ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সারাদেশ

বাঘায় তীব্র গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের

বাঘায় তীব্র গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের। ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি। ছবি: আবুল হাশেম

প্রকৃতিতে এখন চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস। এই সময়টাতে বারোমাসি ফলের পাশাপাশি বাজারে নানা জাতের আম ও লিচুর ছড়াছড়ি। সেই সঙ্গে গরমে স্বস্তি পেতে রাজশাহীর বাঘায় কদর বেড়েছে স্বাদে ভরপুর তালের শাঁসের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই তালের শাঁস বেচাকেনার ধুম পড়েছে। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি তালের ডাব নামেই পরিচিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর এলাকার বাজারে এবং মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে রসালো তালের শাঁস। গরমে স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া তালের শাঁসের স্বাদ নিচ্ছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। পুষ্টিগুণে ভরা তালের শাঁস বেচাকেনার ধুম পড়েছে। কেউ কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েই এই ফল খাচ্ছেন। আবার অনেকেই এই ফল কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে খেতে। অনেকেই সবান্ধবে এসেছেন রসালো তালের শাঁসের স্বাদ নিতে।

জানা গেছে, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ ও প্রচুর পরিমাণে পানি। এটা খেলে পুষ্টি ও ভিটামিন পাওয়ার পাশাপাশি শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ৮০ শতাংশ পানি। আর রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বহাইড্রেট। আরও আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ও ফসফরাস জাতীয় খনিজ উপাদান।

উপকারী এ তালের শাঁসে মেলে নানা রোগের উপশম। এ ফল শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। দাঁত ভালো রাখতে ও হাঁড়ের গঠন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এ ফল। ত্বক শুষ্ক হওয়া ও চুল পড়া রোধে এ ফলটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এটি মানবদেহের কোষের ক্ষয়রোধে কাজ করে। এ ফলে শরীরের ক্লান্তি দূর করে। রক্তশূন্যতা দূর করতে এ ফল সাহায্য করে। আঁশযুক্ত হওয়ায় এ ফলটি অন্ত্র ভালো রাখতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এ ফলে ভিটামিন এ থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে সাহায্য করে। এ ফলটিতে উপকারী ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও সি থাকায় এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও এ ফল লিভারের সমস্যা দূর করতে ও লিভারের ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।

বাঘা বাজারের এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রতিবছরই আমি এ সময়টাতে এই মৌসুমি ব্যবসা করে আসছি। এই উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব তালের ডাব (শাঁস) সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাটবাজার ও মোড়ে মোড়ে বিক্রি করি। ছোট-বড় হিসেবে ২০ টাকা ও ১০ টাকা করে প্রতি পিস তালের ডাব (শাঁস) বিক্রি করছি। গরমের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের চাহিদা বেড়েছে।

এক তাল ক্রেতার সাথে কথা বললে তিনি জানান , তালের শাঁস একটি উপকারী ও সুস্বাদু খাবার। এ উপজেলাসহ সারাদেশেই এর চাহিদা রয়েছে। তবে, অপরিকল্পিতভাবে তালের শাঁস বিক্রির ফলে পরিপক্ব তালের সময় তাল সংকট দেখা দেয়। এতে সে সময় তালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে যায়। যার ফলে অনেক পরিবারই পাকা তালের স্বাদ নেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।

মেডিকেল অফিসার ডাঃ সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, তালের শাঁস একটি পুষ্টিকর ফল। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ। এটি মানব শরীরের জন্য উপকারী। এটি রসালো হওয়ায় শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে সহায়তা করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এই ফল চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সহায়তা করে।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘ভিক্ষা করব না’ মুচলেকা দিয়ে হজ-ওমরাহতে যেতে হবে পাকিস্তানিদের

সারাদেশ

বাঘায় তীব্র গরমে চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের

আপডেট সময় ১০:২৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪

প্রকৃতিতে এখন চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস। এই সময়টাতে বারোমাসি ফলের পাশাপাশি বাজারে নানা জাতের আম ও লিচুর ছড়াছড়ি। সেই সঙ্গে গরমে স্বস্তি পেতে রাজশাহীর বাঘায় কদর বেড়েছে স্বাদে ভরপুর তালের শাঁসের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই তালের শাঁস বেচাকেনার ধুম পড়েছে। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি তালের ডাব নামেই পরিচিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর এলাকার বাজারে এবং মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে রসালো তালের শাঁস। গরমে স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া তালের শাঁসের স্বাদ নিচ্ছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। পুষ্টিগুণে ভরা তালের শাঁস বেচাকেনার ধুম পড়েছে। কেউ কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েই এই ফল খাচ্ছেন। আবার অনেকেই এই ফল কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে খেতে। অনেকেই সবান্ধবে এসেছেন রসালো তালের শাঁসের স্বাদ নিতে।

জানা গেছে, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ ও প্রচুর পরিমাণে পানি। এটা খেলে পুষ্টি ও ভিটামিন পাওয়ার পাশাপাশি শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ৮০ শতাংশ পানি। আর রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বহাইড্রেট। আরও আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ও ফসফরাস জাতীয় খনিজ উপাদান।

উপকারী এ তালের শাঁসে মেলে নানা রোগের উপশম। এ ফল শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। দাঁত ভালো রাখতে ও হাঁড়ের গঠন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এ ফল। ত্বক শুষ্ক হওয়া ও চুল পড়া রোধে এ ফলটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এটি মানবদেহের কোষের ক্ষয়রোধে কাজ করে। এ ফলে শরীরের ক্লান্তি দূর করে। রক্তশূন্যতা দূর করতে এ ফল সাহায্য করে। আঁশযুক্ত হওয়ায় এ ফলটি অন্ত্র ভালো রাখতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এ ফলে ভিটামিন এ থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে সাহায্য করে। এ ফলটিতে উপকারী ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও সি থাকায় এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও এ ফল লিভারের সমস্যা দূর করতে ও লিভারের ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।

বাঘা বাজারের এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রতিবছরই আমি এ সময়টাতে এই মৌসুমি ব্যবসা করে আসছি। এই উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব তালের ডাব (শাঁস) সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাটবাজার ও মোড়ে মোড়ে বিক্রি করি। ছোট-বড় হিসেবে ২০ টাকা ও ১০ টাকা করে প্রতি পিস তালের ডাব (শাঁস) বিক্রি করছি। গরমের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের চাহিদা বেড়েছে।

এক তাল ক্রেতার সাথে কথা বললে তিনি জানান , তালের শাঁস একটি উপকারী ও সুস্বাদু খাবার। এ উপজেলাসহ সারাদেশেই এর চাহিদা রয়েছে। তবে, অপরিকল্পিতভাবে তালের শাঁস বিক্রির ফলে পরিপক্ব তালের সময় তাল সংকট দেখা দেয়। এতে সে সময় তালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে যায়। যার ফলে অনেক পরিবারই পাকা তালের স্বাদ নেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।

মেডিকেল অফিসার ডাঃ সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, তালের শাঁস একটি পুষ্টিকর ফল। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ। এটি মানব শরীরের জন্য উপকারী। এটি রসালো হওয়ায় শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে সহায়তা করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এই ফল চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সহায়তা করে।