ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মরু হাওয়ার উত্তাপ

পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৫৬%

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর

প্রথম আলো:

পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৫৬%

দেশে বিগত পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন খোলা আটার দাম ৫৭ শতাংশ বেশি।

সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) বৈঠকে এই হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। এতে জানানো হয়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে মোটা চালের গড় দাম ছিল ৩১ টাকা ৪৬ পয়সা, যা গত মার্চে দাঁড়িয়েছে ৪৯ টাকা ১১ পয়সা। এই পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে চালের দাম।

বৈঠকে খোলা আটার দামের পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, ২০২০ সালের মার্চে খোলা আটার গড় দাম ছিল প্রতি কেজি ২৭ টাকার কিছু বেশি। গত মার্চে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ টাকা। অবশ্য গত বছর খোলা আটার দাম আরও বেশি ছিল, প্রতি কেজি প্রায় ৫৯ টাকা। পণ্যটির দাম গত বছরের তুলনায় কমলেও ২০২০ সালের চেয়ে এখনো ৫৭ শতাংশ বেশি।

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে গতকাল রোববার খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কমিটিতে ৮ জন মন্ত্রী ও ১০ জন সচিব সদস্য।

কমিটির গতকালের সভায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এবার দাম প্রতি কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজনে কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টনের বেশি ধান কেনা হবে। ধানের পাশাপাশি এবার ৪৫ টাকা কেজি দরে ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। গতবার এটি ৪৪ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছিল। এ ছাড়া ৪৪ টাকা কেজি দরে এক লাখ টন আতপ চাল কিনবে সরকার। ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন গমও কেনা হবে।

আগামী ৭ মে থেকে ধান কেনা শুরু হবে এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেশি ধান কেনা হবে হাওর থেকে। তিনি বলেন, কৃষক যাতে তাঁর উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য এবার ধানের দাম কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।বিশ্ববাজারে গমের দাম কমে ২০২০ সালেরও নিচে নেমেছে। দেশে এখনো ৫৭% বেশি।

নয়াদিগন্ত:

মরু হাওয়ার উত্তাপ
মরুভূমির হাওয়ার মতো তীব্র উত্তাপ দেশের সর্বত্র। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। তৃষ্ণার্ত মানুষ বারবার পানির কাছে ছুটে যাচ্ছে। অসহ্য খরায় পানি পানের চাহিদা যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সময় কাটানোর প্রবণতাও বেড়েছে। সার্বিকভাবে আগের দিনের চেয়ে গতকাল রোববার তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরমের অনুভূতি কমেনি। আবহাওয়া অফিস বলছে, গরমের অনুভূতি সেই ৪৪ থেকে ৪৬ ডিগ্রির মধ্যেই রয়ে গেছে। কয়েক দিন ধরে পরিবেশ অব্যাহতভাবে তাপ শোষণ করছে এবং সারা রাতেও ঠাণ্ডা হতে পারছে না বরং পরের দিন সকাল থেকে প্রকৃতি আবার নতুন করে গরম হয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের এই সময়ে সূর্য থেকে বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্থান সর্বোচ্চ কিরণ পেয়ে থাকে। আবহাওয়া অফিস বলছে, এটি হচ্ছে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে। বড় ধরনের বৃষ্টিপাত না হলে শিগগিরই অসহনীয় এ গরম কমবে না। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ সময় আবার পশ্চিমবঙ্গের কাছে একটি স্থল লঘুচাপ গরমের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
পানিতে ডুবিয়ে ঠাণ্ডা হতে শহরে এর সুযোগ সীমিত থাকলেও গ্রামের নদীনালাতে প্রচুর মানুষ বিশেষ করে শিশুরা দীর্ঘ সময় সাঁতরে বেড়াচ্ছে। একটু ঠাণ্ডায় শরীর জুড়াতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদেরও খাঁচার সামনের ছোট চৌবাচ্চায় সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। তবে আবহাওয়া অফিস আশার কথা শুনিয়েছে। তারা বলেছে, আজ সোমবার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে কিন্তু অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গতকালও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। অতি তীব্র তাপমাত্রা বিরাজ করছে খুলনা বিভাগে কিছু অঞ্চলে। অন্যত্র মাঝারি থেকে তীব্র তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে গত শনিবারের চেয়ে গতকাল তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরমের অনুভূতি আগের মতোই অটুট ছিল।
ঢাকা শহরে শনিবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠে গেলে গতকাল রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকা শহরে সবুজ বনানী কম বলে এখানে সামান্য তাপমাত্রাতেই তীব্র গরমের অনুভূতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই শহরে পিচ ঢালা পথ, কয়েক লাখ দালানকোঠা সূর্যের তাপ শোষণ করছে কিন্তু রাতে তা ছেড়ে দিয়ে শেষ করার আগেই সকাল হয়ে যাচ্ছে এবং আবারো প্রচণ্ড সূর্যকিরণ শোষণ করে উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে এখানে তীব্র গরমের অনুভূতি বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো খুলনা বিভাগের জেলাগুলো, রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো এবং ঢাকা বিভাগের জেলাগুলো। অন্য দিকে সহনীয় তাপমাত্রায় অবস্থান করছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলো। গতকাল দিনের বেলা সিলেট বিভাগে সামান্য বৃষ্টিও হয়ে গেছে, ফলে সেখানকার তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয়। সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ ছাড়া রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। শ্রীমঙ্গল ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে এবং রংপুর, ময়মনসংিহ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস

যুগান্তর:

বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রায় কাটছাঁট
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখীর প্রভাবে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের চাহিদা মেটাতে গিয়ে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আইএমএফ’র মানদণ্ডের হিসাবে এরই মধ্যে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন (দুহাজার কোটি) মার্কিন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

 

