ঢাকা ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিবেট বাংলাদেশ-এর বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত

ডিবেট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আন্ত-স্কুল জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪’ (রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ৩.০)-এর ফাইনাল পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে অনলাইনে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। ডিবেট বাংলাদেশের মডারেটর মো. মিছবাহুল করিমের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মুরাদ আহমেদের সঞ্চালনায় আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক ও ডিবেট বাংলাদেশের উপদেষ্টা সিবগাতুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবেট বাংলাদেশের সাবেক মডারেটর ডা. আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক বিতার্কিক মেহেদি হাসান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিবগাতুল্লাহ বলেন, আগামীর দেশ গড়ার কারিগর তৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করে শিক্ষাব্যবস্থা। ফলে সব দেশই কাঙ্খিত নাগরিক তৈরির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার ৫৩ বছর হয়ে গেলেও জাতি এখন পর্যন্ত কাঙ্খিত ও স্থায়ী শিক্ষাব্যবস্থা পায়নি। উল্টো বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী সবাইকে হতাশ করেছে। চলমান শিক্ষাব্যবস্থা শুধু হতাশই করেনি বরং ঐশির মতো শিক্ষার্থী উপহার দিচ্ছে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপিট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণের মহামারি বা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের মতো অভিভাবকের নৈতিকতার চরম বিপর্যয় দেখতে হচ্ছে।

তিনি বিতার্কিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের ব্যর্থতা ও হতাশা আছে তা ঠিক। কিন্তু আগামীর দেশগড়ার কারিগরদের হতাশ নয় বরং ব্যর্থ শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থা পাল্টে দেওয়ার দৃঢ় শপথ নিতে হবে। আজকের বিতার্কিকদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গিয়েছে। তোমাদের সাহসী হতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের অসঙ্গতিগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. আবু ইউছুফ বলেন, ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার ভয়াবহতার ফল গোটা জাতিকে ভোগ করতে হচ্ছে। এখনো যদি ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের সমন্বয়ে শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন না করা হয় তাহলে আগামী প্রজন্ম চূড়ান্ত অধঃপতনের দিকে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সুতরাং সময় থাকতেই আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে।

বিশেষ অথিতির বক্তব্যে মিছবাহুল করিম বলেন, একজন বিতার্কিক জাতির বাছাই করা নাগরিক। তারা সমাজের দর্পন ও কণ্ঠস্বর। অল্প সময়ে তারা সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে। তবে জাতি প্রত্যাশা করে যে, বিতার্কিকরা যুক্তিপূর্ণ বক্তব্যে দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করবে না। বরং নিজেদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সমাজ পরিবর্তনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য  “যৌক্তিক বোধের শুদ্ধতম প্রকাশ” শ্লোগানকে সামনে রেখে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিতর্ক সংগঠন “ডিবেট বাংলাদেশ”।  তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজনে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭০টি ডিবেট দল রেজিস্ট্রেশন করে। তার মধ্যে ২৪টি দল ডিবেটে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ডে ট্যাব পদ্ধতিতে ১৬-২৪ ফেব্রুয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়। ৪ রাউন্ড বিতর্কের পর ৮ টি দলকে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য নির্বাচিত করা হয়। আয়োজনে চ্যাম্পিয়ান হয়, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা। রানার্সআপ হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা। সেমি ফাইনালিস্ট হয় মতিঝিল গভমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল এবং রাজশাহী ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। চ্যাম্পিয়ন দলকে ১০,৫০০ টাকা, স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়। তাছাড়া রানার্স আপ দলকে ৬,৩০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, সেমি ফাইনালিস্ট দলকে ৩,৩০০ টাকা, স্মারক ও সনদ।

ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্টকে ১,৫০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ডিবেটার অব দ্য ফাইনালকে ১,০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ৩ জন সেরা স্বতন্ত্র বিচারকের প্রতিজনকে ১০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ৩ জন সেরা আমন্ত্রিত বিচারকের প্রতিজনকে ১০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিবেট বাংলাদেশ-এর বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৬:০২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

