কলকাতায় নিহত ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন রাজনীতি করবেন বলে গণমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, ‘আমার বাবার স্বপ্ন ছিল রাজনীতি করার। এজন্য আমাকে আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে বলেছেন। আমার প্যাশন রাজনীতি করা এবং আমি ভবিষ্যতে রাজনীতি করবো। আল্লাহ যদি কপালে রাখেন, বাবার অসম্পূর্ণ কাজ বাস্তবায়ন করবো।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার দেখানো পথে চলেছি এতদিন। অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ শুরু করি। জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও আমার সরব উপস্থিতি ছিল। ছাত্রলীগ রাজনীতির আঁতুড়ঘর। সেজন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কালীগঞ্জের প্রত্যেকটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা আমাকে চেনেন।
আনার কন্যা বলেন, ‘যেহেতু বাবা নেই, রাজনীতি আমার জন্য কঠিন হবে বলে মনে করি। তবে মমতাময়ী মা প্রধানমন্ত্রী যদি আমার পাশে থাকেন, সহযোগিতা করেন তাহলে কোনো কিছুতেই অসুবিধা হবে না। কারণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হালটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই ধরেছেন। আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী তার পুরো পরিবারকে হারিয়েছেন। সেক্ষেত্রে একটা মেয়ে হয়ে যদি মফস্বলে রাজনীতি করতে চাই অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী আমাকে সহযোগিতা করবেন। প্রমাণস্বরূপ ভবিষ্যতে হয়তো দেখতেও পারবেন আপনারা।
মরদেহের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না পেলে কি করবেন- সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রমাণ না পাওয়া গেলে হত্যা হয়েছে আমি মেনে নেবো না। আমি আইন পড়ি, আইনে কোন ধারায় কী মামলা করতে হয় তা আমি জানি। আমি অপহরণের মামলা করেছি। প্রমাণ পেলে হত্যা মামলা করবো। যদি সত্যিই আমার বাবা খুন হয়ে থাকেন তাহলে এর বিচারও আমি চাই।’
আসামিদের সঙ্গে তার বাবার বিরোধের বিষয়ে ডরিন বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিদের সঙ্গে আমার বাবার ব্যবসার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। জাতীয় নির্বাচনের আগেও বাবাকে হত্যা করার চেষ্টা করে তারা, তবে পারেনি। তিনবার চেষ্টা করেছিল বাবাকে হত্যার জন্য। আগে থেকেই সবকিছু পরিকল্পনা করে বাবাকে হত্যা করা হয়। এটা রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে। কারণ, নির্বাচনের আগে থেকেই মারার চেষ্টা হয়। অনেক শত্রুই তার আছে।’
হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শাহীনকে ওভাবে চিনতাম না। শাহীনকে কেউ টাকা দিয়ে এ কাজ করিয়েছে কি না দেখা দরকার। তাকে হয়তো ১০ কোটি টাকা দিয়ে বলেছে তুমি পাঁচ কোটি রাখো আর পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে মেরে ফেলো। শাহীন দ্বিতীয় ম্যান হিসেবে কাজ করলেও করতে পারে। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের আগেও বাবাকে মারার জন্য ঢাকায় চেষ্টা করা হয়েছিল। শাহীনকে আইনের আওতায় আনা গেলে সবকিছু পানির মতো বের হয়ে আসবে।