ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোটরসাইকেল ঠিক করতে না পারায় মেকানিককে পুলিশের গুলি

যশোরের ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল ঠিক করে দিতে না পারায় এক মেকানিককে লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিওরদাহ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের নাম রিকন হোসেন। তিনি শিওরদাহ পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত।

ঘটনার শিকার রিপন হোসেন যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শিওরদাহ গ্রামের মতিয়ার হোসেনের ছেলে। বাজারে তার তরকারির দোকান আছে। পাশাপাশি তিনি মোটরসাইকেলের ছোটখাটো মেরামতের কাজ করতেন।

অভিযোগকারীর দাবি, গুলি করার আগে তাকে লাঠি দিয়ে বেদম মারা হয়। লাঠির আঘাতে তার কান ফেটে রক্তাক্ত হয়েছে।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ওই পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় তারা ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেয়। পরে নাভারণ সার্কেলের এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান এবং ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সকালে ওই পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেল স্টার্ট হচ্ছিল না। শিওরদাহ বাজারের মেকানিক রিপনের কাছে আনলে তিনি জানান, তিনি এটা ঠিক করতে পারবেন না। ভালো মেকানিক দেখাতে হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ সদস্য তাকে লাঠি দিয়ে বেদম মারেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করতে যান। তবে পাশের এক দোকানি রাইফেলের নল ধরে ফেললে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে এ ঘটনায় গুলির বারুদের আগুনে পানিসারা গ্রামের আজিজ নামের এক ভ্যানচালক আহত হন। তার ডান কাঁধের একটি অংশ পুড়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রাইফেলের নল ধরে ফেলা দোকানি তুষার বলেন, আমি ওষুধ আনতে গেছিলাম। গিয়ে দেখি ওই পুলিশ লাঠি দিয়ে রিপনকে মারছে আর দোকান থেকে বের হতে বলছে। এসময় সে হুমকি দিতে থাকে বের না হলে গুলি করবে। পরে আমি রাইফেলের বাট ধরে ফেলায় সে গুলি করলেও সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশের পাথরের কুচির স্তূপে লাগে।

প্রত্যক্ষদর্শী রাজমিস্ত্রী তাইজেল হোসেন বলেন, রিপনকে মারতে মারতে ওই পুলিশ বলে দোকান থেকে বের না হলে গুলি করে দেব। আর আশপাশের লোকজনকে হুমকি দিতে থাকে এগোলেই গুলি করবে। পরে তিনি গুলি করেন।

ঘটনাস্থলের পাশের এক দোকানি বলেন, আমি এখানে এসে দেখি তুষার ওই পুলিশের রাইফেল ধরে রেখেছে আর পুলিশ চারপাশে রাইফেল ঘুরাচ্ছে আর বলছে গুলি করে দেব। আমি যেতে না যেতেই তিনি গুলি করে দেন।

ভুক্তভোগী রিপনের বাবা মতিয়ার হোসেন বলেন, ছেলেকে বিনা অন্যায়ে পুলিশ মেরেছে। সে মেকানিক না, তরকারি বিক্রি করে। তবে টুকটাক মোটরসাইকেলের কাজ জানে। ওর অপরাধ শুধু বলেছে এ কাজ আমি করতে পারবো না। এতে সাদা লাঠি দিয়ে ছেলেকে মেরেছে, দোকান ভাঙচুর করেছে। পাশের এক দোকানদার বন্দুক ধরে ফেলায় ওর গায়ে গুলি লাগেনি।

ঝিকরগাছা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের একজন পুলিশ সদস্য যশোরে ডিউটিতে যাচ্ছিলেন। পথে তার মোটরসাইকেল নষ্ট হলে শিওরদাহ বাজারে গ্যারেজে যান। সেখানে লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি হয়। পরে তার কাছে থাকা একটি রাইফেল থেকে অসাবধানতাবশত গুলি বের হয়ে যায়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

