গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার। বাদ ফজর মাওলানা সাদের ছোট ছেলে মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই ইজতেমা। যদিও গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর পাকিস্তানের মাওলানা হারুন কোরায়েশির বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। আগামী রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
আজ জুমার সালাতের আগে বয়ান করবেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। জুমার সালাত পড়াবেন মাওলানা সাদের বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। বাদ জুমা বয়ান করবেন সৌদি আরবের মাওলানা শেখ মোফলে। বাদ আসর মাওলানা মোশারফ, বাদ মাগরিব মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ বয়ান করবেন।
এর আগে গতকাল বাদ জোহর বয়ান করেন মাওলানা হারুন কোরায়েশি। বাদ আসর মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম এবং বাদ মাগরিব মাওলানা আব্দুস সাত্তার বয়ান করেন।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে বিশ্বের শতাধিক দেশের ১২ থেকে ১৪ হাজার মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবেন বলে আয়োজক কমিটির মুরব্বিরা আশা প্রকাশ করেছেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৫৩টি দেশের তিন হাজারের বেশি মেহমান ময়দানে নির্ধারিত নিবাসে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিডিয়া সমন্বয়কারী হাজি মো. সায়েম।
পাশের দেশ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও কাশ্মীর থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক মুসল্লি ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে ইজতেমা চলাকালীন ট্রাফিক ও যাতায়াত ব্যবস্থা আগের মতোই থাকবে বলে জানিয়েছে ইজতেমা পরিচালনা কমিটিসহ স্থানীয় জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, তিতাস গ্যাস, রেলওয়ে, সড়ক ও জনপথ, ফায়ার সার্ভিস, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী র্যাব, পুলিশ, সিটিএসবি, ডিএসবিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক অধিদপ্তর।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি মো. মুহিবুল্লাহ জানান, এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমার আয়োজক তাবলিগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুতি ছাড়াও ডেসকো, তিতাস, ওয়াসাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলো তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে নিজাম উদ্দিন মারকাজ অনুসারী মূলধারার তিন দিনের বিশ্ব ইজতেমা।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, ইজতেমা শুরুর আগের দিন থেকে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পচাবাসি খাবার সরবরাহসহ বিভিন্ন অপরাধীকে নিয়ন্ত্রণসহ তাদের বিরুদ্ধে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বেশ কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম কাজ করবে।
জিএমপি কমিশনার বলেছেন, ‘ইজতেমায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা নেই। সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সব কিছু ঠিক আছে। আশা করি, শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা সম্পন্ন হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মাওলানা সাদ আসবেন কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই আমার কাছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা চেষ্টা করছি। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কিছু করতে দেওয়া হবে না। ইজতেমার আগে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাদ সাহেব সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা সরকারের বিষয়।