ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে সাংবাকিদের মানববন্ধন

বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকরা।

সোমবার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

এসময় সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, এই আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী। এসব কালাকানুন ও স্বৈরশাসনের কবলে পড়ে গণমাধ্যম এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে।

দৈনিক দিনকাল, আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়া, সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ-সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, একেএম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হকসহ দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন কালাকানুন করে সংবাদকর্মী-মানবাধিকারকর্মী তথা নাগরিক সমাজের মতপ্রকাশের অধিকারের ক্ষেত্রে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে; যা গণতন্ত্রের অন্তরায়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়নের ফলে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন শুধু লেখা নয় কথা বলতেও মানুষকে চিন্তা করতে হচ্ছে। কথায় কথায় সাংবাদিকেরা হুমকি ও হত্যার শিকার হচ্ছেন। শত বছরের পুরোনো ঔপনিবেশিক আইন ও তার ধারাবাহিকতায় নতুন আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বাক্ ও চিন্তার স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে।

গাজী বলেন, “আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র” এর অন্তর্নিহিত এজেন্ডা হলো কখনই গণতন্ত্র নয়। জনমুখী উন্নয়নকে নিশ্চিত করতে হলে আগে চাই গণতন্ত্র। বিশেষ করে বাক্স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাহলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে। গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য।

বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চা করার পরিবেশও নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে মানুষের বাকস্বাধীনতা, ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে সরকার যেকোনো কাজকেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারবে।

গনি বলেন, একের পর কালাকানুন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। আদালত অবমাননা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, আইসিটি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণমাধ্যমকর্মী আইন, সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ একের পর এক আইন করে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলা হচ্ছে। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যম কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তাই তারা এখন সত্য তুলে ধরতে পারছেন না। তাদের এখন সেলফসেন্সরশিপ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করলে রোষানলের শিকার হয়ে বন্ধ করা হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন।

ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ‘গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হলে এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হবে, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে সাংবাকিদের মানববন্ধন

আপডেট সময় ১২:২০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকরা।

সোমবার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

এসময় সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, এই আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী। এসব কালাকানুন ও স্বৈরশাসনের কবলে পড়ে গণমাধ্যম এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে।

দৈনিক দিনকাল, আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়া, সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ-সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, একেএম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হকসহ দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন কালাকানুন করে সংবাদকর্মী-মানবাধিকারকর্মী তথা নাগরিক সমাজের মতপ্রকাশের অধিকারের ক্ষেত্রে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে; যা গণতন্ত্রের অন্তরায়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়নের ফলে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন শুধু লেখা নয় কথা বলতেও মানুষকে চিন্তা করতে হচ্ছে। কথায় কথায় সাংবাদিকেরা হুমকি ও হত্যার শিকার হচ্ছেন। শত বছরের পুরোনো ঔপনিবেশিক আইন ও তার ধারাবাহিকতায় নতুন আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বাক্ ও চিন্তার স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে।

গাজী বলেন, “আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র” এর অন্তর্নিহিত এজেন্ডা হলো কখনই গণতন্ত্র নয়। জনমুখী উন্নয়নকে নিশ্চিত করতে হলে আগে চাই গণতন্ত্র। বিশেষ করে বাক্স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাহলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে। গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য।

বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চা করার পরিবেশও নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে মানুষের বাকস্বাধীনতা, ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে সরকার যেকোনো কাজকেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারবে।

গনি বলেন, একের পর কালাকানুন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। আদালত অবমাননা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, আইসিটি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণমাধ্যমকর্মী আইন, সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ একের পর এক আইন করে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলা হচ্ছে। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যম কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তাই তারা এখন সত্য তুলে ধরতে পারছেন না। তাদের এখন সেলফসেন্সরশিপ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করলে রোষানলের শিকার হয়ে বন্ধ করা হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন।

ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ‘গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হলে এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হবে, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে।’