মোটরসাইকেল ঠিক করতে না পারায় মেকানিককে পুলিশের গুলি

আপডেট সময় ০৬:৩৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

যশোরের ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল ঠিক করে দিতে না পারায় এক মেকানিককে লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিওরদাহ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের নাম রিকন হোসেন। তিনি শিওরদাহ পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত।

ঘটনার শিকার রিপন হোসেন যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শিওরদাহ গ্রামের মতিয়ার হোসেনের ছেলে। বাজারে তার তরকারির দোকান আছে। পাশাপাশি তিনি মোটরসাইকেলের ছোটখাটো মেরামতের কাজ করতেন।

অভিযোগকারীর দাবি, গুলি করার আগে তাকে লাঠি দিয়ে বেদম মারা হয়। লাঠির আঘাতে তার কান ফেটে রক্তাক্ত হয়েছে।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ওই পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় তারা ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেয়। পরে নাভারণ সার্কেলের এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান এবং ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সকালে ওই পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেল স্টার্ট হচ্ছিল না। শিওরদাহ বাজারের মেকানিক রিপনের কাছে আনলে তিনি জানান, তিনি এটা ঠিক করতে পারবেন না। ভালো মেকানিক দেখাতে হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ সদস্য তাকে লাঠি দিয়ে বেদম মারেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করতে যান। তবে পাশের এক দোকানি রাইফেলের নল ধরে ফেললে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে এ ঘটনায় গুলির বারুদের আগুনে পানিসারা গ্রামের আজিজ নামের এক ভ্যানচালক আহত হন। তার ডান কাঁধের একটি অংশ পুড়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রাইফেলের নল ধরে ফেলা দোকানি তুষার বলেন, আমি ওষুধ আনতে গেছিলাম। গিয়ে দেখি ওই পুলিশ লাঠি দিয়ে রিপনকে মারছে আর দোকান থেকে বের হতে বলছে। এসময় সে হুমকি দিতে থাকে বের না হলে গুলি করবে। পরে আমি রাইফেলের বাট ধরে ফেলায় সে গুলি করলেও সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশের পাথরের কুচির স্তূপে লাগে।

প্রত্যক্ষদর্শী রাজমিস্ত্রী তাইজেল হোসেন বলেন, রিপনকে মারতে মারতে ওই পুলিশ বলে দোকান থেকে বের না হলে গুলি করে দেব। আর আশপাশের লোকজনকে হুমকি দিতে থাকে এগোলেই গুলি করবে। পরে তিনি গুলি করেন।

ঘটনাস্থলের পাশের এক দোকানি বলেন, আমি এখানে এসে দেখি তুষার ওই পুলিশের রাইফেল ধরে রেখেছে আর পুলিশ চারপাশে রাইফেল ঘুরাচ্ছে আর বলছে গুলি করে দেব। আমি যেতে না যেতেই তিনি গুলি করে দেন।

ভুক্তভোগী রিপনের বাবা মতিয়ার হোসেন বলেন, ছেলেকে বিনা অন্যায়ে পুলিশ মেরেছে। সে মেকানিক না, তরকারি বিক্রি করে। তবে টুকটাক মোটরসাইকেলের কাজ জানে। ওর অপরাধ শুধু বলেছে এ কাজ আমি করতে পারবো না। এতে সাদা লাঠি দিয়ে ছেলেকে মেরেছে, দোকান ভাঙচুর করেছে। পাশের এক দোকানদার বন্দুক ধরে ফেলায় ওর গায়ে গুলি লাগেনি।

ঝিকরগাছা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের একজন পুলিশ সদস্য যশোরে ডিউটিতে যাচ্ছিলেন। পথে তার মোটরসাইকেল নষ্ট হলে শিওরদাহ বাজারে গ্যারেজে যান। সেখানে লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি হয়। পরে তার কাছে থাকা একটি রাইফেল থেকে অসাবধানতাবশত গুলি বের হয়ে যায়।