আবার ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে হামলার ঘটনায় জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়ে নতুন করে রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হতে পারে। এতে চলতি অর্থবছরে ৩০ বিলিয়নের রিজার্ভ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় লক্ষ্যমাত্রা ৯০ কোটি ডলার কাটছাঁট করে ২৯১০ কোটি ডলারে নামিয়ে আনা হয়।

সংশোধিত এ লক্ষ্যমাত্রার অনুমোদন দেওয়া হয় আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিয়ম হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেন্স কাউন্সিল বৈঠকে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। ওই বৈঠকে অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি। আগামীতে রিজার্ভের অবস্থা কেমন যাবে সেটিও আলোচনায় আসে।

রিজার্ভ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বৈঠকে অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, উন্নত দেশের সুদের হার বৃদ্ধিও একটি কারণ। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব দিয়ে তিনি বলেন, গ্রস রিজার্ভ যা আছে তা দিয়ে আগামী ৪.৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

রিজার্ভের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাকেও উচ্চাভিলাষী বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী। তিনি যুগান্তরকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে অর্জন করতে পারলে সেটি ভালো। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বিগত এক বছরে রিজার্ভ খুব বেশি বাড়াতে সক্ষম হয়নি।

২০-২৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এখন ইরান-ইসরাইলসহ বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রাখতে হবে। কারণ যুদ্ধ পরিস্থিতি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ কতটা খারাপের দিকে যাচ্ছে সেটি দেখার বিষয়। এটি বিশ্ব অর্থনীতি পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে নিতে পারে। এতে জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্য আমদানি ব্যয় বাড়তে পারে। যা রিজার্ভকে আবারও চাপের মুখে ফেলতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগদ তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রস রিজার্ভের অঙ্ক ২৫ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন (২৫৯৭ কোটি) মার্কিন ডলার ছিল। গত ১৭ এপ্রিল তা ২৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ( ২৫৩০ কোটি) ডলারে নেমে আসে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ডলারে নেমেছে।

এরই মধ্যে ইরান ও ইসরাইলের হামলার ঘটনায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডে তেলের দাম ১.৮ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৭.৩৯ (রোববার হিসাবে) ডলার হয়। এ মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে উসকে দেবে। এতে দেশের আমদানি ব্যয় বাড়বে। যা শেষ পর্যন্ত রিজার্ভের ওপর গিয়ে পড়বে। কারণ ব্যাংকগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা আমদানি দায় পরিশোধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে মার্কিন ডলার সহায়তা নিচ্ছে। এতে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে।

অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধির দুটি প্রধান উৎস রপ্তানি ও প্রবাসী আয় প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) রপ্তানি আয় হয় ৪৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭.০৭ বিলিয়ন (১৭০৭ কোটি) ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬.০৩ বিলিয়ন (১৬০৩ কোটি) ডলার। এছাড়া অন্যান্য উদ্যোগের পরও রিজার্ভ বাড়ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে আইএমএফ থেকে সরকার ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের দুটি কিস্তি ইতোমধ্যে পেয়েছে সরকার। রিজার্ভ ধরে রাখার জন্য পণ্য আমদানির ওপর দেওয়া বিধিনিষেধ এখনো বহাল রাখা হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ সত্ত্বেও আমদানি ব্যয় এখনো উচ্চ পর্যায়ে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে আমদানি বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমেছে। এতে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে।

রিজার্ভ হিসাবের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। একটি হচ্ছে গ্রস, অন্যটি নিট হিসাব। কিন্তু ঋণের শর্ত হিসাবে আইএমএফ রিজার্ভ হিসাব করার জন্য বিপিএম৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) নামে একটি নীতিমালা জারি করে। এ পদ্ধতিতে হিসাব করলে বৈদেশিক সম্পদ গণনায় সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ যাবে।

জানা গেছে, দেশের রিজার্ভের অর্থে ৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন ছাড়াও একাধিক তহবিল পরিচালনা করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রায় ইডিএফ ছাড়াও আরও দুটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। আইএমএফ’র হিসাব পদ্ধতি মানলে এই ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারও রিজার্ভ থেকে বাদ দিতে হবে।

কালবেলা:

মিরপুরে শালা দুলাভাই ভাগনের অবৈধ সাম্রাজ্য
ঢাকার মিরপুরের শাহ আলী থানা থেকে দক্ষিণ দিকে কয়েক গজ সামনেই তোরাব আলী চত্বর। পাশেই তিনতলা একটি ভবন। চত্বর কিংবা ভবনের জায়গাটি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সরকারি জায়গা দখল করে প্রয়াত তোরাব আলীর নামে হাউজিংয়ের চত্বর বানিয়েছেন তার ছেলে জনাব আলী। দখল করা জায়গায় গড়েছেন ভবনও। মিরপুরের মানুষের কাছে এই জনাব আলী ‘শাহেনশাহ’ হিসেবে পরিচিত।

ওই ভবনের পেছনেও প্রায় দুই বিঘা সরকারি জমি দখল করেছেন জনাব আলী। সেখানে গড়ে তুলেছেন রিকশা গ্যারেজ ও বস্তি। এই বস্তি আর গ্যারেজ ঘিরে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদকের হাট। শাহ আলী থানার নাকের ডগায় পরিচালিত হচ্ছে মাদকের এই প্রকাশ্য সাম্রাজ্য। থানার কয়েকজন সোর্স এর সঙ্গে জড়িত। তবে মূলহোতা জনাব আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম নাদিম। ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি তিনি। এই পরিচয়েই ম্যানেজ হয় সব অপকর্ম।

সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে এবং লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভেতরে ভেতরে আসলে বাপ-ছেলের মাদক কারবার থেকে বখরা নেয় থানা পুলিশও। নির্বিঘ্নেই মাদকের বেচাবিক্রি হয় এই হাটে।