ডিবেট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আন্ত-স্কুল জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪’ (রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ৩.০)-এর ফাইনাল পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে অনলাইনে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। ডিবেট বাংলাদেশের মডারেটর মো. মিছবাহুল করিমের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মুরাদ আহমেদের সঞ্চালনায় আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিতার্কিক ও ডিবেট বাংলাদেশের উপদেষ্টা সিবগাতুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবেট বাংলাদেশের সাবেক মডারেটর ডা. আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক বিতার্কিক মেহেদি হাসান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিবগাতুল্লাহ বলেন, আগামীর দেশ গড়ার কারিগর তৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করে শিক্ষাব্যবস্থা। ফলে সব দেশই কাঙ্খিত নাগরিক তৈরির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার ৫৩ বছর হয়ে গেলেও জাতি এখন পর্যন্ত কাঙ্খিত ও স্থায়ী শিক্ষাব্যবস্থা পায়নি। উল্টো বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী সবাইকে হতাশ করেছে। চলমান শিক্ষাব্যবস্থা শুধু হতাশই করেনি বরং ঐশির মতো শিক্ষার্থী উপহার দিচ্ছে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপিট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণের মহামারি বা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের মতো অভিভাবকের নৈতিকতার চরম বিপর্যয় দেখতে হচ্ছে।

তিনি বিতার্কিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের ব্যর্থতা ও হতাশা আছে তা ঠিক। কিন্তু আগামীর দেশগড়ার কারিগরদের হতাশ নয় বরং ব্যর্থ শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থা পাল্টে দেওয়ার দৃঢ় শপথ নিতে হবে। আজকের বিতার্কিকদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গিয়েছে। তোমাদের সাহসী হতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের অসঙ্গতিগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. আবু ইউছুফ বলেন, ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার ভয়াবহতার ফল গোটা জাতিকে ভোগ করতে হচ্ছে। এখনো যদি ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের সমন্বয়ে শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন না করা হয় তাহলে আগামী প্রজন্ম চূড়ান্ত অধঃপতনের দিকে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সুতরাং সময় থাকতেই আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে।

বিশেষ অথিতির বক্তব্যে মিছবাহুল করিম বলেন, একজন বিতার্কিক জাতির বাছাই করা নাগরিক। তারা সমাজের দর্পন ও কণ্ঠস্বর। অল্প সময়ে তারা সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে। তবে জাতি প্রত্যাশা করে যে, বিতার্কিকরা যুক্তিপূর্ণ বক্তব্যে দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করবে না। বরং নিজেদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সমাজ পরিবর্তনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য  “যৌক্তিক বোধের শুদ্ধতম প্রকাশ” শ্লোগানকে সামনে রেখে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিতর্ক সংগঠন “ডিবেট বাংলাদেশ”।  তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজনে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭০টি ডিবেট দল রেজিস্ট্রেশন করে। তার মধ্যে ২৪টি দল ডিবেটে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ডে ট্যাব পদ্ধতিতে ১৬-২৪ ফেব্রুয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়। ৪ রাউন্ড বিতর্কের পর ৮ টি দলকে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য নির্বাচিত করা হয়। আয়োজনে চ্যাম্পিয়ান হয়, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা। রানার্সআপ হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা। সেমি ফাইনালিস্ট হয় মতিঝিল গভমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল এবং রাজশাহী ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। চ্যাম্পিয়ন দলকে ১০,৫০০ টাকা, স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়। তাছাড়া রানার্স আপ দলকে ৬,৩০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, সেমি ফাইনালিস্ট দলকে ৩,৩০০ টাকা, স্মারক ও সনদ।

ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্টকে ১,৫০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ডিবেটার অব দ্য ফাইনালকে ১,০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ৩ জন সেরা স্বতন্ত্র বিচারকের প্রতিজনকে ১০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ, ৩ জন সেরা আমন্ত্রিত বিচারকের প্রতিজনকে ১০০০ টাকা, স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়।