ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শিশুদের ওপর বর্বর হামলার কারণে ইসরাইলি সেনাবাহীনীকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ। গাজায় ইসরাইলি হামলায় হাজার হাজার শিশু নিহত ও আহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নিলো বৈশ্বিক এই সংস্থা। কালো তালিকায় ইসরাইলের অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ আরদান। তিনি এক্সে বলেছেন, তিনি প্রজ্ঞাপন পেয়েছেন এবং এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত। আমাদের সেনাবাহিনী হলো বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিকতাসম্পন্ন বাহিনী। এক ব্যক্তিই কালো তালিকাভুক্ত করেছেন। তিনি হলেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব। তিনি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছেন। তিনি ইসরাইলের প্রতি ঘৃণায় পরিচালিত।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতিসঙ্ঘের এক কর্মকর্তা ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের সাথে দেখা করে জাতিসঙ্ঘের বার্ষিক ‘চিল্ড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ প্রতিবেদনে ইসরাইলের তালিকাভুক্তির বিষয়টি জানান।
প্রতিবেদনটি ১৪ জুন জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। রয়টার্স এক জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাস এবং ইসলামিক জিহাদকেও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ডুজারিক বলেন, ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের ফোন কলটি ‘দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। স্পষ্টভাবেই বলা যায়, এ ধরনের কিছু আমি আমার ২৪ বছরে এই সংগঠনের সাথে দায়িত্ব পালনকালে দেখিনি। সশস্ত্র সঙ্ঘাতে শিশুবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের বার্ষিক প্রতিবেদনটিতে ‘শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় পক্ষগুলোর সম্পৃক্ততার’ তালিকা দেয়া হয়। এতে হত্যা এবং আহত করার প্রমাণ এবং যৌন সহিংসতার তথ্য থাকে।
এই তালিকায় রাশিয়া, গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গো, সিরিয়া ও সোমালিয়ার নাম রয়েছে। এছাড়া ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল-শাবাব, তালেবান, আল-কায়েদার মতো সংগঠনও আছে।
গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলায় উপত্যকায় ১৫,৫৭১টির বেশি শিশু নিহত হয়েছে।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার প্রতি ১০ ফিলিস্তিনি শিশুর ৯টিই ‘ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটে’ রয়েছে। ক্ষুধা, পিপাসা এবং মারাত্মক অপুষ্টির কারণে অনেক ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা হু গত সপ্তাহে জানিয়েছে, গাজার প্রতি ৫ শিশুর ৪টিই প্রতি তিন দিনে অন্তত এক দিন ’পুরো দিন না খেয়ে থাকে।’
সূত্র : আলজাজিরা