গত কয়েকদিন ওই এলাকা ঘুরে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাপ-বেটার এই সাম্রাজ্যের আরেক সিপাহশালার বাবুল তালুকদার। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর পারিবারিক পরিচয় হলো জনাব আলীর আপন শ্যালক তিনি। দুলাভাই-ভাগনের দখল ‘রাজ্যে’ মূল তালুকদারি করছেন এই বাবুলই। তার আরেক ভাই সাইফুল তালুকদারও এসবের অংশীদার।

জনাব আলী, নাদিম ও বাবুলের মাদকের হাটে নিয়মিত মাদক বিক্রি করেন মো. আলম নামে এক কারবারি। সরেজমিন ঘুরে তাকে প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতা বেশে সরাসরি কথা হয় তার সঙ্গে। জনি জানান, এই গ্যারেজ এলাকায় প্রায় তিন বছর ধরে গাঁজার কারবার করেন তিনি। মাঝে মাঝে ইয়াবাও বিক্রি করেন। এজন্য তিনি নাদিম এবং তার বাবাকে প্রতিদিনই বখরা দেন। কারণ জায়গাটা তাদের। তার মতো এখানে যারা মাদক কারবার করেন, সবাই তাদের টাকা দেন। কেউ তাদের টাকা কম দিলে কিংবা না দিতে চাইলে নির্যাতন চালায় কিশোর গ্যাং বাহিনী। কখনো বা ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।

এলাকার লোকজন বলছেন, দখল বাণিজ্যে দুলাভাই-ভাগনেকে ছাড়িয়ে গেছেন দুই ভাই বাবুল আর সাইফুল। হাউজিং এলাকার পাশে চিড়িয়াখানার প্রায় ৭ একর জমি দখল করে বস্তি গড়েছেন তারা। স্থানীয়ভাবে এটি লালমাঠ বস্তি নামে পরিচিত। সেখানে মাদক কারবারের নাটাই সাইফুল তালুকদারের হাতে। সরকারি জমি বিক্রি করার নজিরও গড়েছেন এ দুই ভাই। চিড়িয়াখানার দখল করা জমির একাংশ আবার বিক্রি করে দিয়েছেন আরেক মাদক কারবারির কাছে।

হাউজিংয়ের সরকারি জমি দখল করে মাদকের হাট বসানোর বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ঢাকা ডিভিশন-১ (মিরপুর)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী জোয়ারদার তাবেদুন নবী কালবেলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই আমরা অবগত হলাম। শিগগির ওই জায়গার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

প্লাস্টিক পলিথিনে নদীর সর্বনাশ
সর্বনাশা প্লাস্টিক বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে দেশের নদনদী, খালবিল। অপচনশীল বর্জ্যে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী, খাল, বিলের তলদেশ। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খালের প্রবাহ, স্যুয়ারেজ লাইন। নদী ও খালের পাড় দখলেও ভূমিকা রাখছে নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য। নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়লে মিলছে ১৫-২০ বছরের পুরনো পলিথিন। এতে উর্বরতা কমছে মাটির। দূষিত হচ্ছে পানি। একপর্যায়ে এই প্লাস্টিক গুঁড়ো হয়ে খাদ্যচক্রের মাধ্যমে ঢুকছে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর দেহে। সৃষ্টি করছে ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগ। সামগ্রিকভাবে এর আর্থিক ক্ষতি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে কয়েক লাখ কোটি টাকায়। আইন করে পলিথিন নিষিদ্ধ করার পরও আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে চলেছে এর উৎপাদন ও ব্যবহার। বর্তমানে দেশে বছরে উৎপন্ন হচ্ছে ৮ লাখ ২১ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য। এর ৪০ ভাগ পুনর্ব্যবহার হলেও ৬০ ভাগই ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ২০০২ সালে পলিথিনের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে একবার ব্যবহার্য পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়নি। আইনের এই ফাঁকের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে। এদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পলিথিনে তৈরি সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুত-বিতরণ নিষিদ্ধ হলে সেটাও বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের নাকের ডগায় বাজারগুলোতে দেদার বিক্রি হচ্ছে পলিথিনের শপিং ব্যাগ। গড়ে উঠছে পলিথিনের নতুন নতুন কারখানা। তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে প্রায় দেড় হাজারের বেশি কারখানায় পলিথিন তৈরি হচ্ছে, যার অধিকাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে বছরে এখন ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর ৪০ শতাংশ রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার হয়। বাকিটা পরিবেশে পড়ে থাকে। শুধু ঢাকা শহরেই বছরে প্রায় আড়াই লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা সারা দেশে উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে ৩০ ভাগের বেশি। সরকারি তথ্যানুযায়ী, সারা দেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ৯ থেকে ১০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন করে। রাজধানীতে মাথাপিছু প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয় ১৮ থেকে ২২ কেজি পর্যন্ত। আর এই প্লাস্টিক ও পলিথিনের একটি বড় অংশের শেষ গন্তব্য হয় নদনদী ও বিভিন্ন জলাশয়ে। জার্মানির বার্লিন ভিত্তিক গবেষকদের নেটওয়ার্ক রিসার্চগেটে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদী হয়ে প্রতি বছর প্রায় ১-৩ বিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশছে বঙ্গোপসাগরে। অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গায় অক্সিজেনের পরিমাণ ১ মি.লি. গ্রাম পার লিটারের থেকেও কম। যেখানে মাছ এবং মানুষের জন্য ৫ মি.লি. গ্রাম পার লিটারের প্রয়োজন। পরিবেশ অধিদফতর ও ওয়েস্ট কনসার্নের যৌথ গবেষণা অনুযায়ী মাত্র শতকরা ৩৬ ভাগ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করা হয়, ৩৯ শতাংশ ল্যান্ডফিলে যায় এবং অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য নদীর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে জমা হয়

কালের কন্ঠ:

উপজেলা নির্বাচন: ভোটে বিএনপির অনেকে অনড়, কেউ দোলাচলে
বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও দলীয় নেতাদের যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই ভোটে থাকার বিষয়ে অনড় রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ আছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন, দলীয় পদে আছেন এমন প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।

দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগের তথ্য মতে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতে বিএনপির অন্তত ৪৯ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

তাঁদের মধ্যে গত দুই দিনে বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের বেশি প্রার্থী মাঠে সক্রিয় আছেন।
গতকাল রবিবার অন্তত ২০ জন প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তিন ধরনের ভাষ্য পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজন নির্বাচনে মাঠে থাকার বিষয়ে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন।
মানবজমিন:প্রথম মার শুরু করেন চেয়ারম্যানই যোগ দেন শত শত মানুষhttps://mzamin.com/news.php?news=106599
২৮৫ ভোটারের গ্রাম কৃষ্ণপুর। ৬৫ পরিবারের বসবাস। তারা সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। আশপাশের পাঁচ গ্রাম নিয়ে পঞ্চপল্লী। ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মুসলিম পরিবার নেই। ৫ গ্রামে একটি মাত্র স্কুল। পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের পাশেই বারোয়ারি কালী মন্দির। বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকেই মন্দিরের সবকিছু দেখা যায়। সেখানে চারটি মূর্তি আছে।

কালী ও শিব মূর্তি একসঙ্গে। ২ ফুট দূরে দুই পাশে অন্য দুটি মূর্তি। এক মাস ধরে বিদ্যালয়ের শৌচাগারের নির্মাণকাজ চলছে। শ্রমিকদের সবাই মুসলমান। এখানে ১৮ই এপ্রিল ঘটে এক নজিরবিহীন ঘটনা। সন্ধ্যা ৭টায় হঠাৎ আগুন আগুন চিৎকার। লোকজন মন্দিরের সামনে এসে দেখেন কালী মূর্তি আগুনে জ্বলছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো তা কেউ নিশ্চিত জানে না। কিন্তু উত্তেজিত জনতা শৌচাগার নির্মাণ শ্রমিকদের সন্দেহ করে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন অন্যরা। ফরিদপুর মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের এই ঘটনা পুরো দেশ নাড়িয়ে দেয়। নানা সন্দেহের ডালপালা মেলতে থাকে। কীভাবে সূত্রপাত হলো এই ঘটনার? পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নাকি গুজবের বলি হলেন দুই কিশোর? মানবজমিন-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নানা তথ্য। কোথা থেকে এই ঘটনার সৃষ্টি। কারা ছিল এর পেছনে? ঘটনাস্থল, প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার থেকে এসব প্রশ্নের কিছু জবাব মিলেছে।
ঠিকাদারি কাজ নিয়ে কি ঝামেলা ছিল: অনুসন্ধানে জানা গেছে, কৃষ্ণপুর গ্রামে সার্বজনীন কালীমন্দিরের পাশে অবস্থিত ৬৯নং পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পায় ফরিদপুরের মাহিদা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে সাব- কন্ট্রাক্টে ওই কাজ বাগিয়ে নেন নওয়াপাড়া ইউনিয়ের চোপেরঘাট গ্রামের সাব-ঠিকাদার মো. জালাল শেখ। স্থানীয় একটি সূত্র ও নিহতের পরিবার বলছে, শৌচাগার নির্মাণকাজ শুরু করার পর থেকেই স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিৎ কুমার সরকার ওই কাজে নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করেন।

বনিকবার্তা:

তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে বৃষ্টির আভাস নেই

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই। তবে ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে গতকালের তাপমাত্রা আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। এদিকে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে নরসিংদী, ঝালকাঠি ও সিলেটে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনে এ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত শনিবার দেশের ১২ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এমন জেলা গতকাল ছিল ছয়টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটি হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। আর ৪২ ডিগ্রি বা তার চেয়ে বেশি হলে সেটা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। সে হিসেবে গতকাল তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল চার জেলা— টাঙ্গাইল, রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়ায়। আর অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায়। চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও যশোরের তাপমাত্রা কয়েক দিন ধরেই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে।

সমকাল:

সুসময়ে হঠাৎ বিপদে কৃষক
কৃষির জন্য সবচেয়ে শুভ সময় এপ্রিল-মে। পাকা বোরো ধান এখন মাঠে মাঠে। রবি ফসলেরও নেই কমতি। আম, লিচু ও কাঁঠালের মতো রসালো ফল বাজারে আসবে এপ্রিল পেরোলেই। মাস দুয়েক পর কোরবানির ঈদ ঘিরে খামারে খামারে চলছে জোর প্রস্তুতি। রোজার পর ডিম-মুরগির চাহিদা বাড়ায় এ মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ার আশায় ছিলেন খামারিরা। অথচ এই সুসময়ে বড় বিপদে কৃষি।

তীব্র তাপদাহের কারণে বিপর্যয়ে পড়েছে কৃষি, ডেইরি, পোলট্রি ও মৎস্য খাত। দিশেহারা চাষি ও খামারিরা। ঠা ঠা রোদের প্রভাবে ধানগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, মরছে সবজির গাছ। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। যেটুকু পানি মিলছে, তাতেও খরচা করতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বোরো ক্ষেতে হিট শক ব্লাস্ট সংক্রমণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝরে পড়ছে আম ও লিচু। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। মারা যাচ্ছে মুরগি ও গরু। তীব্র তাপপ্রবাহে পানিতে অক্সিজেন সংকটে মাছের রেণু পোনার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। প্রতিবছর গরমকালে কৃষি ক্ষতির মুখে পড়ে। অথচ এ মৌসুম নিয়ে কৃষি বিভাগের পরিকল্পনা নেই। ঝড়-বন্যার মতো তাপদাহকে সেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবেও দেখা হয় না। ফলে কৃষির ভরা এ মৌসুমে ক্ষতির মুখে পড়ে নিঃস্ব হন চাষি।

তবে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, এ মুহূর্তে বিভিন্ন ফসল রক্ষায় কৃষকের করণীয় কী, তা নিয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা

মরু হাওয়ার উত্তাপ

পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৫৬%

আপডেট সময় ০৮:০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর

প্রথম আলো:

পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৫৬%

দেশে বিগত পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন খোলা আটার দাম ৫৭ শতাংশ বেশি।

সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) বৈঠকে এই হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। এতে জানানো হয়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে মোটা চালের গড় দাম ছিল ৩১ টাকা ৪৬ পয়সা, যা গত মার্চে দাঁড়িয়েছে ৪৯ টাকা ১১ পয়সা। এই পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে চালের দাম।

বৈঠকে খোলা আটার দামের পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, ২০২০ সালের মার্চে খোলা আটার গড় দাম ছিল প্রতি কেজি ২৭ টাকার কিছু বেশি। গত মার্চে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ টাকা। অবশ্য গত বছর খোলা আটার দাম আরও বেশি ছিল, প্রতি কেজি প্রায় ৫৯ টাকা। পণ্যটির দাম গত বছরের তুলনায় কমলেও ২০২০ সালের চেয়ে এখনো ৫৭ শতাংশ বেশি।

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে গতকাল রোববার খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কমিটিতে ৮ জন মন্ত্রী ও ১০ জন সচিব সদস্য।

কমিটির গতকালের সভায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এবার দাম প্রতি কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজনে কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টনের বেশি ধান কেনা হবে। ধানের পাশাপাশি এবার ৪৫ টাকা কেজি দরে ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। গতবার এটি ৪৪ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছিল। এ ছাড়া ৪৪ টাকা কেজি দরে এক লাখ টন আতপ চাল কিনবে সরকার। ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন গমও কেনা হবে।

আগামী ৭ মে থেকে ধান কেনা শুরু হবে এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেশি ধান কেনা হবে হাওর থেকে। তিনি বলেন, কৃষক যাতে তাঁর উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য এবার ধানের দাম কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।বিশ্ববাজারে গমের দাম কমে ২০২০ সালেরও নিচে নেমেছে। দেশে এখনো ৫৭% বেশি।

নয়াদিগন্ত:

মরু হাওয়ার উত্তাপ
মরুভূমির হাওয়ার মতো তীব্র উত্তাপ দেশের সর্বত্র। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। তৃষ্ণার্ত মানুষ বারবার পানির কাছে ছুটে যাচ্ছে। অসহ্য খরায় পানি পানের চাহিদা যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সময় কাটানোর প্রবণতাও বেড়েছে। সার্বিকভাবে আগের দিনের চেয়ে গতকাল রোববার তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরমের অনুভূতি কমেনি। আবহাওয়া অফিস বলছে, গরমের অনুভূতি সেই ৪৪ থেকে ৪৬ ডিগ্রির মধ্যেই রয়ে গেছে। কয়েক দিন ধরে পরিবেশ অব্যাহতভাবে তাপ শোষণ করছে এবং সারা রাতেও ঠাণ্ডা হতে পারছে না বরং পরের দিন সকাল থেকে প্রকৃতি আবার নতুন করে গরম হয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের এই সময়ে সূর্য থেকে বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্থান সর্বোচ্চ কিরণ পেয়ে থাকে। আবহাওয়া অফিস বলছে, এটি হচ্ছে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে। বড় ধরনের বৃষ্টিপাত না হলে শিগগিরই অসহনীয় এ গরম কমবে না। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ সময় আবার পশ্চিমবঙ্গের কাছে একটি স্থল লঘুচাপ গরমের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
পানিতে ডুবিয়ে ঠাণ্ডা হতে শহরে এর সুযোগ সীমিত থাকলেও গ্রামের নদীনালাতে প্রচুর মানুষ বিশেষ করে শিশুরা দীর্ঘ সময় সাঁতরে বেড়াচ্ছে। একটু ঠাণ্ডায় শরীর জুড়াতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদেরও খাঁচার সামনের ছোট চৌবাচ্চায় সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। তবে আবহাওয়া অফিস আশার কথা শুনিয়েছে। তারা বলেছে, আজ সোমবার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে কিন্তু অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গতকালও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। অতি তীব্র তাপমাত্রা বিরাজ করছে খুলনা বিভাগে কিছু অঞ্চলে। অন্যত্র মাঝারি থেকে তীব্র তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে গত শনিবারের চেয়ে গতকাল তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরমের অনুভূতি আগের মতোই অটুট ছিল।
ঢাকা শহরে শনিবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠে গেলে গতকাল রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকা শহরে সবুজ বনানী কম বলে এখানে সামান্য তাপমাত্রাতেই তীব্র গরমের অনুভূতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই শহরে পিচ ঢালা পথ, কয়েক লাখ দালানকোঠা সূর্যের তাপ শোষণ করছে কিন্তু রাতে তা ছেড়ে দিয়ে শেষ করার আগেই সকাল হয়ে যাচ্ছে এবং আবারো প্রচণ্ড সূর্যকিরণ শোষণ করে উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে এখানে তীব্র গরমের অনুভূতি বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো খুলনা বিভাগের জেলাগুলো, রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো এবং ঢাকা বিভাগের জেলাগুলো। অন্য দিকে সহনীয় তাপমাত্রায় অবস্থান করছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলো। গতকাল দিনের বেলা সিলেট বিভাগে সামান্য বৃষ্টিও হয়ে গেছে, ফলে সেখানকার তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয়। সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ ছাড়া রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। শ্রীমঙ্গল ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে এবং রংপুর, ময়মনসংিহ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস

যুগান্তর:

বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রায় কাটছাঁট
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখীর প্রভাবে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের চাহিদা মেটাতে গিয়ে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আইএমএফ’র মানদণ্ডের হিসাবে এরই মধ্যে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন (দুহাজার কোটি) মার্কিন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

 

