বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দিতে চেয়েছিলেন। ইউরেনিয়াম কারো মাথায় ঢেলে দেওয়া হলে সে তেজস্ক্রিয়তায় মারা যাবে। ইউরেনিয়াম নিয়ে ওনার কোনো জ্ঞান নেই। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইউরেনিয়াম কত প্রকার ও কী কী ওবায়দুল কাদের কি জানেন? এই সম্পর্কে সে অজ্ঞানী। অজ্ঞান ব্যক্তির অজ্ঞান কথা! একজন উন্মাদ ব্যক্তির পাগলের প্রলাপ! ইউরেনিয়াম ঢেলে কি তাহলে উনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন? পরিষ্কার ভাষায় জাতির সামনে বলে দিতে চাই, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের আপনি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরকে রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিষ্টাচার শিখেন। রাজনীতি করেন যেহেতু তাই রাজনৈতিক কাজকর্ম করেন।
বিএনপি একটা ভদ্রলোকের দল। আপনি যেভাবে কথা বলছেন, এটা কোনো সভ্য লোকের দল না। কয়েক দিন আগে বললেন, টুপ করে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দিবেন, এটা কি আমরা ভুলে গেছি? আমরা জাতির বিবেকের কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম, একদিন আইনের আদালতে এর বিচার হবে। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে আব্বাস বলেন, ‘নিরুপায় হয়ে এক বেলা না খেয়ে থাকছে মানুষ।
ডিমের দাম ৫০-৬০ টাকা হালি, চালের দাম ৭০-৮০ টাকা। বাজারে সবজি ভরা, কিন্তু কেনার মতো ক্রেতা নেই। কারণ ক্রেতার হাতে টাকা নেই। টাকা সব বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জনগণ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জানে জনগণ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
তাই ক্ষমতা বাঁচাতে আওয়ামী লীগ নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। তাই আজকে আমরা একটা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। এরা (আওয়ামী লীগ) ১৫ বছর যাবৎ অত্যাচার করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০ লাখ নেতার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এত লোককে জেলে দেওয়ার জায়গা নাই। কিন্তু আমি জানি, জেলখানায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ লোককে জায়গা দেওয়া সম্ভব। যখন আমি কোর্টে যাই, তখন দেখি কোর্টের আশপাশে অনেক ভিড়। এই ভিড় আমি বাজারেও দেখি নাই। এমনকি ঈদের বাজারেও দেখি নাই, যেই ভিড় কোর্টে দেখি। কোর্টের কোথাও লোক বসার জায়গা নেই, সব বিএনপির লোক। আওয়ামী লীগ গায়েবি মামলা দিয়ে এবং কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেবে। এই হলো তাদের দায়িত্ব!’
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার ভাইয়েরা, যখন সবাইকে সরকার জেলে নেবে তখন যারা বাইরে থাকবেন আপনারা আন্দোলন করে সরকারকে তছনছ করে দেবেন। আমি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখন স্বৈরাচার যতই কর্তৃত্ববাদী হয়েছে আন্দোলন ততই বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি রাখলে, পতন হবেই।’
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।