রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি গ্রামে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলার তাতারপুর গ্রামের ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন নামের দুই শিক্ষার্থীর উদ্যোগে এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি বাড়িতে বৃষ্টির জন্য গান গাওয়া শেষে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিয়ে শেষে সন্ধ্যায় ছিল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ এপ্রিল মাত্র দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে রাজশাহীতে মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। রাজশাহীতে টানা ২৩ দিন বলতে গেলে বৃষ্টিই হয়নি। এ অবস্থায় তাপমাত্রাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দুই দিন ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থায় মানুষের বাড়ি থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ অনেকটা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
এই আয়োজনের সঙ্গে ছিলেন তাতারপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন, গৃহবধূর আয়েশা বেগম, রোজিনা খাতুন, মমতাজসহ গ্রামের একদল শিশু। তারা নেচে-গেয়ে আবির মেখে সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ান। এরই মধ্যে ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন ব্যাঙ বর-বধূকে কলাগাছের খোলের মধ্যে ভরে বাউকে (বাঁশের বাতার তৈরি) নিয়ে ঘোরেন।
ব্যাঙের বিয়ের উদ্যোক্তা ইউসুফ আলী বলেন, বৃষ্টি নেই, তাপমাত্রা বাড়ছে। গাছের আম ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় তারা গ্রামের লোকজনকে নিয়ে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করেছেন। তারা গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি বাড়িতে বৃষ্টির জন্য ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে’ গানটি গেয়েছেন। পরে ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে একটি প্রতীকী পুকুর খনন করে সেখানে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যায় গ্রামের মণ্ডলপাড়ায় ওসিমুদ্দিন মণ্ডলের আমবাগানে ভোজের আয়োজন করা হয়। যারা এই আয়োজনে অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে দাওয়াত করা হয়েছে।