ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রদান খবর:

মানবজমিন:

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা
ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ বাড়ছে সরকারের এ ঋণ গ্রহণ মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকনির্ভর। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ২২শে এপ্রিল পর্যন্ত বাণিজিক ব্যাংক থেকে সরকার নিয়েছে ৬৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিশোধ করেছে ১৯ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। এতে নিট ঋণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেখানে ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম ৭ মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার চেয়ে পরিশোধ বেশি ছিল ১২০ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমে যাওয়া, আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়া, বিদেশি ঋণ পরিশোধে খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে এখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। অবশ্য ঋণের সবই নেয়া হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ না বেড়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা কমেছে। এর মধ্যে আবার ডলারের উচ্চ দরের কারণে বিদেশি ঋণ পরিশোধে সরকারের খরচ অনেক বেড়েছে। আবার আশানুরূপ বিদেশি ঋণও আসছে না। যে কারণে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে সরকারকে কিছু ঋণ নিতে হচ্ছে। অবশ্য সরকারের এ ঋণ চলতি অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় খুব কম।
সঞ্চয়পত্রের চেয়ে এখন ট্রেজারি বিল ও বন্ডে সুদহার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার বিল বন্ডের সুদ আয়ের বিপরীতে কোনো কর দিতে হয় না। এখানে কেনারও নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। যে কারণে এখন বিনিয়োগকারীদের অনেকে সঞ্চয়পত্র থেকে টাকা তুলে বিল ও বন্ডে রাখছেন। ফলে অন্য সব ব্যবস্থার চেয়ে এখানে সুদহার বাড়ছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ধার কেন বেড়েছে, এ বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংকের এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সরকার সাধারণত বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রির মাধ্যমে ধার নিয়ে থাকে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আগের মতো সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ড কিনছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এসব বিল ও বন্ড কিনতে হয়। তিনি বলেন, সরকারকে ঋণ দিলে এসব বিষয় নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা করতে হয় না। ব্যাংকগুলোর জন্য এটা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ ঋণ পরিশোধ নিশ্চিত করা হয়। এসব কারণে রাষ্ট্রায়াত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোও ঋণ দেয়ার বদলে সরকারি বিল ও বন্ড কেনার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।

বর্তমানে ৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদের হার ১১.৩৫ শতাংশ থেকে ১১.৫০ শতাংশ। এ ছাড়া ২ থেকে ২০ বছর মেয়াদি বন্ডে বিনিয়োগ করে ১২ শতাংশ থেকে ১২.২৫ শতাংশ সুদ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে সাধারণ ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সুদ নিতে পারছে সর্বোচ্চ ১৩.৫৫ শতাংশ।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।

কালের কন্ঠ:

দাদা এমদাদের দাদাগিরি দুদকের জালে
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) এমদাদুল হক ওরফে দাদা এমদাদ যেন হাতে পেয়েছেন রূপকথার আশ্চর্য প্রদীপ, যার ছোঁয়ায় রাজধানী, পাশের
রূপগঞ্জ এবং জন্মস্থান সিরাজগঞ্জে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক যুগের বেশি সময় ধরে সাবেক মন্ত্রীর এপিএসের চাকরিতে থাকাকালে সম্পদের পাহাড় গড়েন তিনি। শুধু সিরাজগঞ্জে তাঁর প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জেও রয়েছে তাঁর বিপুল সম্পদ।

ড্রেজার ব্যবসার পাশাপাশি তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে আবাসন খাতেও। জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে রূপগঞ্জের মাদক সাম্রাজ্যও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। এসব খাত থেকে অর্জিত অবৈধ অর্থে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন দাদা এমদাদ।
তবে দাদা এমদাদের এসব অবৈধ সম্পদ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে
তাঁর অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে তাঁকে তলব করে চিঠিও দিয়েছে দুদক। তবে কৌশলে তিনি কালক্ষেপণ করছেন। দুদক সূত্র জানায়, অর্জিত সম্পদের তথ্য চেয়ে তাঁকে যে চিঠি দিয়েছে দুদক, তার উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এমদাদ।

নয়াদিগন্ত:

তাপমাত্রায় নতুন রেকর্ড
তাপপ্রবাহের এক মাস

– চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা
– উত্তাপ বাড়তে পারে কয়েক দিন
– মে’র মাঝামাঝি ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা

