ঈদুল আজহার আগে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল ও ছাগলের পাশাপাশি ইফাত এই ঈদে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ। ভাইরাল হওয়া এই তরুণের বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমান। লাখ টাকা বেতনে চাকরি করা কর্মকর্তার ছেলের ৭০ লাখ টাকার গরু এবং ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনা নিয়ে সর্বত্র চলে আলোচনা-সমালোচনা।
এরপর একে একে বেরিয়ে আসে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর এবং তার স্বজনদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের খোঁজ। তীব্র সমালোচনার মুখে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় সরকার।
প্রথম শ্রেণির একজন কর্মকর্তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য সামনে আসার পর এসব সম্পদের উৎস নিয়ে দেখা দেয় নানা প্রশ্ন। এ কাণ্ডে বিব্রত অন্য সরকারি কর্মকর্তারাও।
বিষয়টি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে কোনো কথা না বললেও চলছে কানাঘুষা। তারা বলছেন, ছাগল-কাণ্ডের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সমাজে বিব্রত হতে হচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে জনমনে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, একটা ছাগল নিয়ে এত কিছু বের হয়ে আসবে তা কেউ ভাবেনি। এ ঘটনায় দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এসেছে। এটা নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি। আমাদের আত্মীয়-স্বজন আছে, তারা আমাদের নানা প্রশ্ন করছেন। সরকারি চাকরিজীবী সবাই অসৎ নয়। অনেক ভালো ও সৎ মানুষ আছে। কিন্তু অল্প কিছু অসৎ কর্মকর্তার কারণে আমাদের বদনাম হয়। সাধারণ মানুষের মনে আমাদের অপরাধী বানানো হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মানুষ সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে এমনিতেই নেতিবাচক মনোভাব দেখায়। এ ঘটনার পর মানুষের মনে এ মনোভাব আরও নেতিবাচক হচ্ছে। সবমিলিয়ে আমরা বিব্রত। ছাগল-কাণ্ডের পর একটা জিনিস ভালো হয়েছে। নানামুখী সমালোচনার পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখন আতঙ্ক আর ভয়ে আছেন। কখন ধরা পড়েন, সেই ভয়ে তটস্থ আছেন তারা।
সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দুর্নীতি তো সবাই করে না। একটি অফিসের সবাই কি দুর্নীতিবাজ? হাতেগোনা কয়েকজন করে এবং ওই হাতেগোনা কয়েকজনের জন্য বাকি সবাই বিব্রত হয়। বর্তমান অবস্থা এমনই।