কুমিল্লার দেবিদ্বারে দাবি করা চাঁদা না পেয়ে এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার ছেলেকে মারধর করে তার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি শনিবার (২৭ এপ্রিল) উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের উজানিকান্দি গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুর রহমান মান্নানের বাড়িতে সংঘটিত হয়। ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার অত্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মান্নানের ছেলে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন সরকার বাদী হয়ে ৮-৯ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ মামলার দুই নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার সকালে মোস্তফাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কুমিল্লা জেলহাজতে নেওয়ার আদেশ দেন। গোলাম মোস্তফা কুমিল্লার উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের ভাগ্নে।
অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মান্নানের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশি মোবারক হোসেনের জমিসহ নানা বিষয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে বিভিন্ন সময়ে বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসে মান্নানের পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া তার ছেলে রুহুল আমিনের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন মোবারক। শনিবার দুপুরে মোবারক হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৮-৯ জনের একটি দল হকস্টিক, গ্যাসপাইপ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মান্নানের বাড়ি গিয়ে তার ছেলের কাছে আবারও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পাড়ায় মান্নান, তার ছেলে রুহুল আমিন ও ভাতিজা মো. শাকিল সরকারকে এলোপাতাড়ি মারধরে করেন তারা। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
মামলার বাদী রুহুল আমিন বলেন, ‘গোলাম মোস্তফা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার ভাগিনা হওয়ার সুবাধে এলাকায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। সে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দেওয়ার জন্য আমাকে হুমকী দিয়ে আসছে। চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকী দেয় তারা। শনিবার বাড়িতে এসে চাঁদা চাইলে আমি দিতে অস্বীকৃতি জানাই। পরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাসহ আমাদের মারধর করে আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা তিনটি অলিখিত স্ট্যাম্পে জোরপূর্বকভাবে স্বাক্ষর নেয়।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা রোশন আলী মাস্টারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমানের ওপর হামলার অভিযোগে মামলার পর গোলাম মোস্তফা সরকার নামের এক আসামিকে রবিবার গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’