তাপপ্রবাহের আরো একটি রেকর্ড গড়লো চুয়াডাঙ্গা। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে দেশে এত বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড আর কোথাও হয়নি। অন্য দিকে দেশে চলমান তাপপ্রবাহের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ ৩০ এপ্রিল।
বিশিষ্ট আবহাওয়া গবেষক আমেরিকান জুলি এ্যান রিগলি গ্লোবাল ফিউচার ল্যাবরেটরির সিনিয়র গ্লোবাল সায়েন্টিস্ট ড. রাশেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বর্তমানে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনু থেকে লা নিনার একটি পরিবর্তনের পর্যায় চলছে। এই পরিবর্তনের প্রবণতায় বাংলাদেশে একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে এবং এটা হতে পারে মে’র মাঝামাঝিতে।
গনগনে এই তীব্রতাপে বাইরে বেরুলে অনেকের গায়ের ত্বকে লাল র‌্যাশ উঠে যাচ্ছে, কারো কারো ত্বকে ফোস্কা পড়ে গেছে। যেসব গাছে পানি দেয়া সম্ভব হয় না সেগুলোর পাতা শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ ধানগাছের পাতা মরে যাচ্ছে। আমের ছোট ছোট মুকুল শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে। নয়া দিগন্তের রাজশাহী প্রতিনিধি আমচাষিদের সাথে কথা বলে জানিয়েছেন, চাষিরা বলছেন, সময় মতো কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। যারা গাছের গোড়ায় পানি দিতে পারছেন তারা হয়তো ভালো ফলন পেতে পারেন।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে, আজ মঙ্গলবারও সারা দেশেই উচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো ছাড়া। এর আগে আবহাওয়া বিভাগ আজ মঙ্গলবারের জন্য পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাবে। কিন্তু নতুন করে আবার বলছে, আজ মঙ্গলবার দেশে মৃদু থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো জেলায় অতি তীব্রতাপমাত্রা বিরাজ করবে পারে। আজ মঙ্গলবার অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও রাজশাহী জেলায়। এই চার জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠে যেতে পারে। যেহেতু অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এই চার জেলায়, সে কারণে এই জেলাগুলো অথবা এর আশপাশের সব জেলার বাসিন্দাকে নিজেদের সুস্থ রাখার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মেডিসিনের চিকিৎসকরা। ঠাণ্ডার মধ্যে নিজেকে রাখতে হবে, দুপুরের গনগনে সময়টায় ঘরে বিশ্রাম করে বিকেলের দিকে অথবা সন্ধ্যার পরে করতে পারলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

এত এত সাবধানবাণী উচ্চারণের পরও সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ এই দুপুরের রোদে কাজে বেরিয়েছেন। সাথে যথেষ্ট পরিমাণে পানি নেয়া এবং পেট ভরে পানি পানের পরও অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কর্মস্থলে পড়ে গেছেন এমন খরব পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে মৃত্যুও হচ্ছে অতি তীব্র গরমের তাপপ্রবাহ সহ্য করতে না পেরে।
তীব্র এই গরমের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর অধিকাংশে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠলেও গতকাল যশোরে উঠেছে ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঈশ্বরদীতে ৪২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছে। গতকাল ঢাকা বিভাগের তাপমাত্রাও বেশি ছিল। এ বিভাগের মধ্যে ফরিদপুরে উঠেছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গোপালগঞ্জে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, টাঙ্গাইলে ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সবচেয়ে স্বস্তিতে ছিলেন সিলেট বিভাগের অধিবাসীরা। সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অবশ্য সিলেটে গতকাল সকালের দিকে এবং মৌলভীবাজারে মোটামোটি ধরনের বৃষ্টি হয়ে পরিবেশ বেশ সিক্ত রেখেছে। এ দিকে গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির জন্য ইসতিস্কার নামাজ হয়েছে। কড়া রোদে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি করেছেন মুসল্লিরা।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

কারাগারেও মাদকের আখড়া
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের প্রধান ফটকে তল্লাশি করা হয় ওই কারাগারেরই প্রধান কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে। একাধিক সংস্থার সদস্যের উপস্থিতিতে তল্লাশির সময় সাইফুলের কাছে ৩০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে কারা প্রশাসন। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগে একই কারাগারে সোহেল রানা নামের আরেক কারারক্ষীর হেফাজত থেকে চারটি গাঁজার প্যাকেট জব্দ করে কারা প্রশাসন। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারই হেফাজত থেকে ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তাকেও কারা কর্তৃপক্ষ পুলিশে সোপর্দ করে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে কাশিমপুর কারাগার-২-এর এক রক্ষীকে ২০০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করা হয়।

