হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মোহাম্মদ মোখবের। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন। তিনি দুই মাস এই দায়িত্ব পালন করবেন। ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।
এর আগে সোমবার (২০ মে) সকালে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য আরোহীরা হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন। রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম প্রেসটিভি, আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ, তাসনিম নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে তাদের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে… দুর্ভাগ্যবশত কোনো আরোহীরই বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এর আগে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানান, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির বিধ্স্ত হওয়ার স্থানের খোঁজ পেয়েছেন তারা। অপরদিকে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, পরিস্থিতি ভালো নয়। এরপরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল।
রাইসিকে একজন কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। এ কারণে তিনি সরকার-বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখেও পড়েছেন। বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় তিনি কঠোর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।
অনেকে মনে করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরসূরি হওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করছিলেন। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ নেতা তাকে বিচার বিভাগের প্রধানের শক্তিশালী পদে নিযুক্ত করেন। বিশেষজ্ঞদের অ্যাসেম্বলির ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবেও নির্বাচিত হন রাইসি। ইরানে ৮৮ সদস্যের এই বোর্ড দেশটির পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করে থাকে।
রোববার আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
প্রেসিডেন্টের বহরে মোট তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করলেও রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।