ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাল প্রোফাইলে সয়লাব ফেসবুক

সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নিহতদের জন্য ঘোষিত ‘এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক’ কে ‘শহীদদের রক্তের সাথে তামাশা’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে মন্ত্রী পরিষদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয়। এবং একই সাথে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) চোখ ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে তা অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করার কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) প্রথম প্রহর থেকে সারা দেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে লাল বৃত্তের ছবি যুক্ত কিংবা চোখে ও মুখে লাল কাপড় বাঁধা ছবি যুক্ত করে, সরকার ঘোষিত শোক পালনের নিরব প্রতিবাদ করেন। ফেসবুকের পুরো নিউজফিড লালের আভায় পরিপূর্ণ থাকতে দেখা যায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, শহীদদের স্বীকৃতি না দিয়ে তারা রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছে!

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কাদের জন্য শোক প্রকাশ করছেন? যাদের শহীদ হওয়াকে আপনারা স্বীকৃতি দিচ্ছেন না; উল্টো তাদের সহযোদ্ধাদের গুম, ও গণগ্রেপ্তার করছেন! আপনারা যদি সত্যিই শোকগ্রস্ত হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমেই যারা এই শহীদদের রক্তের জন্য দায়ী তাদের বিচার করুন। শত শত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেককে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনুন। তাহলেই আমরা বুঝব আপনারা আসলেই শোকাগ্রস্ত; শহীদদের রক্তের প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধাবোধ আছে। তার আগে এসব মায়াকান্না দেখাবেন না।

মাসুদ আরো বলেন, আপনারা শহীদদের পরিবারকে হেনস্তা করছেন, তাদের সহযোদ্ধাদের হেনস্তা করছেন, তাদের সহপাঠীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছেন; আবার আপনারা শহীদদের প্রতি মায়াকান্না দেখাচ্ছেন! আমরা সরকারের এই ঘৃণ্য কর্মসূচিকে প্রত্যাখ্যান করছি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নিহত শহীদদের রক্তের প্রতিবাদে প্রতীকী আইকন হিসেবে সোমবার রাত ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল বৃত্তে আবৃত করেন। এছাড়া কোনো কিছু দেখেও না দেখান ভান করার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রোফাইল পিক কিংবা ছবি আপলোড করতে দেখা যায় অনেককে।

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিসংতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়।

সোমবার (২৯ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জনপ্রিয় সংবাদ

লাল প্রোফাইলে সয়লাব ফেসবুক

আপডেট সময় ০১:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নিহতদের জন্য ঘোষিত ‘এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক’ কে ‘শহীদদের রক্তের সাথে তামাশা’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে মন্ত্রী পরিষদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয়। এবং একই সাথে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) চোখ ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে তা অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করার কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) প্রথম প্রহর থেকে সারা দেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে লাল বৃত্তের ছবি যুক্ত কিংবা চোখে ও মুখে লাল কাপড় বাঁধা ছবি যুক্ত করে, সরকার ঘোষিত শোক পালনের নিরব প্রতিবাদ করেন। ফেসবুকের পুরো নিউজফিড লালের আভায় পরিপূর্ণ থাকতে দেখা যায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, শহীদদের স্বীকৃতি না দিয়ে তারা রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছে!

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কাদের জন্য শোক প্রকাশ করছেন? যাদের শহীদ হওয়াকে আপনারা স্বীকৃতি দিচ্ছেন না; উল্টো তাদের সহযোদ্ধাদের গুম, ও গণগ্রেপ্তার করছেন! আপনারা যদি সত্যিই শোকগ্রস্ত হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমেই যারা এই শহীদদের রক্তের জন্য দায়ী তাদের বিচার করুন। শত শত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেককে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনুন। তাহলেই আমরা বুঝব আপনারা আসলেই শোকাগ্রস্ত; শহীদদের রক্তের প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধাবোধ আছে। তার আগে এসব মায়াকান্না দেখাবেন না।

মাসুদ আরো বলেন, আপনারা শহীদদের পরিবারকে হেনস্তা করছেন, তাদের সহযোদ্ধাদের হেনস্তা করছেন, তাদের সহপাঠীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছেন; আবার আপনারা শহীদদের প্রতি মায়াকান্না দেখাচ্ছেন! আমরা সরকারের এই ঘৃণ্য কর্মসূচিকে প্রত্যাখ্যান করছি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নিহত শহীদদের রক্তের প্রতিবাদে প্রতীকী আইকন হিসেবে সোমবার রাত ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল বৃত্তে আবৃত করেন। এছাড়া কোনো কিছু দেখেও না দেখান ভান করার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রোফাইল পিক কিংবা ছবি আপলোড করতে দেখা যায় অনেককে।

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিসংতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়।

সোমবার (২৯ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।