চলতি বছরের শুরুতে গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর-১ কারাগারে ঠাঁই হয়েছিল অমিয় হাজরা (ছদ্মনাম) নামের এক হাজতির। টানা এক মাস ১০ দিন কারাভোগের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে বের হয়ে আসেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি জানান, কী লাগবে আপনার? সবকিছুই পাওয়া যায় কারাগারে। বিশেষ করে মাদক ব্যবসা তো ওপেন সিক্রেট। কাশিমপুরের বেশির ভাগ কারারক্ষী মাদক ব্যবসায় জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে এমন বন্দিদের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, কালেভদ্রে অভিযান হয়। তাও আবার লোকদেখানো। এদিকে রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা এবং ভাটারা এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ওরফে ভাস্তে রাসেল কারাগারে থেকেও সক্রিয় ছিলেন মাদক ব্যবসায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতার হওয়া ভাস্তে রাসেলের কাছে নিয়মিত মাদক সরবরাহ করতেন তারই সহযোগীরা। ব্যবহার করা হতো কারারক্ষীদের। কারারক্ষীও মাদক বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করেন বিশ্বস্ত কয়েদিদের। একাধিক সংস্থার কর্মকর্তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে তার যোগাযোগের বিষয়টি নজরদারি করে অবাক করা তথ্য পান। রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছিল গোয়েন্দাদের। গতকালই এ বিষয়ে এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ভাস্তে রাসেলের মাধ্যমে কারা অভ্যন্তরের অনেক তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

জানা গেছে, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪২ হাজার ৮৬৬ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে ৮২ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ হলো মাদক মামলার আসামি। যাদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। গত দুই দিন আগে শরীয়তপুর জেলা কারাগার থেকে আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পান একজন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কারাগারে ৪০০ আসামির মধ্যে ৩০০ জনই মাদক মামলার।

দৈনিক সংগ্রাম:

ইসলামী শ্রমনীতি চালু করার মাধ্যমেই শ্রমিক সমাজের প্রকৃত মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে – ডা. শফিকুর রহমান
১ মে “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস” তথা ‘মে দিবস’ পালনের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল সোমবার দেয়া তিনি বলেন, আগামী ১ মে ‘মে দিবস’। ১৮৮৬ সালের ১ মে আমেরিকার শিকাগো শহরে শ্রমিক সমাজ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। বিশ্বের শ্রমিক সমাজ তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এখনো তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে আসছে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সে আন্দোলন আজও পুরোপুরি সফলতা লাভ করেনি। প্রায় সময় শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য বেতন-ভাতার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করতে দেখা যায়। এমনকি ন্যায্য পাওনা আদায় করতে গিয়ে তাদের মূল্যবান জীবনও দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণের পরিবর্তে মালিক পক্ষ নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকরাও তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করে। এমনকি অগ্নিসংযোগের ঘটনাও সংঘটিত হয়, যা নিতান্তই দুঃখজনক। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, এ কথা আজ অত্যন্ত স্পষ্ট যে, মানবরচিত কোনো মতবাদই মানুষের সমস্যার সঠিক সমাধান দিতে সক্ষম নয়। ‘শ্রমিকদের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার জন্য’ রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোর তাকিদ দিয়েছেন। শ্রমিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনা বাস্তবায়নের মধ্যেই মালিক-শ্রমিক উভয়ের জন্যই প্রকৃত কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে শ্রমিক সমাজ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত। কল-কারখানা ও উৎপাদন সেক্টরগুলোতে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব এক ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। বেতনসহ ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের অনেক ক্ষেত্রে ছাঁটাই করা হচ্ছে, হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এবং অনেককে গুলী করে আহত ও নিহত করা হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটানো প্রয়োজন। আমরা মনে করি, ইসলামী শ্রমনীতি চালু করার মাধ্যমেই শ্রমিক সমাজের প্রকৃত মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে এবং মালিকদের স্বার্থও সংরক্ষিত হতে পারে।

দেশে বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে ১ মে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ তথা ‘মে দিবস’ পালনের জন্য দেশের সর্বস্তরের শ্রমজীবী সমাজ ও দেশবাসীর প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।

বনিকবার্তা:

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি
দেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এদিকে আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা আরো বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিছুটা বাড়তে পারে আগামীকালও। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে ঢাকায় এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটাকে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। এর বেশি হলে সেটাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। সেই হিসাবে গতকাল চুয়াডাঙ্গার বাইরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল যশোর (৪২ দশমিক ৮), রাজশাহী (৪২ দশমিক ৬) ও পাবনায় (৪২ দশমিক ৫)।

সমকাল:

ঋণ জালিয়াতিতে এবার ‘ছক্কা’ সাদ মুসার
সাদ মুসা গ্রুপ। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এই শিল্পগোষ্ঠীর নেই খুব একটা নামডাক। তবে কাজের কাজ ঠিকই সেরে ফেলেছেন গ্রুপটির কর্ণধার মুহাম্মদ মোহসিন। তিনি ব্যাংক খাতে ‘সুচ হয়ে ঢুকে ফাল’ হয়ে বের হয়েছেন। তাঁর জোচ্চুরির কাছে আলোচিত ক্রিসেন্ট, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ কেলেঙ্কারিও ফেল। স্বেচ্ছা ঋণখেলাপির নতুন ‘রাজা’ এখন তিনি। গেল এক দশকে রপ্তানিতে কাঁচামাল কেনাবেচা দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছেন ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার ঋণ। এ ঋণের সবটাই এখন খেলাপি।