আবার ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে হামলার ঘটনায় জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়ে নতুন করে রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হতে পারে। এতে চলতি অর্থবছরে ৩০ বিলিয়নের রিজার্ভ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় লক্ষ্যমাত্রা ৯০ কোটি ডলার কাটছাঁট করে ২৯১০ কোটি ডলারে নামিয়ে আনা হয়।

সংশোধিত এ লক্ষ্যমাত্রার অনুমোদন দেওয়া হয় আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিয়ম হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেন্স কাউন্সিল বৈঠকে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। ওই বৈঠকে অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি। আগামীতে রিজার্ভের অবস্থা কেমন যাবে সেটিও আলোচনায় আসে।

রিজার্ভ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বৈঠকে অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, উন্নত দেশের সুদের হার বৃদ্ধিও একটি কারণ। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব দিয়ে তিনি বলেন, গ্রস রিজার্ভ যা আছে তা দিয়ে আগামী ৪.৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

রিজার্ভের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাকেও উচ্চাভিলাষী বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী। তিনি যুগান্তরকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে অর্জন করতে পারলে সেটি ভালো। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বিগত এক বছরে রিজার্ভ খুব বেশি বাড়াতে সক্ষম হয়নি।

২০-২৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এখন ইরান-ইসরাইলসহ বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রাখতে হবে। কারণ যুদ্ধ পরিস্থিতি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ কতটা খারাপের দিকে যাচ্ছে সেটি দেখার বিষয়। এটি বিশ্ব অর্থনীতি পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে নিতে পারে। এতে জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্য আমদানি ব্যয় বাড়তে পারে। যা রিজার্ভকে আবারও চাপের মুখে ফেলতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগদ তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রস রিজার্ভের অঙ্ক ২৫ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন (২৫৯৭ কোটি) মার্কিন ডলার ছিল। গত ১৭ এপ্রিল তা ২৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ( ২৫৩০ কোটি) ডলারে নেমে আসে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ডলারে নেমেছে।

এরই মধ্যে ইরান ও ইসরাইলের হামলার ঘটনায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডে তেলের দাম ১.৮ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৭.৩৯ (রোববার হিসাবে) ডলার হয়। এ মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে উসকে দেবে। এতে দেশের আমদানি ব্যয় বাড়বে। যা শেষ পর্যন্ত রিজার্ভের ওপর গিয়ে পড়বে। কারণ ব্যাংকগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা আমদানি দায় পরিশোধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে মার্কিন ডলার সহায়তা নিচ্ছে। এতে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে।

অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধির দুটি প্রধান উৎস রপ্তানি ও প্রবাসী আয় প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) রপ্তানি আয় হয় ৪৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭.০৭ বিলিয়ন (১৭০৭ কোটি) ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬.০৩ বিলিয়ন (১৬০৩ কোটি) ডলার। এছাড়া অন্যান্য উদ্যোগের পরও রিজার্ভ বাড়ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে আইএমএফ থেকে সরকার ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের দুটি কিস্তি ইতোমধ্যে পেয়েছে সরকার। রিজার্ভ ধরে রাখার জন্য পণ্য আমদানির ওপর দেওয়া বিধিনিষেধ এখনো বহাল রাখা হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ সত্ত্বেও আমদানি ব্যয় এখনো উচ্চ পর্যায়ে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে আমদানি বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমেছে। এতে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে।

রিজার্ভ হিসাবের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। একটি হচ্ছে গ্রস, অন্যটি নিট হিসাব। কিন্তু ঋণের শর্ত হিসাবে আইএমএফ রিজার্ভ হিসাব করার জন্য বিপিএম৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) নামে একটি নীতিমালা জারি করে। এ পদ্ধতিতে হিসাব করলে বৈদেশিক সম্পদ গণনায় সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ যাবে।

জানা গেছে, দেশের রিজার্ভের অর্থে ৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন ছাড়াও একাধিক তহবিল পরিচালনা করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রায় ইডিএফ ছাড়াও আরও দুটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। আইএমএফ’র হিসাব পদ্ধতি মানলে এই ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারও রিজার্ভ থেকে বাদ দিতে হবে।

কালবেলা:

মিরপুরে শালা দুলাভাই ভাগনের অবৈধ সাম্রাজ্য
ঢাকার মিরপুরের শাহ আলী থানা থেকে দক্ষিণ দিকে কয়েক গজ সামনেই তোরাব আলী চত্বর। পাশেই তিনতলা একটি ভবন। চত্বর কিংবা ভবনের জায়গাটি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সরকারি জায়গা দখল করে প্রয়াত তোরাব আলীর নামে হাউজিংয়ের চত্বর বানিয়েছেন তার ছেলে জনাব আলী। দখল করা জায়গায় গড়েছেন ভবনও। মিরপুরের মানুষের কাছে এই জনাব আলী ‘শাহেনশাহ’ হিসেবে পরিচিত।

ওই ভবনের পেছনেও প্রায় দুই বিঘা সরকারি জমি দখল করেছেন জনাব আলী। সেখানে গড়ে তুলেছেন রিকশা গ্যারেজ ও বস্তি। এই বস্তি আর গ্যারেজ ঘিরে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদকের হাট। শাহ আলী থানার নাকের ডগায় পরিচালিত হচ্ছে মাদকের এই প্রকাশ্য সাম্রাজ্য। থানার কয়েকজন সোর্স এর সঙ্গে জড়িত। তবে মূলহোতা জনাব আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম নাদিম। ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি তিনি। এই পরিচয়েই ম্যানেজ হয় সব অপকর্ম।

সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে এবং লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভেতরে ভেতরে আসলে বাপ-ছেলের মাদক কারবার থেকে বখরা নেয় থানা পুলিশও। নির্বিঘ্নেই মাদকের বেচাবিক্রি হয় এই হাটে।

