকল্প স্থাপনের ছাড়পত্র দিয়েছে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর।

এলাকার লোকজন জানায়, স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিলে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে লিখিত প্রতিবেদন দেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফে মোহাম্মদ বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দেন আলেম-ওলামা দ্বীনদার প্রপার্টিজকে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিল ভরাট থামছেনা।

এ বিষয় জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফে মোহাম্মদ বলেন, অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এ ছাড়া মহানগর এলাকায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর ৫ নম্বর ধারায় প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে।

বিল ভরাট প্রসঙ্গে আলেম উলামা ও দ্বীনদার প্রপাটির পরিচালক মাওলানা মুফতি মো. তৈয়ব হোসেন বলেন, ‘আমাদের কেনা জমি জলাশয় নয়। বর্ষাকালে এখানে পানি জমে। পানিতো ঢাকা শহরেও জমে। জেলা প্রশাসক, এসিল্যান্ড, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অফিসের অনুমতি নিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানকে বিল ভরাটের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হয়নি। জলাশয় ভরাট ও জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা আইনসম্মত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে আলেম-ওলামা ও দ্বীনদার প্রপার্টি’ নামে খৈলাদী বিল ভরাট

আপডেট সময় ১২:২৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি করপোরেশনে আবাসন প্রকল্পের জন্য খৈলাদী বিল ভরাট করা হচ্ছে। ‘আলেম-ওলামা ও দ্বীনদার প্রপার্টি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান জলাশয় ও কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এই বিল ভরাট করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজন বলছে, বালু ফেলে বিলের প্রায় ৭৫ বিঘা জমি ভরাট করতে দুই কিলোমিটার দূরে তুরাগ নদ পর্যন্ত ড্রেজারের পাইপ বসানো হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও রাজউকের ড্যাপে জলাশয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এই বিল।

ইটাহাটা এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ মো. শুক্কুর আলী বলেন, বিলে কয়েক হাজার বিঘা জমি আছে। বর্ষা মৌসুমে বিলের মাছ ও বোরো মৌসুমের ধান এলাকার কৃষকদের প্রধান আয়ের উৎস। বিল ভরাট করা হলে চাষাবাদ ব্যাহত হবে। এলাকা হবে মাছশূন্য। হারাবে জীব বৈচিত্র্য।

জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে বিল ভরাট ও আবাসন প্রকল্প স্থাপনের ছাড়পত্র দিয়েছে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর।

এলাকার লোকজন জানায়, স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিলে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে লিখিত প্রতিবেদন দেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফে মোহাম্মদ বিল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দেন আলেম-ওলামা দ্বীনদার প্রপার্টিজকে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিল ভরাট থামছেনা।

এ বিষয় জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফে মোহাম্মদ বলেন, অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এ ছাড়া মহানগর এলাকায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর ৫ নম্বর ধারায় প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে।

বিল ভরাট প্রসঙ্গে আলেম উলামা ও দ্বীনদার প্রপাটির পরিচালক মাওলানা মুফতি মো. তৈয়ব হোসেন বলেন, ‘আমাদের কেনা জমি জলাশয় নয়। বর্ষাকালে এখানে পানি জমে। পানিতো ঢাকা শহরেও জমে। জেলা প্রশাসক, এসিল্যান্ড, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অফিসের অনুমতি নিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানকে বিল ভরাটের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হয়নি। জলাশয় ভরাট ও জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা আইনসম্মত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।