ঠগবাজি করে নেওয়া ঋণ ব্যবসায় না খাটিয়ে চতুর মোহসিন দেশে কিনেছেন জমি-ফ্ল্যাট। পাচারের টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রধান কার্যালয় বা শাখার সহায়তায় সাদ মুসা গ্রুপকে ঋণ দিয়ে দেশের ২৪ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন মহাবিপদে। বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশে মুহাম্মদ মোহসিনের নানা জালিয়াতির কীর্তি উঠে এসেছে সমকালের অনুসন্ধানে।

সাদ মুসা গ্রুপের ধোঁকায় সবচেয়ে বোকা বনেছে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংক (এনবিএল)। অনিয়মও বেশি হয়েছে এ ব্যাংকের ঋণে। এনবিএলের আগ্রাবাদ শাখায় গ্রুপটির চার প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। মোহসিন খেলাপির তথ্য লুকিয়ে সাদ মুসা গ্রুপের কর্মকর্তা ও চাচাতো ভাই মঈন উদ্দীন আহমেদ চৌধুরীকে এমডি দেখিয়ে ‘রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিল’ নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। পরে রেডিয়ামের নামে এনবিএল থেকে নেন ৭৫৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে ভুয়া বিল বেচাকেনায় রেডিয়াম কম্পোজিট ও সাদ মুসা গ্রুপের কর্মচারী মোহাম্মদ শওকত আলীর নামে খোলা ইইএসএম করপোরেশনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয় সবচেয়ে বেশি। আর করোনার প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের সুদ ভর্তুকির আওতায় দেওয়া প্রণোদনা ঋণের ১৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যবসায় না লাগিয়ে নগদে তুলে নেওয়া হয়েছে। এনবিএলের বাইরে ১৬টি ব্যাংক সাদ মুসা গ্রুপকে ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৬৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে এখন গ্যাঁড়াকলে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুহাম্মদ মোহসিন ঋণের বেশির ভাগই নিয়েছেন ২০১২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে। রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল কেনার জন্য একের পর এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলেও শুধু আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকার রপ্তানি হয়েছে।

যেসব কারখানার নামে এত টাকার ঋণের আয়োজন, এর সবই এখন বন্ধ

কালবেলা;

মন্ত্রীর ঘোষণার পরও মামলা জট বেড়েছে ছয় লাখ

তিন বছর আগে দেশের সব আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এক বছরের মধ্যে ৬ লাখ কমিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সারা দেশে ৩৭ লাখ মামলা বিচারাধীন ছিল। এরপর তিন বছর পার হলেও মামলাজট তো কমেনি, উল্টো ৬ লাখ বেড়ে গেছে।

প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের বিচারাধীন মামলার স্তূপ পৌঁছেছে ৪৩ লাখে। এর মধ্যে অধস্তন আদালতগুলোয় ৩৭ লাখ ৩০ হাজার মামলা বিচারাধীন ছিল। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলা প্রায় ৬ লাখ। ২০১২ সালে বিচারাধীন মামলা ছিল ২১ লাখ ৩৫ হাজার। এক যুগের ব্যবধানে বিচার বিভাগে মামলার জট বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর ২০০৭ সালের নভেম্বরে বিচার বিভাগ পৃথককরণের সময় বিচারাধীন মামলা ছিল মাত্র ১৫ লাখ। অর্থাৎ পৃথককরণের পর ১৬ বছরে মামলার জট ২৮ লাখ বেড়েছে।

মামলাজট কমানোর সেই ঘোষণার কথা মনে করিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল সোমবার কালবেলাকে বলেন, ‘মামলাজট কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি আইনমন্ত্রী।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বিদ্যমান আইনি জটিলতা ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা জটিল আকার ধারণ করেছে। কোনো কোনো মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে বিচারপ্রার্থীকে এক যুগ, দুই যুগ—এমনকি তিন যুগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিচার বিলম্বের কারণে একদিকে মামলা পরিচালনার ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি। কিছু কিছু মামলার বাদী বিচার শেষ হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছেন। আবার বিচার হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে মামলার অনেক তথ্য-প্রমাণ হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো মামলার সাক্ষী মারা যাচ্ছেন। কিছু মামলার সাক্ষীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে বিচার শেষে সাজার হার কমে যাচ্ছে। বহু বছরের পুঞ্জীভূত সমস্যা বর্ধিত হয়ে বর্তমানে অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। শুধু বিচার বিলম্বের কারণে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার লাভের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলেও মনে করছেন অনেকেই।

তারা বলছেন, বিচার বিভাগের এই সংকট এড়াতে হলে পরিকল্পিত উপায়ে দ্রুত নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় বিচার বিভাগে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেখা দেবে

জনপ্রিয় সংবাদ

সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ বেশকিছু সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় ০৯:২০:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রদান খবর:

মানবজমিন:

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা
ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ বাড়ছে সরকারের এ ঋণ গ্রহণ মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকনির্ভর। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ২২শে এপ্রিল পর্যন্ত বাণিজিক ব্যাংক থেকে সরকার নিয়েছে ৬৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিশোধ করেছে ১৯ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। এতে নিট ঋণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেখানে ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়েছে ৩ লাখ ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম ৭ মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার চেয়ে পরিশোধ বেশি ছিল ১২০ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমে যাওয়া, আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়া, বিদেশি ঋণ পরিশোধে খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে এখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। অবশ্য ঋণের সবই নেয়া হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ না বেড়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা কমেছে। এর মধ্যে আবার ডলারের উচ্চ দরের কারণে বিদেশি ঋণ পরিশোধে সরকারের খরচ অনেক বেড়েছে। আবার আশানুরূপ বিদেশি ঋণও আসছে না। যে কারণে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে সরকারকে কিছু ঋণ নিতে হচ্ছে। অবশ্য সরকারের এ ঋণ চলতি অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় খুব কম।
সঞ্চয়পত্রের চেয়ে এখন ট্রেজারি বিল ও বন্ডে সুদহার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার বিল বন্ডের সুদ আয়ের বিপরীতে কোনো কর দিতে হয় না। এখানে কেনারও নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। যে কারণে এখন বিনিয়োগকারীদের অনেকে সঞ্চয়পত্র থেকে টাকা তুলে বিল ও বন্ডে রাখছেন। ফলে অন্য সব ব্যবস্থার চেয়ে এখানে সুদহার বাড়ছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ধার কেন বেড়েছে, এ বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংকের এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সরকার সাধারণত বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রির মাধ্যমে ধার নিয়ে থাকে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আগের মতো সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ড কিনছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এসব বিল ও বন্ড কিনতে হয়। তিনি বলেন, সরকারকে ঋণ দিলে এসব বিষয় নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা করতে হয় না। ব্যাংকগুলোর জন্য এটা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ ঋণ পরিশোধ নিশ্চিত করা হয়। এসব কারণে রাষ্ট্রায়াত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোও ঋণ দেয়ার বদলে সরকারি বিল ও বন্ড কেনার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।

বর্তমানে ৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদের হার ১১.৩৫ শতাংশ থেকে ১১.৫০ শতাংশ। এ ছাড়া ২ থেকে ২০ বছর মেয়াদি বন্ডে বিনিয়োগ করে ১২ শতাংশ থেকে ১২.২৫ শতাংশ সুদ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে সাধারণ ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সুদ নিতে পারছে সর্বোচ্চ ১৩.৫৫ শতাংশ।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।

কালের কন্ঠ:

দাদা এমদাদের দাদাগিরি দুদকের জালে
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) এমদাদুল হক ওরফে দাদা এমদাদ যেন হাতে পেয়েছেন রূপকথার আশ্চর্য প্রদীপ, যার ছোঁয়ায় রাজধানী, পাশের
রূপগঞ্জ এবং জন্মস্থান সিরাজগঞ্জে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক যুগের বেশি সময় ধরে সাবেক মন্ত্রীর এপিএসের চাকরিতে থাকাকালে সম্পদের পাহাড় গড়েন তিনি। শুধু সিরাজগঞ্জে তাঁর প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জেও রয়েছে তাঁর বিপুল সম্পদ।

ড্রেজার ব্যবসার পাশাপাশি তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে আবাসন খাতেও। জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে রূপগঞ্জের মাদক সাম্রাজ্যও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। এসব খাত থেকে অর্জিত অবৈধ অর্থে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন দাদা এমদাদ।
তবে দাদা এমদাদের এসব অবৈধ সম্পদ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে
তাঁর অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে তাঁকে তলব করে চিঠিও দিয়েছে দুদক। তবে কৌশলে তিনি কালক্ষেপণ করছেন। দুদক সূত্র জানায়, অর্জিত সম্পদের তথ্য চেয়ে তাঁকে যে চিঠি দিয়েছে দুদক, তার উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এমদাদ।

নয়াদিগন্ত:

তাপমাত্রায় নতুন রেকর্ড
তাপপ্রবাহের এক মাস

– চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা
– উত্তাপ বাড়তে পারে কয়েক দিন
– মে’র মাঝামাঝি ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা

তাপপ্রবাহের আরো একটি রেকর্ড গড়লো চুয়াডাঙ্গা। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে দেশে এত বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড আর কোথাও হয়নি। অন্য দিকে দেশে চলমান তাপপ্রবাহের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ ৩০ এপ্রিল।
বিশিষ্ট আবহাওয়া গবেষক আমেরিকান জুলি এ্যান রিগলি গ্লোবাল ফিউচার ল্যাবরেটরির সিনিয়র গ্লোবাল সায়েন্টিস্ট ড. রাশেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বর্তমানে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনু থেকে লা নিনার একটি পরিবর্তনের পর্যায় চলছে। এই পরিবর্তনের প্রবণতায় বাংলাদেশে একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে এবং এটা হতে পারে মে’র মাঝামাঝিতে।
গনগনে এই তীব্রতাপে বাইরে বেরুলে অনেকের গায়ের ত্বকে লাল র‌্যাশ উঠে যাচ্ছে, কারো কারো ত্বকে ফোস্কা পড়ে গেছে। যেসব গাছে পানি দেয়া সম্ভব হয় না সেগুলোর পাতা শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ ধানগাছের পাতা মরে যাচ্ছে। আমের ছোট ছোট মুকুল শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে। নয়া দিগন্তের রাজশাহী প্রতিনিধি আমচাষিদের সাথে কথা বলে জানিয়েছেন, চাষিরা বলছেন, সময় মতো কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। যারা গাছের গোড়ায় পানি দিতে পারছেন তারা হয়তো ভালো ফলন পেতে পারেন।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে, আজ মঙ্গলবারও সারা দেশেই উচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো ছাড়া। এর আগে আবহাওয়া বিভাগ আজ মঙ্গলবারের জন্য পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাবে। কিন্তু নতুন করে আবার বলছে, আজ মঙ্গলবার দেশে মৃদু থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো জেলায় অতি তীব্রতাপমাত্রা বিরাজ করবে পারে। আজ মঙ্গলবার অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও রাজশাহী জেলায়। এই চার জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠে যেতে পারে। যেহেতু অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এই চার জেলায়, সে কারণে এই জেলাগুলো অথবা এর আশপাশের সব জেলার বাসিন্দাকে নিজেদের সুস্থ রাখার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মেডিসিনের চিকিৎসকরা। ঠাণ্ডার মধ্যে নিজেকে রাখতে হবে, দুপুরের গনগনে সময়টায় ঘরে বিশ্রাম করে বিকেলের দিকে অথবা সন্ধ্যার পরে করতে পারলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

এত এত সাবধানবাণী উচ্চারণের পরও সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ এই দুপুরের রোদে কাজে বেরিয়েছেন। সাথে যথেষ্ট পরিমাণে পানি নেয়া এবং পেট ভরে পানি পানের পরও অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কর্মস্থলে পড়ে গেছেন এমন খরব পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে মৃত্যুও হচ্ছে অতি তীব্র গরমের তাপপ্রবাহ সহ্য করতে না পেরে।
তীব্র এই গরমের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর অধিকাংশে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠলেও গতকাল যশোরে উঠেছে ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঈশ্বরদীতে ৪২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছে। গতকাল ঢাকা বিভাগের তাপমাত্রাও বেশি ছিল। এ বিভাগের মধ্যে ফরিদপুরে উঠেছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গোপালগঞ্জে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, টাঙ্গাইলে ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সবচেয়ে স্বস্তিতে ছিলেন সিলেট বিভাগের অধিবাসীরা। সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অবশ্য সিলেটে গতকাল সকালের দিকে এবং মৌলভীবাজারে মোটামোটি ধরনের বৃষ্টি হয়ে পরিবেশ বেশ সিক্ত রেখেছে। এ দিকে গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির জন্য ইসতিস্কার নামাজ হয়েছে। কড়া রোদে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি করেছেন মুসল্লিরা।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

কারাগারেও মাদকের আখড়া
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের প্রধান ফটকে তল্লাশি করা হয় ওই কারাগারেরই প্রধান কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে। একাধিক সংস্থার সদস্যের উপস্থিতিতে তল্লাশির সময় সাইফুলের কাছে ৩০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে কারা প্রশাসন। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগে একই কারাগারে সোহেল রানা নামের আরেক কারারক্ষীর হেফাজত থেকে চারটি গাঁজার প্যাকেট জব্দ করে কারা প্রশাসন। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারই হেফাজত থেকে ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তাকেও কারা কর্তৃপক্ষ পুলিশে সোপর্দ করে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে কাশিমপুর কারাগার-২-এর এক রক্ষীকে ২০০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করা হয়।

চলতি বছরের শুরুতে গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর-১ কারাগারে ঠাঁই হয়েছিল অমিয় হাজরা (ছদ্মনাম) নামের এক হাজতির। টানা এক মাস ১০ দিন কারাভোগের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে বের হয়ে আসেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি জানান, কী লাগবে আপনার? সবকিছুই পাওয়া যায় কারাগারে। বিশেষ করে মাদক ব্যবসা তো ওপেন সিক্রেট। কাশিমপুরের বেশির ভাগ কারারক্ষী মাদক ব্যবসায় জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে এমন বন্দিদের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, কালেভদ্রে অভিযান হয়। তাও আবার লোকদেখানো। এদিকে রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা এবং ভাটারা এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ওরফে ভাস্তে রাসেল কারাগারে থেকেও সক্রিয় ছিলেন মাদক ব্যবসায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতার হওয়া ভাস্তে রাসেলের কাছে নিয়মিত মাদক সরবরাহ করতেন তারই সহযোগীরা। ব্যবহার করা হতো কারারক্ষীদের। কারারক্ষীও মাদক বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করেন বিশ্বস্ত কয়েদিদের। একাধিক সংস্থার কর্মকর্তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে তার যোগাযোগের বিষয়টি নজরদারি করে অবাক করা তথ্য পান। রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছিল গোয়েন্দাদের। গতকালই এ বিষয়ে এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ভাস্তে রাসেলের মাধ্যমে কারা অভ্যন্তরের অনেক তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

জানা গেছে, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪২ হাজার ৮৬৬ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে ৮২ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ হলো মাদক মামলার আসামি। যাদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। গত দুই দিন আগে শরীয়তপুর জেলা কারাগার থেকে আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পান একজন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কারাগারে ৪০০ আসামির মধ্যে ৩০০ জনই মাদক মামলার।

দৈনিক সংগ্রাম:

ইসলামী শ্রমনীতি চালু করার মাধ্যমেই শ্রমিক সমাজের প্রকৃত মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে – ডা. শফিকুর রহমান
১ মে “আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস” তথা ‘মে দিবস’ পালনের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল সোমবার দেয়া তিনি বলেন, আগামী ১ মে ‘মে দিবস’। ১৮৮৬ সালের ১ মে আমেরিকার শিকাগো শহরে শ্রমিক সমাজ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। বিশ্বের শ্রমিক সমাজ তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এখনো তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে আসছে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সে আন্দোলন আজও পুরোপুরি সফলতা লাভ করেনি। প্রায় সময় শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য বেতন-ভাতার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করতে দেখা যায়। এমনকি ন্যায্য পাওনা আদায় করতে গিয়ে তাদের মূল্যবান জীবনও দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণের পরিবর্তে মালিক পক্ষ নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকরাও তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করে। এমনকি অগ্নিসংযোগের ঘটনাও সংঘটিত হয়, যা নিতান্তই দুঃখজনক। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, এ কথা আজ অত্যন্ত স্পষ্ট যে, মানবরচিত কোনো মতবাদই মানুষের সমস্যার সঠিক সমাধান দিতে সক্ষম নয়। ‘শ্রমিকদের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার জন্য’ রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোর তাকিদ দিয়েছেন। শ্রমিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনা বাস্তবায়নের মধ্যেই মালিক-শ্রমিক উভয়ের জন্যই প্রকৃত কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে শ্রমিক সমাজ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত। কল-কারখানা ও উৎপাদন সেক্টরগুলোতে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব এক ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। বেতনসহ ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের অনেক ক্ষেত্রে ছাঁটাই করা হচ্ছে, হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এবং অনেককে গুলী করে আহত ও নিহত করা হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটানো প্রয়োজন। আমরা মনে করি, ইসলামী শ্রমনীতি চালু করার মাধ্যমেই শ্রমিক সমাজের প্রকৃত মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে এবং মালিকদের স্বার্থও সংরক্ষিত হতে পারে।

দেশে বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে ১ মে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ তথা ‘মে দিবস’ পালনের জন্য দেশের সর্বস্তরের শ্রমজীবী সমাজ ও দেশবাসীর প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।

বনিকবার্তা:

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি
দেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এদিকে আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা আরো বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিছুটা বাড়তে পারে আগামীকালও। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে ঢাকায় এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটাকে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। এর বেশি হলে সেটাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। সেই হিসাবে গতকাল চুয়াডাঙ্গার বাইরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল যশোর (৪২ দশমিক ৮), রাজশাহী (৪২ দশমিক ৬) ও পাবনায় (৪২ দশমিক ৫)।

সমকাল:

ঋণ জালিয়াতিতে এবার ‘ছক্কা’ সাদ মুসার
সাদ মুসা গ্রুপ। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এই শিল্পগোষ্ঠীর নেই খুব একটা নামডাক। তবে কাজের কাজ ঠিকই সেরে ফেলেছেন গ্রুপটির কর্ণধার মুহাম্মদ মোহসিন। তিনি ব্যাংক খাতে ‘সুচ হয়ে ঢুকে ফাল’ হয়ে বের হয়েছেন। তাঁর জোচ্চুরির কাছে আলোচিত ক্রিসেন্ট, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ কেলেঙ্কারিও ফেল। স্বেচ্ছা ঋণখেলাপির নতুন ‘রাজা’ এখন তিনি। গেল এক দশকে রপ্তানিতে কাঁচামাল কেনাবেচা দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছেন ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার ঋণ। এ ঋণের সবটাই এখন খেলাপি।