গত কয়েকদিন ওই এলাকা ঘুরে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাপ-বেটার এই সাম্রাজ্যের আরেক সিপাহশালার বাবুল তালুকদার। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর পারিবারিক পরিচয় হলো জনাব আলীর আপন শ্যালক তিনি। দুলাভাই-ভাগনের দখল ‘রাজ্যে’ মূল তালুকদারি করছেন এই বাবুলই। তার আরেক ভাই সাইফুল তালুকদারও এসবের অংশীদার।

জনাব আলী, নাদিম ও বাবুলের মাদকের হাটে নিয়মিত মাদক বিক্রি করেন মো. আলম নামে এক কারবারি। সরেজমিন ঘুরে তাকে প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতা বেশে সরাসরি কথা হয় তার সঙ্গে। জনি জানান, এই গ্যারেজ এলাকায় প্রায় তিন বছর ধরে গাঁজার কারবার করেন তিনি। মাঝে মাঝে ইয়াবাও বিক্রি করেন। এজন্য তিনি নাদিম এবং তার বাবাকে প্রতিদিনই বখরা দেন। কারণ জায়গাটা তাদের। তার মতো এখানে যারা মাদক কারবার করেন, সবাই তাদের টাকা দেন। কেউ তাদের টাকা কম দিলে কিংবা না দিতে চাইলে নির্যাতন চালায় কিশোর গ্যাং বাহিনী। কখনো বা ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।

এলাকার লোকজন বলছেন, দখল বাণিজ্যে দুলাভাই-ভাগনেকে ছাড়িয়ে গেছেন দুই ভাই বাবুল আর সাইফুল। হাউজিং এলাকার পাশে চিড়িয়াখানার প্রায় ৭ একর জমি দখল করে বস্তি গড়েছেন তারা। স্থানীয়ভাবে এটি লালমাঠ বস্তি নামে পরিচিত। সেখানে মাদক কারবারের নাটাই সাইফুল তালুকদারের হাতে। সরকারি জমি বিক্রি করার নজিরও গড়েছেন এ দুই ভাই। চিড়িয়াখানার দখল করা জমির একাংশ আবার বিক্রি করে দিয়েছেন আরেক মাদক কারবারির কাছে।

হাউজিংয়ের সরকারি জমি দখল করে মাদকের হাট বসানোর বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ঢাকা ডিভিশন-১ (মিরপুর)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী জোয়ারদার তাবেদুন নবী কালবেলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই আমরা অবগত হলাম। শিগগির ওই জায়গার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

প্লাস্টিক পলিথিনে নদীর সর্বনাশ
সর্বনাশা প্লাস্টিক বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে দেশের নদনদী, খালবিল। অপচনশীল বর্জ্যে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী, খাল, বিলের তলদেশ। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খালের প্রবাহ, স্যুয়ারেজ লাইন। নদী ও খালের পাড় দখলেও ভূমিকা রাখছে নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য। নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়লে মিলছে ১৫-২০ বছরের পুরনো পলিথিন। এতে উর্বরতা কমছে মাটির। দূষিত হচ্ছে পানি। একপর্যায়ে এই প্লাস্টিক গুঁড়ো হয়ে খাদ্যচক্রের মাধ্যমে ঢুকছে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর দেহে। সৃষ্টি করছে ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগ। সামগ্রিকভাবে এর আর্থিক ক্ষতি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে কয়েক লাখ কোটি টাকায়। আইন করে পলিথিন নিষিদ্ধ করার পরও আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে চলেছে এর উৎপাদন ও ব্যবহার। বর্তমানে দেশে বছরে উৎপন্ন হচ্ছে ৮ লাখ ২১ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য। এর ৪০ ভাগ পুনর্ব্যবহার হলেও ৬০ ভাগই ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ২০০২ সালে পলিথিনের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে একবার ব্যবহার্য পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়নি। আইনের এই ফাঁকের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে। এদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পলিথিনে তৈরি সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুত-বিতরণ নিষিদ্ধ হলে সেটাও বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের নাকের ডগায় বাজারগুলোতে দেদার বিক্রি হচ্ছে পলিথিনের শপিং ব্যাগ। গড়ে উঠছে পলিথিনের নতুন নতুন কারখানা। তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে প্রায় দেড় হাজারের বেশি কারখানায় পলিথিন তৈরি হচ্ছে, যার অধিকাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে বছরে এখন ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর ৪০ শতাংশ রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার হয়। বাকিটা পরিবেশে পড়ে থাকে। শুধু ঢাকা শহরেই বছরে প্রায় আড়াই লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা সারা দেশে উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে ৩০ ভাগের বেশি। সরকারি তথ্যানুযায়ী, সারা দেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ৯ থেকে ১০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন করে। রাজধানীতে মাথাপিছু প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয় ১৮ থেকে ২২ কেজি পর্যন্ত। আর এই প্লাস্টিক ও পলিথিনের একটি বড় অংশের শেষ গন্তব্য হয় নদনদী ও বিভিন্ন জলাশয়ে। জার্মানির বার্লিন ভিত্তিক গবেষকদের নেটওয়ার্ক রিসার্চগেটে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদী হয়ে প্রতি বছর প্রায় ১-৩ বিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশছে বঙ্গোপসাগরে। অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গায় অক্সিজেনের পরিমাণ ১ মি.লি. গ্রাম পার লিটারের থেকেও কম। যেখানে মাছ এবং মানুষের জন্য ৫ মি.লি. গ্রাম পার লিটারের প্রয়োজন। পরিবেশ অধিদফতর ও ওয়েস্ট কনসার্নের যৌথ গবেষণা অনুযায়ী মাত্র শতকরা ৩৬ ভাগ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করা হয়, ৩৯ শতাংশ ল্যান্ডফিলে যায় এবং অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য নদীর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে জমা হয়

কালের কন্ঠ:

উপজেলা নির্বাচন: ভোটে বিএনপির অনেকে অনড়, কেউ দোলাচলে
বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও দলীয় নেতাদের যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই ভোটে থাকার বিষয়ে অনড় রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ আছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন, দলীয় পদে আছেন এমন প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।

দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগের তথ্য মতে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতে বিএনপির অন্তত ৪৯ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

তাঁদের মধ্যে গত দুই দিনে বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের বেশি প্রার্থী মাঠে সক্রিয় আছেন।
গতকাল রবিবার অন্তত ২০ জন প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তিন ধরনের ভাষ্য পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজন নির্বাচনে মাঠে থাকার বিষয়ে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন।
মানবজমিন:প্রথম মার শুরু করেন চেয়ারম্যানই যোগ দেন শত শত মানুষhttps://mzamin.com/news.php?news=106599
২৮৫ ভোটারের গ্রাম কৃষ্ণপুর। ৬৫ পরিবারের বসবাস। তারা সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। আশপাশের পাঁচ গ্রাম নিয়ে পঞ্চপল্লী। ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মুসলিম পরিবার নেই। ৫ গ্রামে একটি মাত্র স্কুল। পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের পাশেই বারোয়ারি কালী মন্দির। বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকেই মন্দিরের সবকিছু দেখা যায়। সেখানে চারটি মূর্তি আছে।

কালী ও শিব মূর্তি একসঙ্গে। ২ ফুট দূরে দুই পাশে অন্য দুটি মূর্তি। এক মাস ধরে বিদ্যালয়ের শৌচাগারের নির্মাণকাজ চলছে। শ্রমিকদের সবাই মুসলমান। এখানে ১৮ই এপ্রিল ঘটে এক নজিরবিহীন ঘটনা। সন্ধ্যা ৭টায় হঠাৎ আগুন আগুন চিৎকার। লোকজন মন্দিরের সামনে এসে দেখেন কালী মূর্তি আগুনে জ্বলছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো তা কেউ নিশ্চিত জানে না। কিন্তু উত্তেজিত জনতা শৌচাগার নির্মাণ শ্রমিকদের সন্দেহ করে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন অন্যরা। ফরিদপুর মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের এই ঘটনা পুরো দেশ নাড়িয়ে দেয়। নানা সন্দেহের ডালপালা মেলতে থাকে। কীভাবে সূত্রপাত হলো এই ঘটনার? পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নাকি গুজবের বলি হলেন দুই কিশোর? মানবজমিন-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নানা তথ্য। কোথা থেকে এই ঘটনার সৃষ্টি। কারা ছিল এর পেছনে? ঘটনাস্থল, প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার থেকে এসব প্রশ্নের কিছু জবাব মিলেছে।
ঠিকাদারি কাজ নিয়ে কি ঝামেলা ছিল: অনুসন্ধানে জানা গেছে, কৃষ্ণপুর গ্রামে সার্বজনীন কালীমন্দিরের পাশে অবস্থিত ৬৯নং পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পায় ফরিদপুরের মাহিদা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে সাব- কন্ট্রাক্টে ওই কাজ বাগিয়ে নেন নওয়াপাড়া ইউনিয়ের চোপেরঘাট গ্রামের সাব-ঠিকাদার মো. জালাল শেখ। স্থানীয় একটি সূত্র ও নিহতের পরিবার বলছে, শৌচাগার নির্মাণকাজ শুরু করার পর থেকেই স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিৎ কুমার সরকার ওই কাজে নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করেন।

বনিকবার্তা:

তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে বৃষ্টির আভাস নেই

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই। তবে ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে গতকালের তাপমাত্রা আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। এদিকে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে নরসিংদী, ঝালকাঠি ও সিলেটে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনে এ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত শনিবার দেশের ১২ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এমন জেলা গতকাল ছিল ছয়টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটি হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। আর ৪২ ডিগ্রি বা তার চেয়ে বেশি হলে সেটা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। সে হিসেবে গতকাল তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল চার জেলা— টাঙ্গাইল, রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়ায়। আর অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায়। চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও যশোরের তাপমাত্রা কয়েক দিন ধরেই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে।

সমকাল:

সুসময়ে হঠাৎ বিপদে কৃষক
কৃষির জন্য সবচেয়ে শুভ সময় এপ্রিল-মে। পাকা বোরো ধান এখন মাঠে মাঠে। রবি ফসলেরও নেই কমতি। আম, লিচু ও কাঁঠালের মতো রসালো ফল বাজারে আসবে এপ্রিল পেরোলেই। মাস দুয়েক পর কোরবানির ঈদ ঘিরে খামারে খামারে চলছে জোর প্রস্তুতি। রোজার পর ডিম-মুরগির চাহিদা বাড়ায় এ মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ার আশায় ছিলেন খামারিরা। অথচ এই সুসময়ে বড় বিপদে কৃষি।

তীব্র তাপদাহের কারণে বিপর্যয়ে পড়েছে কৃষি, ডেইরি, পোলট্রি ও মৎস্য খাত। দিশেহারা চাষি ও খামারিরা। ঠা ঠা রোদের প্রভাবে ধানগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, মরছে সবজির গাছ। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। যেটুকু পানি মিলছে, তাতেও খরচা করতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বোরো ক্ষেতে হিট শক ব্লাস্ট সংক্রমণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝরে পড়ছে আম ও লিচু। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। মারা যাচ্ছে মুরগি ও গরু। তীব্র তাপপ্রবাহে পানিতে অক্সিজেন সংকটে মাছের রেণু পোনার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। প্রতিবছর গরমকালে কৃষি ক্ষতির মুখে পড়ে। অথচ এ মৌসুম নিয়ে কৃষি বিভাগের পরিকল্পনা নেই। ঝড়-বন্যার মতো তাপদাহকে সেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবেও দেখা হয় না। ফলে কৃষির ভরা এ মৌসুমে ক্ষতির মুখে পড়ে নিঃস্ব হন চাষি।

তবে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, এ মুহূর্তে বিভিন্ন ফসল রক্ষায় কৃষকের করণীয় কী, তা নিয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা