সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে ডিমের দাম পাতা প্রতি (৩০ পিস) ৫০ টাকা বেড়েছে। সে হিসাবে প্রতি পিসে দাম বেড়েছে ১ টাকা ৬৬ পয়সা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি পিস ১০ টাকা হিসাবে এক পাতা লাল ডিম ৩০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৫০ টাকায় হয়েছে। তবে খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সিন্ডিকেট করেই দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোকামে কোম্পানিগুলো চাহিদামতো ডিম সরবরাহ করছে না। এ কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। দাম আরো বাড়বে।
হিলি বাজারে ডিম কিনতে আসা হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। মাছ-মাংসের যে দাম, তাতে এসব আমাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই বললেই চলে। একমাত্র ডিমই ছিল আমাদের নাগালের মধ্যে। সেই ডিম কয়েক দিন আগে কিনলাম ১০ টাকা পিস। ডিম কিনতে এসে শুনি প্রতি পাতা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। কয়েক দিনের ব্যবধানে পাতাপ্রতি ৫০ টাকা করে বেড়েছে।’
রিমা নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ডিম এখন বড়লোকি খাবার, গরীবের কপালে এখন ডিমও আর জুটবে না, আমরা খাবো কি?‘দিন দুয়েক আগেও যেই ডিম কিনলাম প্রতি পিস ১০ টাকা করে। সেই ডিমের দাম এখন ১২ টাকা হয়ে গেছে।’
ডিম বিক্রেতা সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ঈদের আগে ডিমের দাম কম ছিল। তবে ঈদের পর থেকে ডিমের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। আমরা সাধারণত রংপুর বা নীলফামারী থেকে ডিম নিয়ে আসি। কিন্তু হঠাৎ করেই মোকামগুলো থেকে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ডিম দিচ্ছে না। প্রতিদিনের ডিমের যা চাহিদা, তার চেয়ে অর্ধেক দিচ্ছে। যেখানে আগে এক গাড়িতে ডিম আসত ৩০ হাজার পিস, এখন সেখানে মোকামে ডিম দিচ্ছে ২০-২৪ হাজার পিস। ছোট দোকানিদের আগে ১২৫-২৫০ পাতা ডিম সরবরাহ করা হতো। এখন দিচ্ছে ৫০-৬০ পাতা করে। কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক ফার্মের মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। এ কারণে ডিম উৎপাদন কম। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কমের অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এজন্য আমাদের বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং কেউ যেন কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত বাজার তদারক করা হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে দাম বেশি নেয়া বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেলে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’