ঠগবাজি করে নেওয়া ঋণ ব্যবসায় না খাটিয়ে চতুর মোহসিন দেশে কিনেছেন জমি-ফ্ল্যাট। পাচারের টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রধান কার্যালয় বা শাখার সহায়তায় সাদ মুসা গ্রুপকে ঋণ দিয়ে দেশের ২৪ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন মহাবিপদে। বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশে মুহাম্মদ মোহসিনের নানা জালিয়াতির কীর্তি উঠে এসেছে সমকালের অনুসন্ধানে।

সাদ মুসা গ্রুপের ধোঁকায় সবচেয়ে বোকা বনেছে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংক (এনবিএল)। অনিয়মও বেশি হয়েছে এ ব্যাংকের ঋণে। এনবিএলের আগ্রাবাদ শাখায় গ্রুপটির চার প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। মোহসিন খেলাপির তথ্য লুকিয়ে সাদ মুসা গ্রুপের কর্মকর্তা ও চাচাতো ভাই মঈন উদ্দীন আহমেদ চৌধুরীকে এমডি দেখিয়ে ‘রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিল’ নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। পরে রেডিয়ামের নামে এনবিএল থেকে নেন ৭৫৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে ভুয়া বিল বেচাকেনায় রেডিয়াম কম্পোজিট ও সাদ মুসা গ্রুপের কর্মচারী মোহাম্মদ শওকত আলীর নামে খোলা ইইএসএম করপোরেশনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয় সবচেয়ে বেশি। আর করোনার প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের সুদ ভর্তুকির আওতায় দেওয়া প্রণোদনা ঋণের ১৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যবসায় না লাগিয়ে নগদে তুলে নেওয়া হয়েছে। এনবিএলের বাইরে ১৬টি ব্যাংক সাদ মুসা গ্রুপকে ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৬৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে এখন গ্যাঁড়াকলে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুহাম্মদ মোহসিন ঋণের বেশির ভাগই নিয়েছেন ২০১২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে। রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল কেনার জন্য একের পর এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলেও শুধু আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকার রপ্তানি হয়েছে।

যেসব কারখানার নামে এত টাকার ঋণের আয়োজন, এর সবই এখন বন্ধ

কালবেলা;

মন্ত্রীর ঘোষণার পরও মামলা জট বেড়েছে ছয় লাখ

তিন বছর আগে দেশের সব আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এক বছরের মধ্যে ৬ লাখ কমিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সারা দেশে ৩৭ লাখ মামলা বিচারাধীন ছিল। এরপর তিন বছর পার হলেও মামলাজট তো কমেনি, উল্টো ৬ লাখ বেড়ে গেছে।

প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের বিচারাধীন মামলার স্তূপ পৌঁছেছে ৪৩ লাখে। এর মধ্যে অধস্তন আদালতগুলোয় ৩৭ লাখ ৩০ হাজার মামলা বিচারাধীন ছিল। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলা প্রায় ৬ লাখ। ২০১২ সালে বিচারাধীন মামলা ছিল ২১ লাখ ৩৫ হাজার। এক যুগের ব্যবধানে বিচার বিভাগে মামলার জট বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর ২০০৭ সালের নভেম্বরে বিচার বিভাগ পৃথককরণের সময় বিচারাধীন মামলা ছিল মাত্র ১৫ লাখ। অর্থাৎ পৃথককরণের পর ১৬ বছরে মামলার জট ২৮ লাখ বেড়েছে।

মামলাজট কমানোর সেই ঘোষণার কথা মনে করিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল সোমবার কালবেলাকে বলেন, ‘মামলাজট কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি আইনমন্ত্রী।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বিদ্যমান আইনি জটিলতা ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা জটিল আকার ধারণ করেছে। কোনো কোনো মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে বিচারপ্রার্থীকে এক যুগ, দুই যুগ—এমনকি তিন যুগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিচার বিলম্বের কারণে একদিকে মামলা পরিচালনার ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি। কিছু কিছু মামলার বাদী বিচার শেষ হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছেন। আবার বিচার হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে মামলার অনেক তথ্য-প্রমাণ হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো মামলার সাক্ষী মারা যাচ্ছেন। কিছু মামলার সাক্ষীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে বিচার শেষে সাজার হার কমে যাচ্ছে। বহু বছরের পুঞ্জীভূত সমস্যা বর্ধিত হয়ে বর্তমানে অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। শুধু বিচার বিলম্বের কারণে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার লাভের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলেও মনে করছেন অনেকেই।

তারা বলছেন, বিচার বিভাগের এই সংকট এড়াতে হলে পরিকল্পিত উপায়ে দ্রুত নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় বিচার বিভাগে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেখা দেবে